ঢাকার দোহার এলাকায় চাঞ্চল্যকর একই পরিবারের পাঁচজনকে বাড়িতে তালাবদ্ধ করে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা চেষ্টা ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী ও তার সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১০।
র্যাব-১০ এর উপপরিচালক আমিনুল ইসলাম গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, গত ১৬ জানুয়ারি আনুমানিক রাত ২:৫০টায় ঢাকার জেলার দোহার থানাধীন ধীৎপুর এলাকায় বসবাসকারী জুলহাস উদ্দিন শেখ (৪৮), তার স্ত্রী ফাহিমা আক্তার (৩৫), মেয়ে জান্নাত (১২), ছেলে জুনায়েদ (০৯) ও ভাতিজি তাবাসসুম (০৯)– একই পরিবারের উল্লিখিত পাঁচজনকে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা হত্যার উদ্দেশ্যে জুলহাস উদ্দিনের বসবাসরত বাড়িতে (টিনসেড বিল্ডিং) বাইরে থেকে তালাবদ্ধ করে বাড়ির চতুর্দিকে পেট্রোল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। তার কিছুক্ষণ পর আগুনের তাপে ও আসবাবপত্র পুড়ে যাওয়ার বিকট শব্দে জুলহাস উদ্দিন ও তার পরিবারের সদস্যদের ঘুম ভেঙ্গে যায়। চারদিকে আগুন দেখে তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। ভিকটিমরা তাদের প্রাণ বাঁচাতে ও আসবাবপত্র রক্ষা করার জন্য এদিক-ওদিক ছুটাছুটি করে এবং দরজা খোলার চেষ্টা করে করতে থাকে। কোনভাবে দরজা খুলতে না পেরে বাথরুমের ভেন্টিলেটর দিয়ে ডাক-চিৎকার করতে থাকে। ডাক-চিৎকারের এক পর্যায় জুলহাস উদ্দিনের ছোট ভাই মুক্তার হোসেন মুকাত (৩৮) ও আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে বাথরুমের দেওয়াল ভেঙ্গে জুলহাস উদ্দিনসহ তাদের পরিবারের সবাইকে উদ্ধার করে। এ সময় জুলহাস উদ্দিন ও তার স্ত্রী ফাহিমা আক্তারের মুখ-মন্ডল, হাতসহ শরীরের বিভিন্ন স্থান আগুনে ঝলসে যায়। আগুনের ধোঁয়ার কারণে জুলহাস উদ্দিনের মেয়ে, ছেলে ও ভাতিজির শ্বাস-প্রশ্বাস জনিত সমস্যা দেখা দেয় এবং তাদের ঘরে থাকা ফ্রিজ, টিভিসহ আনুমানিক ৩,০০,০০০/- (তিন লক্ষ) টাকা মূল্যমানের অন্যান্য আসবাবপত্র আগুনে পুড়ে যায়।
ভিকটিমদের উদ্ধার করার সাথে সাথে জুলহাস উদ্দিনের ছোটভাই ও স্থানীয় লোকজন দোহার থানা পুলিশ ও দোহার উপজেলা ফায়ার সার্ভিসকে সংবাদ দিলে ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। পরবর্তীতে জুলহাস উদ্দিনের ছোট ভাই স্থানীয় লোকজনদের সহযোগিতায় জুলহাস উদ্দিনসহ তার পরিবারের আহত সবাইকে চিকিৎসার জন্য দোহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে প্রেরণ করেন।
উক্ত ঘটনায় ভিকটিম জুলহাস উদ্দিনের ছোটভাই মুক্তার হোসেন মুকাত (৩৮) বাদী হয়ে ঢাকার দোহার থানায় চাঞ্চল্যকর এই হত্যা চেষ্টার ঘটনায় দন্ডবিধি ৩০৭/৪৩৬/৪২৭ ধারায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন (মামলা নং-০৬, তাং-১৬/০১/২০২৪)।
ঘটনাটি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় গুরুত্বের সাথে প্রচারিত হলে দেশব্যাপী ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। পরবর্তীতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা অজ্ঞাতনামা আসামিদেরকে শনাক্ত করে আসামিদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে র্যাব-১০ এর নিকট আনুষ্ঠানিকভাবে জানালে গতকাল ১৮ জানুয়ারি আনুমানিক রাত ২০:১০টায় র্যাব-১০ এর আভিযানিক দল গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে, তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তা এবং র্যাব-০৪ এর সহযোগিতায় রাজধানী ঢাকার আশুলিয়া এলাকায় যৌথ অভিযান পরিচালনা করে মূল পরিকল্পনাকারী মোঃ রুবেল (২১), পিতা-মোঃ সুলতান শেখ, সাং-ধীৎপুর, থানা-দোহার, জেলা-ঢাকাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
একইদিন রাতে গ্রেফতারকৃত মোঃ রুবেলের দেয়া তথ্যমতে ঢাকা জেলার দোহার থানাধীন ধীৎপুর এলাকায় অপর একটি অভিযানে মূল পরিকল্পনাকারী মোঃ রুবেলের প্রধান সহযোগী মোঃ রানা মাহমুদ (২৪), পিতা-নুরু শেখ, সাং-ধীৎপুর, থানা-দোহার, জেলা-ঢাকাকে গ্রেফতার করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত মোঃ রুবেল পেশায় একজন চালের টিনের মিস্ত্রি। সে ভিকটিম জুলহাসকে দুঃসম্পর্কের মামা বানায় এবং সেই সুবাদে দীর্ঘদিন যাবৎ জুলহাসের বাসায় বসবাস করে আসছিল। রুবেল অত্যন্ত দুষ্ট প্রকৃতির লোক ছিল। তার কথাবার্তা ও চালচলন জুলহাস উদ্দিনের অপছন্দ হওয়ায় জুলহাস ঘটনার ১৩-১৪ দিন আগে রুবেলকে তাদের বাসা থেকে চলে যেতে বলে। পরবর্তীতে রুবেল বাসা ছেড়ে দেওয়ার বিষয়কে কেন্দ্র করে জুলহাসের সাথে বাকবিতন্ডায় জড়ায় এবং একপর্যায়ে জুলহাসকে পরবর্তীতে দেখে নিবে বলে রুবেল বিভিন্ন প্রকার হুমকি-ধামকি দিয়ে জুলহাসের বাসা থেকে চলে যায়। গত ১৬ জানুয়ারি মধ্যরাতে জুলহাস ও তার পরিবারের সবাই ঘুমিয়ে পড়লে রুবেল উক্ত বাসা থেকে বের করে দেওয়ার প্রতিশোধ নিতে তার সহযোগী রানাসহ অন্যান্য সহযোগীদের সাথে নিয়ে পূর্বপরিকল্পিতভাবে জুলহাসসহ তার পরিবারের সবাইকে বাড়ির বাইরে থেকে তালাবদ্ধ করে বাড়িতে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করেছিল। মামলা দায়েরের পর হতে সে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপন করে ছিল।
গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।
নওগাঁর পোরশায় মহিলা বিষয়ক ও সমাজসেবা কার্যালয়ের উদ্যোগে ভিক্ষুকদের মাঝে ছাগল ও ঔষধ বিতরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভিক্ষুক পুনর্বাসন ও বিকল্প কর্মসংস্থান শীর্ষক কর্মসূচির আওতায় এই অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।
বুধবার (৪ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় উপজেলা পরিষদ চত্বরে ১৯ জন ভিক্ষুকের মাঝে দুটি করে ছাগল, এক প্যাকেট মাল্টিভিটামিন ঔষধ, এক ডোজ ভ্যাকসিন এবং দুটি করে কৃমিনাশক ট্যাবলেট বিতরণ করা হয়। ছাগলগুলো সুস্থ-সবল থাকবে, এমন উদ্দেশ্যে ঔষধ ও চিকিৎসা প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আরিফ আদনান, যিনি বিতরণ কার্যক্রম সম্পন্ন করেন। তিনি বলেন, আপনাদের এই ছাগলগুলো পালন করে যেন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয় এবং ভবিষ্যতে আপনাদের আর ভিক্ষা করতে না হয়।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মাহমুদুল হক, সমাজসেবা কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম, ফিল্ড সুপারভাইজার রেজাউল করিম শাহসহ আরও অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও সুবিধাভোগী।
ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার বুজরুক বালুর চর নামক স্থান থেকে মাদকদ্রব্যসহ ৩ ব্যবসায়ীকে আটক করে বিজিবি। সোমবার (৩ ডিসেম্বর) ৫০ বিজিবির অধীনস্ত বুজরুক বিওপির টহলদল তাদের দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় উল্লিখিত ৩ জনকে মাদকদ্রব্য ও ২টি মোটরসাইকেলসহ আটক করে বলে জানা যায়।
ঠাকুরগাঁও ব্যাটালিয়ন (৫০ বিজিবি) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানায়, ওই দিন দুপুরে বুজরুক বিওপির টহলদল দায়িত্বপূর্ণ এলাকার সীমান্ত মেইন পিলার ৩৬২ হতে আনুমানিক ২ কিলোমিটার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে হরিপুর উপজেলার বুজরুক বালুর চর নামক স্থানে মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা করে।
এ সময় ৭০ বোতল ফেনসিডিল ও ২টি মোটরসাইকেলসহ ৩ জনকে আটক করে। আটককৃতরা হলেন- হরিপুর উপজেলার চৌরঙ্গী বাজারের আমানুল্লাহর ছেলে মো: হোসেন আলী (৪২), একই উপজেলার বীরগর গ্রামের মো: সাইফুদ্দিনের ছেলে মো: এনামুল (৪০) ও একই উপজেলার পাহাড়গাঁও গ্রামের মো: জেনারুলের ছেলে মো. মনসুর আলী (৩৫)। পরবর্তীতে আটককৃতদের মাদকদ্রব্য ও মটরসাইকেলসহ হরিপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়।