জাতীয়, লিড নিউজ

জাতীয়, লিড নিউজ

রাজনৈতিক দলসমূহকে অহিংস কর্মসূচি পালন করার আহ্বান রাষ্ট্রপতির

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন দেশের রাজনৈতিক দলসমূহকে সহিংসতা ও নৈরাজ্যের পথ পরিহার করে সাংবিধানিক অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং জনগণ ও গণতন্ত্রের কল্যাণে অহিংস পন্থায় গঠনমূলক কর্মসূচি পালন করার আহ্বান জানিয়েছেন।

এ ক্ষেত্রে তিনি সরকারকেও সংযত আচরণ করারও উপদেশ দিয়ে বলেন, উন্নয়নের এ চলমান গতিধারা অব্যাহত রাখতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে হবে।

আজ বিকেলে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে ভাষণ দানকালে রাষ্ট্রপ্রধান একথা বলেন। রেওয়াজ অনুযায়ী সংসদের প্রথম অধিবেশন এবং প্রতি বছরের শুরুতে অনুষ্ঠিত অধিবেশনে রাষ্ট্রপতি ভাষণ দিয়ে থাকেন। এরই অংশ হিসেবে মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এ ভাষণ দেন।

এ সময় অধিবেশনের সভাপতিত্ব করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। অধিবেশনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী, বিরোধীদলীয় নেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদেরসহ সংসদ সদস্যরা।

তিনি বলেন, উন্নয়ন স্থায়ী ও টেকসই করতে হলে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে মজবুত, তৃণমূল পর্যায়ে গণতন্ত্রের চর্চা ছড়িয়ে দিতে হবে।

“নির্বাচন বর্জনকারী দলসমূহ সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করছে . . . আমি আশা করি, ভবিষ্যতে দেশের রাজনৈতিক দলসমূহ সহিংসতা ও নৈরাজ্যের পথ পরিহার করে জনগণ ও গণতন্ত্রের কল্যাণে অহিংস পন্থায় গঠনমূলক কর্মসূচি পালন করবে,” রাষ্ট্রপতি বলেন।

তিনি বলেন, কেউ যাতে আন্দোলনের নামে অরাজকতা সৃষ্টি করে মানুষের জানমাল ও জীবিকার ক্ষতিসাধন করতে না পারে, সেদিকে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।

রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন দেশের আর্থিক খাতের সংস্কার এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ও কঠোর পদক্ষেপ নিতে জোর তাগিদ দেন।

সকল গুজব ও অপপ্রচারের বিষয়ে নজরদারি বৃদ্ধি করে জনগণকে সম্পৃক্ত রেখে যথাযথভাবে মোকাবিলা করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ষড়যন্ত্র করে কেউ যাতে জনগণের অধিকার কেড়ে নিতে না পারে, সেদিকে সকলের সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।
স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, পরমতসহিষ্ণুতা, মানবাধিকার ও আইনের শাসন সুসংহতকরণ এবং জাতির অগ্রযাত্রার স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষার সফল বাস্তবায়নে সরকারি দলের পাশাপাশি বিরোধী দলকেও গঠনমূলক ভূমিকা পালন করার ও আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি।

তিনি বলেন, গণতন্ত্র ও উন্নয়নের নিষ্কণ্টক পথচলার জন্য দেশের রাজনৈতিক দলগুলো উদার ও গঠনমূলক মনোভাব নিয়ে জনগণের পাশে দাঁড়াবে এটাই দেশবাসীর প্রত্যাশা।

“রাজনৈতিক নীতি-আদর্শ, মত-পথের ভিন্নতা থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সংসদকে গণতন্ত্র ও উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করার ক্ষেত্রে কোনো মতদ্বৈততা জনগণ প্রত্যাশা করে না,” রাষ্ট্রপতি উল্লেখ করেন।

জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত মহান এ প্রতিষ্ঠানটি ‘জনগণের সকল প্রত্যাশার ধারক ও বাহক’ অভিহিত করে তিনি বলেন, জনগণের চাহিদাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে নাগরিকদের কল্যাণে জাতীয় সংসদ যথাযথ ও কার্যকর ভূমিকা পালন করবে এটাই জনগণের প্রত্যাশা।

তিনি মনে করেন, ভূ-রাজনৈতিক অস্হিরতার কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তা বাড়ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সংকট দেখা দিলে এর প্রভাব আমাদের উপরও পড়বে। এজন্য আমাদের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি থাকতে হবে।
রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন বলেন, উন্নত কৃষিপ্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি করতে হবে। কৃষিপণ্য সংরক্ষণাগার এবং কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্প গড়ে তুলতে হবে।

তিনি বলেন, দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির পাশাপাশি নতুন নতুন শ্রমবাজারের অনুসন্ধান করতে হবে যাতে দক্ষ শ্রমশক্তি রপ্তানি সম্ভব হয়।

ইংরেজি নববর্ষ এবং দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনের সূচনালগ্নে স্পীকার, নবগঠিত সরকারের চতুর্থসহ পঞ্চমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সংসদ-সদস্যগণকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান রাষ্ট্রপতি।

তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান সমুন্নত এবং সংসদীয় গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত রেখে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্পন্ন করার জন্যে নির্বাচন কমিশনসহ জনপ্রশাসন, সশস্ত্রবাহিনী, আইন-শৃঙ্খলাকারী বিভিন্ন বাহিনী এবং গণমাধ্যমসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান।

দেশের গণতন্ত্রের জন্য দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অত্যন্ত যুগান্তকারী ঘটনা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, সাধারণ মানুষের স্বতস্ফূর্ততা ও সক্রিয় অংশগ্রহণের জন্যই সরকার ও নির্বাচন কমিশনের সকল পদক্ষেপ স্বার্থক হয়েছে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, একটি কুচক্রীমহল ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যা করে সদ্য-স্বাধীন বাংলাদেশের উন্নয়ন ও প্রগতির পথ রুদ্ধ করে দিয়েছিল। তবে গত দেড় দশকে আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে ধারাবাহিক উন্নয়নের কারণে বাংলাদেশ বিশ্বে ‘রোল মডেলে’ পরিণত হয়েছে।

“আমাদের লক্ষ্য ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার পর মেধা ও প্রযুক্তিনির্ভর উন্নত “স্মার্ট বাংলাদেশ” বিনির্মাণে স্মার্ট বাংলাদেশের চারটি স্তম্ভ-স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট অর্থনীতি, স্মার্ট সরকার ও স্মার্ট সমাজ ব্যবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে, “ রাষ্ট্রপতি উল্লেখ করেন।

চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের নানা অনুষঙ্গ ধারণ করে দেশের তরুণদের প্রশিক্ষিত করে তোলার উদ্যোগ নেয়ার কথা তিনি জানান।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে মো. সাহাবুদ্দিনের দেয়া এটাই প্রথম ভাষণ। দ্বিতীয় মেয়াদে ১২তম জাতীয় সংসদ স্পীকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রথম অধিবেশন বিকেল তিনটায় শুরু হয়।

রাষ্ট্রপতি তাঁর নাতিদীর্ঘ লিখিত ভাষণে দেশের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ড তুলে ধরে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ়, বলিষ্ঠ ও দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে গত দেড় দশকে আর্থসামাজিক খাতসহ সকল খাতে অভূতপূর্ব এ উন্নয়ন সাধিত হয়েছে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়নের ফলে কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অর্থনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্য, ব্যাংকিং, প্রশাসন, উদ্ভাবন, দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়ন, ডিজিটাল অর্থনীতি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি শিল্পসহ প্রায় সব খাতে সমানভাবে উন্নতি হয়েছে।

রাষ্ট্রপতি সংসদকে জানান, “এ সময় আমরা দারিদ্র্যের হার ৪১ দশমিক ১ থেকে ১৮ দশমিক ৭ ভাগে হ্রাস করতে সক্ষম হয়েছি। বেকারত্বের হার ২০১০ সালে ছিল চার দশমিক দশ শতাংশ, যা কমে বর্তমানে দাঁড়িয়েছে তিন দশমিক দুই শতাংশে।”

আমাদের সাক্ষরতার হার ছিল মাত্র ৪৫ ভাগ, যা আজ ৭৬ দশমিক ৮ ভাগে উন্নীত হয়েছে; আয়ুষ্কাল মাত্র ৫৯ বছর থেকে প্রায় ৭৩ বছরে উন্নীত হয়েছে। মাতৃমৃত্যু উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে, শিশুমৃত্যু হার হ্রাসে সাফল্যের কারণে বাংলাদেশ পেয়েছে এমডিজি পুরস্কার, চিকিৎসাসেবা আজ জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে গেছে, তিনি উল্লেখ করেন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, করোনা অতিমারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব সত্ত্বেও গত প্রায় দেড় দশক যাবৎ জিডিপির গড় প্রবৃদ্ধি প্রায় ছয় দশমিক সাত শতাংশের অধিক। এ সময়ে বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় প্রায় সাড়ে ৪ গুণ বৃদ্ধি পেয়ে ২ হাজার ৭৯৩ মার্কিন ডলার এবং জাতীয় বাজেটের আকার নয় গুণের অধিক বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৭ লক্ষ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকায়।

দেশের আজকের সামাজিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি বলেন, গত দেড় দশকে বাংলাদেশের বার্ষিক রপ্তানি আয় প্রায় ৪ গুণ বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে ৫৫ দশমিক পাঁচ-ছয় বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির বরাদ্দ ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি করে বর্তমান অর্থবছরে ১ লাখ ২৬ হাজার ২৭২ কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়েছে, যার মোট উপকারভোগীর সংখ্যা প্রায় ১০ কোটি ৬১ লক্ষ। এর মধ্যে বর্তমানে বয়স্ক ভাতাভোগীর সংখ্যা প্রায় ৫৮ লক্ষ, বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা মহিলা ভাতাভোগীর সংখ্যা প্রায় ২৬ লক্ষ, প্রতিবন্ধী ভাতাভোগীর সংখ্যা প্রায় ২৯ লক্ষ, বীর মুক্তিযোদ্ধা উপকারভোগীর সংখ্যা ২ লক্ষ ৪০ হাজারের অধিক এবং প্রাথমিক শিক্ষার জন্য উপবৃত্তির উপকারভোগীর সংখ্যা প্রায় ১ কোটি ১২ লক্ষ জন।

তিনি বলেন, অর্ন্তভুক্তিমূলক উন্নয়নের লক্ষ্যে গত বছর বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো সরকারি চাকুরীজীবী ব্যতীত ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে দেশের সকল নাগরিকের জন্য সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করা হয়েছে।

রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, কৃষি জমির পরিমাণ ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাওয়া সত্ত্বেও সরকারের বিভিন্ন কৃষিবান্ধব নীতির কারণে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পাওয়ায় খাদ্য উৎপাদনে আজ আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ধান, ভুট্টা, আলু, সবজি, সরিষাসহ বিভিন্ন ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে দেশে বর্তমান বার্ষিক খাদ্যশস্য উৎপাদন ৪ শত ৯২ লক্ষ মেট্রিক টন। এর ফলে বৈশ্বিক সংকটের মধ্যেও দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে।

তিনি জানান, বর্তমানে বিশ্বে বাংলাদেশ ধান, সবজি, ও স্বাদু পানির মাছ উৎপাদনে তৃতীয়, পাট উৎপাদনে দ্বিতীয় এবং ইলিশ আহরণে প্রথম স্থানে রয়েছে। বাংলাদেশ মাছ, মাংস ও ডিম উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে।

রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২০০৯ সালে ছিল মাত্র ৪ হাজার ৯৪২ মেগাওয়াট, যা বর্তমানে বৃদ্ধি পেয়ে ক্যাপটিভ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ ২৯ হাজার ৭২৭ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে। ইতোমধ্যে শতভাগ মানুষকে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনা হয়েছে। বাংলাদেশের জন্য মর্যাদাপূর্ণ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের অধিকাংশ স্থাপনার নির্মাণকাজ এবং পরমাণু জ্বালানি হস্তান্তর সম্পন্ন হয়েছে। আশা করছি, এ বছর এ কেন্দ্র হতে উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, গত দেড় দশকে যোগাযোগ খাতে বৈপ্লবিক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। আইকনিক পদ্মা সেতু, পায়রা সেতু, দ্বিতীয় মেঘনা, দ্বিতীয় গোমতী প্রভৃতি অসংখ্য সেতুসহ সড়ক, মহাসড়ক নির্মাণ, পুনর্র্নিমাণ করা হয়েছে। জেলা, আঞ্চলিক ও জাতীয় পাকা মহাসড়কের পরিমাণ প্রায় তিন গুণ বৃদ্ধি করে ২২ হাজার ৪৭৬ কিলোমিটার এবং গ্রামীণ সড়কের পরিমাণ ৭৬ গুণ বৃদ্ধি করে প্রায় ২ লক্ষ ৩৮ হাজার কিলোমিটারে উন্নীত করা হয়েছে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ঢাকা শহরে জনগণের চলাচল সহজ ও নিরাপদ করতে এমআরটি লাইন-৬ এর উত্তরা হতে মতিঝিল পর্যন্ত চালু হয়েছে এবং কমলাপুর অংশের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল এবং ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত অংশ যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ রেলওয়েকে আধুনিক, যুগোপযোগী গণপরিবহন মাধ্যম হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে সর্বাধিক গুরুত্ব প্রদান করে দেড় দশকে রেলপথের পরিমাণ দেড় গুণ বৃদ্ধি করে ৩ হাজার ৪৮৬ কিলোমিটার করা হয়েছে।

জেন্ডার সমতা এবং নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার শীর্ষে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, নারীর ক্ষমতায়নে জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসন-সংখ্যা বাড়িয়ে ৫০টি করা হয়েছে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, স্বাধীনতার পর আমাদের তিপ্পান্ন বছরের ইতিহাসে অন্যতম শ্রেষ্ঠ অর্জন ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন। এর সুফল ভোগ করছে দেশের ১৭ কোটি জনগণ। বর্তমানে আইসিটি রপ্তানির পরিমাণ এক দশমিক নয় বিলিয়ন ডলার।

সরকারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটিসমূহে গঠনমূলক ভূমিকা রাখার জন্য সংসদ-সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান।

রাষ্ট্রপতি বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনা বাংলা গড়তে আমাদের আরও উন্নতি করতে হবে। ভবিষ্যতে হয়তো অনেক কঠিন চ্যালেঞ্জের মোকাবেলা করতে হবে। এজন্য আমাদের সবসময় সতর্ক থাকতে হবে।

এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রপতির সহধর্মিনী ড. রেবেকা সুলতানা সংসদের গ্যালারীতে বসে ভাষণ শোনেন।

বিষয়:
পরবর্তী খবর

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ

জয়ের জন্য বাংলাদেশের লক্ষ্য ১১৪

পাওয়ার প্লেতে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। এরপর ডেভিড মিলার ও হেনরিখ ক্লাসেনের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায় প্রোটিয়ারা। শেষ দিকে টাইগার বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে বড় পুঁজি পায়নি দক্ষিণ আফ্রিকা। জিততে ১১৪ রান করতে হবে বাংলাদেশকে।

সোমবার (১০ জুন) নিউ ইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান নেয় প্রোটিয়ারা। ব্যাট করতে নেমে পেসার তানজিম হাসান সাকিবের বোলিং তোপে ধুঁকতে থাকে দক্ষিণ আফ্রিকা। এরপর ডেভিড মিলার ও হেনরিখ ক্লাসেন মিলে প্রতিরোধ গড়েছেন।

টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের প্রথম ওভারেই এক ছক্কা ও এক চার হাঁকিয়ে রানের খাতা খোলেন প্রোটিয়া ওপেনার কুইন্টন ডি কক। তবে এই ওভারেই বাংলাদেশকে সাফল্য এনে দেন পেসার তানজিম সাকিব। ওপেনার রেজা হেনড্রিকসকে আউট করেন তিনি।

এরপরও আগ্রাসী ব্যাটিং চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন ডি কক। তবে ইনিংসের তৃতীয় ওভারে ফের বোলিংয়ে এসে ডি কককে বোল্ড করে সাজঘরে ফেরান তানজিম।

এরপর প্রোটিয়া অধিনায়ক এইডেন মার্করাম ও ট্রিস্টান স্টাবস মিলে শুরু ধাক্কা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। তবে দলীয় ২৩ রানে আরও জোড়া উইকেট হারিয়ে বিশাল চাপে পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা।

৮ বলে ৪ রান করা মার্করামকে সাজঘরে ফেরান তাসকিন আহমেদ। আর স্টাবসকে নিজের তৃতীয় শিকার বানান তানজিম সাকিব। তাদের বিদায়ের পর ক্লাসেনকে সঙ্গে নিয়ে বিপর্যয় কিছুটা সামাল দেন মিলার। আর কোনো উইকেট না হারিয়ে রানের চাকা সচল রাখেন এই দুই ব্যাটার।

৭৯ রানের জুটি গড়েন ক্লাসেন-মিলার। তবে দলীয় ১০২ রানে ক্লাসেনকে আউট করে বাংলাদেশকে ব্রেক থ্রু এনে দেন তাসকিন। ৪৪ বলে ৪৬ রান করে সাজঘরে ফিরে যান ক্লাসেন। তার বিদায়ের পর পরই রিশাদ হোসেনের বলে বোল্ড হয়ে ফিরে যান মিলার। ৩৮ বলে ২৯ রান করেন তিনি।

শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে ১১৩ রান সংগ্রহ করে দক্ষিণ আফ্রিকা। বাংলাদেশের পক্ষে তানজিম সাকিব ৩টি ও তাসকিন নেন ২টি উইকেট।

পরবর্তী খবর

১৮০৫ কেজি আম নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ছাড়ল ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন

আমের রাজধানী চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে চালু হলো আম পরিবহনের বিশেষ ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন। সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় প্রায় ১৮০৫ কেজি আম নিয়ে ছেড়ে যায় ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন। কম খরচে আম পরিবহনের বিষয়টি মাথায় রেখে বিগত বছরগুলোর ধারাবাহিকতায় ৫ম বারের মত আম পরিবহনের বিশেষ এ ট্রেন চালু করছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকা প্রতি কেজি আম পরিবহনে খরচ হবে ১ টাকা ৪৮ পয়সা।

সোমবার বিকাল ৫টায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেল স্টেশনে ম্যাংগো ও ক্যাটেল ট্রেনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য আব্দুল ওদুদ। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাছমিনা খাতুন, বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী আসাদুল হক, বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক শাহ সুফী নূর মোহাম্মদসহ অনান্যরা।

এর আগে সোমবার বিকাল ৪টায় রহনপুর স্টেশন থেকে ১০২০ কেজি আম নিয়ে যাত্রা শুরু করে ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন। এরপর নাচোল, আমনুরা জংশন হয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেল স্টেশনে আরো ৭৮৫ কেজি উঠানো হয়। পরে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন শেষে আম নিয়ে সন্ধ্যা ৬টায় রাজশাহীর উদ্দেশ্য ছেড়ে যায় ট্রেনটি।এরপর রাজশাহী, সরদহ রোড, আনাড়ী, আব্দুল্লাহপুর, ইশ্বরদী,পোড়াদহ, রাজবাড়ি, ফরিদপুর, ভাঙ্গা হয়ে পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে ঢাকায় পৌঁছাবে আমের এ বিশেষ ট্রেন।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেল স্টেশনের স্টেশন মাস্টার মোহাম্মদ ওবাইদুল্লাহ জানান, এ ট্রেনে আম ছাড়াও শাকসবজি, ডিমসহ অনান্য কৃষি পণ্য পরিবহন করা যাবে। তিনি আরও জানান, আজ উদ্বোধন করা হলেও আগামী ১২ তারিখ থেকে তিনদিন ক্যাটেল স্পেশাল ট্রেন চলাচল করবে।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত