মানুষ মানুষের জন্য

মানুষ মানুষের জন্য

বাংলানিউজকর্মী মিথুনের ক্যানসার চিকিৎসায় এগিয়ে এল বসুন্ধরা ফাউন্ডেশন

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমের সিনিয়র ফটো করেসপন্ডেন্ট শোয়েব মিথুন সম্প্রতি কোলন ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছেন। তার এ দুরোরোগ্য ব্যাধির চিকিৎসায় এগিয়ে এসেছে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা ফাউন্ডেশন। বুধবার (২০ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার এবিজি টাওয়ারে শোয়েব মিথুনের মা-বাবার হাতে পাঁচ লাখ টাকার আর্থিক সহায়তা তুলে দেন বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীর।

এসময় উপস্থিত ছিলেন বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমের সম্পাদক জুয়েল মাজহার, এবিজি বসুন্ধরার পরিচালক মোস্তফা আজাদ মহিউদ্দিন, বসুন্ধরা গ্রুপের প্রেস অ্যান্ড মিডিয়া উপদেষ্টা মোহাম্মদ আবু তৈয়ব প্রমুখ।

আর্থিক সহায়তা পেয়ে শোয়েব মিথুনের বাবা মজিবুর রহমান বলেন, আমার ছেলের চিকিৎসা সহায়তায় বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর সাহেব যে সহায়তা করেছেন, এর জন্য শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি। আমি সবার কাছে আমার ছেলের সুস্থতা কামনা করে দোয়া করার জন্য অনুরোধ করবো। শোয়েব মিথুনের মা রোকেয়া আক্তার বলেন, অর্থ আসলে মানুষকে সুস্থ করতে পারে না। সুস্থতার জন্য সবার কাছে দোয়া চাইতে হয়। আমার ছেলের জন্য আপনারা সবাই দোয়া করবেন।

বসুন্ধরা গ্রুপের প্রেস অ্যান্ড মিডিয়া উপদেষ্টা মোহাম্মদ আবু তৈয়ব বলেন, বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমের সিনিয়র ফটো করেসপন্ডেন্ট শোয়েব মিথুনকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এই ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে মূলত ক্যানসার, হৃদরোগ এবং হতদরিদ্র শিশু-কিশোরদের চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয় বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে। বসুন্ধরা ফাউন্ডেশন মানবিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে কয়েক যুগ ধরে এ কাজ করে আসছে।

পরবর্তী খবর

নাটোরে ২০ নারীকে সেলাই মেশিন প্রদান

নাটোরের লালপুর উপজেলায় ২০ জন অসচ্ছল নারীকে সেলাই মেশিন উপহার দিয়েছে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপ। উপজেলার ডেবরপাড়া বুধিরামপুর গ্রামের বিধবা, স্বামী পরিত্যক্তা ও অসহায় নারীদের স্বাবলম্বী করতে তিন মাসের প্রশিক্ষণ শেষে গতকাল তাঁদের হাতে সেলাই মেশিনগুলো তুলে দেওয়া হয়।

সেলাই মেশিন বিতরণ অনুষ্ঠানে লালপুর বসুন্ধরা শুভসংঘের সভাপতি ও শুভসংঘ স্কুলের সমন্বয়ক জালাল উদ্দীন বাবুর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ।

এ সময় সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘দেশে সামাজিক ও মানবিক কাজের মাধ্যমে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বসুন্ধরা গ্রুপ। দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন ও দেশরত্ন শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আমার নির্বাচনী এলাকার প্রত্যন্ত অঞ্চলে শিক্ষার মান উন্নয়নে স্কুল প্রতিষ্ঠা ও অসহায়, বিধবা, এতিম, দরিদ্র অসচ্ছল নারীদের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে বিনা মূল্যে সেলাই প্রশিক্ষণকেন্দ্র চালু করে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে। এ ছাড়া প্রশিক্ষণ শেষে প্রত্যেকের হাতে বিনা মূল্যে সেলাই মেশিন তুলে দেওয়া হচ্ছে। এটা সত্যিই প্রশংসনীয় উদ্যোগ।’সংসদ সদস্য আরো বলেন, ‘এমন কর্মকাণ্ডের ফলে নারীরা নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারছে ও স্বাবলম্বী হচ্ছে। পাশাপাশি আমার পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে আর এই মহতী উদ্যোগ গ্রহণের জন্য বসুন্ধরা গ্রুপকে ধন্যবাদ জানাই।’ আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লক্ষ্য দেশের মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন করা। সেই উন্নয়নে যাঁরাই অংশীদার হবেন আমরা তাঁদের স্বাগত জানাই।’

শুভসংঘ নাটোর জেলা শাখার উপদেষ্টা ও ইউনাইটেড প্রেস ক্লাবের সভাপতি রেজাউল করিম রেজা বলেন, ‘দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের সহযোগিতায় সারা দেশে খুঁজে খুঁজে দরিদ্র অসহায়দের পাশে দাঁড়ানোর জন্য শুভসংঘের সদস্যরা কাজ করে যাচ্ছেন। পিছিয়ে পড়া নারীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও তাঁরা যাতে সংসারে সচ্ছলতা আনতে পারেন এ জন্য আজকের এই সেলাই মেশিন বিতরণ। তাঁরা এটি দিয়ে কাপড় সেলাই করে পরিবারে সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনবেন বলে আমরা আশা করছি।’ তিনি বলেন, শুভ কাজে সবার পাশে—এই স্লোগান সামনে রেখে কাজ করে যাচ্ছেন শুভসংঘের সদস্যরা। তাঁরা সমাজ উন্নয়নমূলক নানা কাজের পাশাপাশি সেলাই প্রশিক্ষণকেন্দ্র পরিচালনাসহ আর্থিকভাবে অসচ্ছল মানুষদের নানা ধরনের সহায়তা দিয়ে আসছেন।

লালপুর সদর ইউপি সদস্য আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ‘আমার এলাকায় এমন একটি কাজ হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। বসুন্ধরা শুভসংঘ প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয় যেখানে স্থাপন করা হয়েছে তার আশপাশে কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই। এখন এ অঞ্চলের শিশুরা সেখানে শিক্ষার সুযোগ পাচ্ছে। পাশাপাশি এই সেলাই মেশিন পেয়ে অবশ্যই অসচ্ছল নারীরা স্বাবলম্বী হবেন।’

অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা শাহিনা সুলতানা, লালপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক পলাশ, মাজার শরীফ টিবিএম কলেজের অধ্যক্ষ ইমাম হাসান মুক্তি।

সেলাই মেশিন উপহার পাওয়া উপজেলার লালপুর ইউনিয়নের বালিতিতা ইসলামপুর গ্রামের শিরিনা খাতুন (৩৮) বলেন, ‘আমি বিধবা, আমার দুই সন্তান, আমার স্বামী মারা যাওয়ার পর খুব অভাবে দিনপাত করছি, রোজগারের জন্য আমি সেলাই মেশিন প্রশিক্ষণ নিয়েছি। এখন সেলাই মেশিন দিয়ে আয়-রোজগার করে ছেলেমেয়েদের পড়ালেখা করাতে পারব। বসুন্ধরা শুভসংঘের প্রতি আমি চিরকৃতজ্ঞ।’

বসুন্ধরা গ্রুপের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সেলাই মেশিন পাওয়া মনিরা বেগম (৪০) বলেন, ‘দিনমজুরির কাজ করে যা আয় হয়, তা দিয়ে আমার ছেলের পড়াশোনার খরচ ও পরিবারের খরচ চালাই। আমার এই অবস্থা দেখে বসুন্ধরা শুভসংঘ সেলাই শেখার সুযোগ করে দেয় এবং তিন মাস ফ্রি প্রশিক্ষণ শেষে আজ সেলাই মেশিন উপহার পেয়ে খুব ভালো লাগছে। এই সেলাই মেশিন পেয়ে সংসারে কিছুটা হলেও সহযোগিতা করতে পারব। সন্তানটিকে ভালোভাবে লেখাপড়া করাতে পারব। এ জন্য বসুন্ধরা শুভসংঘের প্রতি আমি চিরদিন ঋণী হয়ে থাকব। পাশাপাশি আমার মতো অনেক অসহায় নারী এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হয়ে অন্ধকার থেকে আলোর মুখ দেখছে।’

এ সময় উপস্থিত ছিলেন লালপুর ডিগ্রি কলেজের পরিদর্শক আব্দুল ওয়াদুদ, লালপুর থানা কেন্দ্রীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এ কে আজাদ সেন্টু, ছায়া প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সিমানুর রহমান, বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের সিনিয়র অফিসার মো. মামুন, নাটোর বসুন্ধরা শুভসংঘের সভাপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান শৈকত, সাধারণ সম্পাদক সুষ্ময় দাস, লালপুর বসুন্ধরা শুভসংঘের সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম, কেএন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের সহকারী শিক্ষক গোলাম সরোয়ার মিলন প্রমুখ।

বোয়ালখালীতে তৃষ্ণার্ত মানুষের মধ্যে সুপেয় পানি বিতরণ :

এদিকে বোয়ালখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি জানান, বোয়ালখালীতে বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগে অসহায় মানুষের মধ্যে সুপেয় পানি বিতরণ করা হয়েছে। গত শনিবার দুপুরে উপজেলা সদরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও কালুরঘাট ফেরিঘাটে যাত্রীসহ ৩০০ অসহায় মানুষের মধ্যে সুপেয় পানি বিতরণ করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আমিন চৌধুরী, বসুন্ধরা শুভসংঘ বোয়ালখালী শাখার সভাপতি নুরুল আবছার হিরা, সাধারণ সম্পাদক এম এ তালেব, অধ্যাপক আবু নঈম চৌধুরী, মো. ওয়াসিম মুরাদ, মো. আবছার, কালের কণ্ঠ’র বোয়ালখালী প্রতিনিধি এস এম নাঈম উদ্দীন।

পরবর্তী খবর

পথশিশুদের নিয়ে কাজ করা ববি শিক্ষার্থী জান্নাত বাঁচতে চায়

নাম জান্নাতুল ফেরদৌসি। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। লেখাপড়ার পাশাপাশি কাজ করেন পথশিশু ও অসহায়দের নিয়ে। যুক্ত আছেন প্রথম আলো বন্ধুসভা ও বাঁধনের সাথে। গত ২৫ জানুয়ারিতে এক হঠাৎ দুর্ঘটনায় যেন সবটা এলোমেলো করে দিলো এক নিমিষে। অসাবধানতাবশত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের তিনতলা থেকে পড়ে গিয়ে জান্নাতের মেরুদণ্ডে প্রচণ্ড আঘাত লাগে। পরে তার স্পাইনাল কর্ডে ফ্র্যাকচার হয়েছে। সাথে ডান পায়ের গোড়ালিও মারাত্মকভাবে ভেঙে গিয়েছে। স্পাইনাল ফ্র্যাকচারের কারণে অস্ত্রপাচার করা হয়েছে। ডান পায়ের গোড়ালিতে করা হয়েছে প্লাস্টার। তার কোমর থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত প্যারালাইজড হয়ে আছে। কোমরের নিচ থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত কোন সংবেদন পাচ্ছে না। ঢাকায় একটি হাসপাতালে নিবিড় যত্নে আছেন তিনি।

জান্নাত বর্তমানে ঢাকার শ্যামলিতে ট্রমা হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ছয় মাসের ফিজিও থেরাপি ও অন্যান্য ট্রিটমেন্ট-এর জন্য অন্তত সাত থেকে আট লাখ টাকার প্রয়োজন।

জান্নাতের ভাই জিওন জানান, প্রথমে বরিশালের শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসা করানো হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার সরকারি পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সর্বশেষ থেরাপি দেওয়ার জন্য তাকে ট্রমা হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। সেখানে পঙ্গু হাসপাতালের সাবেক ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. আব্দুল গণি মোল্লার তত্ত্বাবধায়নে অস্ত্রপাচার করানো হয়। ডা. নাসির উদ্দীন থেরাপি দিচ্ছেন। তবে প্রতিমাসে দেড় লাখ টাকার বেশি খরচ যা আমাদের পরিবারের পক্ষে সম্ভব না। পাঁচ-ছয় লাখ টাকা এরই মধ্যে খরচ হয়ে গেছে। তাই বিত্তবানদের প্রতি আহ্বান থাকবে সহযোগিতা করার।

ইংরেজি বিভাগের ছাত্রকল্যাণ পরিষদের সহ-সভাপতি নাহিদ আকন্দ জানান, আমাদের বিভাগ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি সহযোগিতা করার।বিত্তবানদের প্রতি আহ্বান থাকবে এগিয়ে আসার।

ইংরেজি বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহযোগী অধ্যাপক তানভীর কায়ছার বলেন, বিভাগ থেকে যতটুকু সহযোগিতা করা প্রয়োজন আমরা করছি। শিক্ষার্থীর বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ রেখে ওই শিক্ষার্থীর খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে। চিকিৎসা খরচে অনেক বেশি টাকা প্রয়োজন। এজন্য তাকে বাঁচানোর জন্য শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষার্থীসহ সমাজের বিত্তবানদের প্রতি আহ্বান থাকবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার।

সহযোগিতা পাঠানোর ঠিকানা :
+880 1700-879097 ( Bkash Personal)
+880 1700-879097 ( Nagad Personal)
+880 1700-8790979 (Rocket Personal)

প্রয়োজনে জান্নাতের ভাই জিওনের সাথে যোগাযোগ করে নিতে পারেন (01754732898)।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত