বিদেশ, লিড নিউজ

বিদেশ, লিড নিউজ

ইসরায়েল সেনার রাফাহ আক্রমণে ‘হাজার হাজার’ হতাহত হতে পারে : হামাস

গাজার হামাস শাসকরা শনিবার সতর্ক করেছে, বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের শেষ আশ্রয়স্থল জনাকীর্ণ রাফাহতে ইসরায়েলের পরিকল্পিত সেনা অভিযানের কারণে শহরটিতে ‘হাজার হাজার’ হতাহতের ঘটনা ঘটতে পারে।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সেনাবাহিনীকে রাফায় অভিযানের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি শুক্রবার গভীর রাতে সামরিক ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহরের ‘জনসংখ্যা সরিয়ে নেওয়া এবং হামাসের ব্যাটালিয়ন ধ্বংস করার জন্য একটি সম্মিলিত পরিকল্পনা’ মন্ত্রিসভায় জমা দিতে বলেন।

হামাস এক বিবৃতিতে বলেছে, যেকোন সামরিক পদক্ষেপের বিপর্যযয়মূলক প্রতিক্রিয়া হবে যা ‘রাফাহ আক্রমণ করলে হাজার হাজার শহীদ এবং আহত হতে পারে’।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার জবাবে ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কঠোর সমালোচনা করার পর নেতানিয়াহুর এই ঘোষণা বিশ্ব নেতা এবং জাতিসংঘের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের কার্যালয় বলেছে, ‘ইসরায়েলের দখলদারিত্বের পদক্ষেপ এই অঞ্চল ও বিশ্বের নিরাপত্তা ও শান্তি জন্য হুমকি স্বরূপ। এটি সমস্ত রেড লাইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন।’

ইইউ-এর পররাষ্ট্র নীতির প্রধান জোসেপ বোরেল এরআগে শনিবার এক্স-এ পোস্ট করেছেন, ‘আমি বেশ কয়েকটি ইইউ সদস্য রাষ্ট্রের সতর্কতার প্রতিধ্বনি করছি যে, রাফাহতে ইসরায়েলি আক্রমণ একটি অবর্ণনীয় মানবিক বিপর্যয় এবং মিশরের সাথে গুরুতর উত্তেজনার দিকে নিয়ে যাবে।’

তিনি বলেন, ‘রক্তপাত এড়ানোর একমাত্র উপায় জিম্মিদের মুক্ত করার জন্য আলোচনা পুনরায় শুরু করা এবং শত্রুতা স্থগিত করা।’

জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান সাফাদি এক্স-এ একটি পোস্টে সতর্ক করে বলেছেন,‘গাজায় আরেকটি রক্তপাতের অনুমতি দেওয়া যাবে না’

ব্রিটিশ পররাষ্ট্র সচিব ডেভিড ক্যামেরন বলেছেন, তিনি ‘রাফাহতে সামরিক আক্রমণের সম্ভাবনা নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।’

তিনি পোস্ট করেছেন, ‘অগ্রাধিকার হতে হবে যুদ্ধে অবিলম্বে বিরতি দেওয়া, যাতে সাহায্য পাওয়া যায় এবং জিম্মিদের ফিরিয়ে আনা যায়।’

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের হামলার প্রতিশোধ নিতে ইসরায়েল গাজায় নির্বিচার বিমান হামলা ও ভয়ংকর স্থল অভিযান শুরু করে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে এই হামলায় অন্তত ২৮,০৬৪ জন নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

ইসরায়েল বলেছে, হামাস ২৫০ জনকে জিম্মি করেছে, যাদের মধ্যে ১৩২ জন এখনও গাজায় রয়েছে যদিও ২৯ জনকে মৃত বলে ধারণা করা হচ্ছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের প্রধান আন্তর্জাতিক সমর্থক, দেশটি ইসরায়েলকে বিলিয়ন ডলার সামরিক সহায়তা প্রদান করে।

মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট বলেছে, তারা রাফাহতে স্থল আক্রমণকে সমর্থন করে না, তারা সতর্ক করে দিয়েছে যদি সঠিকভাবে পরিকল্পনা না করা হয় তবে এই ধরনের অপারেশনের ঝুঁকি ‘বিপর্যয়’ নিয়ে আসতে পারে।

ক্রমবর্ধমান হতাশার চিহ্ন হিসাবে, বাইডেন বৃহস্পতিবার ইসরায়েলের কঠোর সমালোচনা করে বলেছেন, ‘হামাসের ৭ অক্টোবরের হামলার জবাবে ইসরায়েলের প্রতিশোধ হামাসের হামলাকে ছাড়িয়ে গেছে।’

বাইডেন বলেছেন, ‘অনেক নিরপরাধ লোক আছে যারা ক্ষুধার্ত, সংকটে আছে এবং মারা যাচ্ছে। এই সংঘাত বন্ধ করতে হবে।’

কিন্তু নেতানিয়াহুর কার্যালয় বলেছে, রাফাতে হামাসের চারটি ব্যাটালিয়ন রেখে হামাসকে নির্মূল করার যুদ্ধের লক্ষ্য অর্জন করা ‘অসম্ভব’ হবে।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, শনিবার রাফাহতে তাদের একটি বিমান হামলায় হামাসের দুই ‘ঊর্ধ্বতন অপারেটর’ নিহত হয়েছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, এটি একটি বিস্তৃত বোমা হামলার অংশ এতে শহরে কমপক্ষে ২৫ জন নিহত হয়েছে।

বিষয়:
পরবর্তী খবর

৫০ ভরি স্বর্ণ উদ্ধার

সীমান্ত সম্ভারে স্বর্ণের দোকানে চাঞ্চল্যকর চুরির রহস্য উদঘাটন, গ্রেপ্তার ৩

রাজধানীর ধানমণ্ডির বিজিবি সীমান্ত সম্ভার শপিং কমপ্লেক্সের একটি স্বর্ণের দোকানে সংঘটিত চাঞ্চল্যকর চুরির ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন মো. রুবেল (২৮), সফিক ওরফে সোহেল (৩৫) এবং সাদ্দাম হোসেন (৩১)। এ সময় তাদের কাছ থেকে চুরি যাওয়া ৫০ ভরি আট আনা স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়, যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা।

ডিবি সূত্রে জানা যায়, ধানমণ্ডি মডেল থানাধীন ‘ক্রাউন ডায়মন্ড এন্ড জুয়েলার্স’ শোরুমে গত ৩ জানুয়ারি বেলা ১টার দিকে চুরির ঘটনা ঘটে। চোরচক্র অভিনব পদ্ধতিতে শো-রুমের তালা ও সাটার কেটে মাত্র আট মিনিটের মধ্যে ১৫৯ ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে পালিয়ে যায়। দোকানের মালিক কাজী আকাশ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন, যেখানে চুরি যাওয়া স্বর্ণালংকারের আনুমানিক মূল্য প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা উল্লেখ করা হয়।

মামলার প্রেক্ষিতে ডিবি পুলিশ তদন্ত শুরু করে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ৯ জানুয়ারি থেকে ডিবি পুলিশ ধারাবাহিক অভিযান চালায়। কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে প্রথমে মো. রুবেলকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কুমিল্লার দেবীদ্বার থেকে সফিক ওরফে সোহেল এবং মুরাদনগর থেকে সাদ্দাম হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে ২৮ ভরি ১৪ আনা আসল স্বর্ণ এবং ২১ ভরি ১০ আনা গলিত স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়। ডিবি সূত্রে আরও জানা যায়, চুরির ঘটনায় জড়িত চক্রের অন্যান্য সদস্যদের শনাক্ত করা হয়েছে এবং তাদের গ্রেফতার ও অবশিষ্ট স্বর্ণ উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

ডিএমপি’র উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান পিপিএম জানান, এই চক্র অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে পরিকল্পনা করে চুরি সংঘটিত করে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে জনগণের আস্থা অক্ষুণ্ণ রাখতে সক্ষম হয়েছে।

বিষয়:
পরবর্তী খবর

খ্যাতিমান অভিনেতা প্রবীর মিত্র মারা গেছেন

বাংলাদেশের খ্যাতিমান অভিনেতা প্রবীর মিত্র আর নেই। রোববার (৫ জানুয়ারি) রাত ১০টা ১০ মিনিটে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন তার ছোট ছেলে সিফাত ইসলাম।

শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগরও প্রবীর মিত্রের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘প্রবীর মিত্র আর আমাদের মাঝে নেই। অঞ্জনার পর তার মৃত্যু আমাদের আরও বিমর্ষ করে দিল।’

দাফন ও জানাজা
প্রবীর মিত্রের দাফন ও জানাজার বিষয়ে অভিনেতা মিশা সওদাগর জানান, রাতে তার মরদেহ ধানমন্ডির বাসায় রাখা হবে। পরদিন বাদ জোহর মরদেহ এফডিসিতে আনা হবে। সেখানে প্রথম জানাজা শেষে মরদেহ নেওয়া হবে চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে। সেখানে দ্বিতীয় জানাজা শেষে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হবে। পরে প্রবীর মিত্রের পুত্রবধূ সোনিয়া ইসলামও একই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জীবনের শেষ দিনগুলো
৮১ বছর বয়সী প্রবীর মিত্র দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। অক্সিজেন স্বল্পতাসহ বিভিন্ন সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে গত ২২ ডিসেম্বর তাকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে ১৩ দিন ধরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছিলেন তিনি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়।

প্রবীর মিত্রের জীবন ও ক্যারিয়ার
১৯৪৩ সালের ১৮ আগস্ট কুমিল্লার চান্দিনায় জন্মগ্রহণ করেন প্রবীর মিত্র। তার পুরো নাম প্রবীর কুমার মিত্র। পুরান ঢাকায় বড় হওয়া প্রবীর মিত্র স্কুলজীবন থেকেই নাট্যচর্চার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। স্কুলে পড়াকালীন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ডাকঘর’ নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে তার নাট্যযাত্রা শুরু হয়।

১৯৬৯ সালে প্রয়াত এইচ আকবর পরিচালিত ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে তার। যদিও এই চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায় ১৯৭১ সালের ১ জানুয়ারি। ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে তিনি নায়ক হিসেবে কয়েকটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন। পরে চরিত্রাভিনেতা হিসেবে কাজ করেও তিনি দর্শকদের মাঝে দারুণ জনপ্রিয়তা অর্জন করেন।

উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র 
প্রবীর মিত্রের অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলো হলো ‘তিতাস একটি নদীর নাম’, ‘জীবন তৃষ্ণা’, ‘সেয়ানা’, ‘জালিয়াত’, ‘ফরিয়াদ’, ‘রক্ত শপথ’, ‘চরিত্রহীন’, ‘জয় পরাজয়’, ‘অঙ্গার’, ‘মিন্টু আমার নাম’, ‘ফকির মজনু শাহ’, ‘মধুমিতা’, ‘অশান্ত ঢেউ’, ‘অলংকার’, ‘অনুরাগ’, এবং ‘প্রতিজ্ঞা’।

বাংলাদেশের চলচ্চিত্র জগতে প্রবীর মিত্রের অবদান অমর হয়ে থাকবে। তার মৃত্যুতে শোকাহত পুরো বিনোদন জগৎ ও দর্শকসমাজ।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত