পৃথক অভিযানে ছিনতাইকারিসহ র‌্যাবের হাতে আটক ৫

Post Thumbnail

র‌্যাব-১০ এর উপপরিচালক আমিনুল ইসলাম জানান, গতকাল এবং আজকে রাজধানীসহ দেশের কয়েকটি স্থানে র‌্যাবের কয়েকটি পৃথক অভিযান পরিচালনা করা হয়। এতে তিন পেশাদার ছিনতাইকারীসহ ধর্ষণ মামলায় এবং মাদক মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামিকে গ্রেফতার করা হয়।

অভিযান ১ :
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত দীর্ঘদিন পলাতক আসামি কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী হানিফকে রাজধানীর ডেমরা এলাকা হতে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০।

গতকাল ২৫ জানুয়ারি আনুমানিক রাত ১০:৫০ টায় র‌্যাব-১০ এর একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাজধানী ঢাকার ডেমরা থানাধীন কদমতলা এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে। উক্ত অভিযানে রাজধানী ঢাকার শাহজাহানপুর থানার মামলা নং-০৬(০৯)২০১২, দায়রা নং-৬৭৪/১৬, ধারা-মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯৯০ এর ১৯(১) এর ৩(খ); মাদক মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত সাজা ওয়ারেন্টভুক্ত দীর্ঘদিন যাবৎ পলাতক আসামি মোঃ হানিফ (৪৭), পিতা-মোঃ আঃ রাজ্জাক, সাং-বলরামপুর, থানা-মুলাদী, জেলা-বরিশাল, বর্তমান ঠিকানা-মাতুয়াইল, থানা-ডেমরা, ঢাকাকে গ্রেফতার করে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে, গ্রেফতারকৃত আসামি উল্লেখিত মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি বলে স্বীকার করেছে। সে মামলার পর থেকে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপন করে ছিল বলে জানা যায়।

গ্রেফতারকৃত আসামিকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

অভিযান ২ :
ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা থানার কুঞ্জিনগর এলাকা থেকে ভাঙ্গা থানার চাঞ্চল্যকর ধর্ষণ মামলার এজাহার নামীয় পলাতক প্রধান আসামি বাবুল মোল্লাকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০ ।

গতরাত (২৫ জানুয়ারি দিবাগত রাত) আনুমানিক মাঝরাত ২:০০ টায় র‌্যাব-১০ এর অপর একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে। উক্ত অভিযানে ফরিদপুর জেলার ভাংগা থানার মামলা নং-২০/৪৩৭, তারিখ-১৬/১০/২০২৩ খ্রিঃ; ধারা-নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী-২০০৩) এর ৯(১)/৩০; ধর্ষণ মামলার পলাতক প্রধান আসামী ধর্ষক বাবুল মোল্ল্যা (২৪), পিতা-রুস্তম মোল্ল্যা, সাং-ভাকুবদিয়া, থানা-সালথা, জেলা-ফরিদপুরকে গ্রেফতার করে।

প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায় যে, বাদী আক্কাস মিয়া (৩৫), পিতা-মৃত তোতামিয়া, সাং- হামিরদি নওপাড়া, থানা-ভাঙ্গা, জেলা-ফরিদপুরের বাসিন্দা ও মামলার ভিকটিম ধর্ষিত সোনিয়া আক্তার (২১)-এর বড় ভাই। ভিকটিম ভাঙ্গা মহিলা কলেজের ছাত্রী। আসামি বাবুল মোল্লা (২৬), পিতা-রুস্তম মোল্লা, অপর সহযোগী আসামি, শহিদুল ইসলাম (২৭), পিতা- ছামাদ মোল্লা, উভয় সাং-ভাবুকদিয়া, থানা-সালথা, জেলা-ফরিদপুর, ভিকটিমের দূর সম্পর্কের আত্মীয়। আসামি ভিকটিমকে বিভিন্ন সময়ে প্রেমের প্রস্তাব দিলেও ভিকটিম রাজি হয়নি। এরই ধারাবাহিকতায় আসামি বাবুল মোল্লা গত ২১/০৯/২০২৩ইং তারিখ বিকাল আনুমানিক ৫:০০টার সময় সহযোগী শহিদুলসহ ভিকটিমের বাড়িতে গিয়ে ফাঁকা বাড়ি পেয়ে ধারালো ছোরার ভয় দেখিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এ সময় ভিকটিমের চিৎকারে বাদীসহ অন্যান্য লোকজন এসে তাদের হাতেনাতে ধরে ফেলে। পরবর্তীতে আসামি বাবুল মোল্লা ও তার আত্মীয়স্বজনরা বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে মীমাংসা করে। বাদী ভিকটিমসহ গত ২৭/০৯/২৩ তারিখে আসামির বাড়িতে গেলে বিয়ে না করে ভিকটিমকে মারধর করে ফলে ভিকটিম আহত হয়ে গত ২৭/০৯/২৩ তারিখ হতে ০৩/০৯/২৩ তারিখ পর্যন্ত ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকেন। পরে ভিকটিম এর বড় ভাই বাদী হয়ে ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা থানায় তারিখ- ১৬/১০/২০২৩ইং, ধারা-নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০(সং/২০০৩) এর ৯(১)/৩০, মামলা নং-২০/৪৩৭-মুলে একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করলে আসামি আত্মগোপনে চলে যায়। উক্ত ঘটনায় থানা পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাব-১০, সিপিসি-৩, ফরিদপুর ক্যাম্প ছায়া তদন্তের পর আজকের অভিযানে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামি উক্ত ধর্ষণের সাথে তার সম্পৃক্ততার সত্যতা স্বীকার করেছে। সে মামলা রুজুর পর হতে রাজধানী ঢাকাসহ ফরিদপুরের বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপন করে ছিল বলে জানা যায়।

গ্রেফতারকৃত আসামীকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

অভিযান ৩ :
রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা হতে ছিনতাইকারী চক্রের অন্যতম মূলহোতা সুমনসহ ৩ জন ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০।

গতকাল ২৫ জানুয়ারি রাত ৮:৫০টায় র‌্যাব-১০ এর একটি দল রাজধানী ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকায় একটি আভিযানে ছিনতাইকারী চক্রের অন্যতম মূলহোতা মোঃ সুমন (২৫), পিতা-মৃত বাদল, সাং-হাসনাবাদ, থানা-দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, জেলা-ঢাকা (ভাসমান)সহ ০৩ জন ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত অপর দুইজনের নাম- মোঃ হাসান (২২), পিতা-মৃত নুর ইসলাম, সাং-মিরপুর দোয়ারীপাড়া, থানা-রুপনগর, ঢাকা (ভাসমান) ও মোঃ শাকিল (২০), পিতা-মৃত জাকির হোসেন, সাং-আলীনগর, থানা-অষ্টগ্রাম, জেলা-কিশোরগঞ্জ বলে জানা যায়। এসময় তাদের নিকট থেকে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত ২টি চাকু ও ১টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা বেশ কিছুদিনযাবৎ যাত্রাবাড়ীসহ রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় পথচারীদের ধারালো চাকুর ভয় দেখিয়ে টাকা-পয়সা ও মোবাইল ফোনসহ বিভিন্ন মূল্যবান সম্পদ ছিনতাই করে আসছিল। এছাড়াও গ্রেফতারকৃত সুমনের বিরুদ্ধে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী ও মুগদা থানায় ছিনতাই ও মাদকের একাধিক মামলা এবং গ্রেফতারকৃত হাসানের বিরুদ্ধে রাজধানীর সবুজবাগ থানায় ছিনতাই মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।

গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ছিনতাই মামলা দায়ের করে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।