অর্থ ও বাণিজ্য, লিড নিউজ

অর্থ ও বাণিজ্য, লিড নিউজ

ইসলামী ব্যাংকের ভল্ট থেকে ১৫০ ভরি স্বর্ণ চুরি!

চট্টগ্রামে ইসলামী ব্যাংকের চকবাজার শাখার ভল্ট থেকে এক গ্রাহকের ১৪৯ ভরি স্বর্ণ চুরি যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। চুরির ঘটনায় ইসলামী ব্যাংকের কর্মকর্তারাই জড়িত রয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন স্বর্ণের মালিক। ঘটনাটি ঘটেছে গত বুধবার (২৯ মে)। এ ঘটনায় মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন স্বর্ণের মালিক রোকেয়া আক্তার বারী।

চুরি যাওয়া স্বর্ণের মালিক ও  ওই শাখার গ্রাহক রোকেয়া আক্তার বারী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘গত ১৭ বছর ধরে আমি ইসলামী ব্যাংকের চকবাজার শাখায় লকার ব্যবহার এবং অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করে আসছি। গত ২৯ মে দুপুর দেড়টায় ইসলামী ব্যাংকের চকবাজার শাখায় কিছু স্বর্ণালংকার আনার জন্য যাই। লকারের দায়িত্বে থাকা অফিসারকে আমার লকার খুলে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করি। তিনি চাবি দিয়ে লকার কক্ষের দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে ওই অফিসার আমার বরাদ্দকৃত লকারটি খোলা দেখতে পান। এমন ঘটনা দেখে আমি হতভম্ব হয়ে পড়ি।’

রোকেয়া বলেন, ‘লকারে চুড়ি, জড়োয়া সেট, গলার সেট, গলার চেইন, আংটি, কানের দুলসহ ১৪৯ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ছিল। লকার খোলার পর দেখা যায়, সেখানে মাত্র ১০ থেকে ১১ ভরি স্বর্ণ অবশিষ্ট আছে। খোয়া যাওয়া স্বর্ণালঙ্কারের দাম প্রায় দেড় কোটি টাকা।’

রোকেয়া বারী আরেও বলেন, ‘ব্যাংক থেকে জানানো হয়, এই ঘটনায় তারা তদন্ত করবে। এ বিষয়ে এক সপ্তাহ পরে জানাবে।’

রোকেয়া বলেন, ‘পরবর্তীতে তারা এই ঘটনায় চকবাজার থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে গেলে পুলিশ তা গ্রহণ করেনি।

ইসলামী ব্যাংকের চকবাজার শাখার ম্যানেজার শফিকুল মওলা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করলেও এ বিষয়ে আর কিছু বলতে রাজি হননি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইসলামী ব্যাংকের একজন উর্ধতন কর্মকর্তা বলেন, ‘চকবাজার শাখার ঘটনাটি চুরি, মিসিং বা অন্য কোনো ঘটনা কি না, তা তদন্ত চলছে। ব্যংকের একজন ঊর্ধতন কর্মকর্তা রোববার (২ জুন) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বিষয়টির তদন্ত করবেন।’

এ প্রসঙ্গে ভুক্তভোগী রোকেয়া বারীর ছেলে ডা. রিয়াদ মোহাম্মদ মারজুকের দাবি, ব্যাংক কর্মকর্তারা তাদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেছেন যে ঘটনা তদন্তে তারা একটি তদন্ত দল গঠন করেছেন এবং সাত দিনের মধ্যে সঠিক ঘটনা উদঘাটন করবেন। এ ছাড়া অভিযোগ দায়ের না করলেও ঘটনাটি পুলিশকে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে।

চিকিৎসক রিয়াদ মোহাম্মদ মারজুক বলেন, ‘তার মা ২০০৭ সাল থেকে ইসলামী ব্যাংকের চকবাজার শাখায় তার স্বর্ণের গহনা রাখার জন্য লকার ব্যবহার করে আসছেন। বুধবার দুপুর ১২টার দিকে ব্যাংকে গিয়ে লকার রুমের ইনচার্জকে তার লকার দেখার অনুরোধ করেন। মায়ের কাছে লকারের মূল চাবি আছে এবং আরেকটি ডুপ্লিকেট চাবি ইনচার্জের কাছে থাকে।’

তিনি বলেন, ‘তারা দুজন লকার রুমে প্রবেশ করেন। তখন ইনচার্জ প্রথমে দেখেন যে মায়ের লকারটি খোলা। পরে আমার মা লকারটি পরীক্ষা করে ব্যাংক কর্মকর্তাদেরকে স্বর্ণালঙ্কার বিষয়টি জানান।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসলামী ব্যাংক চকবাজার শাখার ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর (ডিএমডি) আকিজ উদ্দিন বলেন, আমরা বিষয়টি দেখছি। গ্রাহকের কাছে মূল চাবি আছে, কিন্তু আমাদের কাছে নেই। তিনি এক মাস আগে ব্যাংকে এসে লকারটি পরীক্ষা করেছিলেন। আমাদের কাছে কোনো গ্রাহকের লকারের সঞ্চয় সম্পর্কে তথ্য থাকে না। বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছি।

চকবাজার থানার ওসি ওয়ালি উদ্দিন আকবর বলেন, লকার রুমে কোনো সিসিটিভি ক্যামেরা নেই। আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রাথমিক প্রমাণ সংগ্রহ করেছি। ভিকটিম ও তার ছেলে থানায় জিডি করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আমরা ঘটনাটির গুরুত্বের কারণে ফৌজদারি মামলা দায়ের করতে বলেছি।

জানা গেছে, আগামীকাল সোমবার (৩ জুন) চট্টগ্রাম আদালতে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন রোকেয়া বারী।

পরবর্তী খবর

পরিশ্রম আর ইচ্ছাশক্তিতে সফলতার এক অদম্য যাত্রী ‘সোমা’

গফরগাঁওয়ের এক অধ্যাপকের স্বপ্ন ছিল প্রশাসক হওয়া। কিন্তু জীবন তাকে ভিন্ন পথে নিয়ে গেছে— তিনি এখন একজন সফল উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ী। অর্থনীতির শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করলেও ব্যবসার প্রতি তার আগ্রহ ছিল বহু আগে থেকেই। সেই আগ্রহ থেকেই তিনি শুরু করেছিলেন পথচলা। আজ তিনি প্রতিষ্ঠিত এক ব্যবসায়ী। N S P House নামে গড়ে তুলেছেন নিজের বহুমুখী ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।

রোজকার খবরের বিশেষ প্রতিনিধি ফারজানা জিতুর কাছে নিজের উদ্যোক্তা জীবন ও ভাবনা জানিয়েছেন জুলেখা খাতুন সোমা। উদ্যোক্তাদের জীবন ও ভাবনা নিয়ে শিল্পপুরাণআরশিনগরের সৌজন্যে রোজকার খবরের নিয়মিত আয়োজনের অংশ হিসেবে আজ প্রকাশিত হল এই বিশেষ প্রতিবেদন।

সহকারী অধ্যাপক হিসেবে অর্থনীতি পড়ানোর পাশাপাশি তিনি আইসিটি বিষয়েও শিক্ষকতা করতেন। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে কম্পিউটার শেখার প্রয়োজনীয়তা তিনি অনেক আগেই বুঝতে পারেন। তাই এইচএসসি পাস করার পরই কম্পিউটার প্রশিক্ষণ নেন এবং মাস্টার্স সম্পন্ন করার পর ২০০৬ সালে নিজেই একটি কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন। যদিও এটি শিক্ষামূলক প্রতিষ্ঠান ছিল, তবু এখান থেকেই তার ব্যবসায়িক চিন্তাভাবনার শুরু।

এরপর ধীরে ধীরে তিনি ইট-বালুসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করতে থাকেন। ব্যবসার ঝুঁকি নেওয়ার মানসিকতা গড়ে তোলার পাশাপাশি তিনি নিজের পরিচিতি বাড়ানোর জন্য অফলাইন নেটওয়ার্ক তৈরি করতে থাকেন, যাতে একসময় বড় উদ্যোক্তা হতে পারেন।

২০১৪ সালে তিনি ফেসবুকে যুক্ত হন এবং ধীরে ধীরে নিজের পরিচিতি বাড়ানোর কাজ শুরু করেন। বিভিন্ন গ্রুপে লেখালেখির মাধ্যমে ব্যক্তিগত ব্র্যান্ডিং তৈরি করেন, যা পরবর্তী সময়ে তার ব্যবসার প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

২০১৮ সালে নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে তিনি একটি শপ খোলেন এবং অপ্রত্যাশিতভাবে তার চেয়েও বেশি সফলতা পেতে থাকেন। ঠিক এই সময়েই তিনি পরিচিত হন ‘নিজের বলার মতো একটা গল্প’ ফাউন্ডেশনের সঙ্গে, যা তার উদ্যোক্তা জীবনকে আরও গতিশীল করে তোলে।

তবে পথচলা সহজ ছিল না। প্রথমদিকে পরিবার থেকেও কোনো সমর্থন পাননি, বরং একাই পথ চলতে হয়েছে। পরে তার বড় সন্তান পাশে দাঁড়ায় এবং ধীরে ধীরে পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও সমর্থন দিতে বাধ্য হন।

উদ্যোক্তা জীবনের শুরুতেই তিনি এক বড় সংকটের মুখোমুখি হন। একটি চক্র তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে অনলাইন নেটওয়ার্ক থেকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করে। এই ঘটনায় তিনি ভীষণ কষ্ট পেলেও হাল ছাড়েননি। বরং প্রতিজ্ঞা করেন, তিনি কেবল একটি ছোট গণ্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবেন না, বরং গোটা বাংলাদেশ ও বিশ্বজুড়ে নিজের অবস্থান তৈরি করবেন।

এই কঠিন সময়ই তাকে আরও দৃঢ় ও আত্মবিশ্বাসী করে তোলে। তিনি নতুন উদ্যমে এগিয়ে যান এবং আজ তিনি একজন সফল ব্যবসায়ী। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যারা একসময় তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছিল, তারাই একসময় ক্ষমা চেয়ে নেয়। কিন্তু তিনি নীরব থেকে নিজের লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যান।

এ শুধু একজন নারী উদ্যোক্তার সফলতার কাহিনি নয়, বরং এটি এক অদম্য মানসিকতার গল্প। প্রতিকূলতাকে জয় করে কীভাবে এগিয়ে যেতে হয়, তা তিনি নিজেকে দিয়েই প্রমাণ করেছেন। তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হয়েছিল, তাকে থামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল, কিন্তু সেই প্রতিবন্ধকতাগুলোই তাকে আরও শক্তিশালী করেছে। তিনি উপলব্ধি করেছেন, অনেক সময় নীরবতাই সবচেয়ে বড় প্রতিক্রিয়া।

তার ভাষায়, ‘নারীরা যদি নীরব হয়ে যায়, পৃথিবীতে বড় পরিবর্তন ঘটে—আমি তারই প্রমাণ।’ তার এই নিরবতার মধ্যেই লুকিয়ে ছিল লড়াই করে বিজয়ী হওয়ার বার্তা। যারা তাকে থামাতে চেয়েছিলেন, তারা পরবর্তীতে বুঝতে পেরেছেন, তারা আসলে তাকে আরও শক্তিশালী করে তুলেছেন। আজ তিনি একজন সফল উদ্যোক্তা, যার প্রতিটি অর্জন তার কঠোর পরিশ্রম, আত্মবিশ্বাস ও দৃঢ় সংকল্পের ফসল।

পরবর্তী খবর

সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টির আভাস

সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টির আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেছা স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে আবহাওয়া পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।

এ অবস্থায় পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এ সময়ে সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। শেষ রাত থেকে ভোর পর্যন্ত সারাদেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।

 

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত