দেশ

দেশ

র‌্যাবের সাঁড়াশি অভিযানে গ্রেফতার ৭ : বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য জব্দ

র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকেই দেশের সার্বিক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে সব ধরণের অপরাধীকে আইনের আওতায় নিয়ে আসার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। নিয়মিত জঙ্গী, সন্ত্রাসী, সংঘবদ্ধ অপরাধী, অস্ত্রধারী অপরাধী, ছিনতাইকারীসহ মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় গত চারদিনে সারাদেশে র‌্যাবের অব্যাহত অভিযানের ফলে পলাতক আসামি ও মাদক ব্যবসায়ীসহ ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে র‌্যাব-১০ এর মিডিয়া সেল থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে।

অভিযান-১
“চলো যাই যুদ্ধে, মাদকের বিরুদ্ধে” স্লোগানকে সামনে রেখে মাদক নির্মূলে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় র‌্যাবের মাদক বিরোধী অভিযানে ট্রাভেল ব্যাগে করে অভিনব কায়দায় ফেনসিডিল বহনকালে ১৪৭ বোতল ফেনসিডিলসহ দুই মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০।

গত ২৮ জানুয়ারি রাতে র‌্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাজধানী ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানার সাইনবোর্ড এলাকায় একটি অভিযান চালিয়ে ১৪৭ (একশত সাতচল্লিশ) বোতল ফেনসিডিলসহ দুইজন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের নাম ১। মোঃ আরিফ বিল্লাহ্ (৩৬), পিতা-মৃত শাহজাহান সিরাজ ও ২। মোঃ বিল্লাল হোসেন সবুজ (৩২), পিতা-মোঃ মকবুল হোসেন, উভয় সাং-শবদল, থানা-আদিতমারী, জেলা-লালমনিরহাট। এসময় তাদের নিকট থেকে মাদক বহনে ব্যবহৃত একটি ট্রাভেল ব্যাগ ও তিনটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা পেশাদার মাদক ব্যবসায়ী। তারা বেশ কিছুদিন যাবৎ দেশের বিভিন্ন সীমান্তবর্তী এলাকা হতে ফেনসিডিলসহ অন্যান্য মাদকদ্রব্য সংগ্রহ করে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করে আসছিল।

গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একটি মাদক মামলা দায়ের করে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

অভিযান-২
বরিশাল জেলার মুলাদী এলাকায় চাঞ্চল্যকর আকবর হত্যা মামলায় দীর্ঘ ছয়বছর যাবৎ পলাতক আসামি দিদার বেপারীকে রাজধানীর গেন্ডারিয়া এলাকা হতে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০।

গত ২৮ জানুয়ারি রাত ২০:২০টায় র‌্যাব-১০ এর একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাজধানী ঢাকার গেন্ডারিয়া থানাধীন মিলব্যারাক এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে। উক্ত অভিযানে বরিশাল জেলার মুলাদী থানার দণ্ডবিধি ১৪৩/৪৪৮/৪২৭/৩০২/১১৪/৩৪ ধারায় চাঞ্চল্যকর আকবর হাওলাদার (৫২) হত্যা মামলার (মামলা নং-০২/১৮) ওয়ারেন্টভুক্ত দীর্ঘ ছয়বছর যাবৎ পলাতক আসামি দিদার বেপারী (৩২), পিতা-দলিল উদ্দিন বেপারী, সাং-টুমচর, থানা-মুলাদী, জেলা-বরিশালকে গ্রেফতার করে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামি উল্লিখিত হত্যা মামলার পলাতক আসামি বলে স্বীকার করেছে। সে মামলা দায়েরের পর থেকে রাজধানীর গেন্ডারিয়াসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপন করে ছিল বলে জানা যায়।

গ্রেফতারকৃত আসামীকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

অভিযান-৩
ঢাকার সাভার এলাকায় চাঞ্চল্যকর ধর্ষণ মামলার পলাতক প্রধান আসামি সাকিলকে ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা এলাকা হতে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০।

গত ২৮ জানুয়ারি দুপুর ১২:০০টায় র‌্যাব-১০ এর একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা থানার পুকুরিয়া এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে ঢাকা জেলার সাভার মডেল থানায় ধারা-নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সং/২০০৩) এর ৯(১) (মামলা নং-২৮, তারিখ-০৮/০৬/২০২৩); নাবালিকা কিশোরি ধর্ষণ মামলার পলাতক প্রধান আসামি ধর্ষক মোঃ সাকিল শেখ (৩৩), পিতা-আশাদ শেখ, সাং-দত্তপাড়া, থানা ও জেলা-রাজবাড়ীকে গ্রেফতার করে।

মামলার বিবরণে জানা যায় যে, বাদী নাবালিকা ভিকটিম (১৪)-এর বড় বোন রংপুর জেলার মিঠাপুকুর এলাকার বাসিন্দা। ভিকটিমের বড় বোন ও দুলাভাই উভয়ই রাজধানী ঢাকার একটি গার্মেন্টসে শ্রমিক হিসাবে চাকরি করেন। সেই সুবাদে তারা ঢাকার সাভার এলাকার একটি বাসায় ভাড়া থাকেন। ভিকটিম তার বড় বোনের সাথে উক্ত বাসায় থাকে। গ্রেফতারকৃত সাকিল একই বাসায় ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করে আসছিল। ভিকটিমের বড় বোন ও দুলাভাই যখন কাজের উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বেরিয়ে যেত ভিকটিম প্রায়ই বাসায় একা থাকতো। সাকিল বিভিন্ন সময়ে ভিকটিমকে প্রেমের প্রস্তাব দিলেও ভিকটিম সাকিলের প্রস্তাবে রাজি হয়নি। গত ০৫/০৬/২০২৩ তারিখ অনুমানিক রাত ১০:০০টায় সাকিল নাবালিকা ভিকটিম (১৪)’কে ফুঁসলিয়ে তার নিজ কক্ষে নিয়ে গিয়ে বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি দেখিয়ে ভিকটিমের ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোড়পূর্বক ধর্ষণ করে এবং ভিকটিম যদি কাউকে এই ঘটনা বলে তাহলে প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করে। পরবর্তীতে বড় বোন ঘটনাটি জানতে পেরে ঢাকা জেলার সাভার মডেল থানায় ধর্ষক সাকিলের বিরুদ্ধে একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। মামলার বিষয়টি জানতে পেরে আসামী ধর্ষক সাকিল আত্মগোপনে চলে যায়।

গ্রেফতারকৃত আসামিকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

অভিযান-৩
মোটরসাইকেলে করে অভিনব কায়দায় ফেনসিডিল বহনকালে ফরিদপুর জেলার মধুখালী এলাকা হতে ১৫২ বোতল ফেনসিডিলসহ দুই মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০। মাদক পরিবহনে ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়।

“চলো যাই যুদ্ধে, মাদকের বিরুদ্ধে” স্লোগানকে সামনে রেখে গত ২৯ জানুয়ারি বিকালে র‌্যাব-১০ এর একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ফরিদপুর জেলার মধুখালী থানাধীন সেনখালী ব্রীজ সংলগ্ন এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে ১৫২ (একশত বায়ান্ন) বোতল ফেনসিডিলসহ দুইজন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের নাম ১। মোঃ জাবেদ আলী (৩৮), পিতা-মোঃ আবেদ আলী, সাং-দর্শনা কলেজ পাড়া, থানা-দর্শনা, জেলা-চুয়াডাঙ্গা ও ২। বাক প্রতিবন্ধি মোঃ ইকবাল হোসেন (২৫), পিতা-মোঃ নবী মিয়া, সাং-পুরাতন বাজার, থানা-দর্শনা, জেলা-চুয়াডাঙ্গা। এসময় তাদের নিকট থেকে মাদক বহনে ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল জব্দ এবং একটি ব্যাগ ও তিনটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা পেশাদার মাদক ব্যবসায়ী। তারা বেশ কিছুদিন যাবৎ দেশের বিভিন্ন সীমান্তবর্তী এলাকা হতে ফেনসিডিলসহ অন্যান্য মাদকদ্রব্য সংগ্রহ করে রাজধানী ঢাকা ও ফরিদপুরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করে আসছিল।

গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মাদক মামলা দায়ের করে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

অভিযান-৪
হত্যা মামলায় দীর্ঘদিন যাবৎ পলাতক আসামি রিফাতকে মুন্সিগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান এলাকা হতে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০।

গত ২৯ জানুয়ারি দুপুর ২:৩০টায় র‌্যাব-১০ এর একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মুন্সিগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান থানার নিমতলা এলাকায় একটি অভিযান চালিয়ে মুন্সিগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান থানার হত্যা মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত দীর্ঘদিন যাবৎ পলাতক আসামি রিফাত (২০), পিতা-মৃত মোহর আলী, সাং-রামকৃষ্ণদি, থানা-সিরাজদিখান, জেলা-মুন্সিগঞ্জকে গ্রেফতার করে।
(মামলা নং-০৭, তারিখ-১৭/১২/২০১৬ খ্রিঃ, সিআর-২৫৪/১৬, সেসন-৪৯/১৯, দণ্ডবিধি ৩০২/২০১/৩৪ ধারা)।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে, গ্রেফতারকৃত আসামি উল্লিখিত হত্যা মামলার পলাতক আসামি বলে স্বীকার করেছে। সে মামলা দায়েরের পর থেকে রাজধানী ঢাকা ও মুন্সিগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপন করে ছিল বলে জানা যায়।

গ্রেফতারকৃত আসামীকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

বিষয়:
পরবর্তী খবর

বসুন্ধরা পারলে কেন সিটি করপোরেশন পারবে না

ভোররাত থেকে বৃষ্টি হচ্ছিল। সারা রাত আকাশে মেঘ ছিল। আষাঢ় শেষ হয়ে আসছে। বর্ষাকাল। এখন এরকমই হওয়ার কথা। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হবে হঠাৎ করেই। ঝুপ ঝুপ করে নামবে বৃষ্টি। কখনও থেকে থেকে, কখনও অবিরাম। এ বছরের বর্ষায় প্রবল বৃষ্টি হতে পারে, আবহাওয়াবিদরা পূর্বাভাস দিয়েছিলেন। জলবায়ু পরিবর্তন এখন পৃথিবীর সবচাইতে বড় সমস্যা। যেদিন আমরা পিছনে ফেলে এসেছি, যে আবহাওয়ায় বড় হয়েছি, সেই আবহাওয়া এখন আর নেই। শীতের দেশগুলোতে তীব্র গরম পড়ছে। শীতকালে শীত পড়ছে আগের তুলনায় বেশি। বরফের পাহাড় গলে যাচ্ছে আন্টার্টিকায়। দাবানলে পুড়ছে আমেরিকার বনভূমি। প্রকৃতি উল্টো-পাল্টা হয়ে গেছে। বদলে গেছে বহু কিছু।

এ বছরের গ্রীষ্মে প্রচণ্ড গরম পড়েছিল। মানুষের হাঁসফাঁস অবস্থা। জীবজগৎ বিপর্যস্ত। আবহাওয়াবিদরা বলেছিলেন, বর্ষায় প্রবল বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। ক’দিন আগে তাই হলো। ভোররাত থেকে বৃষ্টি। সকাল দশটা এগারোটা পর্যস্ত থামার নাম নেই। আকাশ অন্ধকার হয়ে আছে। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ছায়াময় পরিবেশ। আমি একটু বেলা করে উঠেছি। মধ্যমাত্রার বৃষ্টি তখনও ঝরছে। দুপুর নাগাদ টেলিভিশন আর অনলাইনগুলো দেখে হতভম্ব হয়ে গেলাম। ঢাকা শহরের বহু এলাকা বৃষ্টির পানিতে ডুবে গেছে। রিকশার পাদানিতে উঠে গেছে পানি। বাসের চাকা ডুবে গেছে। প্রাইভেটকার ডুবে গেছে, জেগে আছে শুধু গাড়ির ছাদটুকু। নিউমার্কেট আর কাঁটাবন এলাকার দোকানপাটের ভিতর কোমর পানি। ছোট আর মাঝারি ব্যবসায়ীরা পড়ে গেছেন ব্যাপক সংকটে। দোকানের মালামাল রক্ষা করতে পারেননি। সব ভেসে গেছে বৃষ্টিতে। শত কোটি টাকার ক্ষতি হয়ে গেছে।

