গণমাধ্যম

গণমাধ্যম

বেতার সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে প্রশংসনীয় ভূমিকা রাখছে : তথ্য প্রতিমন্ত্রী

তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেছেন, সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে জনসম্পৃক্ততা তৈরি করে দেশের উন্নয়নে বাংলাদেশ বেতার প্রশংসনীয় ভূমিকা রাখছে।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ বেতার সদর দপ্তর চত্বরে বিশ্ব বেতার দিবস-২০২৪ উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।

বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক রবীন্দ্রশ্রী বড়ুয়ার সভাপতিত্বে আলোচনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার এবং ইউনেস্কোর ঢাকা অফিস প্রধান ও বাংলাদেশ প্রতিনিধি ড. সুজান মারি ভাইজ। স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ বেতারের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অনুষ্ঠান) মো. ছালাহ্ উদ্দিন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, সুশাসন প্রতিষ্ঠা, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ চর্চা এবং সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে জনসম্পৃক্ততা তৈরি করে দেশের উন্নয়নে বাংলাদেশ বেতার প্রশংসনীয় ভূমিকা রাখছে। উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে বাংলাদেশ বেতারের পাশাপাশি অন্যান্য বাণিজ্যিক এফএম রেডিও ও কমিউনিটি রেডিওকে নিরলস কাজ করতে হবে।

প্রতিমন্ত্রী এ সময় আরও বলেন, তথ্য প্রযুক্তির উৎকর্ষের এ সময়ে বেতার বড় একটি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে। বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সাথে প্রতিযোগিতা করে বেতারকে এগিয়ে যেতে হচ্ছে। এসব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চটকদার ও সস্তা বিনোদনের পাশাপাশি মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্ভট সংবাদ প্রচার এবং অসত্য ও গুজব ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এসব প্রতিকূলতা ও প্রতিযোগিতাপূর্ণ পরিস্থিতিতেও বেতার একটি নিজস্ব মানদন্ড অনুসরণ করে বস্তুনিষ্ঠ ও নির্ভরযোগ্য অনুষ্ঠান ও সংবাদ প্রচার করছে।

তিনি আরও বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধসহ দেশের মানুষের সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বাংলাদেশ বেতার অবিস্মরণীয় ভূমিকা পালন করেছে। মহান মুক্তিযুদ্ধে রণাঙ্গনের যোদ্ধাদের সহযোগী শক্তি হিসেবে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের ভূমিকা সর্বজনবিদিত। তৎকালীন পাকিস্তানি স্বৈরশাসকের বাধা সত্ত্বেও সে সময় বাংলাদেশ বেতারের কর্মকর্তাদের দুঃসাহসী ভূমিকায় বেতারে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ প্রচার হয়। মুক্তিকামী বাঙালির পাশে থেকে দায়িত্ব পালনের জন্য জাতি বাংলাদেশ বেতারকে কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করে।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, বর্তমান সরকার দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও জাতীয় উন্নয়ন ত্বরাম্বিত করতে তথ্যের অবাধ প্রবাহে বিশ্বাস করে। দেশের গণমাধ্যমসমূহ এখন স্বাধীনভাবে কাজ করছে।

প্রতিমন্ত্রী এ বছরের বিশ্ব বেতার দিবসের প্রতিপাদ্য ‘শতাব্দী জুড়ে তথ্য, বিনোদন ও শিক্ষা বিস্তারে বেতার’-এর গুরুত্ব অনুধাবন করে বেতারে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিল্পী-কলাকুশলীদের কাজ করে যাওয়ার জন্য আহ্বান জানান।

২০১১ সালের ৩ নভেম্বর জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা (ইউনেস্কো)-এর ৩৬তম সম্মেলনে প্রতি বছর ১৩ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব বেতার দিবস পালনের সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।

২০১২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি প্রথমবারের মত বিশ্বব্যাপী পালিত হয় বিশ্ব বেতার দিবস। এরই ধারাবাহিকতায় এ বছর ত্রয়োদশ বিশ্ব বেতার দিবস পালন করা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ বেতার বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, শ্রোতা সম্মেলন, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে।

বিষয়:
পরবর্তী খবর

সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন প্রমাণ করে সরকার সাংবাদিকবান্ধব : তথ্য প্রতিমন্ত্রী

সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট সাংবাদিকদের সুরক্ষায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের সদিচ্ছার বড় প্রমাণ বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। তিনি আজ রোববার দুপুরে মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি বোর্ডের ৩০তম সভায় এ কথা জানান। সভায় ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে সভাপতিত্ব করেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণমাধ্যমের বিস্তৃতি ও স্বাধীনতার পাশাপাশি সাংবাদিকদের কল্যাণ ও সুরক্ষায় বিশ্বাস করেন। গত পনেরো বছরে গণমাধ্যমের যেমন বিস্তৃতি ঘটেছে, তেমনি সাংবাদিকদের কল্যাণেও নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট আইন প্রণয়নের মাধ্যমে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করেছেন। এই ট্রাস্ট গঠন প্রমাণ করে তাঁর নেতৃত্বাধীন সরকার সাংবাদিকবান্ধব। প্রতিমন্ত্রী বলেন, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে নিয়মিতভাবে অসচ্ছল, দুর্ঘটনায় আহত সাংবাদিকদের এবং মৃত সাংবাদিকদের পরিবারের অনুকূলে কল্যাণ অনুদান প্রদান করা হচ্ছে। চলতি অর্থবছরের তৃতীয় ও শেষ পর্যায়ে ২ কোটি ৮ লক্ষ টাকা অনুদান প্রদান করা হয়েছে। এ ট্রাস্ট থেকে সাংবাদিকদের মেধাবী সন্তানদের শিক্ষার জন্য বৃত্তি প্রদান কার্যক্রমও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এসব কার্যক্রম সাংবাদিকদের সুরক্ষা ও কল্যাণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর সরকারের অঙ্গীকারের বহিঃপ্রকাশ।

ট্রাস্ট থেকে কল্যাণ অনুদান প্রদানে সাংবাদিকদের বাছাইয়ের ক্ষেত্রে আরো স্বচ্ছতা ও পেশাদারিত্ব নিশ্চিত করার কথাও পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।

সভায় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ও বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি বোর্ডের ভাইস-চেয়ারম্যান মো. হুমাযুন কবীর খোন্দকার, বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য সচিব সুভাষ চন্দ্র (বাদল), প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ-এর মহাপরিচালক ও ট্রাস্টি বোর্ড সদস্য জাফর ওয়াজেদ, তথ্য অধিদফতরের প্রধান তথ্য অফিসার ও ট্রাস্টি বোর্ড সদস্য মোঃ শাহেনুর মিয়া, অর্থ মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব ও ট্রাস্টি বোর্ড সদস্য মোহাম্মদ সাদেকুর রহমান, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ও ট্রাস্টি বোর্ড সদস্য ওমর ফারুক, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব ও ট্রাস্টি বোর্ড সদস্য দীপ আজাদ, দৈনিক সংবাদ-এর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক ও ট্রাস্টি বোর্ড সদস্য কাশেম হুমায়ুন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ও ট্রাস্টি বোর্ড সদস্য সোহেল হায়দার চৌধুরী এবং বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান ও ট্রাস্টি বোর্ড সদস্য কলিম সরওয়ার উপস্থিত ছিলেন।

পরবর্তী খবর

গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণের কোনো ইচ্ছা সরকারের নেই : আরাফাত

গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণের কোনো ইচ্ছা সরকারের নেই একথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। তিনি বলেন, সরকারের যদি গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণের ইচ্ছা থাকত তাহলে দেশে এতো সংবাদ মাধ্যম বাড়ানোর অনুমতি দেয়া হতো না।

নগরীর গুলশান ক্লাবে শনিবার নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব) আয়োজিত এর সদস্য সংবাদপত্রের প্রকাশনার ৫০ বছর ও ২৫ বছর পূর্তিতে সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশে গণমাধ্যমের সংখ্যা বৃদ্ধি সংবাদপত্রের স্বাধীনতারই প্রতিফলন।

নোয়াব সভাপতি একে আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার সবসময় গঠনমূলক সমালোচনাকে স্বাগত জানায় উল্লেখ করে আরাফাত বলেন, গত ১৫ বছরে দেশ গণমাধ্যমের ব্যাপক বৃদ্ধি প্রত্যক্ষ করেছে।

আরাফাত বলেন, সরকারের যদি গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণের কোনো ইচ্ছা থাকত, তাহলে তারা সংবাদমাধ্যমের সংখ্যা বাড়তে দিত না, কারণ অধিক সংখ্যায় সংবাদমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করা আরও কঠিন। গণমাধ্যমকে বৈজ্ঞানিক প্রমাণ, যথাযথ তথ্য উপাত্ত দিয়ে সংবাদ প্রকাশের আহ্বান জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সমালোচনা গ্রহণের জন্য একেবারে প্রস্তুত এবং আপনার মতামত শুনতে ইচ্ছুক। আমরা বিশ্বাস করি না যে আমাদের কোনো ব্যর্থতা বা ভুল নেই।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, সংবাদমাধ্যম সরকারের ভুলগুলোকে সংশোধনের জন্য চিহ্নিত করে সরকারকে সাহায্য করতে পারে।

রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস (আরএসএফ) প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্স সম্পর্কে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমি জানি না তারা কীভাবে এটি তৈরি করেছে। আমি র‌্যাঙ্কিংয়ের জন্যে ইনপুট হিসাবে নেওয়া তথ্যগুলো দেখেছি। রিপোর্টে আমি অনেক ভুল তথ্য পেয়েছি।’

তিনি ২০২৩ সালের রিপোর্টে অন্তর্ভুক্ত পদ্ধতিগত দুর্বলতা এবং ভুল তথ্য চিহ্নিত করে আরএসএফকে একটি চিঠি পাঠানোর কথা উল্লেখ করে বলেন, আরএসএফ সেসব স্বীকার ও সংশোধন করেছে।

আরাফাত বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি যে (আরএসএফ রিপোর্টে)স্বচ্ছতার অনেক অভাব রয়েছে। যেমন আপনি যদি একটি নির্দিষ্ট দেশের গণমাধ্যমের পরিবেশ সম্পর্কে মুষ্টিমেয় কিছু লোককে জিজ্ঞাসা করেন যা মূলত সেই বিশেষ ব্যক্তিদেরই মতামত হবে। এটি পুরো দেশের চিত্র হতে পারে না।’

তিনি আরও বলেন, তাই সমগ্র দেশের বাস্তব চিত্র পাওয়ার জন্য গবেষণায় একটি সুপ্রতিষ্ঠিত পদ্ধতি রয়েছে যা অনুসরণ করা প্রয়োজন। কিন্তু এই বিশেষ গবেষণায় তা অনুসরণ করা হয়নি উল্লেখ করে তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, এটা কি সম্ভব যে বাংলাদেশের গণমাধ্যমের পরিবেশ আফগানিস্তানের চেয়ে খারাপ?

‘এটি তখনই সম্ভব যখন আপনার পদ্ধতিতে কিছু ভুল রয়ে যাবে। তাই, আমি সবকিছুকে অভিহিত মূল্যের ভিত্তিতে না নেয়ার অনুরোধ করছি’ যোগ করেন তিনি।

দেশের গণমাধ্যমের পরিবেশে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা দেশের গণমাধ্যমের পরিবেশের উন্নয়ন ও সমস্যা সমাধানে কাজ করছি।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রথম আলো সম্পাদক ও প্রকাশক মতিউর রহমান, ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম, সংবাদের ব্যারিস্টার নিহাদ কবির, ইত্তেফাক সম্পাদক তাসমিমা হোসেন, মানবজমিন সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী ও দৈনিক আজাদীর নির্বাহী সম্পাদক শিহাব মালিক প্রমুখ।

নোয়াব প্রকাশনার ৫০ বছর পূর্ণ করার জন্য দৈনিক ইত্তেফাক, দৈনিক সংবাদ, দৈনিক আজাদী এবং দৈনিক পূর্বাঞ্চল এবং ২৫ বছর পূর্ণ করার জন্য প্রথম আলো এবং মানবজমিনকে সম্মাননা প্রদান করেছে।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত