বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা শেষ করার পর ভালোভাবে সবার সঙ্গে বিদায়ের নাম ‘সমাবর্তন’। ২০১১ সালে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি) বিদ্যাপীঠটি যাত্রা শুরু করেছে। একযুগে ছয় থেকে সাতটি ব্যাচ স্নাতক শেষে করেছে। আরও এক দুটি ব্যাচ শেষ করতে যাচ্ছে। একাডেমিক শাখার তথ্যানুযায়ী
এখন পর্যন্ত ছয় হাজারের অধিক শিক্ষার্থী পাশ করে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। সমাবর্তনের প্রতীক্ষায় দিন গুণছেন শিক্ষার্থীরা। সেই প্রতীক্ষার দিন শেষ হতে যাচ্ছে। ২০২৪ সালের মধ্যে সমাবর্তন অনুষ্ঠানের আয়োজন করার আশ্বাস দিয়েছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রুটিন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভুইয়া।
উপাচার্য (রু.দা.) বলেন, সমাবর্তনের আয়োজন করার কথা এরআগেও ভেবেছি। শিক্ষার্থীদের এই প্রত্যাশা পূরণ করার চেষ্টা করা হবে। একাডেমিক স্বীকৃতির পাশাপাশি রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মান পাক সেটা সবারই প্রত্যাশা। শিক্ষার্থীদের এই প্রত্যাশা পূরণ করার জন্য সর্বোত্তর চেষ্টা করা হবে। ২০২৪ সালের মধ্যে সমাবর্তনের আয়োজন করার চেষ্টা করবো। আমার প্রথম কাজ হবে সমাবর্তন আয়োজন করার। এ বিষয়ে আমি দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আশা করি দ্রুততম সময়ে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারব।
সাবেক শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে সমাবর্তনের আবেদন জানিয়ে আসলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো কর্ণপাত করেনি। একযুগ পার হলেও এখনো সমাবর্তন আয়োজন করতে পারেনি। অথচ যশোর বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অনেক নবীন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন হয়েছে।
অর্থনীতির অষ্টম ব্যাচের ছাত্র জাকিবুল ইসলাম বলেন, সমাবর্তন আমাদের কাছে যেমন আনন্দের, তেমনি গৌরবের। এতে শিক্ষাজীবন পূর্ণতা পায়। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় এক যুগ পার হয়ে গেলো, কিন্তু সমাবর্তন হয়নি, যা দুঃখজনক। বর্তমান উপাচার্য যে আশ্বাস দিয়েছেন সেটি বাস্তবায়ন হোক।
২০২৩ সালে সমাবর্তন আয়োজনের কথা বলা হয়েছিল। তবে তা সিডিউলের জন্য আটকে ছিলো বলে জানা যায়।
এদিকে সনদ নিয়েও কথা বলেন অন্তত দশজন শিক্ষার্থী। তারা বলেন, আমাদের মূল সার্টিফিকেটের লে-আউট বা ডিজাইন কেমন হবে ঠিক করা দরকার। সনদ যেটি দেওয়া হয় তা নিম্নমানের। একটা বিভাগীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদ স্কুল সনদের চেয়ে নিম্নমানের, যা দুঃখজনক। সমাবর্তনের আয়োজনের পাশাপাশি মানসম্মত সনদ প্রদানের দিকে নজর দেওয়ার অনুরোধ থাকবে।
শিক্ষার্থীদের সংঘাত ও অপ্রাসঙ্গিক কার্যক্রম থেকে দূরে রাখতে এবং তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করতে বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশের বিভিন্ন এলাকায় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা শিক্ষাসংক্রান্ত নয় এমন বিভিন্ন সভা-সমাবেশ ও মিছিলে অংশ নিচ্ছে। এতে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পাশাপাশি অভিভাবকদের মধ্যেও উদ্বেগ বাড়ছে।
এ পরিস্থিতি এড়াতে শিক্ষার্থীদের শিক্ষামুখী রাখার জন্য বিভিন্ন কো-কারিকুলার কার্যক্রম বাস্তবায়নের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে ৯টি কার্যক্রমের একটি নমুনা তালিকাও প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রস্তাবিত ৯টি কার্যক্রম :
১. আঙিনা পরিচ্ছন্নতা অভিযান : শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আঙিনা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার উদ্যোগ।
২. বিজয়ের ৩৬ জুলাই ভিত্তিক গ্রাফিতি : নির্বাচিত গ্রাফিতি নিয়ে সফট অ্যালবাম তৈরি এবং শ্রেষ্ঠ গ্রাফিতি পুরস্কার প্রদান।
৩. থিম সং পরিবেশনা : ‘ক্রান্তিকালে তারুণ্য দুর্জয়’ থিমে গান তৈরি, পরিবেশনা, সফট অ্যালবাম তৈরি ও প্রতিযোগিতার আয়োজন।
৪. পারসোনাল হাইজিন প্রশিক্ষণ : গার্লস স্কুল ও কলেজে মেয়েদের জন্য ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা বিষয়ক প্রশিক্ষণ।
৫. জাতীয় দিবসে আনুষ্ঠানিক কুচকাওয়াজ : বিএনসিসি, স্কাউট ও রোভার স্কাউটের সহায়তায় কুচকাওয়াজের আয়োজন।
৬. প্রকৃতি দর্শন : শিক্ষার্থীদের জন্য নিকটবর্তী নান্দনিক স্থান যেমন নদীতীর, চর, উপকূল বা পাহাড় ভ্রমণের আয়োজন।
৭. ক্রীড়া প্রতিযোগিতা : ক্রিকেট, ফুটবল ও ভলিবল টুর্নামেন্টের আয়োজন।
৮. জেন-জি উদ্যোক্তা বিতর্ক প্রতিযোগিতা : তরুণ উদ্যোক্তা কর্মী তৈরির লক্ষ্যে বিতর্ক প্রতিযোগিতা।
৯. জুলাই বিপ্লব বিষয়ক আলোচনা সভা : ‘জুলাই বিপ্লব কী, কেন, কিভাবে’ বিষয়ে ছাত্র-শিক্ষক ও অভিভাবকদের আলোচনার আয়োজন।
অভিভাবকদের সম্পৃক্ত করার আহ্বান
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে অভিভাবকদের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে শ্রেণিকক্ষ কার্যক্রম ও কো-কারিকুলার কার্যক্রমকে জোরদার করতে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় মনে করে, এসব কার্যক্রম শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতাকে উজ্জীবিত করবে এবং শিক্ষার পরিবেশ উন্নত করবে।
ঈদুল আযহার ছুটি শেষে রবিবার খুলছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরমেবি)।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় যে, রবিবার থেকে যথারীতি একাডেমিক এবং দাপ্তরিক সব কাজ চলমান থাকবে।
এরই মাঝে দীর্ঘ যানজট উপেক্ষা করে ক্যাম্পাসে ফিরতে শুরু করেছে শিক্ষার্থীরা।
উল্লেখ্য, গত ১২ জুন থেকে ২২ জুন মোট ১০ দিন ঈদুল আযহার ছুটি পায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।