শীতে স্বাভাবিকভাবেই অলসতা গ্রাস করে মানুষকে। এ সময় কুয়াশা-মাখা ভোরে শরীরচর্চার কথা ভাবলে ঘুম আরও বেশি পায়। অন্যদিকে শীত যেমন আনন্দের, তেমনি রোগের দেখাও মেলে এ সময়ই বেশি। খুব অলস ও আরাম প্রিয় সময় কাটতেই যেন ভালো লাগে। এই রোগ থেকে ও ভুড়িভোজে ১২টা বেজে যাওয়া ফিটনেসের হাত থেকে বাঁচতে হলে আমাদের নিয়মিত ব্যায়াম বা খেলাধুলা করতে হবে। প্রতিদিন নিয়ম করে হাঁটতে হবে প্রয়োজনে দৌঁড়াতে হবে।
তবে এই কনকনে কুয়াশা ভেজা ভোরে উঠে কোনো ভাবেই সকাল সকাল শরীরচর্চা করা সম্ভব না। তবে হোক না দেরি করে শুরু শরীরচর্চা সহজভাবে :
ধ্যান
যেকোনো কাজ শুরু করার আগেই ধ্যান করে নেওয়া ভালো। ধ্যান মনকে স্থির করে। ধ্যান করলে একাগ্রতা বৃদ্ধি পায়। একাগ্রতা বৃদ্ধিই কিন্তু ধ্যানের মূল লক্ষ্য। তবে ধ্যান সবসময় করতে হবে খালি পেটে।
প্রাণায়াম
সর্ব প্রথম প্রাণায়াম দিয়েই শুরু করুন। শারীরিক এবং মানসিক সুস্থতার জন্য প্রাণায়াম অত্যন্ত কার্যকর হতে পারে। শীতকালে ঘুম থেকে উঠে কিছুক্ষণ প্রাণায়াম করলে তা শরীর বেশ চাঙ্গা করতে পারে। মনও থাকে প্রফুল্ল করে।
ত্রিকোণাসন
ত্রিকোণাসন সংস্কৃত শব্দ ‘ত্রিকোনা’ (তিন কোণ) এবং ‘আসন’ (ভঙ্গি) থেকে উদ্ভূত হয়েছে। ত্রিকোনাসন যোগে, অনুশীলনকারী তাদের হাঁটু বাঁকানো ছাড়াই তাদের পা প্রসারিত করে, তাদের হাত আলাদা করে, উপরের এবং নীচের শরীরের মধ্যে একটি ৯০-ডিগ্রি কোণ তৈরি করে। ত্রিকোণাসন যোগব্যায়াম, ত্রিভুজ অবস্থান ব্যায়াম নামেও পরিচিত, একটি স্থায়ী ভঙ্গি যা শক্তি, ভারসাম্য এবং নমনীয়তা উন্নত করে। শীতকালে হাতে পায়ে নানান ধরনের জড়তা দেখা দেয় যা এই আসনটির মাধ্যমে রোধ হওয়া সম্ভব।
চতুরঙ্গ দণ্ডাসন
চতুরঙ্গ দণ্ডাসন পুরো শরীরের জন্য উপকারী যার মাধ্যমে পেশীর সক্রিয়করণ হয়। চতুরঙ্গ অনুশীলন শারীরিক শক্তি গঠন করতে সহায়তা করে। পিঠ এবং কোমরকে শক্তিশালী করে তোলে। শরীরকে বেশ চনমনে রাখে।
পূর্বোত্তানাসন
শীতকালের অন্যতম একটি আসন হল পূর্বোত্তানাসন। কব্জি, বাহু, কাঁধ, পিঠ এবং মেরুদণ্ডকে শক্তিশালী করে, পা এবং নিতম্ব প্রসারিত করে তোলে, শ্বাসযন্ত্রের কার্যকারিতা উন্নত করে, অন্ত্র এবং পেটের অঙ্গ প্রসারিত করে তোলে, থাইরয়েড গ্রন্থিকে উদ্দীপিত করে।
দৌড়ানো
দিনের নির্দিষ্ট সময়ে কিছুক্ষণ দৌড়ান। দৌড়ানোর ফলে সব ধরনের শারীরিক সমস্যার সমাধান না হলেও অনেক সমস্যার সমাধান পাওয়া যায়। এটা একদিকে যেমন শারীরিক ও মানসিক স্বস্তি বয়ে আনে।
এছাড়াও দিনের নির্দিষ্ট সময়ে কিছুক্ষণ হাঁটুন হাঁটলে শরীরের শীত শীত ভাবটা দূর হবে।
ঝড় বা ঘূর্ণিঝড়ের সময় আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেওয়া সমুদ্রবন্দরের ক্ষেত্রে ১১টি সংকেত নির্ধারিত আছে। এই সংকেতগুলো সমুদ্রবন্দরের ক্ষেত্রে আলাদা বার্তা বহন করে।
চলুন জেনে নেওয়া যাক সংকেতগুলোর বিস্তারিত-
১ নম্বর দূরবর্তী সতর্কসংকেত : জাহাজ ছেড়ে যাওয়ার পর দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার সম্মুখীন হতে পারে। দূরবর্তী এলাকায় একটি ঝোড়ো হাওয়ার অঞ্চল রয়েছে। এ সময় বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৬১ কিলোমিটার। ফলে সামুদ্রিক ঝড়ের সৃষ্টি হবে।
২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত : গভীর সাগরে একটি ঝড় সৃষ্টি হয়েছে। সেখানে বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিলোমিটার। বন্দর এখনই ঝড়ে কবলিত হবে না, তবে বন্দর ত্যাগকারী জাহাজ পথে বিপদে পড়তে পারে।
৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত : বন্দর ও বন্দরে নোঙর করা জাহাজগুলোর দুর্যোগকবলিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বন্দরে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে এবং ঘূর্ণি বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০-৫০ কিলোমিটার হতে পারে।
৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত : বন্দর ঘূর্ণিঝড়কবলিত। বাতাসের সম্ভাব্য গতিবেগ ঘণ্টায় ৫১-৬১ কিলোমিটার। তবে ঘূর্ণিঝড়ের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেওয়ার মতো তেমন বিপজ্জনক সময় হয়নি।
৫ নম্বর বিপদসংকেত : বন্দর ছোট বা মাঝারি তীব্রতর এক সামুদ্রিক ঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিলোমিটার। ঝড়টি বন্দরকে বাঁ দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
৬ নম্বর বিপদসংকেত : বন্দর ছোট বা মাঝারি তীব্রতার এক সামুদ্রিক ঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিলোমিটার। ঝড়টি বন্দরকে ডান দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
৭ নম্বর বিপদসংকেত : বন্দর ছোট বা মাঝারি তীব্রতার এক সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিলোমিটার। ঝড়টি বন্দরের ওপর বা এর কাছ দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
৮ নম্বর মহাবিপদসংকেত : বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতার ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়তে পারে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার বা এর বেশি হতে পারে। প্রচণ্ড ঝড়টি বন্দরকে বাঁ দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে।
৯ নম্বর মহাবিপদসংকেত : বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতার এক সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার বা এর বেশি হতে পারে। প্রচণ্ড ঝড়টি বন্দরকে ডান দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে।
১০ নম্বর মহাবিপদসংকেত : বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতার এক সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার বা তার বেশি হতে পারে।
১১ নম্বর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন সংকেত : আবহাওয়ার বিপদসংকেত প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সব যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এবং স্থানীয় আবহাওয়া কর্মকর্তা পরিস্থিতি দুর্যোগপূর্ণ বলে মনে করেন।
বেশ কিছুদিন ধরেই থেকে থেকে চলছে তাপপ্রবাহ। প্রচণ্ড গরমে ওষ্ঠাগত প্রাণ। বাইরে প্রচণ্ড কড়া রোদ। এমনকি ঘরে থেকেও স্বস্তি মিলছে না। ঘরেও যেনো দাবদাহ। অনেকেই ছুটছেন এসি কিনতে। কিন্তু সবার তো আর এসি কেনার সামর্থ্য নেই। তাই বেশিবভাগ মানুষই গরমে কষ্টে আছেন। আর এসির অধিক ব্যবহারেও তো প্রকৃতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বেড়ে চলেছে গরম।
তাই এসি ছাড়াই কিভাবে ঘরকে ঠান্ডা রাখা যায়, সেই দিকে নজর অনেকেরই। আছে সেই কৌশলও। ঘরের তাপমাত্রা কম রাখতে ঘরে রাখা যায় কিছু গাছ। বাড়িতে গাছ লাগিয়েই এসি ছাড়া সহনীয় তাপমাত্রায় রাখা যায় নিজেদের ঘরকে।
ঘর শীতল করে এমন কিছু গাছের কথা জেনে নেয়া যাক–
ইংলিশ আইভি : গবেষকদের মতে, এই গাছ মাত্র ৬ ঘণ্টার মধ্যে ঘরের বাতাসের প্রায় ৬০ শতাংশ টক্সিন এবং ৫৮ শতাংশ পর্যন্ত দুর্গন্ধ শুষে নিতে পারে। ঘরের শোভা বাড়াতেও কাজ করে এটি। তাই ঘর ঠান্ডা ও দূষণমুক্ত রাখতে ঘরে রাখতে পারেন এই গাছ।
স্নেক প্ল্যান্ট : অ্যালো ভেরার মতো এই গাছের পাতাও জলীয় উপাদানে সমৃদ্ধ। তাই জানলার কাছে রেখে দিলে তা উত্তাপ শোষণ করে নেবে, ঘরের হাওয়াকে করে তুলবে শীতল। এটিতেও অতিরিক্ত জলসেচনের দরকার হয়।
এরিকা পাম : বাড়িতে জায়গার অভাব না থাকলে বসার ঘরে রাখতেই পারেন এরিকা পাম। এটি তাল গাছের তুতো ভাই। এরিকা পাম এক দিকে ঘর ঠান্ডা রাখে, আবার দেখতেও ভাল লাগে। শুধু বাড়ি নয়, এই গাছটি হোটেল, অফিস এবং অন্যান্য উন্মুক্ত স্থানে সাজাতেও ব্যবহৃত হয় এই গাছ।
ঘৃতকুমারী : অ্যালোভেরা বা ঘৃতকুমারী অতি পরিচিত একটি উদ্ভিদ। বাড়ির ভিতরের তাপ ও অক্সিজেনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে অ্যালভেরার গুণাগুণ বহু। মূলত বাংলার বুকে এই গাছ ঘৃতকুমারী নামে পরিচিত। এই গাছের পাতায় রয়েছে বহু ধরনের প্রতিকার।
রবার প্লান্ট : এই গাছের পাতা এমনিতেই বড় হয়। পাশাপাশি যদি সব চেয়ে বড় পাতার শ্রেণি দেখে গাছটি কেনা হয়, তাহলে খুব তাড়াতাড়ি তা ঘর ঠান্ডা রাখবে। এতে মাঝে মাঝেই একটু পানি ছিটিয়ে দিতে হবে।
উইপিং ফিগ : এই গাছগুলি বাড়ির ভিতরেই বেশ ভাল হয়। এর ছোট ছোট পাতা হাওয়ায় দোলা লাগলে বেশ ভাল লাগে দেখতে। আবার এই গাছ বাড়ির তাপমাত্রা কমাতেও সাহায্য করে। তবে গাছটি এমন জায়গায় রাখবেন যেখানে সূর্যের তাপ সরাসরি এসে পড়ে।
চাইনিজ এভারগ্রিন : এই গাছের পাতাগুলি ঘরের ভিতরে ভিন্ন ইকোসিস্টেম তৈরি করতে সাহায্য করে। এর বাহারি পাতা যেমন দেখতে ভাল লাগে, তেমনই তাপমাত্রা কমাতেও সাহায্য করে।
পামস : এর সরু সরু পাতা মিলে ঘরের মধ্যেই একটা বুনো পরিবেশের সৃষ্টি করে। এটা মানসিকভাবে গরমের অনুভব কমিয়ে দেয় বলেই মনে করেন গবেষকরা।
এসব গাছ যে কেবল ঘরকে ঠান্ডা রাখতে ভূমিকা রাখবে তা কিন্তু না। বরং ঘরের সৌন্দর্যকে বাড়িয়ে তুলবে বহুগুন।