দেশ, শৈশব

দেশ, শৈশব

শার্শায় স্মার্টফোনে ব‍্যাহত শিক্ষার পরিবেশ, বাড়ছে অসামাজিক কর্মকাণ্ড

প্রযুক্তি নির্ভর বতর্মান আধুনিক যুগে ইন্টারনেট ব‍্যবহারের ফলে যোগাযোগ ব‍্যবস্থা যেমন সুবিধা হয়েছে, তেমন অসুবিধাও হয়েছে। ইন্টারনেটের কারণে মোবাইলের ব‍্যবহার ছিমছাম ও ভাবগাম্মীর্যসহ মর্যাদা বহন করত ও অসাধারণ একটি বিষয় ছিল। কিন্তু দিন যত যাচ্ছে তত নতুন প্রযুক্তি আবিষ্কার হচ্ছে এবং তার প্রসারও ঘটছে তত। যার বহিঃপ্রকাশ মোবাইল ব‍্যবহারে ছোট বড় কারোর মাঝে কোন পার্থক্য নেই।

ইন্টারনেটের কারণে কিশোর কিশোরী, যুবক যুবতীদের হাতে হাতে শোভা পাচ্ছে স্মার্ট ফোন। আর এই ফোন ব‍্যবহারে ১০ থেকে ১২ ও ১৬ থেকে ১৮ বছরের কিশোর কিশোরী, যুবক যুবতীরা রয়েছে শীর্ষে।

এই স্মার্টফোন ফোন ব‍্যবহার যশোরের শার্শা উপজেলাসহ দেশের সব অঞ্চলে দেখা যায় ব‍্যাপক হারে।

বিশেষ করে স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা ঝুকছে স্মার্ট ফোন ব‍্যবহারে। শিক্ষকদের চোখ এড়িয়ে শিক্ষার্থীরা স্কুল, কলেজ ফাঁকি দিয়ে ফোনে টিকটক, ফ্রি ফায়ারসহ ভিডিও গেম খেলায় ব‍্যস্ত থাকছে অধিকাংশ সময়।

আবার বাসাবাড়িতে পিতা মাতা ও অভিভাবকদের ফাঁকি দিয়ে নির্জন জায়গায় বসে ঝাকেঝাকে কিশোর যুবকদের গেম খেলতে দেখা যায়। তারা পড়াশোনার চাইতে ফোনে গেম খেলায় মনযোগী হয়ে উঠেছে বেশি। ফোন চালাতে ইন্টারনেট ও এমবি না থাকলে ফোন চলে না। এমবি কিনতে পিতা-মাতার পকেট খালি করছে গেম পিপাসু সন্তানরা। আর লাভবান হচ্ছে ইন্টারনেট ব‍্যবসায়ীরা।

স্মার্ট ফোন ব‍্যবহারের কারণে যুবক-যুবতীরা নেটের মাধ্যমে অশ্লীল কথাবার্তা, ভিডিও চ‍্যাট করছে অজানা অচেনা যুবক-যুবতীদের সাথে এবং পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ছে প্রতিনিয়ত। প্রেম-ভালোবাসায় জড়িয়ে পড়ছে ফোনালাপের মাধ্যমে। এসব মোবাইল প্রেমে পড়ে মানছে না কোন বয়সসীমা। উঠতি বয়সী যুবক-যুবতীরা বড় ভাই, বড় বোন, এমনকি মা-বয়সীদের সাথেও অদৃশ্যভাবে মোবাইল প্রেমের ফাঁদে পড়ে অনাকংখিত ঘটনার জন্ম দিচ্ছে অহরহ। এই খপ্পড়ে পড়ে প্রাণহানীর ঘটনাও ঘটছে প্রতিনিয়ত। শুধু তাই নয় অভিভাবকদের সামর্থ থাক আর না থাক, স্মার্ট ফোন কিনে দিতে ব‍্যর্থ হলে অনেক সময় আত্মহত্যার ঘটনা ঘটছে। এই অনাকংখিত ঘটনা ইতোমধ্যে অনেক জায়গাই ঘটেছে। যা একাধিকবার অনেক পত্রপত্রিকায় ও মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে।

লেখাপড়া ফেলে প্রেমের অভিসারে অজানার উদ্দেশ্যে পাড়ি জমাচ্ছে প্রেমিক প্রেমিকারা। সমাজে অসামাজিক কাজে জড়িয়ে পড়ছে যুবক-যুবতীরা। এমনকি নেটের মাধ্যমে জুয়া খেলার প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে যুব সমাজ ধবংস হচ্ছে।

প্রেম ভালোবাসার টানে অপ্রাপ্ত বয়সী শিক্ষার্থীরা সংসার জীবনে পা রাখতে বাধ্য হচ্ছে। দেশে বাল‍্য বিবাহ ও নিরক্ষরতা বৃদ্ধি পাওয়ার এটিও একটি কারণ।

মোবাইল ব‍্যবহারকারী সন্তানদের সাথে পিতা মাতা, অভিভাবকদের সাথে প্রায়ই বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ছে। সন্তানদের সাথে এহেন কর্মকাণ্ডে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন সমাজের অভিভাবক মহল।

তাই মোবাইল ব‍্যবহারে সরকারিভাবে কড়াকড়ি আরোপ করা যায় কিনা তা খতিয়ে দেখার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন সমাজের পিতা মাতাসহ অভিভাবক ও সচেতন মহল।

বিষয়:
পরবর্তী খবর

বসুন্ধরা পারলে কেন সিটি করপোরেশন পারবে না

ভোররাত থেকে বৃষ্টি হচ্ছিল। সারা রাত আকাশে মেঘ ছিল। আষাঢ় শেষ হয়ে আসছে। বর্ষাকাল। এখন এরকমই হওয়ার কথা। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হবে হঠাৎ করেই। ঝুপ ঝুপ করে নামবে বৃষ্টি। কখনও থেকে থেকে, কখনও অবিরাম। এ বছরের বর্ষায় প্রবল বৃষ্টি হতে পারে, আবহাওয়াবিদরা পূর্বাভাস দিয়েছিলেন। জলবায়ু পরিবর্তন এখন পৃথিবীর সবচাইতে বড় সমস্যা। যেদিন আমরা পিছনে ফেলে এসেছি, যে আবহাওয়ায় বড় হয়েছি, সেই আবহাওয়া এখন আর নেই। শীতের দেশগুলোতে তীব্র গরম পড়ছে। শীতকালে শীত পড়ছে আগের তুলনায় বেশি। বরফের পাহাড় গলে যাচ্ছে আন্টার্টিকায়। দাবানলে পুড়ছে আমেরিকার বনভূমি। প্রকৃতি উল্টো-পাল্টা হয়ে গেছে। বদলে গেছে বহু কিছু।

এ বছরের গ্রীষ্মে প্রচণ্ড গরম পড়েছিল। মানুষের হাঁসফাঁস অবস্থা। জীবজগৎ বিপর্যস্ত। আবহাওয়াবিদরা বলেছিলেন, বর্ষায় প্রবল বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। ক’দিন আগে তাই হলো। ভোররাত থেকে বৃষ্টি। সকাল দশটা এগারোটা পর্যস্ত থামার নাম নেই। আকাশ অন্ধকার হয়ে আছে। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ছায়াময় পরিবেশ। আমি একটু বেলা করে উঠেছি। মধ্যমাত্রার বৃষ্টি তখনও ঝরছে। দুপুর নাগাদ টেলিভিশন আর অনলাইনগুলো দেখে হতভম্ব হয়ে গেলাম। ঢাকা শহরের বহু এলাকা বৃষ্টির পানিতে ডুবে গেছে। রিকশার পাদানিতে উঠে গেছে পানি। বাসের চাকা ডুবে গেছে। প্রাইভেটকার ডুবে গেছে, জেগে আছে শুধু গাড়ির ছাদটুকু। নিউমার্কেট আর কাঁটাবন এলাকার দোকানপাটের ভিতর কোমর পানি। ছোট আর মাঝারি ব্যবসায়ীরা পড়ে গেছেন ব্যাপক সংকটে। দোকানের মালামাল রক্ষা করতে পারেননি। সব ভেসে গেছে বৃষ্টিতে। শত কোটি টাকার ক্ষতি হয়ে গেছে।

অন্যদিকে মানুষের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ। কর্মস্থলে যাওয়া মানুষ, বাড়ি ফেরার মানুষ, ছাত্র-ছাত্রী প্রত্যেকেই পড়েছে চরম দুর্ভোগে। গাড়ি চলছে না। হেঁটে বাড়ি ফিরছে মানুষ। তাদের কোমরের ওপর পর্যন্ত পানি। পুরান ঢাকার অলিগলি রাজপথ ডুবে গেছে। ঘরে ঢুকে গেছে পানি। মানুষ দিশেহারা। এ অবস্থা কেমন করে সামাল দেবে? এক বেলার বৃষ্টিতে জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত। অথচ কোটি কোটি টাকা খরচ করা হচ্ছে ঢাকা শহরের পানি নিষ্কাশনের জন্য। কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। বৃষ্টি হলেই ডুবছে রাস্তাঘাট। বিপাকে পড়ছে মানুষ। আবহাওয়াবিদদের সাবধানতা বা ভবিষ্যদ্বাণী সিটি করপোরেশন দুটো সেভাবে মনে রাখেনি। মনে রেখে আগাম ব্যবস্থা নিলে শহরবাসী এরকম বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ত না। এই বিষয়ে দুই মেয়রের তীক্ষ্ণ নজর থাকা জরুরি ছিল। ঢাকার খালগুলো প্রায় সবই বুজে গেছে। দখল হয়ে গেছে। সবই আছে খালগুলোতে, শুধু পানিটাই নেই। পানির প্রবাহ বলতে কিছু নেই। ময়লা আবর্জনার ভাগাড় হয়ে গেছে একেকটা খাল। মেয়র মহোদয়দের দেখি, প্রায়ই খাল উদ্ধারের অভিযান করছেন। দু-একটা খাল দখল মুক্তও করছেন। তারপর আর খবর নেই। আগের মতো দখল হয়ে যাচ্ছে। আরেক মহাশত্রু হয়েছে পলিথিন। এই জিনিসের কোনও বিনাশ নেই। শুধুমাত্র পলিথিনই ডুবিয়ে দিচ্ছে অনেক অর্জন। এই বিষয়টি নিয়ে সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের সচেতন হওয়া জরুরি। পলিথিনের হাত থেকে বাঁচাতে হবে দেশ। পলিথিনের বিকল্প ব্যবস্থা কাজে লাগাতে হবে। এক্ষেত্রে সরকার ও মিডিয়া মিলে জনসচেতনা গড়ে তোলা জরুরি। মানুষ সচেতন হলে সমাজ পরিশিলিত হয়। গত তিরিশ পঁয়ত্রিশ বছর ধরে ধীরে ধীরে গড়ে উঠছিল বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা। এখন বসুন্ধরা ঢাকার সবচাইতে অভিজাত এলাকা। সবচাইতে আকর্ষণীয় এলাকা। বসুন্ধরায় কারও একটি ফ্ল্যাট বা কারও এক টুকরো জমি থাকলে তিনি খুব গৌরববোধ করেন। বসুন্ধরার মতো সুবিন্যস্ত আবাসিক এলাকা ঢাকায় আর নেই। এলাকাটির পরিকল্পনা করা হয়েছে সম্পূর্ণতই ইউরোপ-আমেরিকার ঘনবসতিপূর্ণ শহরগুলোর লাগোয়া অতি আধুনিক আবাসিক শহরগুলোর মতো করে। সুপরিকল্পিত ও সুব্যবস্থাপূর্ণ। বড় বড় রাস্তা। রাস্তার ধার আর আইল্যান্ডগুলো সবুজ গাছপালায় ভর্তি। রাজউকের বিল্ডিংকোড মেনে নির্মিত প্রতিটি বাড়ি। সঙ্গে আছে বসুন্ধরার নিজস্ব কঠোর তদারকি। নিয়মের বাইরে একটি ইটও বসানো যাবে না। একটি গাছের পাতাও ছেঁড়া যাবে না। অন্যদিকে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পুরুষমানুষরা তো বটেই, নারী ও শিশুরা চাইলেও রাত দুপুরে বাড়ির বাইরে বেড়াতে বেরোতে পারে। ডিস্টার্ব করা তো দূরের কথা, চোখ তুলেও তাকাবার সাহস পাবে না কেউ। নিরাপত্তায় নিয়োজিত গাড়িভর্তি কর্মী চব্বিশঘণ্টা টহল দিচ্ছে। ঢাকার ভিতরেই বসুন্ধরা সম্পূর্ণ এক আলাদা জগৎ। স্বপ্নের বাসভূমি। এটা সম্ভব হয়েছে সুপরিকল্পনা ও তা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন আর প্রয়োগের ফলে। গত কয়েক বছর আগে বর্ষার বৃষ্টিতে বসুন্ধরার কোথাও কোথাও পানি জমে যেত। এই নিয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করলেন কর্তৃপক্ষ। সুদূর প্রসারী আধুনিক পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে রাতারাতি সামাল দিলেন সেই সমস্যা। গড়ে তুললেন অত্যাধুনিক ড্রেনেজ ব্যবস্থা। যত বৃষ্টিই হোক, বসুন্ধরায় এখন আর পানি জমে না। জোরালো ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে বৃষ্টির পানি এক মিনিটও দাঁড়াতে পারে না। সঙ্গে আছে এলাকার ড্রেনগুলোর সঠিক তদারকি। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বহুকর্মী নিয়োজিত এই কাজে। কী নেই বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায়? হাসপাতাল, বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুল, খেলার মাঠ, শপিং মল, সুন্দর সুন্দর মসজিদ, গোরস্থান, অতি আধুনিক সব রেস্টুরেন্ট। এক কথায় সব মিলিয়ে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা বর্তমান বিশ্বের অতি আধুনিক এক মনোরম শহর। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা নিয়ে কথাগুলো বলার কারণ, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মেয়র মহোদয়দের দৃষ্টি আকর্ষণ করা। বসুন্ধরায় ড্রেনেজ ব্যবস্থার অনুকরণ করে তাঁরা খুব সহজেই হঠাৎ বৃষ্টিতে জলাবদ্ধ হয়ে যাওয়া ঢাকা শহরকে অনেকখানি মুক্তি দিতে পারেন। মানুষকে দুর্ভোগ মুক্ত করতে পারেন, ব্যবসায়ীদের বাঁচাতে পারেন ক্ষতির হাত থেকে। ছাত্র-ছাত্রী আর পথচলা মানুষদের চলাচল নির্বিঘ্ন করতে পারেন। বৃষ্টির তোড়ে হঠাৎ অসহায় হয়ে পড়া গৃহবাসীদের সুরক্ষা দিতে পারেন। এই শহরের মানুষকে স্বস্তিতে বসবাস করার সুযোগ করে দিতে পারেন। এসব তাঁদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। বিষয়টি নিয়ে নিশ্চয় তাঁরা ভাববেন। তাঁদের চোখের সামনেই তো উদাহরণ হিসেবে আছে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা।

পরবর্তী খবর

নওগাঁর ধামইরহাটে পানিতে ডুবে দুই ভাইয়ের মৃত্যু

নওগাঁর ধামইরহাটে পুকুরের পানিতে ডুবে যমজ দুই ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে।

রোববার (৭ জুলাই) দুপুর ১২টায় উপজেলার খেলনা ইউনিয়নের পশ্চিম চকভবানী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য আবু সালাম।

নিতহ দুই শিশু– লক্ষণ (৩) ও রাম (৩)। তারা উভয়ে একই গ্রামের সুজিত ওরাওঁ-এর যমজ সন্তান।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আবু সালাম বলেন, সকালের খাবার খেয়ে ওই দুই ভাই বাড়ির পাশে খেলতে থাকে। খেলার একপর্যায়ে সবার অগোচরে দুই ভাই বাড়ির সামনে পুকুরে ডুবে যায়। পরে তাদের খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে দুজনের লাশ পুকুরে ভাসমান অবস্থায় দেখতে পান স্থানীয়রা।

যমজ দুই ভাইয়ের মর্মান্তিক মৃত্যুতে পরিবারের সদস্য এবং প্রতিবেশীদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

ধামইরহাট থানায় অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. বাহাউদ্দিন ফারুকী বলেন, দুই শিশু পানিতে ডুবে মারা যাওয়ার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, খেলতে গিয়েই তারা পানিতে ডুবে মারা গেছে। এ বিষয়ে থানায় কোন অভিযোগ করা হয়নি।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত