বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) ইবিএ নামক বিভিন্ন মেয়াদে ৬টি প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ দীর্ঘদিন এ প্রকল্প থেকে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা লোপাট করেছেন বলে অভিযোগ আছে। গভীর নলকূপ পুনর্বাসন ও স্থাপন, বিদ্যুতায়ন ও নালা নির্মাণ, ভূ-গর্ভস্থ পানি সংরক্ষণ, কৃষি ব্যবস্থার দক্ষতা ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিকরণ, পানি বিতরণ ও প্রি-পেইড মিটার স্থাপন, চারারোপণ, অকেজো নলকূপ সচলকরণ, পুকুর পুনঃখনন, খাল খননসহ অন্যান্য কাজের ৬ প্রকল্পে ৩৪৮ কোটি ৭৯ লাখ ৬৬ হাজার টাকার কাজে এ লোপাট করা হয়।
প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে এরকম অভিযোগে সরেজমিনে গিয়ে তার সত্যতা পাওয়া যায়। ভুক্তভোগী সেবা প্রত্যাশীদের বক্তব্যে উঠে আসে লাগামহীন অনিয়ম ও দুর্নীতির ভয়াবহ চিত্র।
কৃষক ও স্থানীয়দের দেয়া তথ্যমতে, বরেন্দ্র ইবিএ প্রকল্প ইউনিট-২ এলাকায় প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষাকল্পে ১ম ও ২য় পর্যায়ে (২০০৫ থেকে ২০০৮ ও ২০০৬ থেকে ২০১১ পর্যন্ত) ৩১ কোটি ১ লাখ টাকা ব্যয়ে বনায়ন সৃষ্টি করা হয়। নামে বনায়ন বা চারারোপন প্রকল্প হলেও সেখানে বরাদ্দের এক-তৃতীয়াংশও চারা দেখতে পাওয়া যায়নি। স্থানীয়রা বলছেন, এই প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। বিএমডিএ কর্তৃপক্ষ বলছে, সেখানকার অনেক চারাগাছ নষ্ট হয়ে গেছে।
২০০৮-১৪ পর্যন্ত সেচ কাজে ব্যবহারের জন্য অকেজো গভীর নলকূপ সচলকরণ আরেক প্রকল্পে ১৯৯ কোটি ১৩ লাখ ৯ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। ওই প্রকল্পের চাষীরা এখনও পানির জন্য হাহাকার করছেন। অল্পকিছু পুরাতন গভীর নলকূপ ও পানি বিতরণ এবং প্রি পেইড মিটার স্থাপনের মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে কোটি কোটি টাকা। এমন অভিযোগ খোদ প্রকল্প এলাকার স্থানীয় কৃষকদের। তারা আরও বলেন, এখন অনেক নলকূপ প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। অন্য নলকূপের মাধ্যমে একাধিক এলাকায় সেচ সরবরাহ করা হচ্ছে।
২০১৪ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত রাজশাহী, নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় পুরাতন গভীর নলকূপ পূর্নবাসন প্রকল্পে ৭৬ কোটি ২২ লাখ ৫৭ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। ওই প্রকল্পে সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয় চাষীদের সাথে কথা বলে ব্যাপক পানি সংকটের কথা জানা যায়। প্রকল্পে ব্যয়কৃত টাকা শুধুমাত্র কাগজ কলমেই ঠিক রাখা হয়েছে বলে জানান কৃষকরা। কাজের কাজ তেমন কিছুই হয়নি। কিছু বিদ্যুতায়ন ও নালা নির্মাণ হলেও গভীর নলকূপ পূর্নবাসনের নামে হয় ব্যাপক লুটপাট। ২০২০ সাল থেকে চলমান ভূ-গর্ভস্থ পানি সংরক্ষণ এবং কৃষি দক্ষতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পে ৪৩ লাখ ৯২ হাজার টাকা ব্যয় করা হয়। ওই প্রকল্পের কাজে ৯২% অগ্রগতি দেখানো হলেও কাজটি এখনো ৫০% অসম্পূর্ণ রয়েছে।
২০১৯ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত চলমান অন্য আরেক প্রকল্পে পুকুর ও খাল খনন বাবদ ৪২ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। একাজেও দৃশ্যমান তেমন অগ্রগতি নেই।
বিএমডিএ’র একটি সূত্র বলছে, বিএমডিএ তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (ইবিএ প্রকল্প পরিচালক) আব্দুল লতিফ স্বজনপ্রীতি ও অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে প্রকল্পগুলো থেকে অর্থ লোপাট করেছেন।
প্রকল্প উন্নয়নে কৃষকের ভাগ্য ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা না হলেও ঠিকাদার ও প্রকল্পের সঙ্গে জড়িতদের ভাগ্য ও ভারসাম্য দুটোই রক্ষা হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে প্রকল্পের ভয়াবহ চিত্র-ই তা বলে দেয়। প্রকল্পে বিদেশি ফান্ডের মোটা অংকের টাকা অনিয়মের মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছেন দেখভালের দ্বায়িত্বে থাকা পরিবেশ অধিদপ্তরের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা ও প্রকল্প পরিচালক। অভিযোগ আছে, প্রতিটি কাজে ঠিকাদারদের কাছ থেকে ১০% কমিশন নিতেন প্রকল্প পরিচালক আব্দুল লতিফ। কমিশন বাণিজ্য ছাড়াও কাজ না করেও বিল উত্তোলন করেছেন তিনি। তার নিজস্ব কিছু ঠিকাদার ওই কাজগুলো করেছেন।
সরেজমিনে গিয়ে ইবিএ প্রকল্পের আওতায় (তানোর, নাচোল, সাপাহার) পুকুর পুনঃখননে দুর্নীতি চিত্র দৃশ্যমান হয়। ১০টি পুকুরে ঘুরে দৃশ্যমান তেমন কোন কাজ না দেখা না গেলেও প্রতিটি পুকুর খননে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। ৩ হাজার টাকার সাইন বোর্ডে ৩০ হাজার টাকা ব্যয় ধরে বিল উত্তোলন করা হয়েছে।
তানোর বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ইবিএ প্রকল্পে তেমন কাজ হয়নি। আমরা দেখতে পাইনি। লোবাতলা ব্রিজের পূর্ব পাশ থেকে শিবনদী পর্যন্ত ৩.২ কি.মি খাল খননেও মানা হয়নি কাজের নিয়ম। অনিয়মে ঠিকাদার অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে।
কথা বললে নাচোলের স্থানীয় কৃষক কুরবান আলী বলেন, এলাকায় কৃষকরা চরম পানি সংকটে আছেন। ইবিএ প্রকল্পের নামে এ এলাকায় দৃশ্যমান কাজ হয়নি। প্রকল্পের কাজগুলো উচ্চ পর্যায়ের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে তদন্ত হওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।
কথা বললে বিএমডিএ তত্ত্বাবধানে প্রকল্প পরিচালক আব্দুল লতিফ বলেন, এসব বিষয়ে আমি ফোনে কথা বলবো না। আপনার কিছু জানার থাকলে অফিসে আসেন। অফিসে আসলে কথা হবে।
রাজধানীর ধানমণ্ডির বিজিবি সীমান্ত সম্ভার শপিং কমপ্লেক্সের একটি স্বর্ণের দোকানে সংঘটিত চাঞ্চল্যকর চুরির ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন মো. রুবেল (২৮), সফিক ওরফে সোহেল (৩৫) এবং সাদ্দাম হোসেন (৩১)। এ সময় তাদের কাছ থেকে চুরি যাওয়া ৫০ ভরি আট আনা স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়, যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা।
ডিবি সূত্রে জানা যায়, ধানমণ্ডি মডেল থানাধীন ‘ক্রাউন ডায়মন্ড এন্ড জুয়েলার্স’ শোরুমে গত ৩ জানুয়ারি বেলা ১টার দিকে চুরির ঘটনা ঘটে। চোরচক্র অভিনব পদ্ধতিতে শো-রুমের তালা ও সাটার কেটে মাত্র আট মিনিটের মধ্যে ১৫৯ ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে পালিয়ে যায়। দোকানের মালিক কাজী আকাশ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন, যেখানে চুরি যাওয়া স্বর্ণালংকারের আনুমানিক মূল্য প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা উল্লেখ করা হয়।
মামলার প্রেক্ষিতে ডিবি পুলিশ তদন্ত শুরু করে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ৯ জানুয়ারি থেকে ডিবি পুলিশ ধারাবাহিক অভিযান চালায়। কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে প্রথমে মো. রুবেলকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কুমিল্লার দেবীদ্বার থেকে সফিক ওরফে সোহেল এবং মুরাদনগর থেকে সাদ্দাম হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে ২৮ ভরি ১৪ আনা আসল স্বর্ণ এবং ২১ ভরি ১০ আনা গলিত স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়। ডিবি সূত্রে আরও জানা যায়, চুরির ঘটনায় জড়িত চক্রের অন্যান্য সদস্যদের শনাক্ত করা হয়েছে এবং তাদের গ্রেফতার ও অবশিষ্ট স্বর্ণ উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ডিএমপি’র উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান পিপিএম জানান, এই চক্র অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে পরিকল্পনা করে চুরি সংঘটিত করে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে জনগণের আস্থা অক্ষুণ্ণ রাখতে সক্ষম হয়েছে।
চড়া দামের কারণে নিম্নবিত্ত থেকে মধ্যবিত্ত অনেক মানুষ পুরো এক কেজি মাংস কিনতে পারছে না। এমন ক্রেতাদের সুবিধার্থে এবার ২৫০ গ্রাম গরুর মাংসও বিক্রি হবে নওগাঁর পোরশায়। সরকারি ব্যবস্থাপনায় ন্যায্যমূল্যের দোকানে গরুর মাংস বিক্রি কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়েছে।
শুক্রবার (১৩ই ডিসেম্বর) সকাল আটটার দিকে এ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফ আদনান।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের সহযোগিতায় ও জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল আউয়ালের নির্দেশে ন্যায্যমূল্যে গরুর মাংস বিক্রির এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এ সময় উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির, বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন।
এ প্রসঙ্গে ইউ এন ও আরিফ আদনান বলেন, জেলা প্রশাসকের দিকনির্দেশনায় ন্যায্য মূল্যের মাংসের দোকান চালু করা হয়েছে । এই দোকানে প্রতি কেজি ৬০০ টাকা দরে ক্রেতাগণ কিনতে পারবেন এবং গরিব জনগণ ২৫০ গ্রাম থেকে গরুর মাংস কিনতে পারবেন বলে জানান ইউ এন ওআরিফ আদনান।