শিক্ষা

শিক্ষা

প্রথম বিসিএসে নন-ক্যাডার, দ্বিতীয়তে পুলিশ ক্যাডারে ববি’র রুহুল আমিন

কথায় আছে, পরিশ্রম সফলতার চাবিকাঠি। পরিশ্রম করলে কেউ বিফল হয় না। কষ্ট করলে তার ফল একদিন পাবেই। দারিদ্র্য যাদের নিত্যদিনের সঙ্গী, সেই দারিদ্র্য জয় করায় হবে একমাত্র চ্যালেঞ্জ। এমনই চ্যালেঞ্জ নিয়ে ৪৩তম বিসিএসে পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থী মোঃ রুহুল আমিন হাওলাদার। প্রথম বিসিএস দিয়ে বাজিমাত করেছিলেন, হয়েছিলেন নন-ক্যাডার। আবার অনার্সে তার ব্যাচে প্রথমও হয়েছেন।

তিনি কোথাও কোচিং না করেই প্রথম বিসিএস-এ নন-ক্যাডার হয়েছিলেন। পরে ৪৩তম বিসিএসে পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হন। স্কুল জীবনে পিতা হারানো, টিউশনি করানো ও দরিদ্রতাকে জয় করাসহ নানান প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে তিনি এখন পুলিশ ক্যাডার হয়েছেন। তিনি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

রহুল আমিনের বাড়ি বাগেরহাট জেলার রামপাল উপজেলার ম‌ল্লি‌কের‌বেড় ইউনিয়নের মাদারদিয়া গ্রামে। তার পিতার নাম মো. আশ্বাব আলী হাওলাদার।

নিজে সংগ্রাম করেই রুহুল আমিন আজ এ পর্যন্ত পৌঁছেছেন। নিয়মিত পড়তেন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ। সময়ের সাথে মিল রেখে তিনি টিউশনি করেছেন। অনার্সে সিজিপিএ ৩.৮৮ পেয়ে প্রথম হয়ে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। মাস্টার্সেও তার রেজাল্ট ভালো ছিলো (সিজিপিএ-৩.৭৯)। নিজের লক্ষ্য থেকে কখনো সরে যাননি। সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন সবসময়। যেমন একাডেমিক পড়াশোনা ভালো করতেন, তেমনি চাকরির পড়াও পড়েছেন। লক্ষ্যে পৌছানোর আগপর্যন্ত তিনি সংগ্রাম চালিয়ে নিয়েছেন। ৪৪তম লিখিত দিয়েছেন, ভাইভার অপেক্ষায়। ৪৫তম প্রিলিতে পাশ করেছেন। যদিও তিনি ৪৩তম বিসিএসে তার প্রথম পছন্দ পুলিশ ক্যাডার পেয়েছেন। তাই আর ভাইভা দিবেন না বলে জানিয়েছেন রুহুল আমিন। তিনি নিয়মিত ইংরেজি পত্রিকা পড়তেন ও সাম্প্রতিক খবর রাখার চেষ্টা করতেন। স্কুল জীবনেও তিনি সর্বোচ্চ ফলাফলের স্বাক্ষর রেখেছেন। সন্ন‌্যাসী মাধ‌্যমিক বিদ‌্যালয় থেকে জিপিএ-৫ ও বাগেরহাট সরকারি পি. সি ক‌লেজ থেকে জিপিএ-৪.৭০ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়ে মেধার স্বাক্ষর রাখেন।

রহুল আমিনের পিতা যখন মারা যায়, তখন তিনি স্কুলে পড়তেন। ঝড়ে পড়ার আশঙ্কা মুক্ত থেকে বাঁচতে টিউশনি ও কোচিং করিয়েছেন। নিজের অবস্থান থেকে কখনো সরে যাননি বরং শক্ত, দৃঢ় মনোবল ও প্রতিশ্রতিবদ্ধ ছিলেন। দারিদ্রকে জয় করে যে স্বপ্ন দেখা যায় তা তিনি দেখিয়ে দিবেন- এমনই মনোবল ছিলো তার। একে একে মেধার স্বাক্ষর রেখে লক্ষ্যে পৌছেছেন। অনার্স শেষ করেই তিনি জনতা ব্যাংকে চাকরি নিয়েছিলেন। পরে বেশি বেতনে চাকরি নেন ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকে। তারপরেই প্রথম বিসিএসে নন-ক্যাডার, পরে ৪৩ তম বিসিএসে প্রথম পছন্দ পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হন।

রুহুল আমিন জানান, আমার সংগ্রাম সহজ ছিলো না। সময়ানুবর্তিতা নিয়ে সকল কাজ সম্পন্ন করতাম। টিউশনি ও কোচিং করাতাম। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েছি আর আল্লাহর কাছে চাইতাম। কখনো নিরাশ হতাম না। একাডেমিক পড়াশোনায়ও ভালো প্রচেষ্টা করে প্রথম হয়েছি। পরিবারের দারিদ্র্য আমাকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে জীবন সহজ না, সহজ করে নিতে হয়।

পুলিশ ক্যাডার কেন প্রথম পছন্দ ছিলো জানতে চাইলে বলেন, পুলিশে থেকে দেশসেবা করা যায়। তাছাড়া আমার পিতা যখন মারা যায় তখন একটি কারণে পুলিশ আমাদের সাহায্য করেছিলো। সেখান থেকেই পুলিশের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ বেড়ে যায়। দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য কাজ করে যেতে চাই।

অনুজদের পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রথম থেকে সিজিপিএ’র উপর জোর দিতে হবে। পরবর্তীতে সিজিপিএ খারাপ বা ভালো নিয়ে চিন্তা না করে চাকরির পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হবে। আল্লাহর উপর ভরসা রাখতে হবে। তবে টিউশনি করাতে পারলে সেটি ভালো হয়। কারণ, আমার টিউশনি ভালো কাজে দিয়েছে চাকরির পড়ায়। আমি গণিত, ইংরেজি ও আইসিটি পড়িয়েছি। এটা আমাকে একধাপ এগিয়ে রেখেছে। বেশি বেশি পত্রিকা পড়তে পারেন।’ সর্বশেষ, কখনো হতাশ না হয়ে পরিশ্রম চালিয়ে যেতে পারলে সফলতা ধরা দিবে বলে তার বিশ্বাস।

বিষয়:
পরবর্তী খবর

ঈদের ছুটি শেষে খুলছে মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়

ঈদুল আযহার ছুটি শেষে রবিবার খুলছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরমেবি)।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় যে, রবিবার থেকে যথারীতি একাডেমিক এবং দাপ্তরিক সব কাজ চলমান থাকবে।

এরই মাঝে দীর্ঘ যানজট উপেক্ষা করে ক্যাম্পাসে ফিরতে শুরু করেছে শিক্ষার্থীরা।

উল্লেখ্য, গত ১২ জুন থেকে ২২ জুন মোট ১০ দিন ঈদুল আযহার ছুটি পায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

পরবর্তী খবর

চাঁপাইনবাবগঞ্জে ২ দিনের বিজ্ঞান মেলা

চাঁপাইনবাবগঞ্জের নামোশংকরবাটী উচ্চ বিদ্যালয়ে শুরু হয়েছে দুইদিনের বিজ্ঞান মেলা। মঙ্গলবার সকালে মেলার উদ্বোধন করেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ।

নামোশংকরবাটী উচ্চ বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি দররুল হোদার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন– দেবীনগর দ্বি-মুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও জেলা শিক্ষক-কর্মচারী কল্যাণ সমিতির সভাপতি আব্দুল আজিজ, চরমোহনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম, নামোশংকরবাটী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আসলাম কবীরসহ অনান্যরা।

নামোশংকরবাটী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আসলাম কবীর জানান, শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্ভাবনী শক্তি বাড়াতেই এ বিজ্ঞান মেলা আয়োজন করা হয়েছে। এতে শিক্ষার্থীদের ৩৬টি গ্রুপ তাদের উদ্ভাবনী প্রকল্প উপস্থাপন করে।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত