ভারতে কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা লোকসভা নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির রাজনৈতিক জোট জয় পেয়েছে। এর ফলে টানা তৃতীয় বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন তিনি।
তবে তার দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) পার্লামেন্টে একক সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পায়নি।
গত এক দশকে প্রথম বারের মতো পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন না পাওয়ায় বিরোধীরা একে মোদির বিরুদ্ধে স্পষ্ট বার্তা হিসেবে দেখছে।
মঙ্গলবার ভারতের নির্বাচন কমিশন ও গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট ২৮৬ আসন পেয়েছে। ইন্ডিয়া জোট পেয়েছে ২০২টি আসন। বিজেপি একা সরকার গঠনের জন্য ২৭২টি আসন পেতে ব্যর্থ হয়েছে। দলটি পেয়েছে ২৪০ আসন। কংগ্রেস পেয়েছে ৯৯টি।
এর মানে বিজেপিকে সরকার গড়তে হলে নির্ভর করতে হবে মূলত দুই শরিক নীতিশ কুমারের জেডি-ইউ ও অন্ধ্র প্রদেশের চন্দ্রবাবু নাইডুর দল তেলেগু দেশম পার্টির (টিডিপি) ওপর। এই দুই দলের সম্মিলিত আসন ২৮টি।
নির্বাচনের ফলাফলের পর বিজেপি ও কংগ্রেস উভয় শিবিরেই আনন্দ উদযাপিত হচ্ছে।
রাজধানী নয়াদিল্লীতে উৎফুল্ল সমর্থকদের উদ্দেশ্যে মোদি বলেছেন, ভারত তার দল ও জোটকে টানা তৃতীয় বারের মতো সরকার গঠনের রায় দিয়েছে।
তিনি আরো বলেছেন, আমাদের তৃতীয় মেয়াদ হবে অনেকগুলো বড়ো সিদ্ধান্তের একটি এবং দেশ উন্নয়নের নতুন অধ্যায় রচনা করবে। এটা মোদির গ্যারান্টি।
কংগ্রেস ২০১৯ সালের তুলনায় এবারে প্রায় দ্বিগুণ আসনে জেতায় স্বাভাবিকভাবেই উৎফুল্ল দলটি।
দলটির গুরুত্বপূর্ণ নেতা রাহুল গান্ধী বলেছেন, ‘দেশের জনগণ নরেন্দ্র মোদিকে বলেছে, আমরা তোমাকে চাই না।’
কংগ্রেসের দলীয় দপ্তরে সোনিয়া গান্ধী, রাহুল ও প্রিয়াঙ্কাকে পাশে নিয়ে সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এই ফল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির রাজনৈতিক ও নৈতিক পরাজয়। গোটা নির্বাচনটাই বিজেপি লড়েছিল মোদির নামে। যাবতীয় গ্যারান্টিও দিয়েছিলেন মোদি। এটা ছিল তাঁর পক্ষে অথবা বিপক্ষের গণভোট। জনতা তাঁর বিরুদ্ধেই মত দিয়েছে।
এদিকে নরেন্দ্র মোদি ২০১৪ সালে ২৮২ আসন পেয়ে সরকার গড়েছিলেন। পরের নির্বাচনে তিনি পান ৩০৩ আসন। এবারে তা নেমে এসেছে ২৪০ আসনে। সরকার গড়ার যে ৩২টি আসন ঘাটতি রয়েছে তার জন্যে মোদিকে নির্ভর করতে হবে জেডি-ইউ, টিডিপি, শিবসেনার শিন্ডে গোষ্ঠী, চিরাগ পাসোয়ানের এলজেপি ও উত্তর প্রদেশের জয়ন্ত চৌধুরীর আরএলডির মতো দলগুলোর ওপর।
নির্বাচন কমিশন থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, এবারের নির্বাচনে ৯৬ কোটি ৮০ লাখ ভোটার ভোট দিয়েছেন যা শতকরা হিসাবে ৬৬.৩। এটি ২০১৯ সালের নির্বাচনের তুলনায় এক শতাংশ কম।
বিশ্লেষকেরা এ জন্যে উত্তর ভারত জুড়ে বয়ে যাওয়া তাপপ্রবাহকে দায়ী করেছেন। ওই অঞ্চলে ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টির আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেছা স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে আবহাওয়া পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।
এ অবস্থায় পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এ সময়ে সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। শেষ রাত থেকে ভোর পর্যন্ত সারাদেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।
রাজধানীর ধানমণ্ডির বিজিবি সীমান্ত সম্ভার শপিং কমপ্লেক্সের একটি স্বর্ণের দোকানে সংঘটিত চাঞ্চল্যকর চুরির ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন মো. রুবেল (২৮), সফিক ওরফে সোহেল (৩৫) এবং সাদ্দাম হোসেন (৩১)। এ সময় তাদের কাছ থেকে চুরি যাওয়া ৫০ ভরি আট আনা স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়, যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা।
ডিবি সূত্রে জানা যায়, ধানমণ্ডি মডেল থানাধীন ‘ক্রাউন ডায়মন্ড এন্ড জুয়েলার্স’ শোরুমে গত ৩ জানুয়ারি বেলা ১টার দিকে চুরির ঘটনা ঘটে। চোরচক্র অভিনব পদ্ধতিতে শো-রুমের তালা ও সাটার কেটে মাত্র আট মিনিটের মধ্যে ১৫৯ ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে পালিয়ে যায়। দোকানের মালিক কাজী আকাশ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন, যেখানে চুরি যাওয়া স্বর্ণালংকারের আনুমানিক মূল্য প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা উল্লেখ করা হয়।
মামলার প্রেক্ষিতে ডিবি পুলিশ তদন্ত শুরু করে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ৯ জানুয়ারি থেকে ডিবি পুলিশ ধারাবাহিক অভিযান চালায়। কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে প্রথমে মো. রুবেলকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কুমিল্লার দেবীদ্বার থেকে সফিক ওরফে সোহেল এবং মুরাদনগর থেকে সাদ্দাম হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে ২৮ ভরি ১৪ আনা আসল স্বর্ণ এবং ২১ ভরি ১০ আনা গলিত স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়। ডিবি সূত্রে আরও জানা যায়, চুরির ঘটনায় জড়িত চক্রের অন্যান্য সদস্যদের শনাক্ত করা হয়েছে এবং তাদের গ্রেফতার ও অবশিষ্ট স্বর্ণ উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ডিএমপি’র উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান পিপিএম জানান, এই চক্র অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে পরিকল্পনা করে চুরি সংঘটিত করে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে জনগণের আস্থা অক্ষুণ্ণ রাখতে সক্ষম হয়েছে।