চলতি বছরে হজযাত্রী নিবন্ধনের সময়সীমা আবারো বাড়ানো হয়েছে। আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নিবন্ধন করতে পারবেন আগ্রহী মুসল্লিরা। এ নিয়ে চতুর্থবারের মতো নিবন্ধনের সময় বৃদ্ধি করলো ধর্ম মন্ত্রণালয়।
শুক্রবার হজ এজেন্সি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি শাহাদাত হোসাইন তসলিম এ তথ্য জানিয়েছেন।
এর আগে, তিন দফায় সময় বাড়িয়েও হজযাত্রীর কোটা পূরণ হয়নি। গতকাল বৃহস্পতিবার তৃতীয় দফার নিবন্ধনের সময় শেষ হয়। এদিন পর্যন্ত সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যাওয়ার জন্য নিবন্ধন করেছেন ৭৯ হাজার ৬১১ জন।
সৌদি আরবের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী, এবার বাংলাদেশ থেকে হজে যাওয়ার সুযোগ পাবেন ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন। তবে, কোটা পূরণ হতে এখনো প্রায় ৪৭ হাজার নিবন্ধন বাকি।
রুশ রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, দামেস্ক থেকে পালিয়ে যাওয়া সিরিয়ার ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ এখন মস্কোতে অবস্থান করছেন।
রাশিয়া আসাদ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী ছিল। মি. আসাদ ও তার পরিবার সেখানে রাজনৈতিক আশ্রয় পাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ওদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেছেন, আসাদ সরকার নিজেই তাদের পতনের জন্য দায়ী।
‘দেশে গ্রহণযোগ্য রাজনৈতিক প্রক্রিয়া না থাকা এবং রাশিয়া ও ইরানের সমর্থনের ওপর নির্ভর করাটাই তার পতনকে অবশ্যম্ভাবী করে তুলেছিলো,’ বলেন তিনি।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন, একটি বর্বর রাষ্ট্রের পতন হয়েছে। জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ বলেছেন, সিরিয়ার জনগণ মারাত্মক দুর্ভোগ সহ্য করেছে এবং আসাদ সরকারের অবসান একটি দারুণ খবর।
তবে, উপসাগরীয় অঞ্চলের আরব দেশগুলো সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আসাদ সরকারের সাথে সম্পর্ক পুনর্গঠন করছিলো।
এখন ইসলামপন্থিদের নেতৃত্বে সিরিয়ার ভবিষ্যতের সম্ভাবনা তাদের কিছুটা নার্ভাস করে তুলেছে বলে মনে হচ্ছে।
বর্তমান ঘটনাপ্রবাহে কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছেন এবং সিরিয়ার ঐক্য সুরক্ষার আহ্বান জানিয়েছেন।
তুরস্কে প্রায় ৩০ লাখ সিরিয়ান শরণার্থী অবস্থান করছে। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান বলেছেন, তারা এখন নিজেদের দেশে ফিরতে পারবে।
এদিকে, সিরিয়া পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য আজ সোমবারই জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সভা ডাকার আহ্বান জানিয়েছে রাশিয়া।
অন্য বিশ্বনেতারা যা বললেন
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আসাদের পতনের মুহূর্তকে ঐতিহাসিক সুযোগ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেছেন, রাশিয়া, ইরান কিংবা হেজবুল্লাহ কেউ তার সরকারকে রক্ষা করতে পারেনি।
তিনি বলেছেন, আসাদ চলে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্র ‘সিরিয়ার সব গোষ্ঠীর’ সাথে কাজ করবে।
ইরান লেবাননের হিজবুল্লাহর সাথে সরাসরি স্থলপথে যোগাযোগের সুযোগ হারিয়েছে। দেশটি বলেছে, সিরিয়ার মানুষকেই তাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে হবে ‘কোন ধরনের ধ্বংসাত্মক হস্তক্ষেপ বা বাইরে থেকে কিছু চাপিয়ে দেয়া ছাড়াই’।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগাছি স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, বিদ্রোহীরা যখন দামেস্কের দিকে যাচ্ছিলো তখন ইরান কোন হস্তক্ষেপের আহ্বান পায়নি।
“আমাদের কাছ থেকে সহায়তা চাওয়া হয়নি। এটা মূলত সিরিয়ান আর্মির দায়িত্ব। আমরা নিজেরা একে আমাদের দায়িত্ব মনে করিনি,” বলেছেন তিনি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, আসাদ সরকারের পতন মানে হলো প্রেসিডেন্ট পুতিনকে এখন ইউক্রেনের সাথে দ্রুত যুদ্ধবিরতিতে রাজি হওয়া উচিত।
সিরিয়ার পূর্বাঞ্চলে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি আছে। পেন্টাগনের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বলেছেন, তারা ইসলামিক স্টেট গ্রুপের বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত রাখবেন।
আরব আমিরাতের একজন সিনিয়র কূটনীতিক আনওয়ার গারগাশ সিরিয়ার সব গোষ্ঠী এখন একযোগে কাজ করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন।
সিরিয়া বিষয়ক জাতিসংঘের দূত গেইর পেডারসন একটি স্থিতিশীল ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন।
সিরিয়ার বিদ্রোহীদের নেতা আবু মোহাম্মেদ আল-জোলানি তার জিহাদি সময়ের নাম বাদ দিয়ে সত্যিকার নাম আহমেদ আল-শারা ব্যবহার শুরু করেছেন।
অফিসিয়াল যে ঘোষণাপত্র বৃহস্পতিবার থেকে আসাদ সরকারের পতন পর্যন্ত দেয়া হয়েছে সেখানে তিনি প্রকৃত নামই ব্যবহার করেছেন।
একে নতুন পরিস্থিতিতে তার বৈধতাকে আরও জোরদার করার একটি উদ্যোগ হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
তার ইসলামপন্থি জঙ্গিগোষ্ঠী হায়াত আল-শামের নেতৃত্বেই আরও অন্য বিদ্রোহী দলগুলো দামেস্ক দখল করে সিরিয়ার ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে।
গত কয়েকবছর ধরেই মি. জোলানির এই রূপান্তর সতর্কতার সাথে লক্ষ্য করা হচ্ছিলো।
এক সময় তিনি শুধু জিহাদি জঙ্গিরা পরিধান করে এমন পোশাক পড়লেও গত কয়েক বছরে পশ্চিমা ধাঁচের পোশাকও দেখা যাচ্ছে।
জোলানির দৃষ্টিভঙ্গি বৈশ্বিকভাবে আইএস কিংবা আল-কায়েদার মতো জিহাদি আন্দোলন কমে আসার একটি লক্ষণ হতে পারে।
তার গতিপথ অন্য গোষ্ঠীগুলোকেও উদ্বুদ্ধ করতে পারে রাজনৈতিক ও ভূখণ্ডগত লাভের জন্য রাজনৈতিক নমনীয় জিহাদিবাদ কিংবা তাদের প্রচলিত পথ থেকে সাময়িকভাবে সরে আসার জন্য।
বিদ্রোহী নেতা জোলানি যা বললেন
দামেস্কের উমায়াদ মসজিদে বক্তব্য দিয়েছেন বিদ্রোহীদের নেতা আবু মোহাম্মেদ আল-জোলানি। তিনি এইচটিএস গ্রুপের নেতা ও প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে উৎখাতে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
উপস্থিত জনতাকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেছেন ‘এটা পুরো মুসলিম জাতির একটি জয়’ এবং ‘এ অঞ্চলের জন্য একটি নতুন অধ্যায়’।
সিরিয়ার দীর্ঘ সংঘাতে যারা জীবন দিয়েছেন জোলানি তাদের প্রতি ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
দেশটিতে ২০১১ সালে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়েছিলো।
তিনি বলেন, আসাদ সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ও দুর্নীতিকে বিস্তৃত করেছিলেন।
মি. জোলানি বলেন, আসাদের অধীনে ‘সিরিয়া ইরানের উচ্চাভিলাষ বাস্তবায়নের পরিত্যক্ত খেলার মাঠে পরিণত হয়েছিলো’।
“কিন্তু এখন সবাই মুক্তভাবে নি:শ্বাস নিতে পারছে,” বলেছেন তিনি।
জর্ডান ও লেবানন থেকে ফিরছে সিরিয়ানরা
প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতনের পর থেকেই লেবানন ও জর্ডানে থাকা সিরীয়দের অনেকে দেশে ফিরতে শুরু করেছেন।
সেখানকার ছবিগুলোতে তাদের সীমান্ত অতিক্রম করতে দেখা যাচ্ছে।
সিরিয়া-লেবানন সীমান্তে বার্তা সংস্থা এএফপির একজন সংবাদদাতা মাসনা ক্রসিংয়ে কয়েক ডজন গাড়ির লাইন দেখতে পেয়েছেন।
লোকজন উল্লাস করছিলো ও আসাদ বিরোধী স্লোগান দিচ্ছিলো।
জর্ডান থেকে আসার জাবের ক্রসিংয়ে এক ব্যক্তি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, “গত ১২ বছর আমি জর্ডানে ছিলাম। বাশার আল-আসাদের পতনের খবর শুনে আমরা আবেগাপ্লুত হয়েছি। আমরা সেফটি সিকিউরিটি নিয়ে এখন দেশে ফিরতে পারি”।
ওদিকে, বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশে থাকা সিরিয়ানরা প্রেসিডেন্ট আসাদের পতনে উল্লাস করছে।
আসাদ পতনের গুরুত্বপূর্ণ দিনগুলো
২৭শে নভেম্বর : হায়াত তাহরির আল-শাম বা এইচটিএস এবং এর সহযোগীরা দেশের উত্তর পশ্চিমে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর সরকারের হামলার অভিযোগ করে অভিযান শুরুর ঘোষণা দেয়।
৩০শে নভেম্বর : সিরিয়ার সামরিক বাহিনী নিশ্চিত করে যে বিদ্রোহীরা ‘আলেপ্পোর বড় অংশে ঢুকে পড়েছে’।
৫ই ডিসেম্বর : কয়েকদিনের লড়াইয়ের পর হামা শহরের পতন হয় ও বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয়।
৬ই ডিসেম্বর : সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলের বিদ্রোহীরা দেরা অঞ্চলের বেশিরভাগ এলাকা দখল করে নেয়। এই অঞ্চল থেকেই ২০১১ সালে বাশার বিরোধী আন্দোলনের সূচনা হয়েছিলো।
৭ই ডিসেম্বর : বিদ্রোহীরা সিরিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম শহর হোমস দখলের ঘোষণা দেয়।
৮ই ডিসেম্বর : ভোরেই বিদ্রোহীরা রাজধানী দামেস্কে প্রবেশের ঘোষণা দেয়। এর দু ঘণ্টার মধ্যেই তারা ঘোষণা করে যে ‘স্বৈরাচারী বাশার আল-আসাদ পালিয়েছে’।
বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট দল ভারতকে ৫৯ রানে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বার এশিয়া কাপ জিতেছে। প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে হারার পর টানা জিতে চলেছিল ভারত। তবে বড় প্রতিপক্ষ হিসেবে হাজির হলেও বাংলাদেশ তার শক্তিশালী ব্যাটিং ও বোলিংয়ের মাধ্যমে ভারতের দাপটকে ভেঙে দিয়েছে। ফাইনালে বাংলাদেশ ১৯৮ রান তুলে ভারতকে ১৩৯ রানে গুটিয়ে দেয়।
বাংলাদেশের ইনিংসে শিহাব জেমস (৪০) ও রিজান হোসেন (৪৭)-এর গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস ছিল। উইকেটকিপার ফরিদ হাসানও ৩৯ রান করে দলের স্কোর বাড়াতে সহায়তা করেন। বাংলাদেশ দলের পেসাররা, বিশেষ করে ইকবাল হোসেন ইমন (১৩ উইকেট) ও আল ফাহাদ (১২ উইকেট), পুরো টুর্নামেন্টে দাপট দেখিয়েছেন। ফাইনালে ইমন তিনটি উইকেট নিয়ে ভারতের ব্যাটিংয়ের ভিত গুঁড়িয়ে দেন।
ভারতের পক্ষে কোনো ব্যাটসম্যান ৩০ রান পেরোতে পারেননি। ১৩৯ রানেই ভারত শেষ হয়ে যায়।
এশিয়া কাপের ইতিহাসে এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় শিরোপা। গত বছর বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো শিরোপা জিতেছিল।