দেশ

দেশ

আনসার সদস্যকে গুলি করে হত্যার দায়ে সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি গ্রেফতার

বহুল আলোচিত ২০০২ সালে কর্তব্যরত আনসার সদস্যকে গুলি করে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত ও পুলিশ সদস্যকে হত্যাচেষ্টার দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি ভয়ংকর সন্ত্রাসী শুক্কুর আলী ওরফে সোহেল ওরফে সোহাগকে রাজধানীর সাভার এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০। র‌্যাবের মিডিয়া সেল থেকে গ্রেফতারের খবর নিশ্চিত করা হয়েছে।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০২ সালের ১২ই মার্চ রাজধানী মোহাম্মদপুরের শ্যামলী এলাকায় ছিনতাইকারীদের গুলিতে কর্তব্যরত অবস্থায় আনসার সদস্য, ফজলুল হক গুলিবৃদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন এবং একজন পুলিশ সদস্য গুরুতর জখম হয়। পরবর্তীতে তাদেরকে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আনসার সদস্য ফজলুল হককে মৃত ঘোষনা করেন। উক্ত ঘটনায় পুলিশ কনস্টেবল আকমান হোসেন বাদী হয়ে রাজধানী ঢাকার মোহাম্মদপুর থানায় সন্ত্রাসী শুক্কুর আলী ওরফে সোহেলসহ ০৩ জনের নামে পেনাল কোড ৩৫৩/৩৩৩/৩০৭/৩০২ ধারায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন (মামলা নং-৬৬, তারিখ-১২/০৩/২০০২ইং)। মামলা দায়েরের বিষয়টি জানতে পেরে আসামিরা আত্মগোপনে চলে যায়। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করলেও আসামিরা জামিনে মুক্ত হয়ে পুনরায় আত্মগোপনে চলে যায়। মামলার তদন্ত শেষে গত ৩১ মার্চ ২০০৩ তারিখ আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয় (মোহাম্মদপুর থানার অভিযোগপত্র নং-১৭০, তারিখ- ৩১ মার্চ ২০০৩)। বিচারকাজ সমাপ্ত করে ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর আলোচ্য মামলার ৩ জন আসামিকেই মৃত্যুদণ্ড প্রদান করে এবং সকল আসামির বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডাদেশ পরোয়ানা জারী করেন। একই মামলায় পুলিশ কনস্টেবল আবদুল জলিল ফরাজীকে হত্যাচেষ্টার দায়ে আসামি শুক্কুর আলী ওরফে সোহেলকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ছয় মাস সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন। পরবর্তীতে মোহাম্মদপুর থানা পটুলিশের আবেদরেনর প্রেক্ষিতে বহুল আলোচিত এই মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামিদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে র‌্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে।

এরই ধারাবাহিকতায় গত রাতে (১১ই জানুয়ারি) র‌্যাব-১০ এর একটি চৌকস দল গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ও তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় রাজধানীর সাভার এলাকায় অভিযান চালিয়ে আসামি শুককুর আলী ওরফে সোহেল ওরফে সোহাগ (৩৮), পিতা-বাবুল মিয়া ওরফে বাবুল চোরা, ভোলা সদর, ভোলাকে গ্রেফতার করে।

জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামি জানায়, ঘটনার দিন গত ১২ মার্চ ২০০২ তারিখ দুপুরে শুক্কুর আলী তার অপর দুই সহযোগীদের নিয়ে ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে রাজধানী মোহাম্মদপুরের শ্যামলী এলাকায় ‘দূর দূরান্ত’ নামক একটি বাস কাউন্টারের সামনে অবস্থান করে। শুক্কুর আলী ও তার সহযোগীরা মিলে অজ্ঞাত একজন ভিকটিমকে ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে। তখন উক্ত এলাকায় কর্তব্যরত পুলিশ কনস্টেবল আকমান হোসেন, কনস্টেবল আব্দুল জলিল ফরাজী ও আনসার সদস্য ফজলুল হক দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে ছিনতাইকারী শুক্কুর আলীসহ ৩ জনকে আটকের চেষ্টা করলে গ্রেফতারকৃত শুক্কুর আলী ও তার অপর সহযোগীরা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের কাছে থাকা রিভলভার দিয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উপর এলোপাথাড়ি গুলি করে। আনসার সদস্য ফজলুল হক গুলিবৃদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয় এবং একজন পুলিশ সদস্যকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে। এসময় অপর পুলিশ সদস্য আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি করলে শুক্কুর আলী ও তার অন্যান্য সহযোগীরা কৌশলে ঘটনাস্থল হতে পালিয়ে যায়।

গ্রেফতারকৃত শুক্কুর আলী ১০ বছর বয়স থেকেই বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে সে রাজধানীর মোহাম্মদপুরসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ছিনতাই, ডাকাতি, হত্যা, অপহরণ ও মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রম করতো বলে জানা যায়। সে আনসার সদস্য ফজলুল হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আইন-শৃংখলা বাহিনী কর্তৃক গ্রেফতার হয়ে প্রায় সাড়ে ৩ বছর কারাভোগের পর জামিনে বের হয়ে আত্মগোপনে চলে যায়। গ্রেফতারকৃত শুক্কুর আলী চট্টগ্রামসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় গ্রেফতার এড়ানোর লক্ষ্যে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ছদ্মবেশ ধারণ ও নাম পরিবর্তন করে কিছুদিন পর পর তার অবস্থান পরিবর্তন করতো। গ্রেফতারকৃত শুক্কুর আলী নতুন নতুন নাম ব্যবহার করে ছিনতাই, অপহরণ ও মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যক্রম করতো বলে জানা যায়। গ্রেফতারকৃত শুক্কুর আলী ইতিপূর্বে মাদক সংক্রান্ত মামলায় প্রায় ৪ বছর, অস্ত্র সংক্রান্ত মামলায় প্রায় ৫ বছর ও অপহরণসহ বিভিন্ন মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করেছে বলে জানা যায়। তার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় অস্ত্র, ডাকাতি ও মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধে ১৫টির অধিক মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।

গ্রেফতারকৃত আসামির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

বিষয়:
পরবর্তী খবর

৫০ ভরি স্বর্ণ উদ্ধার

সীমান্ত সম্ভারে স্বর্ণের দোকানে চাঞ্চল্যকর চুরির রহস্য উদঘাটন, গ্রেপ্তার ৩

রাজধানীর ধানমণ্ডির বিজিবি সীমান্ত সম্ভার শপিং কমপ্লেক্সের একটি স্বর্ণের দোকানে সংঘটিত চাঞ্চল্যকর চুরির ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন মো. রুবেল (২৮), সফিক ওরফে সোহেল (৩৫) এবং সাদ্দাম হোসেন (৩১)। এ সময় তাদের কাছ থেকে চুরি যাওয়া ৫০ ভরি আট আনা স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়, যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা।

ডিবি সূত্রে জানা যায়, ধানমণ্ডি মডেল থানাধীন ‘ক্রাউন ডায়মন্ড এন্ড জুয়েলার্স’ শোরুমে গত ৩ জানুয়ারি বেলা ১টার দিকে চুরির ঘটনা ঘটে। চোরচক্র অভিনব পদ্ধতিতে শো-রুমের তালা ও সাটার কেটে মাত্র আট মিনিটের মধ্যে ১৫৯ ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে পালিয়ে যায়। দোকানের মালিক কাজী আকাশ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন, যেখানে চুরি যাওয়া স্বর্ণালংকারের আনুমানিক মূল্য প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা উল্লেখ করা হয়।

মামলার প্রেক্ষিতে ডিবি পুলিশ তদন্ত শুরু করে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ৯ জানুয়ারি থেকে ডিবি পুলিশ ধারাবাহিক অভিযান চালায়। কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে প্রথমে মো. রুবেলকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কুমিল্লার দেবীদ্বার থেকে সফিক ওরফে সোহেল এবং মুরাদনগর থেকে সাদ্দাম হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে ২৮ ভরি ১৪ আনা আসল স্বর্ণ এবং ২১ ভরি ১০ আনা গলিত স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়। ডিবি সূত্রে আরও জানা যায়, চুরির ঘটনায় জড়িত চক্রের অন্যান্য সদস্যদের শনাক্ত করা হয়েছে এবং তাদের গ্রেফতার ও অবশিষ্ট স্বর্ণ উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

ডিএমপি’র উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান পিপিএম জানান, এই চক্র অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে পরিকল্পনা করে চুরি সংঘটিত করে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে জনগণের আস্থা অক্ষুণ্ণ রাখতে সক্ষম হয়েছে।

বিষয়:
পরবর্তী খবর

পোরশায় ন্যায্যমূল্যে গরুর মাংস, কেনা যাবে ২৫০ গ্রাম

চড়া দামের কারণে নিম্নবিত্ত থেকে মধ্যবিত্ত অনেক মানুষ পুরো এক কেজি মাংস কিনতে পারছে না। এমন ক্রেতাদের সুবিধার্থে এবার ২৫০ গ্রাম গরুর মাংসও বিক্রি হবে নওগাঁর পোরশায়। সরকারি ব্যবস্থাপনায় ন্যায্যমূল্যের দোকানে গরুর মাংস বিক্রি কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়েছে।

শুক্রবার (১৩ই ডিসেম্বর) সকাল আটটার দিকে এ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফ আদনান।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের সহযোগিতায় ও জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল আউয়ালের নির্দেশে ন্যায্যমূল্যে গরুর মাংস বিক্রির এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এ সময় উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির, বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন।

এ প্রসঙ্গে ইউ এন ও আরিফ আদনান বলেন, জেলা প্রশাসকের দিকনির্দেশনায় ন্যায্য মূল্যের মাংসের দোকান চালু করা হয়েছে । এই দোকানে প্রতি কেজি ৬০০ টাকা দরে ক্রেতাগণ কিনতে পারবেন এবং গরিব জনগণ ২৫০ গ্রাম থেকে গরুর মাংস কিনতে পারবেন বলে জানান ইউ এন ওআরিফ আদনান।

বিষয়:
সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত