সবার চোখের সামনে পুড়ে কয়লা হয়ে গেলেন ট্রেনের যাত্রী, নিহত ৪  

Post Thumbnail

শামীম-উল-আলম : পুড়ছে জীবন্ত একটি মানুষ। অর্ধেক খোলা জানালা দিয়ে হাত বের করে বাঁচার আকুতি জানিয়েও পারলেন না! জানালাটাও আর খুলতে পারছিলেন না। তাকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলেন ফায়ার সার্ভিস কর্মী ও সাধারণ মানুষ। হাত ধরে টানা চেষ্টা করলেন- পোড়া হাতের চামড়া খসে আসল। মানব শরীরটাকে বের করতে পারলেন না। পেছনে লাগা আগুনের লেলিহান শিখার কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ করে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন! কী নৃশংস! কী বিভৎস!

এই মর্মান্তিক ঘটনা বেনাপোল এক্সপ্রেসে লাগা আগুনের। শুক্রবার (৫ই জানুয়ারি) রাত ৯টার দিকে বেনাপোল থেকে যাত্রী নিয়ে ঢাকায় আসার পথে গোপীবাগে ট্রেনটিতে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। ফায়ার সার্ভিসের সাত ইউনিটের দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় প্রায় সাড়ে ১০টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ভস্মিভুত ট্রেনের বগি থেকে ৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস।

জানা গেছে, বেনাপোল এক্সপ্রেস ১৫৪ জন যাত্রী নিয়ে গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টায় বেনাপোল ছেড়ে ঢাকায় আসে রাত ৯টার দিকে। এই ট্রেনে ঢাকার যাত্রী ছিলেন ৪৯ জন।

আগুন লাগার প্রায় এক ঘণ্টা পর রাত ১০টা ২০ মিনিটে নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুন নেভানোর পরে দেড় ঘণ্টা উদ্ধার অভিযান চালিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। পাশাপাশি অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রয়োজনীয় তথ্য ও আলামত সংগ্রহ করেছে।

এ নিয়ে দেশে গত ২৮ অক্টোবরের পর ট্রেনে আগুনের ঘটনায় মোট চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগে গত ১৯ ডিসেম্বর রাজধানীর তেজগাঁও স্টেশনে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। আগুনে ট্রেনটির তিনটি বগি পুরোপুরি পুড়ে যায়। পরে একটি বগি থেকে মা ও শিশুসহ চারজনের লাশ উদ্ধার করা হয়।

এভাবে গণপরিবহনে ঘন ঘন নাশকতার ঘটনায় নীরিহ সাধারণ মানুষের মৃত্যুতে নগরবাসী একই সাথে ক্ষোভ এবং হতাশা প্রকাশ করেছেন।