অন্যদিকে মানুষের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ। কর্মস্থলে যাওয়া মানুষ, বাড়ি ফেরার মানুষ, ছাত্র-ছাত্রী প্রত্যেকেই পড়েছে চরম দুর্ভোগে। গাড়ি চলছে না। হেঁটে বাড়ি ফিরছে মানুষ। তাদের কোমরের ওপর পর্যন্ত পানি। পুরান ঢাকার অলিগলি রাজপথ ডুবে গেছে। ঘরে ঢুকে গেছে পানি। মানুষ দিশেহারা। এ অবস্থা কেমন করে সামাল দেবে? এক বেলার বৃষ্টিতে জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত। অথচ কোটি কোটি টাকা খরচ করা হচ্ছে ঢাকা শহরের পানি নিষ্কাশনের জন্য। কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। বৃষ্টি হলেই ডুবছে রাস্তাঘাট। বিপাকে পড়ছে মানুষ। আবহাওয়াবিদদের সাবধানতা বা ভবিষ্যদ্বাণী সিটি করপোরেশন দুটো সেভাবে মনে রাখেনি। মনে রেখে আগাম ব্যবস্থা নিলে শহরবাসী এরকম বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ত না। এই বিষয়ে দুই মেয়রের তীক্ষ্ণ নজর থাকা জরুরি ছিল। ঢাকার খালগুলো প্রায় সবই বুজে গেছে। দখল হয়ে গেছে। সবই আছে খালগুলোতে, শুধু পানিটাই নেই। পানির প্রবাহ বলতে কিছু নেই। ময়লা আবর্জনার ভাগাড় হয়ে গেছে একেকটা খাল। মেয়র মহোদয়দের দেখি, প্রায়ই খাল উদ্ধারের অভিযান করছেন। দু-একটা খাল দখল মুক্তও করছেন। তারপর আর খবর নেই। আগের মতো দখল হয়ে যাচ্ছে। আরেক মহাশত্রু হয়েছে পলিথিন। এই জিনিসের কোনও বিনাশ নেই। শুধুমাত্র পলিথিনই ডুবিয়ে দিচ্ছে অনেক অর্জন। এই বিষয়টি নিয়ে সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের সচেতন হওয়া জরুরি। পলিথিনের হাত থেকে বাঁচাতে হবে দেশ। পলিথিনের বিকল্প ব্যবস্থা কাজে লাগাতে হবে। এক্ষেত্রে সরকার ও মিডিয়া মিলে জনসচেতনা গড়ে তোলা জরুরি। মানুষ সচেতন হলে সমাজ পরিশিলিত হয়। গত তিরিশ পঁয়ত্রিশ বছর ধরে ধীরে ধীরে গড়ে উঠছিল বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা। এখন বসুন্ধরা ঢাকার সবচাইতে অভিজাত এলাকা। সবচাইতে আকর্ষণীয় এলাকা। বসুন্ধরায় কারও একটি ফ্ল্যাট বা কারও এক টুকরো জমি থাকলে তিনি খুব গৌরববোধ করেন। বসুন্ধরার মতো সুবিন্যস্ত আবাসিক এলাকা ঢাকায় আর নেই। এলাকাটির পরিকল্পনা করা হয়েছে সম্পূর্ণতই ইউরোপ-আমেরিকার ঘনবসতিপূর্ণ শহরগুলোর লাগোয়া অতি আধুনিক আবাসিক শহরগুলোর মতো করে। সুপরিকল্পিত ও সুব্যবস্থাপূর্ণ। বড় বড় রাস্তা। রাস্তার ধার আর আইল্যান্ডগুলো সবুজ গাছপালায় ভর্তি। রাজউকের বিল্ডিংকোড মেনে নির্মিত প্রতিটি বাড়ি। সঙ্গে আছে বসুন্ধরার নিজস্ব কঠোর তদারকি। নিয়মের বাইরে একটি ইটও বসানো যাবে না। একটি গাছের পাতাও ছেঁড়া যাবে না। অন্যদিকে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পুরুষমানুষরা তো বটেই, নারী ও শিশুরা চাইলেও রাত দুপুরে বাড়ির বাইরে বেড়াতে বেরোতে পারে। ডিস্টার্ব করা তো দূরের কথা, চোখ তুলেও তাকাবার সাহস পাবে না কেউ। নিরাপত্তায় নিয়োজিত গাড়িভর্তি কর্মী চব্বিশঘণ্টা টহল দিচ্ছে। ঢাকার ভিতরেই বসুন্ধরা সম্পূর্ণ এক আলাদা জগৎ। স্বপ্নের বাসভূমি। এটা সম্ভব হয়েছে সুপরিকল্পনা ও তা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন আর প্রয়োগের ফলে। গত কয়েক বছর আগে বর্ষার বৃষ্টিতে বসুন্ধরার কোথাও কোথাও পানি জমে যেত। এই নিয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করলেন কর্তৃপক্ষ। সুদূর প্রসারী আধুনিক পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে রাতারাতি সামাল দিলেন সেই সমস্যা। গড়ে তুললেন অত্যাধুনিক ড্রেনেজ ব্যবস্থা। যত বৃষ্টিই হোক, বসুন্ধরায় এখন আর পানি জমে না। জোরালো ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে বৃষ্টির পানি এক মিনিটও দাঁড়াতে পারে না। সঙ্গে আছে এলাকার ড্রেনগুলোর সঠিক তদারকি। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বহুকর্মী নিয়োজিত এই কাজে। কী নেই বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায়? হাসপাতাল, বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুল, খেলার মাঠ, শপিং মল, সুন্দর সুন্দর মসজিদ, গোরস্থান, অতি আধুনিক সব রেস্টুরেন্ট। এক কথায় সব মিলিয়ে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা বর্তমান বিশ্বের অতি আধুনিক এক মনোরম শহর। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা নিয়ে কথাগুলো বলার কারণ, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মেয়র মহোদয়দের দৃষ্টি আকর্ষণ করা। বসুন্ধরায় ড্রেনেজ ব্যবস্থার অনুকরণ করে তাঁরা খুব সহজেই হঠাৎ বৃষ্টিতে জলাবদ্ধ হয়ে যাওয়া ঢাকা শহরকে অনেকখানি মুক্তি দিতে পারেন। মানুষকে দুর্ভোগ মুক্ত করতে পারেন, ব্যবসায়ীদের বাঁচাতে পারেন ক্ষতির হাত থেকে। ছাত্র-ছাত্রী আর পথচলা মানুষদের চলাচল নির্বিঘ্ন করতে পারেন। বৃষ্টির তোড়ে হঠাৎ অসহায় হয়ে পড়া গৃহবাসীদের সুরক্ষা দিতে পারেন। এই শহরের মানুষকে স্বস্তিতে বসবাস করার সুযোগ করে দিতে পারেন। এসব তাঁদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। বিষয়টি নিয়ে নিশ্চয় তাঁরা ভাববেন। তাঁদের চোখের সামনেই তো উদাহরণ হিসেবে আছে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা।

পরবর্তী খবর

নওগাঁর ধামইরহাটে পানিতে ডুবে দুই ভাইয়ের মৃত্যু

নওগাঁর ধামইরহাটে পুকুরের পানিতে ডুবে যমজ দুই ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে।

রোববার (৭ জুলাই) দুপুর ১২টায় উপজেলার খেলনা ইউনিয়নের পশ্চিম চকভবানী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য আবু সালাম।

নিতহ দুই শিশু– লক্ষণ (৩) ও রাম (৩)। তারা উভয়ে একই গ্রামের সুজিত ওরাওঁ-এর যমজ সন্তান।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আবু সালাম বলেন, সকালের খাবার খেয়ে ওই দুই ভাই বাড়ির পাশে খেলতে থাকে। খেলার একপর্যায়ে সবার অগোচরে দুই ভাই বাড়ির সামনে পুকুরে ডুবে যায়। পরে তাদের খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে দুজনের লাশ পুকুরে ভাসমান অবস্থায় দেখতে পান স্থানীয়রা।

যমজ দুই ভাইয়ের মর্মান্তিক মৃত্যুতে পরিবারের সদস্য এবং প্রতিবেশীদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

ধামইরহাট থানায় অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. বাহাউদ্দিন ফারুকী বলেন, দুই শিশু পানিতে ডুবে মারা যাওয়ার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, খেলতে গিয়েই তারা পানিতে ডুবে মারা গেছে। এ বিষয়ে থানায় কোন অভিযোগ করা হয়নি।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত