অর্থ ও বাণিজ্য, নির্বাচিত, লিড নিউজ

অর্থ ও বাণিজ্য, নির্বাচিত, লিড নিউজ

সমবায় আন্দোলনকে ছড়িয়ে দিতে হবে : স্থানীয় সরকার মন্ত্রী

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম বলেছেন, বঙ্গবন্ধু সমবায়ের মাধ্যমে মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়ন করতে চেয়েছিলেন। সেজন্য গণমুখী সমবায় আন্দোলনকে তিনি গুরুত্ব দিয়েছিলেন যাতে মানুষ উন্নত জীবন পায়। বঙ্গবন্ধু সমবায়ের মাধ্যমে সমাজকে যে পরিমাণ পরিবর্তন করতে চেয়েছিলেন তা তাঁর সাড়ে তিন বছরের সময়কালে করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। কিন্তু সমবায়ের সম্ভাবনার সুযোগ বঙ্গবন্ধুর হাত ধরেই তৈরি হয়েছিল। সমবায়ের শক্তিকে কাজে লাগাতে পারলে দারিদ্র পীড়িত মানুষের অফুরন্ত সম্ভাবনার সুযোগ সৃষ্টি হয় বলে উল্লেখ করেন মন্ত্রী।

সমবায় প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরো কার্যকর করতে হলে সমবায় আইন ও বিধিকে যুগোপযোগী করার উপর গুরুত্ব দিয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, সমবায় যেহেতু আর্থিক প্রতিষ্ঠান তাই এতে যে কোন অব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিবে। তাই সমবায়কে শক্তিশালী করতে হলে যুগোপযোগী আইন তৈরি করে তা কার্যকর করতে হবে।

তিনি আজ ঢাকায় সমবায় অধিদপ্তরে বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সিনিয়র সচিব মোসাম্মৎ হামিদা বেগম এবং সভাপতিত্ব করেন সমবায় অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোঃ শরিফুল ইসলাম।

মোঃ তাজুল ইসলাম এ সময় সমবায় সমিতিগুলোর নিবন্ধন প্রদান এবং সেই সমিতিগুলোর বার্ষিক নিরীক্ষা কার্যক্রম ডিজিটালাইজেশন এর উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন, সমবায় প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভালোভাবে চালানোর জন্য স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার ব্যবস্থা থাকতে হবে। তিনি বলেন, সমবায় সম্পর্কে মানুষের মনে স্বচ্ছ ধারণা তৈরি করতে হবে যাতে মানুষ সমবায়ের সাথে যুক্ত হয় এবং তার অর্থনৈতিক উন্নতির সম্ভাবনা তৈরি হয়। মন্ত্রী এ সময় যোগ্য সমবায়ী নেতৃত্ব তৈরি করার উপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, ভালো সাংগঠনিক নেতৃত্বওয়ালা মানুষই পারবে গ্রামের মানুষকে একত্রিত করে সমবায়ের মাধ্যমে নিজেদের সামাজিক এবং অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তন করতে। এ সময় সমবায় নেতৃত্ব তৈরিতে প্রশিক্ষণের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন মন্ত্রী।

মত বিনিময় সভার শুরুতে মন্ত্রীকে সমবায় অধিদপ্তরের কার্যক্রম, সমস্যা ও সম্ভাবনাগুলো বিস্তারিত অবহিত করা হয়।

বিষয়:
পরবর্তী খবর

মুক্তিযুদ্ধের উপন্যাস

রক্তের মূল্যে স্বাধীনতা

১৯৭১ সালের জুন মাসের শেষ দিক। বাংলাদেশে তখন চলছে পাকিস্তানি কসাই সেনাদের রক্তের হলিখেলা। ২৫শে মার্চের কাল রাত থেকে তারা সারা বাংলাদেশের নিরস্ত্র নিরীহ মানুষের উপর আক্রমণ চালিয়ে নির্বিচারে মানুষ হত্যার পাশাপাশি গ্রামের পর গ্রামে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, নারী ধর্ষণসহ নানা পৈশাচিক কর্মকাণ্ডে মেতে উঠেছে। অন্য দিকে বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের সেই ঐতিহাসিক ঘোষণা– ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ দেওয়ার পর থেকেই দেশে শুরু হয়ে গিয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি। ২৬শে মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার পর থেকেই সারা বাংলাদেশে শুরু হয়ে যায় প্রতিরোধ যুদ্ধ। এরই ধারাবাহিকতায় ১৭ই এপ্রিল প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের শপথ গ্রহণ এবং তার অল্প কিছু দিনের মধ্যে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র চালু হয়। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের সাফল্যগাথা শুনে অবরুদ্ধ বাংলাদেশের সাধারণ জনগণ যেমন উৎফুল্ল হয়ে উঠতো, তেমনি বাঙালি যুবকেরা মুুক্তিযুদ্ধে যোগ দিতে অনুপ্রেরণা খুঁজে পেত। যার ফলে দেশের ভেতর থেকে যুবক ছেলেরা দলে দলে ভারতে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিতে শুরু করে।

দিনে দিনে মুক্তিযোদ্ধাদের শক্তি বৃদ্ধি পাচ্ছে দেখে পাকি সেনারাও নতুন ফন্দি আঁটে। নিজেদের শক্তি বৃদ্ধি করার জন্য স্বাধীনতাবিরোধী জামাতে ইসলাম, মুসলিম লীগ, নেজামে ইসলামসহ অন্যান্য স্বাধীনতা বিরোধী দলের সহযোগিতায় তারা রাজাকার, আল বদর, আল শামস বাহিনী গঠন-কাজে হাত দেয়। জুন মাসের প্রথম দিকে তাদের এই বাহিনী গঠন-প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। এই মাসের মাঝের দিকে জামাত নেতা লেবুতলা গ্রামের ইব্রাহিম ডাক্তারের নেতৃত্বে (হাতুরে ডাক্তার) যশোর শহর থেকে ২০ মাইল পূর্বে খাজুরা উচ্চ বিদ্যালয়ে একটা রাজাকার ক্যাম্প স্থাপন করার পর থেকেই তারা গ্রামের সাধারণ মানুষের উপর অত্যাচার, নির্যাতন, বাড়িঘর লুটপাট এবং নারী ধর্ষণের মতো গর্হিত কাজ শুরু করে দেয়। শুধু তাই না মাত্র ১০/১২ দিনের মধ্যেই লেবুতলা গ্রামের নিমাই কাপালি, গৌর মাষ্টারের বাড়িতে লুটপাট ও খাজুরার আলিয়র রহমানের স্ত্রী ও ২ বোনকে ধরে নিয়ে গিয়ে সম্ভ্রমহানী করার পর তারা এলাকায় মূর্তিমান আতঙ্কে পরিণত হয়ে গেছে। এখন গাঁয়ের মানুষদের জলে কুমির আর ডাঙায় বাঘের মতো অবস্থা। প্রতি রাতেই যেমন পাকিস্তানি কসাই সেনারা বিভিন্ন এলাকায় আক্রমণ চালাচ্ছে, তেমনি দিনের বেলায় রাজাকার ও আল বদরেরা গ্রামে গ্রামে হামলা চালিয়ে লুটপাট ও নানা অসামাজিক কাজে মেতে উঠছে। শত্রুদের এই দ্বিমুখী আক্রমণে আজ বাংলাদেশের প্রতিটা এলাকায় নরকের যন্ত্রণা নেমে এসেছে। তাদের জীবন ও জীবিকা এলোমেলো হয়ে গেছে।

খান সেনাদের আক্রমণের আগাম খবর জানার জন্য এখন মানুষ তাদের রাতের ঘুমকে হারাম করে গাঁয়ে গাঁয়ে সারা রাত পাহারা বসিয়েছে। নির্ঘুম রাত কাটানোর পর দিনের বেলায় যে একটু শান্তিতে ঘুমাবে তারও কোন উপায় নেই। কারণ কখন যে রাজাকার আল বদরেরা হামলা করে বাড়ি ঘরে লুটপাট কিংবা যুবতি নারীদের অপহরণ করে নিয়ে যায় সেই চিন্তায় তাদের উৎকন্ঠিত থাকতে হয়। দিনের আলোয় তবুও মনে একটু বল পাওয়া যায়। কিন্তু রাতের আঁধার ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে মানুষের জীবনও যেন ঘোর অন্ধকারে ছেয়ে যায়। তখন তাদের মাথায় একটাই চিন্তা ঘুরপাক খায়– পরিবারের সবার জীবন রক্ষা করতে পারবো তো? বাড়ির যুবতি মা, বোন, কন্যার সম্ভ্রম রক্ষা করা যাবে তো? রাত যত গভীর হতে থাকে মানুষের মনের আতঙ্কও ততো বৃদ্ধি পেতে থাকে। এরই মধ্যে এলাকায় জোর গুজব ছড়িয়ে পড়েছে যে ভারত থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা দেশের ভেতরে প্রবেশ করেছে। কেউ তাদের চোখে দেখেনি। তবুও এই খবর শুনে সাধারণ মানুষ আশায় বুক বাঁধতে শুরু করেছে। এবার নিশ্চয়ই মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে পাকিস্তানি সেনা তথা রাজাকার আলবদর বাহিনী পরাজিত হবে। বাংলাদেশ স্বাধীন হবে। কিন্তু সেই স্বাধীনতার জন্য আর কত দিন আর কত রাত তাদের এমন দুঃসহ যাতনা ভোগ করতে হবে?

আজ ৩০শে জুন। জুন মাসের শেষ দিন। মানুষ জন সারা রাত গাঁ পাহারা দিয়ে ঘরে ফেরা শুরু করেছে। মসজিদে মসজিদে মুয়াজ্জিনের আজানের ধ্বনি ভেসে আসছে। ঠিক এমন সময় খাজুরিয়া রাজাকার ক্যাম্পের উপর যেন গুলির বৃষ্টি বর্ষণ শুরু হয়ে গেছে। এলএমজি, এসএলআর, ৩০৩ রাইফেলের গুলি ও গ্রেনেড বিস্ফোরণের শব্দের পাশাপাশি মুর্হুমুহু ভেসে আসছে জয় বাংলা স্লোগান। তখন এলাকার মানুষের মনের সব সংশয় দূর হয়ে যায়। তারা নিশ্চিত হয়ে যায়, নরাধম রাজাকাদের উপযুক্ত শাস্তি দিতে মুক্তিযোদ্ধারাই খাজুরা রাজাকার ক্যাম্প আক্রমণ করেছে। সারা ক্যাম্প এলাকায় যেন ভূমিকম্প শুরু হয়েছে। সেই ভূমিকম্প যেন থামতেই চায় না। প্রায় ঘন্টা খানেক প্রবল গুলাগুলি চলার পর আস্তে আস্তে তা স্তিমিত হয়ে আসে। এরই মধ্যে পূর্ব আকাশে নতুন দিনের আশার সূর্য উদিত হতে দেখা যায়। দিনের আলোয় আশে পাশের বাড়িঘরের লোকজন ক্যাম্পের সামনে এসে দেখতে পায় ৫ জন রাজাকার মরে পড়ে আছে। বাকিরা জীবন বাঁচাতে ক্যাম্পের পিছনের ডোবায় আশ্রয় নিয়েছিল। মুক্তিবাহিনী চলে যাওয়ার পর আস্তে আস্তে তারা ক্যাম্পে ফিরে আসছে। নরাধমদের এমন উপযুক্ত শাস্তি হয়েছে দেখে গাঁয়ের লোকজন মনে মনে ভীষণ খুশি হলেও তারা মুখে তা প্রকাশ করতে পারে না। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সেদিনের রাতের খবরে যশোর জেলার খাজুরা রাজাকার ক্যাম্পের উপর মুক্তিযোদ্ধাদের সফল অপারেশন পরিচালনার খবর ফলাও করে প্রচার করার সাথে সাথে তা ছড়িয়ে পড়ে সারা বিশ্বময়। এই খবর পেয়ে অবরুদ্ধ বাংলাদেশের প্রতিটা মুক্তিপাগল বাঙালির মনে আনন্দের জোয়ার বয়ে যায়। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সেদিনের চরমপত্র অনুষ্ঠানে শোনা গেল– বিচ্ছুদের গাবুড় মাইরের চোটে যশোরের খাজুরায় ৫ জন রাজাকার অক্কা পেয়েছে। বাকিরা জীবন বাঁচাতে ক্যাম্পের পেছনের ডোবার ভেতরে হাবুডুবু খেয়েছে।

পরবর্তী খবর

রাষ্ট্রদূতরা ঘুরে গেলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম বাগান

আমের রাজধানী খ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জে এসে আম বাগান ঘুরে গেলেন, ঢাকাস্থ বিভিন্ন দেশের রাষ্টদূতরা। রাষ্টদূতদের এ দেশের আম ও আম সংস্কৃতি সম্পর্কে ধারণা দিতেই এই ম্যাংগো ট্যুরের আয়োজন করে কৃষি মন্ত্রণালয়। এর মাধ্যমে দেশের আম রপ্তানী আরো গতি পাবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের।

কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুস শহীদের নেতৃত্বে অষ্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, স্পেন, সিঙ্গাপুরসহ বেশ কয়েকটি দেশের দেশের রাষ্ট্রদূতরা বৃহস্পতিবার দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার কান্দবোনা গ্রামে একটি আম বাগান পরিদর্শন করেন।

এসময় তাদের সাথে ছিলেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু এমপি, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মোঃ আব্দুল ওয়াদুদ এমপি, কৃষিসচিব ওয়াহিদা আক্তার, পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ মোঃ বখতিয়ারসহ কৃষি, বাণিজ্য ও পররাষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তরা।

এই ম্যাংগো ট্যুরের মাধ্যমে চাঁপাইনবাবগঞ্জে ম্যাংগো ট্যুরিজম ও দেশের আম রপ্তানীতে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি হবে বলে মনে করছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম উদ্যোক্তরা।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত