ঠিকাদারের গাফিলতিতে পানির পাম্পের কাজ স্থগিত, সংকটে মানুষ

Post Thumbnail

তীব্র দাবদাহে হাসফাস জনজীবন, পানি সংকটে ভুগছে মানুষ। দীর্ঘ সময় ধরে নলকূপেও মিলছে না পানি। অন্যত্র থেকে গভীর নলকূপের পানি সংগ্রহ করে সংসারের যাবতীয় কাজ করতে হচ্ছে। এতে করে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডবাসী। গত ২ বছর আগে রুস্তমপুর ইউথক্লাব সংলগ্ন জমিতে সাপ্লাই পানির পাইপ স্থাপন করা হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত পাম্প স্থাপন না করায় ভোগান্তিতে পড়েছে স্থানীয়রা।

জানা যায়, জনস্বাস্থ্য প্রকল্পের অধীনে খন্দকার এন্টারপ্রাইজ এন্ড মনির ইন্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নামে মানিকগঞ্জ জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে টেন্ডার দেওয়া হয়। এ প্রকল্পে মোট ১ কোটি টাকা ব্যায় ধরা হয়। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে ঠিকাদার হিসাবে দায়িত্ব নেন বাবুল আক্তার নামের একজন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী। তার গড়িমসিতে এলাকার মানুষ পানি সংকটে ভুগছে।

এলাকাবাসী জানান, কাঠফাটা রোদ আর তীব্র দাবদাহে এখন জনজীবনে স্বস্তি নেই। একদিকে টিউবওয়েলে পানি নেই, অন্যদিকে ২ বছর যাবৎ সাপ্লাই পানির পাম্প স্থাপন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। তাই নতুন করে সাবমার্সিবল পাম্পের নেই সরকারি ব্যবস্থা। এদিকে আমরা পড়েছি তীব্র পানির সংকটে। একমাত্র ঠিকাদারের গাফিলতিতে আমদের প্রচণ্ড ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। আমরা দ্রুত এর সমাধান চাই।

আড়ানী পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোশাররফ হোসেন লিটন জানান, একমাত্র ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে সাপ্লাই পানির পাম্প স্থাপনের কাজ বন্ধ আছে। আর তাই পানির সংকটে হাহাকার চলছে এলাকায়।

এ বিষয়ে আড়ানী পৌরসভার মেয়র মুক্তার আলী বলেন, পৌর এলাকায় সাপ্লাই পানির পাম্প বরাদ্দ থাকায় নেই সরকারিভাবে সাবমার্সিবল পাম্পের বরাদ্দ। ২ বছর এ কাজ বন্ধ থাকায় বেকায়দায় আছেন ওই এলাকার জনগণ। তবে মুঠোফোনে কথা বললে বাবুল আক্তার বারবার তালবাহানা করে। ইদানীং আর কল রিসিভ করে না।

জানতে চাইলে উপ-সহকারী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী মিঠুন আহমেদ বলেন, ঠিকাদারের সাথে কোন যোগাযোগ নেই। তবে রুস্তমপুরে পাম্প স্থাপনের কাজ বন্ধ থাকার বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।

এ বিষয়ে মুঠোফোনে সাবেক বাঘা উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী নাসির উদ্দীন জানান, প্রকল্পটি খন্দকার এন্টারপ্রাইজ এন্ড মনির ইন্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নামে টেন্ডার হয়েছে। কিন্তু ঠিকাদার হিসেবে কাজটি করেছে আমার কলিগ বাবুল আক্তার। তিনি একজন জনস্বাস্থ্য প্রকোশলী। কী কারণে ২ বছর ধরে এ পাম্প স্থাপনের কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অন্য কোন কারণ নেই। সকল সরঞ্জাম বাঘা অফিসে রাখা আছে। শুধুমাত্র ঠিকাদারের গাফিলতিতে কাজ বন্ধ আছে। তার মুঠোফোনে অনেকবার কল দিয়েছি, তিনি রিসিভ করেননি।

কেন এই প্রকল্পের কাজ স্থগিত রয়েছে জানতে বারংবার প্রকৌশলী বাবুল আক্তারের মুঠোফোনে কল দিলে তিনি তা রিসিভ করেননি।

উল্লেখ্য, ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে পানি বঞ্চিত এ ওয়ার্ডের অসংখ্য মানুষ। কেউ কেউ সাবমার্সিবল পাম্প বসিয়ে পানির চাহিদা মেটাতে সক্ষম হলেও বেশিরভাগ নিম্ন আয়ের মানুষ পানি সংকটে ভুগছেন। ঠিকাদারের এ গাফিলতির দায় নিবে কে? সুপেয় পানির আশায় চাতক পাখির মতো চেয়ে থাকা মানুষগুলোর আশা কবে পুরণ হবে?