সিলেটে ভয়াবহ বন্যায় পানিবন্দি ৬ লাখ মানুষ

বাড়ানো হয়েছে ত্রাণ বরাদ্দ

Post Thumbnail

মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে প্রবল বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সিলেটে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতি এখনও অপরিবর্তিত রয়েছে। এদিকে, বন্যার্ত মানুষের জন্য জেলা প্রশাসনের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ থেকে নগদ অর্থ, চাল, শিশু খাদ্য, শুকনো খাবার ও গো-খাদ্য ত্রাণ বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, বৃষ্টি কমেছে, বন্যার পানিও ধীরগতিতে নামছে। তবে এখনও সুরমা কুশিয়ারা পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সিলেট নগরে প্লাবিত এলাকায় পানি আগের মতোই রয়েছে।

সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৮০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। একই সময়ে সিলেট পয়েন্টে ৪ সেন্টিমিটার এবং কুশিয়ারা নদীর পািন অমলীশদ পয়েন্টে ১৮৬ সেন্টিমিটার, শেওলা পয়েন্টে ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। তবে, কুশিয়ারার ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে সন্ধ্যায় পানি বেড়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে।

এদিকে জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, সিলেটে বন্যার্ত মানুষের জন্য গত চার দিনে চারশ টন চাল ও নগদ ১৫ লাখ ৫০ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এছাড়া এক হাজার ২৫০ বস্তা শুকনো খাবার, ৯ লাখ টাকার শিশু খাদ্য, ৯ লাখ টাকার গো-খাদ্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

সিলেট সিটি করপোরেশনের ৯টি ওয়ার্ডসহ সিলেট সদর, কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট, জকিগঞ্জ, বিয়ানীবাজার ও গোলাপগঞ্জ উপজেলার ৫৯টি ইউনিয়নের ৬ লাখ ৯ হাজার ৭৩৩ জন মানুষ বন্যাকবলিত হয়েছেন। জেলায় ৫৫০টি আশ্রয়কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। বর্তমানে আশ্রয়কেন্দ্রে আছেন ৩ হাজার ৩৪২ জন। জেলার ৮টি উপজেলার মোট ৭৮১টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

গত বুধবার থেকে ভারতের মেঘালয় পাহাড় থেকে নামা ঢলে প্রথমে জৈন্তাপুর, কানাইঘাট, গোয়াইনঘাট উপজেলার বেশকিছু এলাকায় প্লাবিত হয়। পানির তোড়ে গ্রামীণ সড়ক, ঘরবাড়ি ভেঙে যায়। পানিবন্দি মানুষদের উদ্ধারে স্থানীয় প্রশাসন, স্বেচ্ছাসেবিরা কাজ করেন। বিজিবিও তাদের সহায়তা করে।

এ সময় নদ-নদীর পানি বাড়া অব্যাহত থাকায় জেলায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্লাবিত হয়েছে জেলার গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট ও জকিগঞ্জ উপজেলা। মূলত জেলার প্রধান দুটি নদী সুরমা, কুশিয়ারাসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানি উপচে একের পর এক এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ডুবে গেছে ফসলের খেত, ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। অসংখ্য বাসাবাড়িও হয়েছে প্লাবিত। তবে গতকাল থেকে গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর উপজেলাসহ কিছু এলাকায় বন্যার পানি কিছুটা কমলেও অন্যান্য জায়গায় অপরিবর্তিত রয়েছে।