শামীম-উল-আলম : গত ৭ই জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয়ের বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে টানা চতুর্থবার ও সব মিলিয়ে পঞ্চমবার শপথ নিলেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টা ৩ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বঙ্গভবনে শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রীর শপথ বাক্য পাঠ করান ।
এর আগে ১৯৯৬-২০০০ মেয়াদের পর টানা ২০০৯-২০১৩; ২০১৪-২০১৮ , ২০১৯-২০২৩ এই তিন মেয়াদ নিয়ে বর্তমান মেয়াদসহ মোট পাঁচবারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এক অনন্য রেকর্ডের অধিকারি হলেন শেখ হাসিনা। স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে একমাত্র তিনিই চার মেয়াদে ২০ বছর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশ শাসন করেছেন ।
তিনি বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
আজ ১৪ ডিসেম্বর, শনিবার শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। ১৯৭১ সালের এ দিনে দখলদার পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার, আল-বদর, আল-শামসরা বাংলার শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে। বুদ্ধিজীবী হত্যার ঠিক দুই দিন পর ১৬ ডিসেম্বর জেনারেল নিয়াজির নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করে এবং স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে।
যথাযোগ্য মর্যাদায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালনের লক্ষ্যে সরকারিভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনও বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
শনিবার সকাল ৭টা ৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি ও ৭টা ৬ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এ সময় তারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধার অংশ হিসেবে সেখানে নীরবে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবেন। এ সময় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টাকে রাষ্ট্রীয় স্যালুট প্রদান করবে।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টার নেতৃত্বে শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্যরা এবং যুদ্ধাহত ও উপস্থিত বীর মুক্তিযোদ্ধারা একই দিনে সকাল ৭টা ২২ মিনিটে মিরপুর বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে এবং সকাল সাড়ে ৮টায় রায়ের বাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্যদিয়ে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন। এছাড়া সকাল সাড়ে ৮টা থেকে সর্বস্তরের জনগণ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস শুক্রবার পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন। দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকা আগামীকাল বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে। বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ অন্যান্য বেসরকারি টিভি চ্যানেল দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করবে। দেশের সকল জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।
দিবসটি উপলক্ষে সকল মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা ও অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনা করা হবে। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) পক্ষ থেকে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এক বাণী প্রদান করেছেন।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে শনিবার সকালে নয়াপল্টনের বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারাদেশে দলীয় কার্যালয়গুলোতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ ও কালোপতাকা উত্তোলন করা হবে। সকাল ৯টায় বিএনপির জাতীয় নেতৃত্বসহ বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের মাধ্যমে শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।
৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের আকাশে যে মেঘ তৈরি হয়েছে, তা পরিষ্কার করতে ভারত আগ্রহী বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক শেষে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে রিজওয়ানা বলেন, বৈঠকে ভারতীয় সচিব উল্লেখ করেছেন যে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের আকাশে যে মেঘ তৈরি হয়েছে, তা দূর করতে হবে।
বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারতীয় গণমাধ্যমের একাংশের অপপ্রচারের বিষয়ে তিনি বলেন, ভারতের পররাষ্ট্র সচিব দাবি করেছেন যে ভারত সরকার এই অপপ্রচারের জন্য দায়ী নয় এবং অপপ্রচারও চালাচ্ছে না। ভারতীয় পক্ষের দাবি, তাদের সরকার প্রচারের মালিক নয়।
পরিবেশ উপদেষ্টা বাংলাদেশিদের ভারতীয় ভিসা দেওয়ার প্রসঙ্গে বলেন, বিক্রম মিশ্রি আশ্বস্ত করেছেন যে বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ভারতীয় ভিসার সংখ্যা বাড়ানোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
রিজওয়ানা বলেন, ভারত বাংলাদেশসহ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে এবং পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কাজ করতে ইচ্ছুক।
তিনি বলেন, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে ভারত থেকে যে বক্তব্য দিচ্ছেন, সে বিষয়ে ঢাকা ভারতীয় প্রতিনিধিদের কাছে স্পষ্টভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।