সাতক্ষীরা সিটি কলেজে সভাপতি পদে আসীন হওয়া নিয়ে সমালোচনার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন নবনিযুক্ত সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান কবির হোসেন মিলন।
বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে সাতক্ষীরা সিটি কলেজ সম্মেলন কক্ষে তিনি এই সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করেন। গত ১৬ জানুয়ারি মঙ্গলবার দুর্নীতির আখড়া সাতক্ষীরা সিটি কলেজের এডহক কমিটির সভাপতি হিসাবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরের মনোনীত প্রতিনিধি আগরদাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কবির হোসেন মিলনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এরআগে সাবেক এমপি মীর মোস্তাক আহমেদ রবির সাবেক পিএ মকসুমুল হাকিম কলেজটির এডহক কমিটির সভাপতি ছিলেন। তার মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্বেই পুনরায় তাকে সভাপতি করার জন্য দুর্নীতিবাজদের একটি চক্র প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে সাতক্ষীরা সিটি কলেজের নবনিযুক্ত সভাপতি কবির হোসেন মিলন বলেন, ২০০৮ সালে আমার পিতা এই কলেজে অফিস সহকারী পদে চাকুরিরত অবস্থায় মারা যান। এরপর সেই একই স্থানে মাস্টাররোলে আমাকে নিয়োগ দেয়া হয়। আমি গত ২০২১ সালে সদরের আগরদাঁড়ি ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হই।
কবির হোসেন মিলন অভিযোগ করে বলেন, একটি পত্রিকায় রিপোর্ট করেছে তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী থাকা অবস্থায় কলেজটির সভাপতি হয়েছি, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি চাকরি করি মাস্টাররোলে। তারপরই গত ৯ জানুয়ারি লিখিতভাবে কলেজটির অধ্যক্ষের কাছে অফিস সহকারী পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছি এবং বর্তমান অধ্যক্ষ ড. শিহাব উদ্দীন সেটি গ্রহণও করেছেন।
এসবের স্বপক্ষে তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদেরকে কাগজপত্র দেখান। দুটি প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন তোলা আইনগতভাবে সিদ্ধ হলেও পত্রিকাটি তা না জেনে ভুলভাল রিপোর্ট তৈরি করে। প্রমানস্বরুপ এর স্বপক্ষেও বেতন বইয়ের রশিদ দেখিয়ে তিনি বলেন, আমি গত ২০২১ সালের অক্টোবর মাসের পর থেকে আর কোন বেতন তুলিনি। তবে কলেজ কর্তৃপক্ষের পরামর্শে বকেয়া টাকা উত্তোলন করি। সেই টাকা ও আমি ইউপি চেয়ারম্যান হিসাবে পাওয়া সম্মানী ইউনিয়ন পরিষদের একাউন্টে জমা দেই। সেই টাকা দিয়ে ইউনিয়নের দুঃস্থ ও অসহায় মানুষদের সাহায্য করি।
তিনি তার বক্তব্যে আরও বলেন, আমি সভাপতি মনোনীত হওয়ায় দুর্নীতিবাজ চক্রটি আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। গত ৩০ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখে স্থানীয় দৈনিক পত্রদূতে সাতক্ষীরা সিটি কলেজের দুর্নীতি সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, সাতক্ষীরা সদর আসনের সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবি সভাপতি হওয়ার পর মাত্র তিন বছরে সাতক্ষীরা সিটি কলেজে প্রায় ৫ কোটি টাকা লোপাট হয়। এ ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের তদন্ত প্রতিবেদন চার বছর ধামাচাপা পড়ে রয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশও উপেক্ষিত রয়েছে বছরের পর বছর। আমি সবকিছুকে উপেক্ষা করে সাতক্ষীরা সিটি কলেজকে একটি আধুনিক ও মডেল কলেজ হিসাবে রূপান্তরিত করতে চাই। সে জন্য সকলের সহযোগিতার আহ্বান জানান তিনি।
উল্লেখ্য, সাবেক এমপি মীর মোস্তাক আহমেদ রবি এবং তার সাবেক পিএ মকসুমুল হাকিম গত ২০১৪ সাল থেকে পর্যায়েক্রমে কলেজটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সেক্ষেত্রে মাত্র ৩ বছরের নীরিক্ষা প্রতিবেদনে তাদের বিরুদ্ধে প্রায় ৫ কোটি টাকার দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া যায়। নানা কারণে আলোচিত ছিল ১৯৮০ সালে প্রতিষ্ঠিত সাতক্ষীরা সিটি কলেজ। কলেজ প্রতিষ্ঠার সময় নতুন সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান কবির হোসেন মিলনের নানা আব্দুল আজিজ সরদারের ১৬ কাঠা জমিসহ তার স্বজনরাই সমুদয় জমি প্রদান করেন। চেয়ারম্যান কবির হোসেন মিলনের বাবা কাশেমপুর প্রাইমারি স্কুলের সহকারী শিক্ষক নুরুল ইসলাম সরদার স্কুলের চাকরি ছেড়ে নবপ্রতিষ্ঠিত কলেজটির অফিস সহকারীর চাকরি নেন। ২০০৮ সালে চাকরিরত অবস্থায় তিনি মারা গেলে তার ছেলে সমাজ বিজ্ঞানে এমএ পাশ কবির হোসেন মিলনকে মাস্টাররোলে কলেজের অফিস সহকারীর চাকরি দেওয়া হয়। ২০১৮ সালে উক্ত পদে কবির হোসেন মিলনের এমপিভুক্তির সুযোগ হয়। কিন্তু সে সময় কলেজের সভাপতি সাবেক এমপি মীর মোস্তাক আহমেদ রবি ও অধ্যক্ষ আবু সাইদ তার পরিবর্তে জনৈক হারুণ অর রশিদকে অফিস সহকারী পদে এমপিওভুক্ত করান। অভিযোগ আছে ৮ লাখ টাকার বিনিময়ে কবির হোসেন মিলনের পদটি মো. হারুণ অর রশিদের নিকট বেঁচে দেওয়া হয়। এ নিয়ে দীর্ঘ দিন আদালতে মামলা ছিল।
এদিকে কলেজের এমপিও থেকে বঞ্চিত হয়ে ২০২১ সালের ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে কবির হোসেন মিলন আগরদাঁড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তিনি বিএনপি জামায়াত ও আওয়ামী লীগের নেতাদের পরাজিত করে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হন। কলেজ কর্তপক্ষ ঐ মাস থেকেই তার মাস্টাররোলের চাকরির বেতনও বন্ধ করে দেন। সর্বশেষ গত ৯ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখে তিনি কলেজের মাস্টাররোলের চাকরি থেকে ইস্তফা দেন।
উল্লেখ্য, সাতক্ষীরা সিটি কলেজে সভাপতির পদ নিয়ে কয়েকদিন আগে একটি পত্রিকায় রিপোর্ট প্রকাশ হয়। এরই জের ধরে আজ সংবাদ সম্মেলন করেছেন নতুন সভাপতি কবির হোসেন মিলন। এসময় সাতক্ষীরার বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
রাজধানীর ধানমণ্ডির বিজিবি সীমান্ত সম্ভার শপিং কমপ্লেক্সের একটি স্বর্ণের দোকানে সংঘটিত চাঞ্চল্যকর চুরির ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন মো. রুবেল (২৮), সফিক ওরফে সোহেল (৩৫) এবং সাদ্দাম হোসেন (৩১)। এ সময় তাদের কাছ থেকে চুরি যাওয়া ৫০ ভরি আট আনা স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়, যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা।
ডিবি সূত্রে জানা যায়, ধানমণ্ডি মডেল থানাধীন ‘ক্রাউন ডায়মন্ড এন্ড জুয়েলার্স’ শোরুমে গত ৩ জানুয়ারি বেলা ১টার দিকে চুরির ঘটনা ঘটে। চোরচক্র অভিনব পদ্ধতিতে শো-রুমের তালা ও সাটার কেটে মাত্র আট মিনিটের মধ্যে ১৫৯ ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে পালিয়ে যায়। দোকানের মালিক কাজী আকাশ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন, যেখানে চুরি যাওয়া স্বর্ণালংকারের আনুমানিক মূল্য প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা উল্লেখ করা হয়।
মামলার প্রেক্ষিতে ডিবি পুলিশ তদন্ত শুরু করে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ৯ জানুয়ারি থেকে ডিবি পুলিশ ধারাবাহিক অভিযান চালায়। কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে প্রথমে মো. রুবেলকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কুমিল্লার দেবীদ্বার থেকে সফিক ওরফে সোহেল এবং মুরাদনগর থেকে সাদ্দাম হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে ২৮ ভরি ১৪ আনা আসল স্বর্ণ এবং ২১ ভরি ১০ আনা গলিত স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়। ডিবি সূত্রে আরও জানা যায়, চুরির ঘটনায় জড়িত চক্রের অন্যান্য সদস্যদের শনাক্ত করা হয়েছে এবং তাদের গ্রেফতার ও অবশিষ্ট স্বর্ণ উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ডিএমপি’র উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান পিপিএম জানান, এই চক্র অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে পরিকল্পনা করে চুরি সংঘটিত করে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে জনগণের আস্থা অক্ষুণ্ণ রাখতে সক্ষম হয়েছে।
চড়া দামের কারণে নিম্নবিত্ত থেকে মধ্যবিত্ত অনেক মানুষ পুরো এক কেজি মাংস কিনতে পারছে না। এমন ক্রেতাদের সুবিধার্থে এবার ২৫০ গ্রাম গরুর মাংসও বিক্রি হবে নওগাঁর পোরশায়। সরকারি ব্যবস্থাপনায় ন্যায্যমূল্যের দোকানে গরুর মাংস বিক্রি কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়েছে।
শুক্রবার (১৩ই ডিসেম্বর) সকাল আটটার দিকে এ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফ আদনান।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের সহযোগিতায় ও জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল আউয়ালের নির্দেশে ন্যায্যমূল্যে গরুর মাংস বিক্রির এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এ সময় উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির, বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন।
এ প্রসঙ্গে ইউ এন ও আরিফ আদনান বলেন, জেলা প্রশাসকের দিকনির্দেশনায় ন্যায্য মূল্যের মাংসের দোকান চালু করা হয়েছে । এই দোকানে প্রতি কেজি ৬০০ টাকা দরে ক্রেতাগণ কিনতে পারবেন এবং গরিব জনগণ ২৫০ গ্রাম থেকে গরুর মাংস কিনতে পারবেন বলে জানান ইউ এন ওআরিফ আদনান।