কিশোর গ্যাং চক্রের ৬ চাঁদাবাজ গ্রেফতার

Post Thumbnail

রাজধানীর কদমতলী এলাকা হতে অবৈধভাবে চাঁদাবাজী করাকালীন কিশোর গ্যাং চক্রের ছয়জন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। সহকারী পুলিশ সুপার ও র‌্যাব-১০ এর গণমাধ্যম শাখার সহকারী পরিচালক এম.জে. সোহেল গণমাধ্যমকে এ খবর নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে কিশোর গ্যাং কালচার সারাদেশে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে কিশোররা জড়িয়ে পড়ছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাদের অপরাধের ধরণও পাল্টে যাচ্ছে। যেমন- এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি, চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, মাদক ব্যবসা ও নাশকতা থেকে শুরু করে হত্যাসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে কিশোররা।

রাজধানী ঢাকার কদমতলী থানাধীন পূর্ব জুরাইন এলাকায় বসবাসকারী সাজেদা বেগম (৪৫), পিতা-সিরাজুল ইসলাম। তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ উল্লিখিত এলাকায় বসবাস করে আসছেন। সাজেদা তার বাড়ির ভাড়াটিয়াদের নিকট হতে প্রাপ্ত অর্থে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন। গত ০২/১১/২০২৩ তারিখ বিকেলে ১৩-১৪ জন কিশোর গ্যাংয়ের সক্রিয় সদস্য সাজেদার বাড়িতে এসে সাজেদার নিকট নগদ-২,০০,০০০/- (দুই লক্ষ) টাকা চাঁদা দাবী করে। সাজেদা উক্ত চাঁদা দিতে অপারগতা এবং অস্বীকৃতি জানালে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা সাজেদাকে প্রাণনাশের হুমকিসহ বিভিন্ন প্রকার হুমকি প্রদর্শন করে চলে যায়। পরবর্তীতে গত ০৪/০৪/২০২৪ তারিখ রাতে উক্ত কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা পুনরায় সাজেদার বাসায় এসে তাদের দাবীকৃত চাঁদা প্রদানের জন্য চাপ প্রয়োগ করে এবং সাজেদা ও তার বাড়ির ভাড়াটিয়াসহ সবাইকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। সাজেদা কিশোর গ্যাংয়ের সদসদের চাঁদা দিতে অপারগতা এবং অস্বীকৃতি জানিয়ে তাদেরকে গালিগালাজ করতে নিষেধ কর। অতঃপর কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা সাজেদাকে প্রাণনাশের হুমকিসহ বিভিন্ন প্রকার ক্ষতি সাধনের হুমকি প্রদান করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

এই ঘটনা জানতে পেরে র‌্যাব-১০ এর একটি দল উক্ত কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি ও ছায়া তদন্ত শুরু করে।

এরই ধারাবাহিকতায় গত ৪ এপ্রিল রাতে র‌্যাব-১০ এর উক্ত দল গোপন তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানী ঢাকার কদমতলী থানাধীন পূর্ব জুরাইন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে সাজেদা বেগমের নিকট অবৈধভাবে চাঁদা দাবী ও প্রাণনাশের হুমকি প্রদর্শনকারী কিশোর গ্যাং চক্রটির ছয়জন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতদের নাম ১। আল আমিন (১৯), ২। মোঃ মুজাহিদ হোসেন ওরফে রনি (১৮), ৩। মোঃ আব্দুর রহমান (২৩), ৪। মোঃ মেহেদী হাসান ওরফে হৃদয় (১৮), ৫। মোঃ আহাদুর রহমান ওরফে জয় (১৮) ও ৬। মোঃ তানজিন হোসেন (১৮) বলে জানা যায়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে, গ্রেফতারকৃত আসামিরা ভিকটিম সাজেদা বেগমের নিকট হতে চাঁদা দাবী ও প্রাণনাশের হুমকি প্রদর্শনের কথা স্বীকার করে। এছাড়াও উক্ত কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা বেশ কিছুদিন যাবৎ রাজধানীর কদমতলীসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, পাড়া মহল্লায় আধিপত্য বিস্তারসহ বিভিন্ন প্রকার অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছিল বলে জানা যায়।

গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়ের করে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।