দেশ, নির্বাচন

দেশ, নির্বাচন

উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে বাঘায় সংবাদ সম্মেলন

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সংঘাত ও সহিংসতা পরিহার করে সৎ, যোগ্য ও জনকল্যাণে নিবেদিত প্রার্থীকে নির্বাচিত করার আহ্বানে পিএফজি’র উদ্যোগে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (২৯ মে) বিকেল চারটায় পিস ফ্যাসিলিটেটর গ্রুপ-পিএফজি, বাঘা শাখার আয়োজনে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের কনফারেন্স রুমে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পিস ফ্যাসিলিটেটর গ্রুপ-পিএফজির বাঘা শাখা ও রাজশাহী জেলা পরিষদের সদস্য মহিদুল ইসলাম।

পিস ফ্যাসিলিটেটর গ্রুপ-পিএফজির বাঘা শাখার সমন্বয়ক উত্তম কুমার পালের সঞ্চালনায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্যে মহিদুল ইসলাম উপস্থিত গণমাধ্যম কর্মীদের উদ্যেশ্য বলেন, সৎ, যোগ্য ও জনকল্যাণে নিবেদিত প্রার্থীকে নির্বাচিত করুন। একটি রাষ্ট্রে নাগরিকের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কোন পদ নেই। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় প্রণীত আমাদের সংবিধানের ৭নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ। কিন্তু জনগণ বা মালিকরা সরাসরি রাষ্ট্র, সরকার বা স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহ পরিচালনা করে না। তারা রাষ্ট্রসহ স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহ পরিচালনা করে তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধির মাধ্যমে। আর এই জনপ্রতিনিধি বাছাইয়ের পদ্ধতিই হচ্ছে নির্বাচন। এই পদ্ধতি বা বাছাই প্রক্রিয়া যদি সঠিক হয়, তবে প্রকৃত জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হন। আর বাছাই প্রক্রিয়া বা নির্বাচন যদি সঠিক না হয়, সে ক্ষেত্রে জনগণ তাদের প্রতিনিধির মাধ্যমে রাষ্ট্র বা স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহ পরিচালনা করছে একথা বলার সুযোগ থাকে না। তাই, পরোক্ষভাবে হলেও রাষ্ট্রসহ এসকল প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় মালিকদের ভূমিকা নিশ্চিতকরণের ক্ষেত্রে সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনে বিকল্প নেই।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমরা মনে করি নাগরিকদের সক্রিয়তা এবং সুচিন্তিত সিদ্ধান্তের উপরই নির্ভর করে দেশের শান্তি-সম্প্রীতি, গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি। নাগরিকরা জেনে-শুনে-বুঝে স্বাধীনভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে সৎ, যোগ্য ও জণকল্যাণে নিবেদিত প্রতিনিধি নির্বাচিত করেই জাতিকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে পারেন। কিন্তু নাগরিক হিসেবে আমরা যথেষ্ট সচেতন ও সক্রিয় ভূমিকা রাখতে অনেকাংশে ব্যর্থ হই। ফলে, একটি স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসাবে আমাদের জন্য যাতনার বিষয় এই যে, অনেক রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা অর্জনের অর্ধশতাব্দী অতিবাহিত হলেও আজও একটি অসাম্প্রদায়িক, সহিংসতামুক্ত, গণতান্ত্রিক ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে আমাদের পথচলার অবসান হয়নি। আজও অবসান হয়নি ক্ষুধা, দারিদ্র ও সাধারণ মানুষের বঞ্চনার। আর এই ক্ষুধা, দারিদ্র ও বঞ্চনার অবসান না হওয়ার অন্যতম কারণ দুর্নীতি ও দুর্বৃত্তায়ন; যা সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গীবাদের উত্থানের ঝুঁকিতে ফেলে দিচ্ছে আমাদের। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহও দুর্নীতি ও দুর্বৃত্তায়নের বাইরে নয়। র‍াষ্ট্রীয় পর্যায়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, মানবাধিকার সুরক্ষা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা আজও যেমন আমাদের কাছে স্বপ্ন; তেমনি ক্ষমতা, দায়িত্ব ও সম্পদে সমৃদ্ধ। সুব্যবস্থাপনাধীন, দুর্নীতিমুক্ত স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের দৃশ্যমানতাও আমাদের আকাঙ্খা। ঠিক এমনই একটি পরিস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বা হচ্ছে যষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন।

নাগরিকদের সচেতনতা, তাঁদের সক্রিয় ভূমিকা এবং সঠিক সিদ্ধান্তই পারে স্বপ্নপূরণ ও আকাঙ্খা বাস্তবায়নের দিকে আমাদেরকে এগিয়ে নিতে। আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ভোটারদের সামনে তেমনি একটি সুযোগ সৃষ্টি করেছে সৎ, যোগ্য ও জনকল্যাণে নিবেদিত প্রার্থী নির্বাচনের মাধ্যমে আপনি উপজেলাকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারেন। দেশের মালিক হিসাবে সৎ ও যোগ্য প্রতিনিধি নির্বাচন প্রত্যেক নাগরিকের নৈতিক ও অত্যাবশ্যকীয় কর্তব্য। কিন্তু আপনি যদি আসন্ন নির্বাচনে অসৎ ও অযোগ্য প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেন, তাহলে তার অপকর্মের জন্য আপনিও অনেকাংশে দায়ী থাকবেন।

টাকাপয়সা বা অন্য কোন সুবিধার বিনিময়ে যদি দুর্নীতিগ্রস্থ প্রার্থীকে ভোট দেন, তবে তা হবে আপনার বিবেক বিক্রির সামিল।

একজন সচেতন ও জাগ্রত নাগরিক কখনই ভোট বিক্রি করেন না। বরং সুবিবেচনার সাথে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন এবং সৎ, যোগ্য ও জনকল্যাণে নিবেদিত প্রার্থীর সপক্ষে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। সৎ ও যোগ্য প্রার্থী বাছাই করার জন্য প্রয়োজন প্রার্থীদের সম্পর্কে সঠিকভাবে অবগত হওয়া আইনানুযায়ী প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা, প্রার্থী ও তার ওপর নির্ভরশীলদের আয়, সম্পদ, দায়-দেনা, ফৌজদারি মামলাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান বাধ্যতামূলক হওয়ায়, আসন্ন নির্বাচনে প্রতিনিধিত্বকারী এ সকল তথ্য প্রদান করেছেন।

ভেবে দেখুন–

• প্রার্থীদের প্রদত্ত তথ্যগুলো কি বিশ্বাসযোগ্য?

• প্রার্থী কি সৎ চরিত্রের অধিকারী?

• প্রার্থী কি জনকল্যাণে নিবেদিত?

• প্রার্থী কি জনপ্রতিনিধি হওয়ার মত যোগ্যতা ও দক্ষতা সম্পন্ন?

• প্রার্থী কি সহিংসতামুক্ত ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের রাজনৈতিক মানসিকতা সম্পন্ন?

দেশের মালিক হিসাবে সজাগ থাকুন, যাতে মিথ্যাচার বা সত্য গোপনের মাধ্যমে আপনার চোখে ধুলো দিয়ে কোন অসৎ ও অযোগ্য ব্যক্তি নির্বাচিত হতে না পারেন। নাগরিক হিসেবে আপনার সঠিক সিদ্ধান্ত ও সক্রিয় ভূমিকার মাধ্যমেই নির্বচিত হতে পারেন সৎ, যোগ্য ও জনকল্যাণে নিবেদিত প্রার্থী।

তাই অপনার প্রতি আহ্বান, নাগরিক দায়িত্ববোধ থেকে সুচিন্তিতভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগের মধ্য দিয়ে সুযোগ্য নেতৃত্বের হাতে অপনার উপজেলা পরিচালনার দায়িত্ব অর্পণ করুন।

–আহ্বানে পিস ফ্যাসিলিটেটর গ্রুপ (পিএফজি)।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন পিএফজির বাঘা শাখার সদস্য, আবু বক্কর সিদ্দিক, রানু আক্তার, এহসানুল হক, স্থানীয় বাঘা প্রেস ক্লাবের সভাপতি আব্দুল লতিফ মিয়া, সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান, বাঘা মডেল প্রেস ক্লাবের সভাপতি শাহানুর আলম বাবু, সম্পাদক হাবিল উদ্দিন, সাংবাদিক গোলাম তোফাজ্জল কবির মিলন, লালন উদ্দিন, আব্দুল হামিদ মিয়া, সুব্রত কুমারসহ পিএফজি বাঘা শাখার সদস্যবৃন্দ।

পরবর্তী খবর

৫০ ভরি স্বর্ণ উদ্ধার

সীমান্ত সম্ভারে স্বর্ণের দোকানে চাঞ্চল্যকর চুরির রহস্য উদঘাটন, গ্রেপ্তার ৩

রাজধানীর ধানমণ্ডির বিজিবি সীমান্ত সম্ভার শপিং কমপ্লেক্সের একটি স্বর্ণের দোকানে সংঘটিত চাঞ্চল্যকর চুরির ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন মো. রুবেল (২৮), সফিক ওরফে সোহেল (৩৫) এবং সাদ্দাম হোসেন (৩১)। এ সময় তাদের কাছ থেকে চুরি যাওয়া ৫০ ভরি আট আনা স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়, যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা।

ডিবি সূত্রে জানা যায়, ধানমণ্ডি মডেল থানাধীন ‘ক্রাউন ডায়মন্ড এন্ড জুয়েলার্স’ শোরুমে গত ৩ জানুয়ারি বেলা ১টার দিকে চুরির ঘটনা ঘটে। চোরচক্র অভিনব পদ্ধতিতে শো-রুমের তালা ও সাটার কেটে মাত্র আট মিনিটের মধ্যে ১৫৯ ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে পালিয়ে যায়। দোকানের মালিক কাজী আকাশ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন, যেখানে চুরি যাওয়া স্বর্ণালংকারের আনুমানিক মূল্য প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা উল্লেখ করা হয়।

মামলার প্রেক্ষিতে ডিবি পুলিশ তদন্ত শুরু করে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ৯ জানুয়ারি থেকে ডিবি পুলিশ ধারাবাহিক অভিযান চালায়। কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে প্রথমে মো. রুবেলকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কুমিল্লার দেবীদ্বার থেকে সফিক ওরফে সোহেল এবং মুরাদনগর থেকে সাদ্দাম হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে ২৮ ভরি ১৪ আনা আসল স্বর্ণ এবং ২১ ভরি ১০ আনা গলিত স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়। ডিবি সূত্রে আরও জানা যায়, চুরির ঘটনায় জড়িত চক্রের অন্যান্য সদস্যদের শনাক্ত করা হয়েছে এবং তাদের গ্রেফতার ও অবশিষ্ট স্বর্ণ উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

ডিএমপি’র উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান পিপিএম জানান, এই চক্র অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে পরিকল্পনা করে চুরি সংঘটিত করে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে জনগণের আস্থা অক্ষুণ্ণ রাখতে সক্ষম হয়েছে।

বিষয়:
পরবর্তী খবর

পোরশায় ন্যায্যমূল্যে গরুর মাংস, কেনা যাবে ২৫০ গ্রাম

চড়া দামের কারণে নিম্নবিত্ত থেকে মধ্যবিত্ত অনেক মানুষ পুরো এক কেজি মাংস কিনতে পারছে না। এমন ক্রেতাদের সুবিধার্থে এবার ২৫০ গ্রাম গরুর মাংসও বিক্রি হবে নওগাঁর পোরশায়। সরকারি ব্যবস্থাপনায় ন্যায্যমূল্যের দোকানে গরুর মাংস বিক্রি কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়েছে।

শুক্রবার (১৩ই ডিসেম্বর) সকাল আটটার দিকে এ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফ আদনান।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের সহযোগিতায় ও জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল আউয়ালের নির্দেশে ন্যায্যমূল্যে গরুর মাংস বিক্রির এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এ সময় উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির, বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন।

এ প্রসঙ্গে ইউ এন ও আরিফ আদনান বলেন, জেলা প্রশাসকের দিকনির্দেশনায় ন্যায্য মূল্যের মাংসের দোকান চালু করা হয়েছে । এই দোকানে প্রতি কেজি ৬০০ টাকা দরে ক্রেতাগণ কিনতে পারবেন এবং গরিব জনগণ ২৫০ গ্রাম থেকে গরুর মাংস কিনতে পারবেন বলে জানান ইউ এন ওআরিফ আদনান।

বিষয়:
সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত