নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার নাওড়া গ্রামে নিরীহ মানুষের উপর আবারো হামলা ও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এতে ৮ জন গুলিবিদ্ধসহ মোট ১৬ জন আহত হয়েছে। সোমবার দুপুর আড়াইটার দিকে হামলার ঘটনা ঘটে। এর আগে ২৯ জানুয়ারি রফিক বাহিনীর হামলায় ৮ জন ছররা গুলিবিদ্ধ হয়। ওইসময় নারী-শিশুসহ ১৩ জন আহত হয়। আন্ডা রফিকের ভাই মিজানের নেতৃত্বে প্রকাশ্যে ছোড়া হয় গুলি এবং হামলা চালানো হয় বলে গুলিবিদ্ধরা অভিযোগ করেন।
স্থানীয়রা বলছেন, জমি দখলের উদ্দেশ্যে রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান ও কায়েতপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ রফিকুল ইসলামের পালিত স্বশস্ত্র ৬০ থেকে ৭০ জন সন্ত্রাসী এ হামলা চালিয়েছে। কায়েতপাড়ার ১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি নাওড়া গ্রামের হাজী মোতালেব ভূঁইয়ার বাড়িতে প্রথমে হামলার ঘটনা ঘটে। যা পরে পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে।
এদিকে, হাজী মোতালেব ভূঁইয়ার বাড়িতে হামলার পর বিকালে তার ছেলে মোশারফ হোসেনের গাড়িতে হামলা করে সন্ত্রাসীরা। এ সময় তার গাড়িতে গুলি চালায় তারা। এ প্রসঙ্গে গাড়িতে গুলির দাগ দেখিয়ে মোশারফ হোসেন বলেন, পূর্বাচলের ৩০০ ফিট রাস্তা দিয়ে কুড়িলের দিকে যাচ্ছিলাম। তখন রফিকের ছোট ভাই মিজানের নেতৃত্বে সন্ত্রীসীরা আমার গাড়িতে গুলি চালায়। গাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হলেও আল্লাহ রহমতে আমার কিছু হয়নি।
জানা যায়, বাড়িতে হামলার ঘটনায় হাজী মোতালেব ভূঁইয়ার দুই ছেলে আনোয়ার হোসেন ও সাখাওয়াত হোসেনসহ ৮ জন ছররা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ অন্যরা হলেন ওয়াসিম প্রধান, রিফাত প্রধান, পুলক প্রধান, আব্দুস সোবহান প্রধান, রুবেল হোসেন ও মোহাম্মদ শামীম। এছাড়াও দেশীয় অস্ত্র, ইটের আঘাতে আহত হয়েছে একই গ্রামের মোঃ সাগর, আব্দুল মান্নান, মোহাম্মাদ রিফাত, কবির হোসেন, জুলহাজ উদ্দিন, শামীম হোসেন, মোক্তার মিয়া ও মোঃ সোবাহান। হামলায় বেশকিছু বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়। এসময় বাড়ির প্রাচীর ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে ঘরের মালামাল লুট করা হয়। ঘন্টাব্যাপী এই হামলায় ৩ নারীও আহত হন। তারা হচ্ছেন, একই গ্রামের জেসমিন আরা, নাসরিন আরা ও শেফালী বেগম। হামলা শিকার এই তিন নারী স্থানীয় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। গুলিবিদ্ধ রিফাত প্রধান রুপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। আহতদের অন্যন্যারা সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হলে হামলার শিকার হওয়ার আশঙ্কায় স্থানীয় কিছু ক্লিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছে বলে জানা গেছে।
সরেজমিনে গেলে ভুক্তভোগীরা জানান, সোমবার বেলা আড়াইটার দিকে রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান মোঃ রফিকুল ইসলামের সহযোগী একাধিক মামলার আসামি স্বশস্ত্র সন্ত্রাসী মোজাম্মেল হকের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা আওয়ামী লীগ নেতা মোতালেব ভূঁইয়ার বাড়িতে হাজির হয়। এসময় সন্ত্রাসীদের হাতে দেশি-বিদেশি পিস্তল, রামদা, চাইনিজ কুড়ালসহ ধারালো অস্ত্র ছিল। আড়াইটার দিকে সন্ত্রাসীরা সেখানে হাজির হয়েই অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় তারা বাড়িঘর দখলের চেষ্টা চালায়। এতে বাড়ির সদস্য আনোয়ার হোসেন (৩৮), সাখাওয়াত হোসেন (৩৭), ওয়াসিম প্রধান (৪১), রিফাত প্রধান (২৭), পুলক প্রধান (৩০), আব্দুস সোবহান প্রধান (২৮), রুবেল হোসেন (২৮) ও মোহাম্মদ শামীম (২৭) গুলিবিদ্ধ হন।
মোতালেব হোসেনের ছেলে আনোয়ার হোসেন জানান, হামলাকারীদের মধ্যে ছিল রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান মোঃ রফিকুল ইসলামের সহযোগী সন্ত্রাসী মাহফুজুর রহমান, মোঃ ফয়সাল আহমেদ, সাব্বির হোসেন, মিনারুল ইসলাম, মোঃ রুবেল, মোজাম্মেল হোসেন, মোহাম্মদ আরিফ, মাহাতিম হোসেন, নাজমুল হোসেন, আব্দুর রহমান, মন্নান, জাহাঙ্গীর হোসেন, শিপলু হোসেন ও আলাদিন হোসেন আলালসহ ৬০ থেকে ৭০ জন সন্ত্রাসী। তাদের অধিকাংশের হাতে ছিল দেশি-বিদেশি পিস্তল, রামদা, চাইনিজ কুড়ালসহ ধারালো অস্ত্র।
হামলার শিকার ওয়াসিম প্রধান বলেন, আমরা দুপুর বেলা বাড়িতে খানাপিনা করছিলাম। এ সময় সশস্ত্র সন্ত্রাসী আমাদের ওপর হামলে পড়ে। আমরা কোন কিছু বুঝে উঠতে না পেরে দিক-বিদিক ছোটাছুটি করি। বাধ্য হয়ে বাড়ির ভিতরে আশ্রয় নিলে তারা দেয়াল ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে গুলি শুরু করে। তিনি বলেন, হামলার সময় সন্ত্রাসীদের পিছনের দিকে পুলিশও ছিল। ঘণ্টাব্যাপি হামলা শেষে সন্ত্রাসীরা নিরাপদে সরে গেলে পুলিশ সামনে আসে। প্রকাশ্যে পুলিশের সামনেই পুরো হামলার ঘটনা ঘটে। আমরা বারবার পুলিশের সহযোগিতা চেয়েছি, তারা তাতে কর্ণপাত করেনি।
হামলার শিকার নাওড়া গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমান নিরব জানান, আমাদের ওপর হঠাৎ করে অতর্কিত হামলা চালানো হয়েছে। রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম তার ক্যাডারদের দিয়ে সশস্ত্র প্রস্তুতি সহ হামলা করেছে। এর আগেও গত ২৯ জানুয়ারি বেলা ১১টার দিকে এবং একই দিন বিকেল ৫টার দিকে দুই দফা আমাদের উপর হামলা করা হয়েছিল। সেই ঘটনায় আমরা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কোন সহযোগিতা পাইনি। তিনি বলেন, ৩০ জানুয়ারি আমরা থানায় অভিযোগ দিলেও পুলিশ মামলা নেয়নি। এখন আবারো হামলা হয়েছে। পুলিশের নিস্ক্রিয়তায় সন্ত্রাসীরা বারবার আমাদের উপর হামলা করেছে, লুটপাট করছে।
এ বিষয়ে জানতে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহার মুঠোফোনে বারবার কল করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।
রাজধানীর ধানমণ্ডির বিজিবি সীমান্ত সম্ভার শপিং কমপ্লেক্সের একটি স্বর্ণের দোকানে সংঘটিত চাঞ্চল্যকর চুরির ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন মো. রুবেল (২৮), সফিক ওরফে সোহেল (৩৫) এবং সাদ্দাম হোসেন (৩১)। এ সময় তাদের কাছ থেকে চুরি যাওয়া ৫০ ভরি আট আনা স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়, যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা।
ডিবি সূত্রে জানা যায়, ধানমণ্ডি মডেল থানাধীন ‘ক্রাউন ডায়মন্ড এন্ড জুয়েলার্স’ শোরুমে গত ৩ জানুয়ারি বেলা ১টার দিকে চুরির ঘটনা ঘটে। চোরচক্র অভিনব পদ্ধতিতে শো-রুমের তালা ও সাটার কেটে মাত্র আট মিনিটের মধ্যে ১৫৯ ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে পালিয়ে যায়। দোকানের মালিক কাজী আকাশ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন, যেখানে চুরি যাওয়া স্বর্ণালংকারের আনুমানিক মূল্য প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা উল্লেখ করা হয়।
মামলার প্রেক্ষিতে ডিবি পুলিশ তদন্ত শুরু করে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ৯ জানুয়ারি থেকে ডিবি পুলিশ ধারাবাহিক অভিযান চালায়। কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে প্রথমে মো. রুবেলকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কুমিল্লার দেবীদ্বার থেকে সফিক ওরফে সোহেল এবং মুরাদনগর থেকে সাদ্দাম হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে ২৮ ভরি ১৪ আনা আসল স্বর্ণ এবং ২১ ভরি ১০ আনা গলিত স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়। ডিবি সূত্রে আরও জানা যায়, চুরির ঘটনায় জড়িত চক্রের অন্যান্য সদস্যদের শনাক্ত করা হয়েছে এবং তাদের গ্রেফতার ও অবশিষ্ট স্বর্ণ উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ডিএমপি’র উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান পিপিএম জানান, এই চক্র অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে পরিকল্পনা করে চুরি সংঘটিত করে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে জনগণের আস্থা অক্ষুণ্ণ রাখতে সক্ষম হয়েছে।
চড়া দামের কারণে নিম্নবিত্ত থেকে মধ্যবিত্ত অনেক মানুষ পুরো এক কেজি মাংস কিনতে পারছে না। এমন ক্রেতাদের সুবিধার্থে এবার ২৫০ গ্রাম গরুর মাংসও বিক্রি হবে নওগাঁর পোরশায়। সরকারি ব্যবস্থাপনায় ন্যায্যমূল্যের দোকানে গরুর মাংস বিক্রি কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়েছে।
শুক্রবার (১৩ই ডিসেম্বর) সকাল আটটার দিকে এ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফ আদনান।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের সহযোগিতায় ও জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল আউয়ালের নির্দেশে ন্যায্যমূল্যে গরুর মাংস বিক্রির এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এ সময় উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির, বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন।
এ প্রসঙ্গে ইউ এন ও আরিফ আদনান বলেন, জেলা প্রশাসকের দিকনির্দেশনায় ন্যায্য মূল্যের মাংসের দোকান চালু করা হয়েছে । এই দোকানে প্রতি কেজি ৬০০ টাকা দরে ক্রেতাগণ কিনতে পারবেন এবং গরিব জনগণ ২৫০ গ্রাম থেকে গরুর মাংস কিনতে পারবেন বলে জানান ইউ এন ওআরিফ আদনান।