দেশ

দেশ

সপ্তাহ জুড়ে র‌্যাবের অভিযানে গ্রেফতার ১৮, আলামত জব্দ

দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে র‌্যাবের অব্যাহত অভিযানে ইজিবাইক চোরচক্রের মূল হোতাসহ ৫ জন, মাদক ব্যবসায়ী, ২ জন, কিশোর গ্যাং ও ছিনতাই চক্রের ৭ জন, মাদক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি ১ জন ও ৩ জন চাঁদাবাজ সহ ১৮ জন অপরাধী গ্রেফতার এবং ভেজাল বিরোধী অভিযানে ৩৭ লক্ষ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। সহকারী পুলিশ সুপার ও র‌্যাব-১০ এর গণমাধ্যম শাখার সহকারী পরিচালক এম.জে. সোহেল গণমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এসব খবর নিশ্চিত করেছেন।

অভিযান-১:
নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার ও বন্দর এলাকা হতে ইজিবাইক চোরচক্রের অন্যতম মূলহোতা মাসুদুর রহমান ওরফে শামীম সহ ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। এ সময় চুরির কাজে ব্যবহৃত ২টি মোটরসাইকেল জব্দ ও চোরাইকৃত ১৪টি ইজিবাইক উদ্ধার করা হয়েছে।

খবরে জানা যায়, মুন্সিগঞ্জ জেলার সিরাজদীখান থানার আব্দুল্লাহপুর চরেরগাঁও এলাকায় বসবাসকারী শুক্কুর (২৮), পিতা-ইসমাইল নামক একজন ইজিবাইক চালক সে দীর্ঘদিন যাবৎ মুন্সিগঞ্জের সিরাজদীখান ও ঢাকার কেরাণীগঞ্জসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় ইজিবাইক চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিল। প্রতিদিনের ন্যায় শুক্কুর তার ইজিবাইক নিয়ে যাত্রী পরিবহনকালে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি রাত ১০:৩০ টায় ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানার আব্দুল্লাহপুর এলাকা থেকে অজ্ঞাতনামা দুইজন মোটরসাইকেল আরোহী শুক্কুরকে একই থানার ঝিলমিল প্রকল্পের পার্শ্ববর্তী পাসপোর্ট অফিসের সামনে যাওয়ার কথা বলে শুক্কুরের ইজিবাইকটি ভাড়া করে তাদের সাথে থাকা অপর একজন সহযোগীকে ইজিবাইকে উঠিয়ে দিয়ে তারা মোটরসাইকেল নিয়ে সেখান থেকে চলে যায়। শুক্কুর ইজিবাইক নিয়ে ঝিলমিল প্রকল্পের পার্শ্ববর্তী পাসপোর্ট অফিসের সামনে পৌঁছালে সেখানে থাকা উক্ত দুইজন মোটরসাইকেল আরোহীকে দেখতে পায়। তারা তিনজন একত্রিত হয়ে ইজিবাইক চালক শুক্কুরকে চাকু ঠেকিয়ে প্রাণনাশের হুমকিসহ বিভিন্ন প্রকার ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে তার ইজিবাইকটি ছিনিয়ে নিয়ে চলে যায়।

এই ঘটনার পর শুক্কুর তার উপার্জনের একমাত্র সম্বল ইজিবাইকটি হারিয়ে নিরুপায় হয়ে র‌্যাবের দ্বারস্থ হয়। শুক্কুর র‌্যাব-১০ এর অধিনায়ক মহোদয় বরারব তার ইজিবাইক চুরির ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগপত্র দায়ের করে এবং তার একমাত্র আয়ের উৎস চুরিকৃত ইজিবাইকটি দ্রুত উদ্ধারের জন্য আবেদন জানায়। উক্ত অভিযোগের ভিত্তিতে র‌্যাব-১০ এর একটি দল ভিকটিম শুক্কুরের ইজিবাইকটি উদ্ধার ও ইজিবাইক চোর চক্রটিকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আশপাশের বিভিন্ন সিসি টিভির ফুটেজ সংগ্রহ করে যাচাই-বাছাই করে ছায়া তদন্ত শুরু ও গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে।

এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৬ মার্চ রাত ৭:০০ ঘটিকায় র‌্যাব-১০ এর উক্ত দল গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ও তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানার মারুয়াদী চৌরাস্তা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে কুখ্যাত ইজিবাইক চোর চক্রের অন্যতম মূলহোতা ১। মোঃ মাসুদুর রহমান ওরফে শামীম (৩৫), পিতা-মোঃ কবির হোসেন, সাং-কালিকাপুর, থানা-বেগমগঞ্জ, জেলা-নোয়াখালী ও তার প্রধান সহযোগী ২। মোঃ রাজিব হোসেন (৩৪), পিতা-মোঃ ফোরকান চৌকিদার, সাং-লামনা, থানা-গলাচিপা, জেলা-পটুয়াখালী’কে গ্রেফতার করে। এ সময় তাদের নিকট থেকে চুরির কাজে ব্যবহৃত ২টি মোটরসাইকেল জব্দ ও চোরাইকৃত ২টি ইজিবাইক, ২টি স্পেয়ার চাকা ও ২টি সাংবাদিকের ভূয়া আইডি কার্ড উদ্ধার করা হয়।

গ্রেফতারকৃত শামীম ও রাজিবের স্বীকারোক্তি ও তাদের দেওয়া তথ্যমতে র‌্যাব-১০ এর উক্ত দল একই তারিখ রাত ১১:১০ টায় নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর থানার পিচকামতাল মধ্যপাড়া এলাকায় অপর একটি অভিযান চালিয়ে ইজিবাইক চোর চক্রটির অপর ৩ জন সদস্য যথাক্রমে ১। মোঃ আব্দুল মান্নান (৪০), পিতা-মোঃ আব্দুল জব্বার, সাং-চকবড়াইগাছী, থানা-নকলা, জেলা-শেরপুর, ২। মোঃ ইকবাল হোসেন (৪০), পিতা-মোঃ গিয়াস উদ্দিন ও ৩। মোঃ আব্দুল হান্নান (৪৫), পিতা-মোঃ আব্দুর, উভয় সাং-আনন্দনগর, থানা-বন্দর, জেলা-নারায়ণগঞ্জদের গ্রেফতার করে। এ সময় তাদের নিকট থেকে চোরাইকৃত ৩টি ইজিবাইক ও ২টি স্পেয়ার চাকা উদ্ধার করা হয়।

পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত হান্নান, ইকবাল ও মান্নানের দেওয়া তথ্যমতে র‌্যাব-১০ এর উক্ত দল গত ২৭ মার্চ মাঝরাত ১২:৩০ ও ১:৪৫ টায় নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর থানাধীন কুড়িপাড়া ও পিচকামতাল এলাকায় আরো দুইটি অভিযান জালিয়ে চোরাইকৃত আরো ৯টি ইজিবাইক ও ৫টি স্পেয়ার চাকা উদ্ধার করে। এ সময় ইজিবাইক চোর চক্রটির অন্যান্য আসামিরা র‌্যাবের অভিযানের সংবাদ পেয়ে কৌশলে সেখান থেকে পালিয়ে যায়। উক্ত চক্রটির সাথে জড়িত পলাতক অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে র‌্যাবের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত মাসুদুর রহমান ওরফে শামীম ইজিবাইক চোর চক্রটির মূলহোতা। সে গ্রেফতারকৃত রাজিব, হান্নান, ইকবাল, মান্নান ও পলাতক অন্যান্য আসামিদের নিয়ে একটি ইজিবাইক চোরচক্র গড়ে তোলে। তাদের মধ্যে রাজিব উক্ত চোর চক্রের অন্যতম মূল হোতা মাসুদুর রহমান ওরফে শামীমের প্রধান সহযোগী হিসেবে কাজ করত। রাজিব কখনও নিজেকে বিভিন্ন টিভি ও পত্রিকার সাংবাদিক আবার কখনও নিজেকে পুলিশের কর্মকর্তা পরিচয় দিত। শামীম ও রাজিব দুইজন মিলে মোটরসাইকেল সহযোগে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে তাদের টার্গেট ও স্থান নির্ধারণ করত। পরবর্তীতে তাদের নির্ধারিত টার্গেট (বিভিন্ন ইজিবাইক) ভাড়া করে তাদের পরিকল্পিত ও সুবিধাজনক স্থানে নিয়ে গিয়ে বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্রের মাধ্যমে প্রাণনাশের হুমকিসহ বিভিন্ন ভয়-ভীতি প্রদর্শন, কখনও চেতনানাশক ঔষধ ব্যবহার করে ভিকটিমদের অচেতন করে আবার কখনও সাংবাদিক ও পুলিশের পরিচয় দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে ভিকটিমদের ইজিবাইক ছিনতাই/চুরি করে নিয়ে পালিয়ে যেত।

পরবর্তীতে শামীম ও রাজিব ছিনতাই/চুরিকৃত বিভিন্ন ইজিবাইক হান্নানের কাছে ২০,০০০-৩০,০০০ টাকার বিনিময়ে বিক্রি করত। হান্নান উক্ত ক্রয়কৃত ইজিবাইকগুলোর রং ও কাঠামো পরিবর্তন করে সেগুলো অন্যত্র ৪০,০০০-৫০,০০০ টাকার বিনিময়ে বিক্রি করত। হান্নান মূলত ইকবালের মাধ্যমে উক্ত ইজিবাইকগুলো বিক্রয় করত। ইকবাল বিভিন্ন এলাকা হতে চুরিকৃত ইজিবাইক বিক্রয়ের সোর্স হিসেবে কাজ করত। মান্নান উক্ত ছিনতাই/চুরিকৃত ইজিবাইকের ক্রেতা। সে উক্ত ইজিবাইক ক্রয় করে অধিক মূলে আবার অন্যত্র বিক্রি করত বলে জানা যায়।

জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায়, তারা মাসুদুর রহমান ওরফে শামীমের নেতৃত্বে প্রায় ২ বছর যাবৎ নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকার বিভিন্ন এলাকা হতে ইজিবাইক চুরি করে আসছিল। তারা প্রতি মাসে বিভিন্ন এলাকা হতে ১০-১৫টি ইজিবাইক চুরি করত বলে জানায়। এক্ষেত্রে তারা তাদের নির্ধারিত টার্গেটকে ফাঁদে ফেলার জন্য নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অধিক ভাড়া দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে রাজি করতো। পরবর্তীতে তাদের পরিকল্পিত স্থানে পৌঁছামাত্র বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্রের মাধ্যমে প্রাণনাশের হুমকিসহ বিভিন্ন প্রকার ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে ভিকটিমদের ইজিবাইক ছিনিয়ে নিতো বলে জানা যায়। গ্রেফতারকৃত মোঃ রাজিব হোসেনের বিরুদ্ধে ১টি ডাকাতি প্রস্তুতির মামলা রয়েছে বলে সে জানায়।

গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।

অভিযান-২:
মুন্সিগঞ্জ জেলার বৈখর এলাকা হতে ৩টি দেশীয় অস্ত্র (পাইপগান) ও ফেনসিডিলসহ ২ জন অবৈধ অস্ত্রধারী মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।

গত ২৮ মার্চ মাঝরাত আনুমানিক ১২:৪৫ টায় র‌্যাব-১০ এর একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মুন্সিগঞ্জ জেলার সদর থানার বৈখর এলাকায় একটি অভিযান চালিয়ে ৩৬ (ছত্রিশ) বোতল ফেনসিডিলসহ ২ জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত মাদক ব্যবসায়ীদের নাম ১। মোঃ আব্দুল জব্বার ওরফে বাবু (২৫), পিতা-মৃত অফিজ উদ্দিন সরকার, সাং-বৈখর পশ্চিম পাড়া, থানা ও জেলা-মুন্সিগঞ্জ ও ২। মোঃ রাসেল শিকদার (৩৪), পিতা-আমির আলী শিকদার, সাং-পশ্চিম শিয়ালদি, থানা-সিরাজদিখান, জেলা-মুন্সিগঞ্জ বলে জানা যায়। এ সময় তাদের নিকট থেকে ৩টি দেশীয় অস্ত্র (পাইপগান) ও ২০টি রাবার কার্তুজ উদ্ধার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা পেশাদার মাদক ব্যবসায়ী। তারা বেশ কিছুদিন যাবৎ দেশের বিভিন্ন সীমান্তবর্তী এলাকা হতে ফেনসিডিলসহ অন্যান্য মাদকদ্রব্য সংগ্রহ করে মুন্সিগঞ্জ ও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করে আসছিল।

গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদক আইনে মামলা দায়ের করে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

অভিযান-৩:
ঢাকার কেরাণীগঞ্জ, শ্যামপুর ও সূত্রাপুর এলাকায় ভেজাল শিশু খাদ্য এবং অনুমোদনহীন নকল বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি উৎপাদন, মজুদ ও বিক্রি এবং অবৈধভাবে চাল মজুদ করায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতে ৩৭ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

গত ২৮/০৩/২০২৪ তারিখ সকাল ৯:০০ টা থেকে ২৯/০৩/২০২৪ তারিখ ভোর ৫:০০টা পর্যন্ত র‌্যাবের এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জনাব মোঃ মাজহারুল ইসলাম ও র‌্যাব-১০ এর সমন্বয়ে একটি দল ঢাকার কেরাণীগঞ্জ, শ্যামপুর ও সূত্রাপুর এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত কার্যক্রম সম্পন্ন করেন। এ সময় বিএসটিআই এর প্রতিনিধির উপস্থিতিতে উক্ত ভ্রাম্যমাণ আদালত উল্লেখিত এলাকায় ভেজাল শিশু খাদ্য অনুমোদনহীন নকল বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি উৎপাদন, মজুদ ও বিক্রি এবং অবৈধভাবে চাল মজুদ করার অপরাধে ৯টি প্রতিষ্ঠানকে সর্বমোট ৩৭,০০,০০০/- (সাঁয়ত্রিশ লক্ষ) টাকা জরিমানা প্রদান করেন। যার মধ্যে ১। এক্সপোলিংক রিসোর্সেস লিমিটেড’কে নগদ-৫,০০,০০০/- (পাঁচ লক্ষ) টাকা, ২। তানিয়া ক্যাবলস্’কে নগদ-৫,০০,০০০/- (পাঁচ লক্ষ) টাকা, ৩। সুপার সাইন ইন্ড্রাস্ট্রিজ (ইলেট্রিক্যাল)’কে নগদ-১০,০০,০০০/- (দশ লক্ষ) টাকা, ৪। বাঁধন ইলেক্ট্রনিক্স লিমিটেড’কে নগদ-৫,০০,০০০/- (পাঁচ লক্ষ) টাকা, ৫। বাবু স্টোর’কে নগদ- ২,০০,০০০/- (দুই লক্ষ) টাকা, ৬। ইআরবি ক্যাবলস্’কে নগদ-২,০০,০০০/- (দুই লক্ষ) টাকা, ৭। এ আর কনজিউমার লিমিটেড’কে নগদ-২,০০,০০০/- (দুই লক্ষ) টাকা, ৮। বি.কে.কে পলিমার এন্ড মেটাল’কে নগদ-৫,০০,০০০/- (পাঁচ লক্ষ) টাকা ও ৯। তাহসিন মার্কেটিং’কে নগদ-১,০০,০০০/- (এক লক্ষ) টাকা করে জরিমানা প্রদান করেন। এছাড়া বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এর নির্দেশে উক্ত মোবাইল কোট আনুমানিক ২,০০,০০০/- (দুই লক্ষ) টাকা মূল্যের নকল বৈদ্যুতিক তার জব্দ করে।

প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায় যে, বেশ কিছুদিন যাবৎ এই অসাধু ব্যবসায়ীরা ভেজাল শিশু খাদ্য অনুমোদনহীন নকল বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি উৎপাদন, মজুদ ও বাজারজাত এবং অবৈধভাবে চাল মজুদ করে আসছিল।

অভিযান-৪:
রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর এলাকা হতে কিশোর গ্যাং লিডার হাসিবুলসহ বাহিনীর ৭ সদস্যকে ছিনতাইকালীন অবস্থায় গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০।

গত ২৯ মার্চ তারিখ রাত ১০.৩০ টা থেকে ১১.৫০ টায় র‌্যাব-১০ এর একটি দল গোপন তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর থানার মাদবর বাজারঘাটের বেড়ীবাঁধ এলাকায় একাধিক অভিযান চালিয়ে কিশোর গ্যা এর ৭ সদস্যকে ছিনতাইকালীন অবস্থায় গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের নাম ১। মোঃ হাসিবুল হোসেন, পিতা-ইদ্রিস হোসেন, সাং- নুরবাগ, ২। মোঃ রকি, পিতা- মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন,সাং- পাকা পোল দশআনি পাড়া গলি, ৩। মোঃ ইমন, পিতা- মৃত সিরাজুল ইসলাম,সাং- মাদবর বাজার, ৪। মোঃ জুয়েল, পিতা- মৃত ইসমাইল,সাং- খোলামোড়া ৫। মোঃ তানভির, পিতা- মোঃ তাহের আলী, সাং- মাদবর বাজার, ৬। মোঃ হৃদয়, পিতা- মৃত- মোঃ নাজির, সাং- বড়গ্রাম ৭। মোঃ নাঈম, পিতা- মোঃ মাসুম, সাং- নুরবাগ দাদন মাদবর গলি, সর্ব থানা- কামরাঙ্গীরচর, ডিএমপি, ঢাকা, (ভাসমান) বলে জানা যায়। এসময় তাদের নিকট হতে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডে ব্যবহৃত ৪টি চাকু উদ্ধার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, পাড়া মহল্লায় আধিপত্য বিস্তারসহ বিভিন্ন প্রকার অপরাধমূলক কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছিল।

গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

অভিযান-৫:
মাদক মামলায় ৫ বছরের সাজাপ্রাপ্ত দীর্ঘদিন পলাতক আসামি হারু জোয়ার্দার’কে রাজধানীর দক্ষিণখান এলাকা হতে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০।

গত ৩০ মার্চ ২০২৪ তারিখ সন্ধ্যা ৭.৪০ টায় র‌্যাব-১০ এর একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এবং র‌্যাব-১ এর সহযোগিতায় রাজধানী ঢাকার দক্ষিণখান থানাধীন কাওলার পয়সার বাজার এলাকায় একটি অভিযান চালিয়ে কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর থানার মামলা নং-১৩০/১৬, সেশন নং-৩৯৮/২০১৭, ধারা-১৯ (১) টেবিল ৩(ক), মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯৯০; মামলায় ০৫ বছরের সাজাপ্রাপ্ত সাজা ওয়ারেন্টভুক্ত দীর্ঘদিন পলাতক আসামী মোঃ হারুন অর রশিদ ওরফে হারু জোয়ার্দার (৩৮), পিতা-মৃত আজিজুল হক জোয়ার্দার, সাং-মিরপুর তালতলা, থানা-মিরপুর,জেলা- কুষ্টিয়া’কে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে, গ্রেফতারকৃত আসামী উল্লেখিত মামলায় সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি বলে স্বীকার করেছে।

গ্রেফতারকৃত আসামিকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

অভিযান-৬:
অবৈধভাবে চাঁদা উত্তোলন কালে রাজধানীর কদমতলী এলাকা হতে ৩ জন পরিবহন চাঁদাবাজকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।

গত ৩০ মার্চ ২০২৪ তারিখ দুপুর ২:৩০ টায় র‌্যাব-১০ এর একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাজধানী ঢাকার কদমতলী এলাকায় একটি অভিযান চালিয়ে আন্তঃজেলা ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, লরী ও সিএনজিসহ বিভিন্ন পরিবহন হতে অবৈধভাবে চাঁদা আদায় করাকালীন চাঁদা উত্তোনকারী চক্রের অন্যতম মূলহোতা ১। মোঃ সুজন (২৪), পিতা-মকবুল আহম্মেদ, সাং-চরমানিকা, থানা-চর ফ্যাশন, জেলা-ভোলাসহ ০৩ জন চাঁদাবাজকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত অপর আসামিদের নাম ২। মোঃ জানে আলম (৩৮), পিতা-মৃত শামসুল হক, সাং-আলমবাগ, থানা-কদমতলী, ঢাকা ও ৩। মোঃ ফেরদৌস (২০), পিতা-মোঃ দেলোয়ার আকন, সাং-দক্ষিণ ফুলতলা, থানা-বেতাগী, জেলা-বরগুনা বলে জানা যায়। এসময় তাদের নিকট থেকে আদায়কৃত চাঁদা নগদ- ১,১০০/- (এক হাজার একশত) টাকা ও ৩টি কাঠের লাঠি উদ্ধার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা বেশ কিছুদিন যাবৎ রাজধানীর কদমতলীসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় আন্তঃজেলা ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, লরী ও সিএনজিসহ বিভিন্ন পরিবহনের ড্রাইভার ও হেলপারদের সাথে অশোভন আচনের মাধ্যমে ভয়ভীতি দেখিয়ে অবৈধভাবে জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করে আসছিল। এছাড়াও গ্রেফতারকৃত সুজনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় চাঁদাবাজিসহ দুইটি মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।

গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়ের করে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

বিষয়:
পরবর্তী খবর

৫০ ভরি স্বর্ণ উদ্ধার

সীমান্ত সম্ভারে স্বর্ণের দোকানে চাঞ্চল্যকর চুরির রহস্য উদঘাটন, গ্রেপ্তার ৩

রাজধানীর ধানমণ্ডির বিজিবি সীমান্ত সম্ভার শপিং কমপ্লেক্সের একটি স্বর্ণের দোকানে সংঘটিত চাঞ্চল্যকর চুরির ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন মো. রুবেল (২৮), সফিক ওরফে সোহেল (৩৫) এবং সাদ্দাম হোসেন (৩১)। এ সময় তাদের কাছ থেকে চুরি যাওয়া ৫০ ভরি আট আনা স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়, যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা।

ডিবি সূত্রে জানা যায়, ধানমণ্ডি মডেল থানাধীন ‘ক্রাউন ডায়মন্ড এন্ড জুয়েলার্স’ শোরুমে গত ৩ জানুয়ারি বেলা ১টার দিকে চুরির ঘটনা ঘটে। চোরচক্র অভিনব পদ্ধতিতে শো-রুমের তালা ও সাটার কেটে মাত্র আট মিনিটের মধ্যে ১৫৯ ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে পালিয়ে যায়। দোকানের মালিক কাজী আকাশ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন, যেখানে চুরি যাওয়া স্বর্ণালংকারের আনুমানিক মূল্য প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা উল্লেখ করা হয়।

মামলার প্রেক্ষিতে ডিবি পুলিশ তদন্ত শুরু করে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ৯ জানুয়ারি থেকে ডিবি পুলিশ ধারাবাহিক অভিযান চালায়। কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে প্রথমে মো. রুবেলকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কুমিল্লার দেবীদ্বার থেকে সফিক ওরফে সোহেল এবং মুরাদনগর থেকে সাদ্দাম হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে ২৮ ভরি ১৪ আনা আসল স্বর্ণ এবং ২১ ভরি ১০ আনা গলিত স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়। ডিবি সূত্রে আরও জানা যায়, চুরির ঘটনায় জড়িত চক্রের অন্যান্য সদস্যদের শনাক্ত করা হয়েছে এবং তাদের গ্রেফতার ও অবশিষ্ট স্বর্ণ উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

ডিএমপি’র উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান পিপিএম জানান, এই চক্র অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে পরিকল্পনা করে চুরি সংঘটিত করে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে জনগণের আস্থা অক্ষুণ্ণ রাখতে সক্ষম হয়েছে।

বিষয়:
পরবর্তী খবর

পোরশায় ন্যায্যমূল্যে গরুর মাংস, কেনা যাবে ২৫০ গ্রাম

চড়া দামের কারণে নিম্নবিত্ত থেকে মধ্যবিত্ত অনেক মানুষ পুরো এক কেজি মাংস কিনতে পারছে না। এমন ক্রেতাদের সুবিধার্থে এবার ২৫০ গ্রাম গরুর মাংসও বিক্রি হবে নওগাঁর পোরশায়। সরকারি ব্যবস্থাপনায় ন্যায্যমূল্যের দোকানে গরুর মাংস বিক্রি কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়েছে।

শুক্রবার (১৩ই ডিসেম্বর) সকাল আটটার দিকে এ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফ আদনান।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের সহযোগিতায় ও জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল আউয়ালের নির্দেশে ন্যায্যমূল্যে গরুর মাংস বিক্রির এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এ সময় উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির, বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন।

এ প্রসঙ্গে ইউ এন ও আরিফ আদনান বলেন, জেলা প্রশাসকের দিকনির্দেশনায় ন্যায্য মূল্যের মাংসের দোকান চালু করা হয়েছে । এই দোকানে প্রতি কেজি ৬০০ টাকা দরে ক্রেতাগণ কিনতে পারবেন এবং গরিব জনগণ ২৫০ গ্রাম থেকে গরুর মাংস কিনতে পারবেন বলে জানান ইউ এন ওআরিফ আদনান।

বিষয়:
সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত