দেশ

দেশ

সপ্তাহ জুড়ে র‌্যাবের অভিযানে গ্রেফতার ১১, আলামত জব্দ

র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকেই দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে সব ধরণের অপরাধীকে আইনের আওতায় নিয়ে আসার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। জঙ্গী, সন্ত্রাসী, সংঘবদ্ধ অপরাধী, অস্ত্রধারী অপরাধী, ছিনতাইকারীসহ অবৈধ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে প্রতারক, ছিনতাইকারী, মাদক ব্যবসায়ী ও পলাতক আসামিসহ ১১ জন অপরাধীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এসব অভিযানে মাদদক ও অস্ত্র, মোটর সাইকেলসহ বিভিন্ন আলামত জব্দ করা হয়েছে। সহকারী পুলিশ সুপার ও র‌্যাব-১০ এর উপপরিচালক এম. জে. সোহেল গণমাধ্যমকে এসব খবর নিশ্চিত করেছেন।

জব্দকৃত আলামতসমূহ

অভিযান–১ :
প্রতারণা ও দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের সাজাপ্রাপ্ত দীর্ঘদিন পলাতক আসামি ওমর ফারুকসহ তিনজন গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামিকে রাজধানী ঢাকার গেন্ডারিয়া ও দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

গত ৬ মার্চ দুপুর ৪:৩০টা থেকে রাত ১০.০০টা পর্যন্ত র‌্যাব-১০ এর একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাজধানী ঢাকার গেন্ডারিয়া থানাধীন বেগমগঞ্জ ও দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জের ইকুরিয়া ও কদমতলী এলাকায় একাধিক অভিযান পরিচালনা করে। উক্ত অভিযানে বিশেষ মামলা-০২/২০২১, ডিএমপি ঢাকার মতিঝিল থানার মামলা নং-২৯(১২)২০১৪, ধারা-দণ্ডবিধির ৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/ ৫১১/ ১০৯ তৎসহ ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২); প্রতারণা মামলা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে পাঁচ বছরের সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি ওমর ফারুক মৃধা (৫৮), পিতা-আব্দুল মজিদ মৃধা, সাং-উত্তর মধ্যপাড়া, থানা-সিরাজদীখান, জেলা-মুন্সিগঞ্জকে গ্রেফতার করে।

একইদিনে র‌্যাব-১০ এর উক্ত দল অপর আরেকটি অভিযান পরিচালনা করে মুন্সিগঞ্জ জেলার টংগীবাড়ী থানার মামলা নং-৪(৬)১৮, টিআর নং-৩১০/১৮, জিআর নং-১১০/১৮, প্রসেস নং-৪৩০/২০, তারিখ-১৯/০৩/২০২১ খ্রিঃ; ধারা-দণ্ডবিধি আইন ১৮৬০ এর ৩৮০; চুরির মামলায় দুই বছরের সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি রিপন সরদার (২৯), পিতা-মোঃ আনসার সরদার, সাং-পুকুরজানা, থানা-পটুয়াখালী সদর, জেলা-পটুয়াখালীকে গ্রেফতার করে। এছাড়াও যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ ১ম আদালত, পটুয়াখালী-এর সেসন মামলা নং-১৮৮/২০২৩, সিআর নং-১১০৮/২০২২, ধারা-এনআই অ্যাক্টের ১৩৮; চেক প্রতারণা মামলায় ছয় মাসের সাজাপ্রাপ্ত ও ২,০০,৩৪০/- টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত পলাতক আসামি নাসির খাঁন (৪৫), পিতা-আইউব আলী খান, সাং-দক্ষিণ চান্দুখালী, থানা-পটুয়াখালী সদর, জেলা-পটুয়াখালীকে গ্রেফতার করে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামিরা উল্লিখিত মামলায় সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি বলে স্বীকার করেছে। তারা মামলা দায়েরের পর বিভিন্ন সময় আদালত থেকে জামিন নিয়ে রাজধানী ঢাকার গেন্ডারিয়া ও দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপন করে ছিল বলে জানা যায়।

গ্রেফতারকৃত আসামিদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

অভিযান–২ :
অস্ত্র মামলায় ১৭ বছরের সাজাপ্রাপ্ত দীর্ঘদিন পলাতক আসামি রফিক আকনকে রাজধানী ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকা হতে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।

গত ৬ মার্চ সন্ধ্যা ৭:৪৫টায় র‌্যাব-১০ এর একটি দল রাজধানী ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানার কোনাপাড়া এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে। উক্ত অভিযানে পটুয়াখালী জেলার রাঙ্গাবালী থানার মামলা নং-১৫০/৪, স্পেশাল ট্রাইবুনাল নং-০১/০৫, ধারা: ১৮৭৮ সনের অস্ত্র আইনের ১৯ (এ) ও ১৯(এফ); অস্ত্র মামলার ১৭ (সতের) বছরের সাজাপ্রাপ্ত পরোয়ানাভুক্ত পলাতক আসামি মোঃ রফিক আকন (৫৯), পিতা-মোঃ আজিজ আকন, সাং-চরকানকুনী, থানা-রাঙ্গাবালী, জেলা-পটুয়াখালীকে গ্রেফতার করে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে, গ্রেফতারকৃত আসামি উক্ত মামলার সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি বলে স্বীকার করেছে। সে আদালতে রায় ঘোষণার পর থেকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় নিজের নাম পরিচয় গোপন করে এবং বিভিন্ন ছদ্মবেশ ধারণ করে আত্মগোপন করে ছিল।

গ্রেফতারকৃত আসামিকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

অভিযান–৩ :
ঢাকার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ এলাকা হতে চারজন ছিনতাইকারী গ্রেফতার হয়েছে।

গত ৭ মার্চ রাত ১০:৩০ টায় র‌্যাবের একটি দল ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানাধীন চুনকুটিয়া এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে চারজন ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা হলেন- ১। মোঃ মিরাজ (১৯), পিতা- মোছলেম উদ্দিন, সাং-বাংলাবাজার, থানা-নড়িয়া, জেলা-শরীয়তপুর, ২। মোঃ শাওন (১৯), পিতা-মোঃ সোহেল বেপারী, সাং-রহমতপুর, জিনজিরা, থানা-কেরাণীগঞ্জ মডেল, জেলা-ঢাকা, ৩। রুমান শিকদার (১৯), পিতা-নাছির শিকদার, সাং-শাহাপুরা, থানা-বাউফল, জেলা-পটুয়াখালী, ৪। মোঃ রিপন (২৭), পিতা-মোস্তফা হাওলাদার, সাং-বেগুনবাড়ী, চুনকুটিয়া চৌরাস্তা, থানা-দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ, জেলা-ঢাকা।

এসময় তাদের নিকট থেকে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত চারটি চাকু উদ্ধার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা বেশ কিছুদিন যাবৎ ঢাকার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় পথচারীদের ধারালো চাকুর ভয় দেখিয়ে টাকা-পয়সা ও মোবাইল ফোনসহ বিভিন্ন মূল্যবান সম্পদ ছিনতাই করে আসছিল।

গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ছিনতাই মামলা দায়ের করে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

অভিযান–৪ :
অভিনব কৌশলে মোটর সাইকেলের সিট কভারের ভিতর এবং ফলের ঝুড়িতে করে মাদক বহনকালে রাজবাড়ীর পাংশা ও ফরিদপুরের কোতয়ালী এলাকা হতে ২১৭ বোতল ফেনসিডিলসহ দুইমাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। মাদক বহনে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়েছে।

গত ৯ মার্চ দুপুরে র‌্যাবের একটি চৌকস দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাজবাড়ী জেলার পাংশা এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে। উক্ত অভিযানে অভিনব কৌশলে মোটরসাইকেলের সিট কভারের ভিতরে করে ফেনসিডিল বহনকালে ৬৭ (সাতষট্টি) বোতল ফেনসিডিলসহ একজন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির নাম মোঃ আলফাজ উদ্দিন (২২), পিতা-মোঃ আবুছার আলী বিশ্বাস, সাং-মেদিনীপুর, থানা-জীবন নগর, জেলা-চুয়াডাঙ্গা। এসময় তার নিকট থেকে মাদক বহনে ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়।

একই দিন রাতে র‌্যাবের একই দল ফরিদপুর জেলার কোতয়ালী এলাকায় অপর একটি অভিযান পরিচালনা করে অভিনব কৌশলে ফলের ঝুড়িতে করে ফেনসিডিল বহনকালে ১৫০ (একশত পঞ্চাশ) বোতল ফেনসিডিলসহ একজন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির নাম- মোঃ জাহিদুল ইসলাম ওরফে জাহিদ (২৯), পিতা-মোঃ আলী হোসেন, সাং-দৌলাতদিয়াড়, থানা-চুয়াডাঙ্গা সদর, জেলা-চুয়াডাঙ্গা।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতারকৃতরা পেশাদার মাদক ব্যবসায়ী। তারা বেশ কিছুদিন যাবৎ দেশের বিভিন্ন সীমান্তবর্তী এলাকা হতে ফেনসিডিলসহ অন্যান্য মাদকদ্রব্য সংগ্রহ করে অভিনব কৌশলে রাজধানী ঢাকা, ফরিদপুর ও রাজবাড়ীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করে আসছিল।

গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পৃথক মাদক মামলা দায়ের করে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

অভিযান–৫ :
প্লাস্টিকের মাদুরের ভিতরে বিশেষ কৌশলে লুকায়িত ১৯ কেজি গাঁজাসহ একজন মাদক ব্যবসায়ীকে মুন্সীগঞ্জ জেলার পদ্মা সেতু (উত্তর) এলাকা হতে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।

গত ৯ মার্চ রাতে মুন্সীগঞ্জ জেলার পদ্মা সেতু (উত্তর) এলাকায় র‌্যাব-১০ এর একটি অভিযানে অভিনব কায়দায় প্লাস্টিকের মাদুরের ভিতরে স্কচটেপ দিয়ে মোড়িয়ে গাঁজা বহনকালে ১৯ (উনিশ) কেজি গাঁজাসহ একজন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির নাম- মোঃ ইয়াছিন মন্ডল (২৪), পিতা-মৃত শাহ জামাল মন্ডল, সাং-গোয়ালিমান্দ্রা, থানা-লৌহজং, জেলা-মুন্সীগঞ্জ।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত ব্যক্তি পেশাদার মাদক ব্যবসায়ী। সে বেশ কিছুদিন যাবৎ দেশের বিভিন্ন সীমান্তবর্তী এলাকা হতে গাঁজাসহ অন্যান্য মাদকদ্রব্য সংগ্রহ করে অভিনব কৌশলে মুন্সিগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করে আসছিল।

গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির বিরুদ্ধে পৃথক মাদক মামলা দায়ের করে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

বিষয়:
পরবর্তী খবর

বসুন্ধরা পারলে কেন সিটি করপোরেশন পারবে না

ভোররাত থেকে বৃষ্টি হচ্ছিল। সারা রাত আকাশে মেঘ ছিল। আষাঢ় শেষ হয়ে আসছে। বর্ষাকাল। এখন এরকমই হওয়ার কথা। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হবে হঠাৎ করেই। ঝুপ ঝুপ করে নামবে বৃষ্টি। কখনও থেকে থেকে, কখনও অবিরাম। এ বছরের বর্ষায় প্রবল বৃষ্টি হতে পারে, আবহাওয়াবিদরা পূর্বাভাস দিয়েছিলেন। জলবায়ু পরিবর্তন এখন পৃথিবীর সবচাইতে বড় সমস্যা। যেদিন আমরা পিছনে ফেলে এসেছি, যে আবহাওয়ায় বড় হয়েছি, সেই আবহাওয়া এখন আর নেই। শীতের দেশগুলোতে তীব্র গরম পড়ছে। শীতকালে শীত পড়ছে আগের তুলনায় বেশি। বরফের পাহাড় গলে যাচ্ছে আন্টার্টিকায়। দাবানলে পুড়ছে আমেরিকার বনভূমি। প্রকৃতি উল্টো-পাল্টা হয়ে গেছে। বদলে গেছে বহু কিছু।

এ বছরের গ্রীষ্মে প্রচণ্ড গরম পড়েছিল। মানুষের হাঁসফাঁস অবস্থা। জীবজগৎ বিপর্যস্ত। আবহাওয়াবিদরা বলেছিলেন, বর্ষায় প্রবল বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। ক’দিন আগে তাই হলো। ভোররাত থেকে বৃষ্টি। সকাল দশটা এগারোটা পর্যস্ত থামার নাম নেই। আকাশ অন্ধকার হয়ে আছে। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ছায়াময় পরিবেশ। আমি একটু বেলা করে উঠেছি। মধ্যমাত্রার বৃষ্টি তখনও ঝরছে। দুপুর নাগাদ টেলিভিশন আর অনলাইনগুলো দেখে হতভম্ব হয়ে গেলাম। ঢাকা শহরের বহু এলাকা বৃষ্টির পানিতে ডুবে গেছে। রিকশার পাদানিতে উঠে গেছে পানি। বাসের চাকা ডুবে গেছে। প্রাইভেটকার ডুবে গেছে, জেগে আছে শুধু গাড়ির ছাদটুকু। নিউমার্কেট আর কাঁটাবন এলাকার দোকানপাটের ভিতর কোমর পানি। ছোট আর মাঝারি ব্যবসায়ীরা পড়ে গেছেন ব্যাপক সংকটে। দোকানের মালামাল রক্ষা করতে পারেননি। সব ভেসে গেছে বৃষ্টিতে। শত কোটি টাকার ক্ষতি হয়ে গেছে।

অন্যদিকে মানুষের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ। কর্মস্থলে যাওয়া মানুষ, বাড়ি ফেরার মানুষ, ছাত্র-ছাত্রী প্রত্যেকেই পড়েছে চরম দুর্ভোগে। গাড়ি চলছে না। হেঁটে বাড়ি ফিরছে মানুষ। তাদের কোমরের ওপর পর্যন্ত পানি। পুরান ঢাকার অলিগলি রাজপথ ডুবে গেছে। ঘরে ঢুকে গেছে পানি। মানুষ দিশেহারা। এ অবস্থা কেমন করে সামাল দেবে? এক বেলার বৃষ্টিতে জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত। অথচ কোটি কোটি টাকা খরচ করা হচ্ছে ঢাকা শহরের পানি নিষ্কাশনের জন্য। কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। বৃষ্টি হলেই ডুবছে রাস্তাঘাট। বিপাকে পড়ছে মানুষ। আবহাওয়াবিদদের সাবধানতা বা ভবিষ্যদ্বাণী সিটি করপোরেশন দুটো সেভাবে মনে রাখেনি। মনে রেখে আগাম ব্যবস্থা নিলে শহরবাসী এরকম বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ত না। এই বিষয়ে দুই মেয়রের তীক্ষ্ণ নজর থাকা জরুরি ছিল। ঢাকার খালগুলো প্রায় সবই বুজে গেছে। দখল হয়ে গেছে। সবই আছে খালগুলোতে, শুধু পানিটাই নেই। পানির প্রবাহ বলতে কিছু নেই। ময়লা আবর্জনার ভাগাড় হয়ে গেছে একেকটা খাল। মেয়র মহোদয়দের দেখি, প্রায়ই খাল উদ্ধারের অভিযান করছেন। দু-একটা খাল দখল মুক্তও করছেন। তারপর আর খবর নেই। আগের মতো দখল হয়ে যাচ্ছে। আরেক মহাশত্রু হয়েছে পলিথিন। এই জিনিসের কোনও বিনাশ নেই। শুধুমাত্র পলিথিনই ডুবিয়ে দিচ্ছে অনেক অর্জন। এই বিষয়টি নিয়ে সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের সচেতন হওয়া জরুরি। পলিথিনের হাত থেকে বাঁচাতে হবে দেশ। পলিথিনের বিকল্প ব্যবস্থা কাজে লাগাতে হবে। এক্ষেত্রে সরকার ও মিডিয়া মিলে জনসচেতনা গড়ে তোলা জরুরি। মানুষ সচেতন হলে সমাজ পরিশিলিত হয়। গত তিরিশ পঁয়ত্রিশ বছর ধরে ধীরে ধীরে গড়ে উঠছিল বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা। এখন বসুন্ধরা ঢাকার সবচাইতে অভিজাত এলাকা। সবচাইতে আকর্ষণীয় এলাকা। বসুন্ধরায় কারও একটি ফ্ল্যাট বা কারও এক টুকরো জমি থাকলে তিনি খুব গৌরববোধ করেন। বসুন্ধরার মতো সুবিন্যস্ত আবাসিক এলাকা ঢাকায় আর নেই। এলাকাটির পরিকল্পনা করা হয়েছে সম্পূর্ণতই ইউরোপ-আমেরিকার ঘনবসতিপূর্ণ শহরগুলোর লাগোয়া অতি আধুনিক আবাসিক শহরগুলোর মতো করে। সুপরিকল্পিত ও সুব্যবস্থাপূর্ণ। বড় বড় রাস্তা। রাস্তার ধার আর আইল্যান্ডগুলো সবুজ গাছপালায় ভর্তি। রাজউকের বিল্ডিংকোড মেনে নির্মিত প্রতিটি বাড়ি। সঙ্গে আছে বসুন্ধরার নিজস্ব কঠোর তদারকি। নিয়মের বাইরে একটি ইটও বসানো যাবে না। একটি গাছের পাতাও ছেঁড়া যাবে না। অন্যদিকে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পুরুষমানুষরা তো বটেই, নারী ও শিশুরা চাইলেও রাত দুপুরে বাড়ির বাইরে বেড়াতে বেরোতে পারে। ডিস্টার্ব করা তো দূরের কথা, চোখ তুলেও তাকাবার সাহস পাবে না কেউ। নিরাপত্তায় নিয়োজিত গাড়িভর্তি কর্মী চব্বিশঘণ্টা টহল দিচ্ছে। ঢাকার ভিতরেই বসুন্ধরা সম্পূর্ণ এক আলাদা জগৎ। স্বপ্নের বাসভূমি। এটা সম্ভব হয়েছে সুপরিকল্পনা ও তা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন আর প্রয়োগের ফলে। গত কয়েক বছর আগে বর্ষার বৃষ্টিতে বসুন্ধরার কোথাও কোথাও পানি জমে যেত। এই নিয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করলেন কর্তৃপক্ষ। সুদূর প্রসারী আধুনিক পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে রাতারাতি সামাল দিলেন সেই সমস্যা। গড়ে তুললেন অত্যাধুনিক ড্রেনেজ ব্যবস্থা। যত বৃষ্টিই হোক, বসুন্ধরায় এখন আর পানি জমে না। জোরালো ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে বৃষ্টির পানি এক মিনিটও দাঁড়াতে পারে না। সঙ্গে আছে এলাকার ড্রেনগুলোর সঠিক তদারকি। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বহুকর্মী নিয়োজিত এই কাজে। কী নেই বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায়? হাসপাতাল, বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুল, খেলার মাঠ, শপিং মল, সুন্দর সুন্দর মসজিদ, গোরস্থান, অতি আধুনিক সব রেস্টুরেন্ট। এক কথায় সব মিলিয়ে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা বর্তমান বিশ্বের অতি আধুনিক এক মনোরম শহর। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা নিয়ে কথাগুলো বলার কারণ, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মেয়র মহোদয়দের দৃষ্টি আকর্ষণ করা। বসুন্ধরায় ড্রেনেজ ব্যবস্থার অনুকরণ করে তাঁরা খুব সহজেই হঠাৎ বৃষ্টিতে জলাবদ্ধ হয়ে যাওয়া ঢাকা শহরকে অনেকখানি মুক্তি দিতে পারেন। মানুষকে দুর্ভোগ মুক্ত করতে পারেন, ব্যবসায়ীদের বাঁচাতে পারেন ক্ষতির হাত থেকে। ছাত্র-ছাত্রী আর পথচলা মানুষদের চলাচল নির্বিঘ্ন করতে পারেন। বৃষ্টির তোড়ে হঠাৎ অসহায় হয়ে পড়া গৃহবাসীদের সুরক্ষা দিতে পারেন। এই শহরের মানুষকে স্বস্তিতে বসবাস করার সুযোগ করে দিতে পারেন। এসব তাঁদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। বিষয়টি নিয়ে নিশ্চয় তাঁরা ভাববেন। তাঁদের চোখের সামনেই তো উদাহরণ হিসেবে আছে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা।

পরবর্তী খবর

নওগাঁর ধামইরহাটে পানিতে ডুবে দুই ভাইয়ের মৃত্যু

নওগাঁর ধামইরহাটে পুকুরের পানিতে ডুবে যমজ দুই ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে।

রোববার (৭ জুলাই) দুপুর ১২টায় উপজেলার খেলনা ইউনিয়নের পশ্চিম চকভবানী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য আবু সালাম।

নিতহ দুই শিশু– লক্ষণ (৩) ও রাম (৩)। তারা উভয়ে একই গ্রামের সুজিত ওরাওঁ-এর যমজ সন্তান।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আবু সালাম বলেন, সকালের খাবার খেয়ে ওই দুই ভাই বাড়ির পাশে খেলতে থাকে। খেলার একপর্যায়ে সবার অগোচরে দুই ভাই বাড়ির সামনে পুকুরে ডুবে যায়। পরে তাদের খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে দুজনের লাশ পুকুরে ভাসমান অবস্থায় দেখতে পান স্থানীয়রা।

যমজ দুই ভাইয়ের মর্মান্তিক মৃত্যুতে পরিবারের সদস্য এবং প্রতিবেশীদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

ধামইরহাট থানায় অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. বাহাউদ্দিন ফারুকী বলেন, দুই শিশু পানিতে ডুবে মারা যাওয়ার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, খেলতে গিয়েই তারা পানিতে ডুবে মারা গেছে। এ বিষয়ে থানায় কোন অভিযোগ করা হয়নি।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত