দেশ

দেশ

র‌্যাবের পৃথক অভিযানে ডাকাতসহ গ্রেফতার ১২

আইন শৃংখলা রক্ষায় অপরাধীদের গ্রেফতারে সারাদেশে র‌্যাবের অভিযান জোরদার করা হয়েছে। এর ফলে পৃথক অভিযানে ৮ জন ডাকাত এবং ৪ জন ছিনতাইকারী গ্রেফতার করা হয়েছে বলে র‌্যাব-১০ এর মিডিয়া সেল থেকে জানানো হয়েছে।

অভিযান-১:
ঢাকার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ এলাকা হতে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে দেশীয় অস্ত্রসহ আন্তঃজেলা ডাকাত চক্রের মূলহোতাসহ ডাকাত দলের সাত জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০ ।

গত ৩ ফেব্রুয়ারি রাতে র‌্যাব-১০ এর একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানাধীন আব্দুল্লাহ্পুর এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে। উক্ত অভিযানে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে দেশীয় অস্ত্রসহ ডাকাত দলের সাত সদস্যকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের নাম ১। মোঃ আনোয়ার হোসেন (৪৫), পিতা-মোঃ লালচাঁন মিয়া, সাং-পুরাতন সোনাকান্দা (পশ্চিমহাটি), থানা-কেরাণীগঞ্জ মডেল, জেলা-ঢাকা, ২। মোঃ মাহমুদুল হাসান (৩১), পিতা-মোঃ হানিফ হাওলাদার, সাং- শাহজাদপুর, থানা-ভাটারা, ঢাকা, ৩। মোঃ হিরা রহমান বিজয় (২০), পিতা-মোঃ রহিম উদ্দিন, সাং-রংমেহার, পশ্চিমপাড়া, থানা-টঙ্গীবাড়ী, জেলা-মুন্সিগঞ্জ, ৪। মোঃ খোকন মাল (৩৩) পিতা-মোঃ শুক্কুর মাল, সাং-মুন্সিগ্রাম, থানা-সদরপুর, জেলা-ফরিদপুর, ৫। মোঃ জুয়েল (২৭), পিতা-মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন, সাং-আমখোলা, থানা-গলাচিপা, জেলা-পটুয়াখালী, ৬। মোঃ সাগর (২৬), পিতা-মোঃ চাঁন মিয়া, সাং-পাথরঘাটা থানা-সিরাজদীখান, জেলা-মুন্সিগঞ্জ ও ৭। মোঃ ফয়সাল আহম্মেদ রাসেল (২৫), পিতা-মৃত সোলায়মান আহথানা-ভাটারা, ঢাকা বলে জানা যায়। এ সময় তাদের নিকট থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত ০১টি প্রাইভেটকার, ০১টি পিকআপ, ০৩টি ছোড়া, ০১টি ডেগার, ০১টি লোহার রড, ০১টি প্লাস্টিকের পাইপ, ০১টি কাঠের লাঠি, ০২টি রশি ও ০২টি গামছা জব্দ করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য। তারা বেশ কিছুদিন যাবৎ ঢাকার কেরাণীগঞ্জসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় দেশীয় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ডাকাতি ও মাদক ব্যবসা করে আসছিল। এছাড়া তারা ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন সময়ে যানবাহন থামিয়ে দেশীয় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ডাকাতি করে সেখান থেকে দ্রুত পালিয়ে যেত বলে জানা যায়।

গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একটি ডাকাতি প্রস্তুতির মামলা দায়ের করে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

অভিযান-২:

যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত দীর্ঘ ১০ বছর যাবৎ পলাতক আসামী নুর ইসলাম বাবু’কে যশোর জেলার কোতোয়ালী এলাকা হতে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব ।

গত ৩ ফেব্রুয়ারি দুপুর ২:০০টায় র‌্যাব-১০ এর একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে যশোর জেলার কোতোয়ালী থানাধীন বেজপাড়া এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে। উক্ত অভিযানে জিআর সাজা-২৯৬/১৪, ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা থানার মামলা নং-২৫(০৯)১৪, ধারা-১৯৯০ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনের ১৯(১) টেবিলের ৩(খ); মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত সাজা ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামী নুর ইসলাম বাবু (৫৬) পিতা-মোঃ মুনসুর আলি শেখ, সাং-কাউরিয়া রেইলগেট ঋষিপাড়া, থানা-ঝিকরগাছা, জেলা-যশোর’কে গ্রেফতার করে।

আসামি একজন আন্তঃজেলা মাদক কারবারি। সে দেশের সীমান্তবর্তী জেলা যশোর এর বিভিন্ন বর্ডার এলাকা থেকে চোরাই পথে মাদকদ্রব্য এনে যশোর, ফরিদপুর সহ আশপাশের বিভিন্ন জেলার বিভিন্ন থানা এলাকায় বিক্রয় করত। তার নামে যশোর ও ফরিদপুর জেলার বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা বিদ্যমান আছে। সে বিভিন্ন সময় ছদ্মনাম ব্যবহার করলেও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে মাদকসহ হাতেনাতে ধরা পড়ে।

আসামি এর আগে ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা থানার মামলা নং-২৫, তারিখ-১৯/০৯/২০১৪ইং, ধারা- ১৯৯০ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন এর ১৯(১) টেবিল ৩(খ), মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে, গ্রেফতারকৃত ব্যক্তি উক্ত মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি বলে স্বীকার করেছে। সে জামিনে মুক্ত হয়ে দীর্ঘ ১০ (দশ) বছর ধরে বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপনে ছিল।

গ্রেফতারকৃত আসামিকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

অভিযান-৩:
দুই বছরের সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি কুখ্যাত ডাকাত মোঃ রুবেল ওরফে রুস্তম’কে রাজধানীর কদমতলী এলাকা হতে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।

গত ৩ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৭:৪৫টায় র‌্যাব-১০ এর একটি চৌকস দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাজধানী ঢাকার কদমতলী এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে আসামী কুখ্যাত ডাকাত মোঃ রুবেল ওরফে রুস্তম’ (৩৮) পিতা-আশরাফ আলী শিকদার, সাং-রঘুনাথপুর, থানা-বাকেরগঞ্জ, জেলা-বরিশাল’কে গ্রেফতার করে। তার বিরুদ্ধে গুলাশান থানার মামলা নং-৪৩(১১)১৩ জিআর ৪০৯/১৩, ধারা-দ্রুত বিচার আইন ৪, ২। খিলগাঁও থানার মামলা নং-১৯(১২)১৫, দায়রা মামলা নং-১৮২৮৪/২০১৭, ৩। শাহবাগ থানার মামলা নং-৪(৯)২২ জিআর ৩৮০/২২, ধারা-৩৯৫/৩৯৭/৪১২ পেনাল কোড, ৪। খিলগাঁও থানার মামলা নং-৩৩(১২)১৫, ধারা-১৭০ দঃবিঃ, ৫। মোহাম্মদপুর থানার মামলা নং -৭২(৭)২১, বিআর ৯৩৫/২১, ধারা-১৭০/১৭১/৩৯৯/৪০২ দঃবিঃ; সহ কয়েকটি মামলা চলমান। সে উল্লেখিত ১ নং মামলায় ০২ বছরের সাজাপ্রাপ্ত সাজা ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে, সে উল্লেখিত মামলায় সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি বলে স্বীকার করেছে। সে মামলার পর বিভিন্ন সময় পুলিশের হাতে গ্রেফতার হলেও পরবর্তীতে আদালত থেকে জামিনে বেরিয়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপন করে ছিল। তার বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।

গ্রেফতারকৃত আসামিকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

অভিযান-৪:

র‌্যাব এর পৃথক অভিযানে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী ও কদমতলী এলাকা হতে ০৩ জন ছিনতাইকারী গ্রেফতার।

গত ০৩ ফেব্রুয়ারি র‌্যাব -১০ এর একটি চৌকস দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাজধানী ঢাকার যাত্রাবাড়ী ও কদমতলী এলাকায় দুইটি পৃথক অভিযান চালিয়ে ০৩ জন ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের নাম ১। মোঃ অপু (১৯), পিতা-মোঃ সবুজ মিয়া, সাং-আগরপুর, থানা-কুলিয়ারচর, জেলা-কিশোরগঞ্জ, ২। মোঃ দানেশ (২৮), পিতা-ইউনুস, সাং-চিকনদি, থানা-পালং, জেলা-শরিয়তপুর ও ৩। রিয়াজ (৩৩), পিতা-মৃত হোসেন ব্যাপারী, সাং-রহমানের হাট, থানা-মেহেন্দীগঞ্জ, জেলা-বরিশাল বলে জানা যায়। এ সময় তাদের নিকট থেকে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত ০৩টি চাকু উদ্ধার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা বেশ কিছুদিন যাবৎ যাত্রাবাড়ী ও কদমতলীসহ রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় পথচারীদের ধারালো চাকুর ভয় দেখিয়ে টাকা-পয়সা ও মোবাইল ফোনসহ বিভিন্ন মূল্যবান সম্পদ ছিনতাই করে আসছিল।

গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পৃথক ছিনতাই মামলা দায়ের করে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

বিষয়:
পরবর্তী খবর

বসুন্ধরা পারলে কেন সিটি করপোরেশন পারবে না

ভোররাত থেকে বৃষ্টি হচ্ছিল। সারা রাত আকাশে মেঘ ছিল। আষাঢ় শেষ হয়ে আসছে। বর্ষাকাল। এখন এরকমই হওয়ার কথা। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হবে হঠাৎ করেই। ঝুপ ঝুপ করে নামবে বৃষ্টি। কখনও থেকে থেকে, কখনও অবিরাম। এ বছরের বর্ষায় প্রবল বৃষ্টি হতে পারে, আবহাওয়াবিদরা পূর্বাভাস দিয়েছিলেন। জলবায়ু পরিবর্তন এখন পৃথিবীর সবচাইতে বড় সমস্যা। যেদিন আমরা পিছনে ফেলে এসেছি, যে আবহাওয়ায় বড় হয়েছি, সেই আবহাওয়া এখন আর নেই। শীতের দেশগুলোতে তীব্র গরম পড়ছে। শীতকালে শীত পড়ছে আগের তুলনায় বেশি। বরফের পাহাড় গলে যাচ্ছে আন্টার্টিকায়। দাবানলে পুড়ছে আমেরিকার বনভূমি। প্রকৃতি উল্টো-পাল্টা হয়ে গেছে। বদলে গেছে বহু কিছু।

এ বছরের গ্রীষ্মে প্রচণ্ড গরম পড়েছিল। মানুষের হাঁসফাঁস অবস্থা। জীবজগৎ বিপর্যস্ত। আবহাওয়াবিদরা বলেছিলেন, বর্ষায় প্রবল বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। ক’দিন আগে তাই হলো। ভোররাত থেকে বৃষ্টি। সকাল দশটা এগারোটা পর্যস্ত থামার নাম নেই। আকাশ অন্ধকার হয়ে আছে। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ছায়াময় পরিবেশ। আমি একটু বেলা করে উঠেছি। মধ্যমাত্রার বৃষ্টি তখনও ঝরছে। দুপুর নাগাদ টেলিভিশন আর অনলাইনগুলো দেখে হতভম্ব হয়ে গেলাম। ঢাকা শহরের বহু এলাকা বৃষ্টির পানিতে ডুবে গেছে। রিকশার পাদানিতে উঠে গেছে পানি। বাসের চাকা ডুবে গেছে। প্রাইভেটকার ডুবে গেছে, জেগে আছে শুধু গাড়ির ছাদটুকু। নিউমার্কেট আর কাঁটাবন এলাকার দোকানপাটের ভিতর কোমর পানি। ছোট আর মাঝারি ব্যবসায়ীরা পড়ে গেছেন ব্যাপক সংকটে। দোকানের মালামাল রক্ষা করতে পারেননি। সব ভেসে গেছে বৃষ্টিতে। শত কোটি টাকার ক্ষতি হয়ে গেছে।

অন্যদিকে মানুষের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ। কর্মস্থলে যাওয়া মানুষ, বাড়ি ফেরার মানুষ, ছাত্র-ছাত্রী প্রত্যেকেই পড়েছে চরম দুর্ভোগে। গাড়ি চলছে না। হেঁটে বাড়ি ফিরছে মানুষ। তাদের কোমরের ওপর পর্যন্ত পানি। পুরান ঢাকার অলিগলি রাজপথ ডুবে গেছে। ঘরে ঢুকে গেছে পানি। মানুষ দিশেহারা। এ অবস্থা কেমন করে সামাল দেবে? এক বেলার বৃষ্টিতে জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত। অথচ কোটি কোটি টাকা খরচ করা হচ্ছে ঢাকা শহরের পানি নিষ্কাশনের জন্য। কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। বৃষ্টি হলেই ডুবছে রাস্তাঘাট। বিপাকে পড়ছে মানুষ। আবহাওয়াবিদদের সাবধানতা বা ভবিষ্যদ্বাণী সিটি করপোরেশন দুটো সেভাবে মনে রাখেনি। মনে রেখে আগাম ব্যবস্থা নিলে শহরবাসী এরকম বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ত না। এই বিষয়ে দুই মেয়রের তীক্ষ্ণ নজর থাকা জরুরি ছিল। ঢাকার খালগুলো প্রায় সবই বুজে গেছে। দখল হয়ে গেছে। সবই আছে খালগুলোতে, শুধু পানিটাই নেই। পানির প্রবাহ বলতে কিছু নেই। ময়লা আবর্জনার ভাগাড় হয়ে গেছে একেকটা খাল। মেয়র মহোদয়দের দেখি, প্রায়ই খাল উদ্ধারের অভিযান করছেন। দু-একটা খাল দখল মুক্তও করছেন। তারপর আর খবর নেই। আগের মতো দখল হয়ে যাচ্ছে। আরেক মহাশত্রু হয়েছে পলিথিন। এই জিনিসের কোনও বিনাশ নেই। শুধুমাত্র পলিথিনই ডুবিয়ে দিচ্ছে অনেক অর্জন। এই বিষয়টি নিয়ে সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের সচেতন হওয়া জরুরি। পলিথিনের হাত থেকে বাঁচাতে হবে দেশ। পলিথিনের বিকল্প ব্যবস্থা কাজে লাগাতে হবে। এক্ষেত্রে সরকার ও মিডিয়া মিলে জনসচেতনা গড়ে তোলা জরুরি। মানুষ সচেতন হলে সমাজ পরিশিলিত হয়। গত তিরিশ পঁয়ত্রিশ বছর ধরে ধীরে ধীরে গড়ে উঠছিল বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা। এখন বসুন্ধরা ঢাকার সবচাইতে অভিজাত এলাকা। সবচাইতে আকর্ষণীয় এলাকা। বসুন্ধরায় কারও একটি ফ্ল্যাট বা কারও এক টুকরো জমি থাকলে তিনি খুব গৌরববোধ করেন। বসুন্ধরার মতো সুবিন্যস্ত আবাসিক এলাকা ঢাকায় আর নেই। এলাকাটির পরিকল্পনা করা হয়েছে সম্পূর্ণতই ইউরোপ-আমেরিকার ঘনবসতিপূর্ণ শহরগুলোর লাগোয়া অতি আধুনিক আবাসিক শহরগুলোর মতো করে। সুপরিকল্পিত ও সুব্যবস্থাপূর্ণ। বড় বড় রাস্তা। রাস্তার ধার আর আইল্যান্ডগুলো সবুজ গাছপালায় ভর্তি। রাজউকের বিল্ডিংকোড মেনে নির্মিত প্রতিটি বাড়ি। সঙ্গে আছে বসুন্ধরার নিজস্ব কঠোর তদারকি। নিয়মের বাইরে একটি ইটও বসানো যাবে না। একটি গাছের পাতাও ছেঁড়া যাবে না। অন্যদিকে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পুরুষমানুষরা তো বটেই, নারী ও শিশুরা চাইলেও রাত দুপুরে বাড়ির বাইরে বেড়াতে বেরোতে পারে। ডিস্টার্ব করা তো দূরের কথা, চোখ তুলেও তাকাবার সাহস পাবে না কেউ। নিরাপত্তায় নিয়োজিত গাড়িভর্তি কর্মী চব্বিশঘণ্টা টহল দিচ্ছে। ঢাকার ভিতরেই বসুন্ধরা সম্পূর্ণ এক আলাদা জগৎ। স্বপ্নের বাসভূমি। এটা সম্ভব হয়েছে সুপরিকল্পনা ও তা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন আর প্রয়োগের ফলে। গত কয়েক বছর আগে বর্ষার বৃষ্টিতে বসুন্ধরার কোথাও কোথাও পানি জমে যেত। এই নিয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করলেন কর্তৃপক্ষ। সুদূর প্রসারী আধুনিক পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে রাতারাতি সামাল দিলেন সেই সমস্যা। গড়ে তুললেন অত্যাধুনিক ড্রেনেজ ব্যবস্থা। যত বৃষ্টিই হোক, বসুন্ধরায় এখন আর পানি জমে না। জোরালো ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে বৃষ্টির পানি এক মিনিটও দাঁড়াতে পারে না। সঙ্গে আছে এলাকার ড্রেনগুলোর সঠিক তদারকি। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বহুকর্মী নিয়োজিত এই কাজে। কী নেই বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায়? হাসপাতাল, বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুল, খেলার মাঠ, শপিং মল, সুন্দর সুন্দর মসজিদ, গোরস্থান, অতি আধুনিক সব রেস্টুরেন্ট। এক কথায় সব মিলিয়ে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা বর্তমান বিশ্বের অতি আধুনিক এক মনোরম শহর। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা নিয়ে কথাগুলো বলার কারণ, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মেয়র মহোদয়দের দৃষ্টি আকর্ষণ করা। বসুন্ধরায় ড্রেনেজ ব্যবস্থার অনুকরণ করে তাঁরা খুব সহজেই হঠাৎ বৃষ্টিতে জলাবদ্ধ হয়ে যাওয়া ঢাকা শহরকে অনেকখানি মুক্তি দিতে পারেন। মানুষকে দুর্ভোগ মুক্ত করতে পারেন, ব্যবসায়ীদের বাঁচাতে পারেন ক্ষতির হাত থেকে। ছাত্র-ছাত্রী আর পথচলা মানুষদের চলাচল নির্বিঘ্ন করতে পারেন। বৃষ্টির তোড়ে হঠাৎ অসহায় হয়ে পড়া গৃহবাসীদের সুরক্ষা দিতে পারেন। এই শহরের মানুষকে স্বস্তিতে বসবাস করার সুযোগ করে দিতে পারেন। এসব তাঁদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। বিষয়টি নিয়ে নিশ্চয় তাঁরা ভাববেন। তাঁদের চোখের সামনেই তো উদাহরণ হিসেবে আছে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা।

পরবর্তী খবর

নওগাঁর ধামইরহাটে পানিতে ডুবে দুই ভাইয়ের মৃত্যু

নওগাঁর ধামইরহাটে পুকুরের পানিতে ডুবে যমজ দুই ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে।

রোববার (৭ জুলাই) দুপুর ১২টায় উপজেলার খেলনা ইউনিয়নের পশ্চিম চকভবানী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য আবু সালাম।

নিতহ দুই শিশু– লক্ষণ (৩) ও রাম (৩)। তারা উভয়ে একই গ্রামের সুজিত ওরাওঁ-এর যমজ সন্তান।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আবু সালাম বলেন, সকালের খাবার খেয়ে ওই দুই ভাই বাড়ির পাশে খেলতে থাকে। খেলার একপর্যায়ে সবার অগোচরে দুই ভাই বাড়ির সামনে পুকুরে ডুবে যায়। পরে তাদের খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে দুজনের লাশ পুকুরে ভাসমান অবস্থায় দেখতে পান স্থানীয়রা।

যমজ দুই ভাইয়ের মর্মান্তিক মৃত্যুতে পরিবারের সদস্য এবং প্রতিবেশীদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

ধামইরহাট থানায় অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. বাহাউদ্দিন ফারুকী বলেন, দুই শিশু পানিতে ডুবে মারা যাওয়ার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, খেলতে গিয়েই তারা পানিতে ডুবে মারা গেছে। এ বিষয়ে থানায় কোন অভিযোগ করা হয়নি।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত