দ্বাদশ জাতীয় সংসদের স্পিকার নির্বাচিত হয়েছেন শিরীন শারমিন চৌধুরী। এ নিয়ে টানা চতুর্থবার জাতীয় সংসদের স্পিকার নির্বাচিত হলেন তিনি। আজ মঙ্গলবার বেলা তিনটায় একাদশ জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার শামসুল হকের সভাপতিত্বে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হয়। বৈঠকের শুরুতে স্পিকার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের স্পিকার পদে শিরীন শারমিন চৌধুরীর নাম প্রস্তাব করেন। প্রস্তাব সমর্থন করেন চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী। আর কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় কণ্ঠভোটে শিরীন শারমিন চৌধুরীকে বিজয়ী ঘোষণা করেন ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক।
সংসদ ভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীকে শপথ পড়ান।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিদ্বেষমূলক বক্তব্য গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারে নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেছে প্রসিকিউশন টিম। বৃহস্পতিবার সকালে এ আবেদনটি সংশ্লিষ্ট শাখায় জমা দেওয়া হয়।
ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজার নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
গত কয়েকদিন ধরে, ভারতে অবস্থানরত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অন্তর্বর্তী সরকার সম্পর্কে নানা বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করেছেন, যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। প্রসিকিউশন দাবি করছে, সরকার কর্তৃক প্রদত্ত এই ধরনের ঘৃণা উদ্রেককারী বক্তব্যের বিরুদ্ধে এ আবেদনটি দায়ের করা হয়েছে।
এছাড়া, ১৮ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় এক মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করার নির্দেশনা দিয়েছিল। ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে এই প্রতিবেদন জমা দিতে হবে।
ব্যাংক অ্যাকাউন্টের লেনদেন নিয়ে প্রকাশিত সংবাদের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সাংবাদিক মুন্নী সাহা। বুধবার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, অ্যাকাউন্টে কত টাকা আছে, তা নিয়ে কিছু মিসলিডিং হেডলাইন করা হয়েছে, যা দেখে তিনি বিস্মিত হয়েছেন। পাশাপাশি ওই পোস্টে তিনি তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে হওয়া লেনদেনের ব্যাখ্যাও দিয়েছেন।
মুন্নী সাহার ফেসবুক পোস্টটি রোজকার খবরের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-
আজ দেশের অনেকগুলো নিউজ পোর্টাল এবং দৈনিকে আমার একাউন্টে কত টাকা তা নিয়ে কিছু মিসলিডিং হেডলাইন দেখে বিস্মিত হয়েছি।
অনেকেই আমার অ্যাকাউন্টে ১৩৪ কোটি টাকা- এমন ফটোকার্ড বানিয়ে ক্লিক নিচ্ছেন।
যেখানে রিপোর্টে পরিষ্কার করেই লিখেছেন মুন্নী সাহার স্বামীর বিজনেস একাউন্ট এম এস প্রমোশনসের লেনদেনের কথা। ‘লেনদেন’ শব্দটা আমাদের বন্ধুরা নিশ্চয়ই বোঝেন। কবীর হোসেন তাপস একজন ব্যবসায়ী। ২০০২ সাল থেকে তার বিজ্ঞাপনী সংস্থা।
ব্যবসায়িক একাউন্ট খুলতে গিয়ে শুধু নমিনি হিসেবে আমার নাম দিয়েছেন। তার কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আমার কোনো পার্টনারশিপ নেই। আমি তার কোনো গ্যারান্টারও নই।
২০০৭ সালে তিনি প্রমোশন নামে আর একটি কোম্পানি খোলেন। আবারও বলছি, ব্যবসায়িক অ্যাকাউন্ট খুলতে গিয়ে শুধু নমিনি হিসেবেই আমার নাম দিয়েছেন। তার কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আমার কোনো পার্টনারশিপ নেই।
আসলে তিনি ওয়ান ব্যাংকের সঙ্গে যে টোটাল লেনদেন করেন সেটি ১৩৪ কোটি, যা টোটাল লেনদেনের পরিমাণ। এই টাকা কখনোই জমা ছিল না।
বাংলাদেশের বাস্তবতায় একটি বিজ্ঞাপনী সংস্থার এই দীর্ঘ সময়ে লেনদেন, মানে ট্রানজেকশন মাত্র ১৩৪ কোটি টাকা! ব্যবসায়ী হিসেবেও খুব সফল বলা যায় না।
কোনো কোনো রিপোর্টে কৌশলে লিখেছে যে, ৫ আগস্টের আগে ১২০ কোটি টাকা তোলা হয়েছে। সেটাও যে লেনদেন, মানে ২২ বছরের বেতন বিল, ভাড়া, খরচ সবকিছু বাবদ; ২২ বছরের প্রতি মাসে মাসে হিসেবে তোলা সেটা এড়িয়ে, শুধুমাত্র ভুল বার্তা দেওয়ার জন্য করা হয়েছে; সেটা আশ্চর্য হয়ে লক্ষ্য করেছি।
যেকোনো রাজনৈতিক পালাবদলে বাংলাদেশ ব্যাংক ইন্টিলিজেন্স ইউনিট যে কারোরই হিসাব চাইতে পারেন। সেই তালিকায় সাংবাদিক হিসেবে অনেকের সাথে আমার নাম ছিল এবং কর্তৃপক্ষ দক্ষতা ও নিষ্ঠার সাথে অনুসন্ধান করেছে বলে আমার বিশ্বাস।
একজন সংবাদকর্মী হিসেবে মনে করি, বাংলাদেশের যে কোনো ব্যবসায়ীর দীর্ঘদিনের স্ট্যাবল ব্যবসায়, transaction ১৩৪ কোটি টাকা এবং সঞ্চয় ১৪ কোটি টাকা, কোনো গুরুত্বই বহন করে না।
শুধুমাত্র আমার নামটি নমিনিতে ব্যবহার করায় একজন individual ব্যবসায়ী সামাজিক হ্যারাসমেন্টের শিকার হয়েছেন, এখনও তার লেনদেন ব্যাহত হচ্ছে।
আমি জানি এ ঘটনায় আমি যত ব্যাখ্যাই দেই না কেন, আমার নামের পাশে মিথ্যা অপপ্রচার কিছু শুনতেই… বিশ্বাস করতেই, একদল মরিয়া হয়ে আছেন।
বিভিন্ন মিডিয়ার সংশ্লিষ্টরা মনে মনে হলেও স্বীকার করবেন যে, এমন মিথ্যা শিরোনাম তারা করেছেন, কী আর্ন করার জন্য? আমি ঘটনাটিকে বা আমাকে নিয়ে যা যা ঘটছে, তা blessings in disguised হিসেবে গ্রহণ করছি।
যদিও আমাকে স্বৈরাচারের দোসর হিসেবে ট্যাগ দিয়ে মামলা দেওয়া হয়েছে, গত ১৪/১৫ বছর ধরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় আমাকে নিয়ে যে অপপ্রচার চালানো হয়েছে, তার পুরোটাই যে ভুল, তা অন্তত এ ধরনের ইনভেস্টিগেশনে প্রমাণিত হলো।
বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের দোসর হিসেবে ট্যাগ দিলেও গত ১০ বছর আমি এবং আমার মত আরও দুয়েকজন সেলিব্রিটি সাংবাদিক সরকারি অনুষ্ঠান, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস কনফারেন্স কাভার করার তালিকায় নিষিদ্ধ ছিলাম। ‘এক টাকার খবর’ নামের অনলাইনের অনুমতিপত্রও সাবেক তথ্যমন্ত্রী দেন নাই।
সাংবাদিক হিসেবে কোনো সরকারি পদ-পদবি সুযোগও আমাকে নিতে হয়নি বলে আমি গর্বিত। প্রধানমন্ত্রীর ইন্টারভিউ বা সালমান এফ রহমানের মুখের ওপর কড়া প্রশ্ন করায় নানান সময় আমাকে যে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে, সেটা আমি সাংবাদিকতার শক্তিই মনে করি।
সাহা পরিবারে জন্ম বলে আমাকে ভারতের দালাল বলতে মুখিয়ে থাকা মানুষগুলো অন্তত এই সরকারের স্বচ্ছ অনুসন্ধান থেকে নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন কতটা অন্ধত্ব নিয়ে আমার ওপর অবিচার করা হয়েছে! যেটা গত ১৫/১৬ বছর ধরেই আমাকে সহ্য করতে হয়েছে।
বিগত সরকারের সময় আমি বারবার এসব মিথ্যাচারের ব্যাপারে, সোশ্যাল মিডিয়ায় হ্যারাসমেন্টের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেও ফল পাইনি। বরং এই সরকারের স্বচ্ছতার প্রক্রিয়ায় বিষয়গুলো তদন্ত হওয়াতে আমি ব্যক্তিগতভাবে স্বস্তিবোধ করছি।
রিপোর্টে, আমার সাথে জড়িয়ে কবীর হোসেন তাপসের একাউন্টে ১৪ কোটি টাকার স্থিতির খবর যারা দিয়েছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। যারা ভুল ফটোকার্ড করে, ‘মুন্নী সাহার অ্যাকাউন্টে ১৩৪ কোটি টাকা’ লিখলেন, তাদের প্রতি দোয়া রইলো। যেন তারা বিভ্রান্তিমূলক হেডলাইন সাংবাদিকতা থেকে নিয়মের সাংবাদিকতা সম্মানের সাথে চর্চা করতে পারেন।
মুন্নী সাহার মূল পোস্ট দেখতে ক্লিক করুন।