দেশ, লিড নিউজ

দেশ, লিড নিউজ

কী করছেন হিট অফিসার?

তাপমাত্রার ভয়াবহ উৎকণ্ঠায় প্রশ্ন উঠেছে ঢাকা সিটি করপোরেশনের চিফ হিট অফিসারের কাজ আসলে কী। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এখন অনেক ধরনের প্রচারণা চলছে। সাম্প্রতিক গরম নিয়ে ঢাকার চিফ হিট অফিসার বুশরা আফরিনের বক্তব্য ভাইরাল হয়ে সমালোচনার ঝড় বইছে।

অনেকে বলছেন, পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম তার মেয়ে বুশরা আফরিনকে হিট অফিসার পদে নিয়োগ দিলেও এ পদের কার্যপদ্ধতি সম্পর্কে এখনো কোনো কিছু স্পষ্ট নয়। অসহনীয় গরম মোকাবিলায় গত বছর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে চিফ হিট অফিসার পদে বুশরা আফরিনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। এই পদে নিয়োগের পর থেকে তার দায়িত্ব নিয়ে সাধারণের মনে অনেক প্রশ্ন তৈরি হয়। বুশরার দায়িত্ব গ্রহণের পর এরই মধ্যে এক বছর পেরিয়ে গেলেও হিট অফিসার হিসেবে তার কাজের দৃশ্যমান কোনো ফলাফল পাওয়া যায়নি। এ বছর অসহনীয় তাপপ্রবাহের শিকার ঢাকাবাসীর মনেও এরই মধ্যে হিট অফিসার হিসেবে তার দায়িত্ব, এ পদে তার নিয়োগ পাওয়া এবং এ পদের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হতে শুরু করেছে। বিশ্বের অনেক বড় শহরের মতো ঢাকাও তাপমাত্রার ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রেকর্ড গড়ছে। আর এই বৈশ্বিক সমস্যা নিরসনে মার্কিনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আর্শট-রক এবং এক্সট্রিম হিট রেজিলিয়েন্স অ্যালায়েন্স (ইএইচআরএ) ২০২১ সাল থেকে কাজ করছে। তাপমাত্রা কমাতে বিশ্বের কয়েকটি মহাদেশে পাইলট প্রজেক্ট শুরু করেছে ইএইচআরএ। জাতিসংঘের সহযোগী এই সংগঠনটি বিশ্বে প্রথমবারের মতো চিফ হিট অফিসার পদ তৈরি করে এই পাইলট প্রজেক্টটিতে নিয়োগ দেয়। এই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশেও এই পদে গত বছর নিয়োগ পান বুশরা আফরিন। তিনি মেয়র আতিকুল ইসলামের কন্যা। ঢাকায় এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে উত্তর সিটি করপোরেশন।

ঢাকার চিফ হিট অফিসার বুশরা আফরিন বলেন, গরম থেকে বাঁচতে বেশি বেশি পানি পান করতে হবে। ঢিলেঢালা পোশাক পরতে হবে এবং যথাসম্ভব ছায়ার মধ্যে থাকার চেষ্টা করতে হবে। অসুস্থ বোধ করলে বিশ্রাম নিতে হবে, আর বেশি খারাপ লাগলে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।

তিনি আরও বলেন, সিটি করপোরেশন যথাসাধ্য চেষ্টা করছে পানীয় জলের সুব্যবস্থা বাড়ানোর জন্য। একই সঙ্গে ‘কুলিং স্পেস’ এর ব্যবস্থা করার চেষ্টা করা হচ্ছে যাতে পথচারীরা বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগ পান। আমাদের অবশ্যই আরও বেশি করে গাছ লাগাতে হবে এবং পরিবেশবান্ধব অবকাঠামো নির্মাণে এগিয়ে আসতে হবে।

তিনি বলেন, গত এক বছরে আমরা বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নিয়েছি। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বস্তি এলাকায় জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা। কারণ, তারা অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী। এসব জায়গায় গাছ লাগানোর মাধ্যমে এবং এসব গাছের রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে তাদের সম্পৃক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া আবহাওয়া অধিদফতরসহ বেশ কিছু সরকারি-বেসরকারি এবং এনজিওর সঙ্গে আমরা শিগগিরই যুক্ত হয়ে বিভিন্ন কার্যক্রম চালু করতে যাচ্ছি। কল্যাণপুর ও বনানীতে পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে আমরা ‘নগর বন’ তৈরি করতে যাচ্ছি। যা একই সঙ্গে শীতলকরণ, বায়ুদূষণ রোধ এবং মাটির গুণাগুণ বৃদ্ধি করবে।

মূলত হিট অফিসাররা নগরের বাসিন্দাদের তাপ সুরক্ষা প্রদানের কর্মকাণ্ডকে ত্বরান্বিত করে চরম তাপের ঝুঁকি এবং প্রভাব কমাতে কাজ করেন। এর সঙ্গে তাপমাত্রা সহনীয় রাখতে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন পদক্ষেপকে সমন্বয় করেন তারা। নগরের তাপমাত্রা কমাতে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির মতো নানা ধরনের প্রক্রিয়া অনুসরণ করে থাকে এই অফিসাররা। সহকর্মীদের মাঝে চরম তাপের ঝুঁকি এবং সমাধান সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানো, সম্প্রদায় এবং আশপাশের এলাকার মধ্যে যেগুলো চরম তাপের জন্য সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ সেগুলো চিহ্নিত করা, তাপ তরঙ্গের পরিকল্পনা এবং তাপ মোকাবিলায় বিজ্ঞান সম্মত পদক্ষেপ নেওয়াও তাদের কাজ। স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে সমন্বয় করা, দীর্ঘমেয়াদি তাপ ঝুঁকি কমানো এবং শীতলকরণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হিট অফিসারদের দায়িত্ব।

সাধারণত স্থানীয় কর্মকর্তাদের মাধ্যমেই চিফ হিট অফিসার নিয়োগ করা হয়। আর্শট-রকের নিয়োগ প্রক্রিয়ার নীতিমালা অনুযায়ী হিট অফিসার নিয়োগ পেয়ে থাকেন। সংস্থাটি প্রতিটি মহাদেশে একজন হিট অফিসার নিয়োগ দেবে। এ পর্যন্ত ৬টি মহাদেশে চিফ হিট অফিসার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ঢাকার বাইরে লস এঞ্জেলস, মিয়ামি, মেলবোর্ন, এথেন্স এবং ফ্রিটাউনে চিফ হিট অফিসার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এদের একজন এলিনি মাইরিভিলি। তিনি এথেন্সের চিফ হিট অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি স্থানীয় এবং বৈশ্বিক উভয় ক্ষেত্রে তাপমাত্রা কমানোর জন্য কাজ করছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিয়ামি-ডেড কাউন্টিতে আর্শট-রকের চিফ হিট অফিসার হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন জেন গিলবার্ট। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব, জলবায়ু দুর্যোগ প্রশমন এবং অভিযোজন এবং শহরের স্থিতিস্থাপকতায় তার ৩০ বছরের বেশি অভিজ্ঞতা আছে। তিনি শহরে গ্রিন স্পেস বাড়ানো এবং তাপপ্রবাহ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করছেন। আফ্রিকা মহাদেশের চিফ হিট অফিসার হলেন ইউজেনিয়া কার্গবো। দেশটির ফ্রিটাউন শহরে আর্শট-রকের চিফ হিট অফিসার হিসেবে তিনি নিযুক্ত। তিনি শহরের তাপমাত্রা কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। শহরায়ণের কারণে ফ্রিটাউন শহরটি যেসব সমস্যা মোকাবিলা করছে তিনি তা চিহ্নিত করেছেন। এ জন্য তিনি শহরের তাপমাত্রা কমাতে এবং ঝুঁকিপূর্ণ বাসিন্দাদের রক্ষা করতে বেশ সৃজনশীল সমাধান খুঁজে বের করছেন। অন্যদিকে বংলাদেশে প্রথম হিট অফিসার বুশরা আফরিন। বুশরা শুধু ঢাকা নয়, এশিয়া মহাদেশেরও প্রথম চিফ হিট অফিসার। সে হিসেবে তার কাছ থেকে এশিয়ার অন্য দেশগুলোতে অতিরিক্ত তাপপ্রবাহের শিকার মানুষদেরও প্রত্যাশা রয়েছে। কিন্তু অন্য দেশের হিট অফিসাররা যখন কুল পেভমেন্ট, গাছ লাগানো এবং ক্যানোপি তৈরির মতো ব্যতিক্রমী পদক্ষেপ নিয়ে সেখানকার বাসিন্দাদের স্বস্তি দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছেন সেখানে বুশরা আফরিনের দিকে এখনো অপেক্ষায় চেয়ে আছেন ঢাকাবাসী। গত এক বছরে তার কার্যক্রমসমূহ সেভাবে দৃশ্যমান না হওয়ায় এ নিয়ে নানা মাধ্যমে আলোচনায় সরব রয়েছেন সচেতন নাগরিকরা।

বিষয়:
পরবর্তী খবর

বসুন্ধরা পারলে কেন সিটি করপোরেশন পারবে না

ভোররাত থেকে বৃষ্টি হচ্ছিল। সারা রাত আকাশে মেঘ ছিল। আষাঢ় শেষ হয়ে আসছে। বর্ষাকাল। এখন এরকমই হওয়ার কথা। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হবে হঠাৎ করেই। ঝুপ ঝুপ করে নামবে বৃষ্টি। কখনও থেকে থেকে, কখনও অবিরাম। এ বছরের বর্ষায় প্রবল বৃষ্টি হতে পারে, আবহাওয়াবিদরা পূর্বাভাস দিয়েছিলেন। জলবায়ু পরিবর্তন এখন পৃথিবীর সবচাইতে বড় সমস্যা। যেদিন আমরা পিছনে ফেলে এসেছি, যে আবহাওয়ায় বড় হয়েছি, সেই আবহাওয়া এখন আর নেই। শীতের দেশগুলোতে তীব্র গরম পড়ছে। শীতকালে শীত পড়ছে আগের তুলনায় বেশি। বরফের পাহাড় গলে যাচ্ছে আন্টার্টিকায়। দাবানলে পুড়ছে আমেরিকার বনভূমি। প্রকৃতি উল্টো-পাল্টা হয়ে গেছে। বদলে গেছে বহু কিছু।

এ বছরের গ্রীষ্মে প্রচণ্ড গরম পড়েছিল। মানুষের হাঁসফাঁস অবস্থা। জীবজগৎ বিপর্যস্ত। আবহাওয়াবিদরা বলেছিলেন, বর্ষায় প্রবল বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। ক’দিন আগে তাই হলো। ভোররাত থেকে বৃষ্টি। সকাল দশটা এগারোটা পর্যস্ত থামার নাম নেই। আকাশ অন্ধকার হয়ে আছে। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ছায়াময় পরিবেশ। আমি একটু বেলা করে উঠেছি। মধ্যমাত্রার বৃষ্টি তখনও ঝরছে। দুপুর নাগাদ টেলিভিশন আর অনলাইনগুলো দেখে হতভম্ব হয়ে গেলাম। ঢাকা শহরের বহু এলাকা বৃষ্টির পানিতে ডুবে গেছে। রিকশার পাদানিতে উঠে গেছে পানি। বাসের চাকা ডুবে গেছে। প্রাইভেটকার ডুবে গেছে, জেগে আছে শুধু গাড়ির ছাদটুকু। নিউমার্কেট আর কাঁটাবন এলাকার দোকানপাটের ভিতর কোমর পানি। ছোট আর মাঝারি ব্যবসায়ীরা পড়ে গেছেন ব্যাপক সংকটে। দোকানের মালামাল রক্ষা করতে পারেননি। সব ভেসে গেছে বৃষ্টিতে। শত কোটি টাকার ক্ষতি হয়ে গেছে।

অন্যদিকে মানুষের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ। কর্মস্থলে যাওয়া মানুষ, বাড়ি ফেরার মানুষ, ছাত্র-ছাত্রী প্রত্যেকেই পড়েছে চরম দুর্ভোগে। গাড়ি চলছে না। হেঁটে বাড়ি ফিরছে মানুষ। তাদের কোমরের ওপর পর্যন্ত পানি। পুরান ঢাকার অলিগলি রাজপথ ডুবে গেছে। ঘরে ঢুকে গেছে পানি। মানুষ দিশেহারা। এ অবস্থা কেমন করে সামাল দেবে? এক বেলার বৃষ্টিতে জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত। অথচ কোটি কোটি টাকা খরচ করা হচ্ছে ঢাকা শহরের পানি নিষ্কাশনের জন্য। কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। বৃষ্টি হলেই ডুবছে রাস্তাঘাট। বিপাকে পড়ছে মানুষ। আবহাওয়াবিদদের সাবধানতা বা ভবিষ্যদ্বাণী সিটি করপোরেশন দুটো সেভাবে মনে রাখেনি। মনে রেখে আগাম ব্যবস্থা নিলে শহরবাসী এরকম বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ত না। এই বিষয়ে দুই মেয়রের তীক্ষ্ণ নজর থাকা জরুরি ছিল। ঢাকার খালগুলো প্রায় সবই বুজে গেছে। দখল হয়ে গেছে। সবই আছে খালগুলোতে, শুধু পানিটাই নেই। পানির প্রবাহ বলতে কিছু নেই। ময়লা আবর্জনার ভাগাড় হয়ে গেছে একেকটা খাল। মেয়র মহোদয়দের দেখি, প্রায়ই খাল উদ্ধারের অভিযান করছেন। দু-একটা খাল দখল মুক্তও করছেন। তারপর আর খবর নেই। আগের মতো দখল হয়ে যাচ্ছে। আরেক মহাশত্রু হয়েছে পলিথিন। এই জিনিসের কোনও বিনাশ নেই। শুধুমাত্র পলিথিনই ডুবিয়ে দিচ্ছে অনেক অর্জন। এই বিষয়টি নিয়ে সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের সচেতন হওয়া জরুরি। পলিথিনের হাত থেকে বাঁচাতে হবে দেশ। পলিথিনের বিকল্প ব্যবস্থা কাজে লাগাতে হবে। এক্ষেত্রে সরকার ও মিডিয়া মিলে জনসচেতনা গড়ে তোলা জরুরি। মানুষ সচেতন হলে সমাজ পরিশিলিত হয়। গত তিরিশ পঁয়ত্রিশ বছর ধরে ধীরে ধীরে গড়ে উঠছিল বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা। এখন বসুন্ধরা ঢাকার সবচাইতে অভিজাত এলাকা। সবচাইতে আকর্ষণীয় এলাকা। বসুন্ধরায় কারও একটি ফ্ল্যাট বা কারও এক টুকরো জমি থাকলে তিনি খুব গৌরববোধ করেন। বসুন্ধরার মতো সুবিন্যস্ত আবাসিক এলাকা ঢাকায় আর নেই। এলাকাটির পরিকল্পনা করা হয়েছে সম্পূর্ণতই ইউরোপ-আমেরিকার ঘনবসতিপূর্ণ শহরগুলোর লাগোয়া অতি আধুনিক আবাসিক শহরগুলোর মতো করে। সুপরিকল্পিত ও সুব্যবস্থাপূর্ণ। বড় বড় রাস্তা। রাস্তার ধার আর আইল্যান্ডগুলো সবুজ গাছপালায় ভর্তি। রাজউকের বিল্ডিংকোড মেনে নির্মিত প্রতিটি বাড়ি। সঙ্গে আছে বসুন্ধরার নিজস্ব কঠোর তদারকি। নিয়মের বাইরে একটি ইটও বসানো যাবে না। একটি গাছের পাতাও ছেঁড়া যাবে না। অন্যদিকে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পুরুষমানুষরা তো বটেই, নারী ও শিশুরা চাইলেও রাত দুপুরে বাড়ির বাইরে বেড়াতে বেরোতে পারে। ডিস্টার্ব করা তো দূরের কথা, চোখ তুলেও তাকাবার সাহস পাবে না কেউ। নিরাপত্তায় নিয়োজিত গাড়িভর্তি কর্মী চব্বিশঘণ্টা টহল দিচ্ছে। ঢাকার ভিতরেই বসুন্ধরা সম্পূর্ণ এক আলাদা জগৎ। স্বপ্নের বাসভূমি। এটা সম্ভব হয়েছে সুপরিকল্পনা ও তা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন আর প্রয়োগের ফলে। গত কয়েক বছর আগে বর্ষার বৃষ্টিতে বসুন্ধরার কোথাও কোথাও পানি জমে যেত। এই নিয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করলেন কর্তৃপক্ষ। সুদূর প্রসারী আধুনিক পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে রাতারাতি সামাল দিলেন সেই সমস্যা। গড়ে তুললেন অত্যাধুনিক ড্রেনেজ ব্যবস্থা। যত বৃষ্টিই হোক, বসুন্ধরায় এখন আর পানি জমে না। জোরালো ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে বৃষ্টির পানি এক মিনিটও দাঁড়াতে পারে না। সঙ্গে আছে এলাকার ড্রেনগুলোর সঠিক তদারকি। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বহুকর্মী নিয়োজিত এই কাজে। কী নেই বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায়? হাসপাতাল, বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুল, খেলার মাঠ, শপিং মল, সুন্দর সুন্দর মসজিদ, গোরস্থান, অতি আধুনিক সব রেস্টুরেন্ট। এক কথায় সব মিলিয়ে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা বর্তমান বিশ্বের অতি আধুনিক এক মনোরম শহর। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা নিয়ে কথাগুলো বলার কারণ, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মেয়র মহোদয়দের দৃষ্টি আকর্ষণ করা। বসুন্ধরায় ড্রেনেজ ব্যবস্থার অনুকরণ করে তাঁরা খুব সহজেই হঠাৎ বৃষ্টিতে জলাবদ্ধ হয়ে যাওয়া ঢাকা শহরকে অনেকখানি মুক্তি দিতে পারেন। মানুষকে দুর্ভোগ মুক্ত করতে পারেন, ব্যবসায়ীদের বাঁচাতে পারেন ক্ষতির হাত থেকে। ছাত্র-ছাত্রী আর পথচলা মানুষদের চলাচল নির্বিঘ্ন করতে পারেন। বৃষ্টির তোড়ে হঠাৎ অসহায় হয়ে পড়া গৃহবাসীদের সুরক্ষা দিতে পারেন। এই শহরের মানুষকে স্বস্তিতে বসবাস করার সুযোগ করে দিতে পারেন। এসব তাঁদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। বিষয়টি নিয়ে নিশ্চয় তাঁরা ভাববেন। তাঁদের চোখের সামনেই তো উদাহরণ হিসেবে আছে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা।

পরবর্তী খবর

নওগাঁর ধামইরহাটে পানিতে ডুবে দুই ভাইয়ের মৃত্যু

নওগাঁর ধামইরহাটে পুকুরের পানিতে ডুবে যমজ দুই ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে।

রোববার (৭ জুলাই) দুপুর ১২টায় উপজেলার খেলনা ইউনিয়নের পশ্চিম চকভবানী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য আবু সালাম।

নিতহ দুই শিশু– লক্ষণ (৩) ও রাম (৩)। তারা উভয়ে একই গ্রামের সুজিত ওরাওঁ-এর যমজ সন্তান।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আবু সালাম বলেন, সকালের খাবার খেয়ে ওই দুই ভাই বাড়ির পাশে খেলতে থাকে। খেলার একপর্যায়ে সবার অগোচরে দুই ভাই বাড়ির সামনে পুকুরে ডুবে যায়। পরে তাদের খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে দুজনের লাশ পুকুরে ভাসমান অবস্থায় দেখতে পান স্থানীয়রা।

যমজ দুই ভাইয়ের মর্মান্তিক মৃত্যুতে পরিবারের সদস্য এবং প্রতিবেশীদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

ধামইরহাট থানায় অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. বাহাউদ্দিন ফারুকী বলেন, দুই শিশু পানিতে ডুবে মারা যাওয়ার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, খেলতে গিয়েই তারা পানিতে ডুবে মারা গেছে। এ বিষয়ে থানায় কোন অভিযোগ করা হয়নি।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত