বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

গোপালগঞ্জে চিকিৎসা গবেষণা পরিষদের আঞ্চলিক কেন্দ্রের কার্যক্রম শুরু

গোপালগঞ্জে বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদের (বিএমআরসি) আঞ্চলিক গবেষণা কেন্দ্রের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। গোপালগঞ্জ শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব চক্ষু হাসাপাতাল ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে বিএমআরসির আঞ্চলিক কেন্দ্রটি ৩ দিন ব্যাপী চিকিৎসকদের রিসার্স ম্যথডলজি ট্রেনিং প্রদান করে এ অঞ্চলে চিকিৎসা গবেষণার কার্যক্রমের সূচনা হয়েছে। গত শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) এ ট্রেনিং শুরু হয়। সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় তা সমাপ্ত হয়।

সামপনী আনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন চক্ষু হাসপাতালের পরিচালক প্রফেসর ডা. নাহিদ ফেরদৌসী। এতে ২১ জন সিনিয়র চিকিৎসক অংশ নেন। দেশের খ্যাতনামা চিকিৎসকরা প্রশিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন।

চক্ষু হাসপাতালের পরিচালক প্রফেসর ডা. নাহিদ ফেরদৌসী বলেন, বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদ (বিএমআরসি) প্রথম ও একমাত্র আঞ্চলিক প্রতিষ্ঠান। গোপালগঞ্জ শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব চক্ষু হাসাপাতাল ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের বিএমআরসির আঞ্চলিক কেন্দ্রেটি খুলনা, বরিশাল ও ঢাকা বিভাগের একটি অংশ অর্থাৎ পদ্মার এ পাড়ের জন্য গবেষণা কার্যক্রম শুরু করেছে। গত শনিবার থেকে আমরা এখানে ৩দিনের রিসার্স ম্যথডলজি ট্রেনিং শুরু করি। সোমবার দিন শেষে এ ট্রেনিং কার্যক্রম শেষ হয়। আমরা এখানে ট্রেনিংএ গবেষণায় আগ্রহী সিনিয়র পর্যায়ের চিকিৎসকদের নিয়ে এসেছিলাম। তাদের ট্রেনিং সফলভাবে সমাপ্ত হয়েছে। আমরা আশাকরি আমাদের এ বিএমআরসির আঞ্চলিক কেন্দ্রেটি চিকিৎসা গবেষণার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে। চিকিৎসকদের গবেষণায় সাফল্য আসবে। ভবিষ্যতে এ কেন্দ্রটিকে মডেল ধরে দেশে আরো আঞ্চলিক গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠত হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব সময় চিকিৎসা গবেষণার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেন। চিকিৎসকদেরকে গবেষণায় উদ্বুদ্ধ করার কথা তিনি সব সময় বলছেন। এ ট্রেনিং সেন্টারের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর আশা আমরা পূরণ করতে সক্ষম হব।

বিষয়:
পরবর্তী খবর

বিজয়ের কেতন উড়িয়ে কে আসে ঐ!

গত মাসের শেষ সপ্তাহে বাংলাদেশের শেখ মোহাম্মদ শিথিলের নেতৃত্বে ‘বোরড টানেলার্স’ নামের একটি টিম ইলন মাস্কের নট আ বোরিং কম্পিটিশনের ফাইনালে অংশ নিয়ে ফাইনালে সেরা তিনে থাকার পাশাপাশি প্রথম দল হিসেবে সম্মানসূচক ‘রুকি’ পদক জিতেছে । বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশলের ২০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে গড়া হয়েছে ‘বোরড টানেলার্স’। যাঁদের মধ্যে ৭ জন চূড়ান্ত পর্বে অংশ নিতে গিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের বাসট্রপে অবস্থিত ইলন মাস্কের ’দ্য বোরিং কোম্পানির মূল ভেন্যুতে।

দক্ষতার স্বীকৃতি স্বরূপ সন্মানজনক ‘রুকি পদক’ জয়

’নট আ বোরিং কম্পিটিশন’ নামক এই প্রতিযোগিতার আয়োজক বিখ্যাত ধনকুবের ইলন মাস্কের প্রতিষ্ঠান ‘দ্য বোরিং কোম্পানি’। নতুন নতুন চিন্তা ও প্রযুক্তির সমন্বয়ে মাটির নিচ দিয়ে টানেল তৈরির অত্যাধুনিক যন্ত্র নির্মাণের উদ্দেশ্যে প্রতিযোগিতাটি আয়োজন করে তারা।

২০২১ সাল থেকে ‘নট আ বোরিং কম্পিটিশন’ হয়ে আসছে। দুই ধাপের অনলাইন পর্ব পেরিয়ে ফাইনালে পৌঁছায় সারা বিশ্বের সেরা দশ দল। আট দিনের ফাইনাল পর্বের প্রথম সাত দিন প্রকল্প উপস্থাপনা করতে হয়। সঙ্গে চলে যন্ত্রের নিরাপত্তাসংক্রান্ত পরীক্ষা। অর্থাৎ কাজ করার জন্য যন্ত্রটি প্রস্তুত কি না, তারই যাচাই–বাছাই। শেষ দিনে নিজেদের তৈরি যন্ত্র দিয়ে মাটি খুঁড়ে দেখাতে হয়।

প্রতিযোগিতার বিভিন্ন ধাপে বোরড টানেলার্স টিম

দুই ধাপের অনলাইন পর্ব পেরিয়ে ফাইনালে পৌঁছার পর মূল প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে আমেরিকায় অবস্থিত ইলন মাস্কের ‘দ্য বোরিং কোম্পানি’র ভেন্যুতে যাওয়া নিয়েই দলের সবাই শঙ্কায় ছিল একসময়।

পৃষ্ঠপোষকতা পেতে বোরড টানেলার্সকে কিন্তু বেশ বেগ পেতে হয়েছিল। যন্ত্র নির্মাণে কারিগরি সহায়তা দিয়েছে বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্র (বিটাক)। পরে গিগাবাইট ও সুপার স্টার গ্রুপও পৃষ্ঠপোষক হিসেবে যোগ হয়েছে। তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সহ–দলনেতা এম শাহরিয়ার ইকবাল বলেন, ‘শুরুর দিকে আমরা প্রত্যেক সদস্য নিজেদের সাধ্যমতো টাকা দিয়ে যন্ত্রটা দাঁড় করিয়েছি। পর্যাপ্ত টাকার অভাবে কিছু অংশ সম্পূর্ণ করা হয়ে ওঠেনি। যন্ত্রটি যুক্তরাষ্ট্রে নিতেও অনেক ঝক্কি পোহাতে হয়েছে। টাকার অভাবে যন্ত্রাংশগুলো ভাগ করে নিজেদের লাগেজে করে নিতে হয়েছে।’

বোরড টানেলার্স’ টিম উদ্ভাবিত বোরিং যন্ত্র

প্রথমবার অংশ নিয়েই বাজিমাত
বোরড টানেলার্সের দলনেতা শেখ মোহাম্মদ শিথিল মুঠোফোনে জানান, ‘এই ফলাফল নিয়ে আমরা এখনো ঘোরের মধ্যে আছি। সেরা তিনে থাকা আমাদের জন্য অনেক সম্মানের। রুকি পুরস্কার সেই সম্মানকে আরও সমৃদ্ধ করেছে। আমরাই এশিয়ার প্রথম দল, যারা এই প্রতিযোগিতায় এত ভালো অবস্থানে পৌঁছালাম।’

প্রতিযোগিতায় প্রথমবার অংশ নিয়েই নিজেদের প্রতিভা ও দক্ষতার প্রমাণ দেওয়ায় বাংলাদেশ দলটিকে ‘রুকি’ পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।

এরই মধ্যে বাংলাদেশের আমেরিকান দূতাবাস থেকেও বোরড টানেলার্স’ টিমকে অভিনন্দন জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশের আমেরিকান দূতাবাস থেকে জানানো অভিনন্দন বার্তা

দীর্ঘ ১৮ মাসের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল এই অর্জন
প্রতিযোগিতা মাত্র সাতদিনের হলেও অনলাইনের দু‘টি ধাপ সফলভাবে শেষ করার পরই মূলত শুরু হয়েছিল আসল কাজ। ভার্চুয়াল ডিজাইনের বাস্তবায়নে টিমের সদস্যদের দিনরাত একটানা নিরলস চেষ্টায় ধাপে ধাপে তৈরি হয় বোরিং যন্ত্রের বিভিন্ন অংশ। এতে যুক্ত হয় সর্বাধুনিক প্রযুক্তি। প্রতিটি অংশের জন্যে আলাদা আলাদাভাবে কাজ করেছে ডেডিকেটেড টিম। আর সব টিমের সমন্বয়ক ছিলেন শেখ মোহাম্মদ শিথিল।

দীর্ঘ ১৮ মাসের ক্লান্তিহীন শ্রমে নিয়োজিত টিমের সদস্যরা

দেশের অবকাঠামো নির্মাণে ব্যবহৃত হবে এই যন্ত্র
‘বোরড টানেলার্স’–এর তৈরি খননযন্ত্রটি (টিবিএম) দেশের কাজেও লাগবে বলে বিশ্বাস করেন এর নির্মাতারা। ওয়াসার পানির লাইনের জন্য খনন পরিচালনা করা, নিষ্কাশনব্যবস্থায় কাজ করাসহ নানা খননকাজে ব্যবহৃত হতে পারে এই যন্ত্র। দলের প্রযুক্তি প্রধান ফাহিম উদ্দিন বলেন, ‘বাংলাদেশের বেসামরিক অবকাঠামো খাত ব্যাপকভাবে কায়িক শ্রমনির্ভর। অপর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থার কারণে অনেককেই ঝুঁকিতে থাকতে হয়। বোরড টানেলার্সের লক্ষ্য হলো টানেলিং প্রক্রিয়ায় নিরাপত্তা দেওয়া, কাজে গতি বাড়ানো এবং খরচ কমিয়ে আনা।’

এই দলের উপদেষ্টা ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের হিউস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি গবেষক সালমান প্রমন। শিল্প উপদেষ্টা ছিলেন বিটাকের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মামুনুর রশীদ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. আশরাফুজ্জামান। এই তিনজনের প্রতিই ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে ‘বোরড টানেলার্স’। অত্যাধুনিক প্রযুক্তিসহ একটি ডেডিকেটেড ল্যাব প্রদানের জন্য দলটি তাদের উৎপাদন সহযোগী বাংলাদেশ শিল্প প্রযুক্তি সহায়তা কেন্দ্রের (বিটাক) কাছে কৃতজ্ঞ। তারা তাদের প্রযুক্তিগত পৃষ্ঠপোষক GIGABYTE AORUS এবং সিলভার স্পন্সর সুপার স্টার গ্রুপ (SSG)-কে ধন্যবাদ জানায়।

বিষয়:
পরবর্তী খবর

মরক্কোতে এক লাখ বছরের পুরনো মানুষের পায়ের ছাপ পাওয়া গেছে!

মরক্কোর প্রত্নতাত্ত্বিকরা প্রায় ১,০০,০০০ বছর আগের মানুষের ৮০টিরও বেশি পায়ের ছাপ উদ্ধার করেছেন এবং এটি উত্তর আফ্রিকার প্রাচীনতম মানুষের পায়ের ছাপ বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সম্ভবত শিশু সহ পাঁচজন হোমো সেপিয়েন্স এই পায়ের ছাপ রেখে গেছেন।

মরক্কো, স্পেন, ফ্রান্স এবং জার্মানির প্রত্নতাত্ত্বিকদের একটি দল টাঙ্গিয়ার থেকে ৯০ কিলোমিটার (৫৫ মাইল) দক্ষিণে অবস্থিত শহর লারাচে উপকূলে এই পায়ের ছাপ খুঁজে পেয়েছেন।

লিক্সাস লারাচে প্রত্নতাত্ত্বিক সাইটের কিউরেটর আনাস সেদরাতি এএফপিকে জানিয়েছেন, ‘এই দলটি (হোমো স্যাপিয়েন্স) সম্ভবত খাদ্য এবং শেলফিশের (কাঁকড়া বা চিংড়ি) সন্ধানে সৈকত পেরিয়ে সমুদ্রের দিকে যাচ্ছিল।’

তিনি বলেন, ‘তারা সম্ভবত জেলে বা সংগ্রহকারী ছিল।’

প্রত্নতাত্ত্বিকদের গবেষণা প্রতিবেদনটি জানুয়ারিতে বৈজ্ঞানিক জার্নাল নেচারে প্রকাশিত হয়েছে। এতে বলা হয়, পায়ের ছাপগুলো বিশ্বের সেরা সংরক্ষিত মানুষের চিহ্নগুলোর মধ্যে একটি এবং উত্তর আফ্রিকা এবং দক্ষিণ ভূমধ্যসাগরের প্রাচীনতম।

ফরাসি গবেষকদল বলেছেন, ‘একটি বৈজ্ঞানিক গবেষণা প্রকল্পের অংশ হিসাবে উপকূলরেখা বরাবর ছড়িয়ে থাকা বোল্ডারগুলোর উৎস এবং গতিশীলতার অংশ হিসাবে ২০২২ সালের জুলাই মাসে একটি ফিল্ড মিশনের সময় এটি আবিস্কৃত হয়।’

২০১৭ সালে, উত্তর-পশ্চিম মরক্কোতে ৩০০,০০০ বছর আগের কিছু হোমো সেপিয়েন্সের সন্ধান পাওয়া গেছে, এটি একটি সাফল্য যা মানব প্রজাতির আনুমানিক উৎপত্তিকে ১০০,০০০ বছর পিছিয়ে দিয়েছে।

লারাচে পায়ের ছাপ এই অঞ্চলে মানব ইতিহাসের গুরুত্ব তুলে ধরেছে, এ কথা উল্লেখ করে আনাস সেদরাতি বলেন, এখানে অন্যান্য প্রাণীর চিহ্নও আবিষ্কৃত হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই এই অসাধারণ ঐতিহ্যবাহী স্থানটিকে সংরক্ষণ করতে হবে, এমনকি এটি হুমকির মুখে পড়লেও।’

বিষয়:
সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত