বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি শূন্যে নামাতে বিদ্যুতের দাম ৭৮ শতাংশেরও বেশি বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। আগামী মাস থেকেই তা কার্যকরের প্রস্তাব করা হয়েছে। পাশাপাশি বাল্ক মূল্যহার বৃদ্ধির ফলে বিতরণ কোম্পনি ও সংস্থাগুলোর লোকসান শূন্যে নামাতে গ্রাহক পর্যায়েও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছে পিডিবি। এর ফলে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের বর্তমান দাম ইউনিট প্রতি ৮.২৫ টাকা থেকে বেড়ে ২০২৪ সালের মধ্যেই পর্যায়ক্রমে তা ১৪.৬৮ টাকা হবে। সম্প্রতি এ-সংক্রান্ত চূড়ান্ত প্রস্তাবে আগামী মাস থেকেই তা কার্যকরের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ।
পিডিবি জানিয়েছে, বিতরণ কোম্পানি ও সংস্থাগুলোর বর্তমান গড় ট্যারিফ আট টাকা ২৫ পয়সা। তবে বিদ্যমান বাল্ক মূল্য ছয় টাকা ৭০ পয়সা ট্যারিফে ভারিত গড়ে তারা ৫৫ পয়সা বা ছয় দশমিক ৬১ শতাংশ ঘাটতিতে রয়েছে। ফলে বাল্ক মূল্যহার বৃদ্ধিতে লোকসান শূন্যে নামিয়ে আনতে বাল্কের পাশাপাশি খুচরা গ্রাহক পর্যায়েও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করতে হবে।
গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের মূল্যহার বৃদ্ধির প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ভর্তুকি শূন্যে নামাতে বাল্ক মূল্যহার ছয় টাকা ৭০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১২ টাকা ১১ পয়সা করতে হবে। এর সঙ্গে বিতরণ লস, বিতরণ কোম্পানিগুলোর পরিচালন ব্যয়সহ অন্যান্য ব্যয় যুক্ত করলে খুচরা মূল্যহার ভারিত গড়ে ১৪ টাকা ৬৮ পয়সা করতে হবে। তবেই বিতরণ কোম্পানিগুলোর লোকসান শূন্য হবে। এজন্য গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের মূল্যহার গড়ে ছয় টাকা ৪৩ পয়সা বা প্রায় ৭৮ % বৃদ্ধি করতে হবে। এই মূল্যবৃদ্ধির প্রক্রিয়া ধাপে ধাপে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পিডিবির পক্ষ থেকে বিদ্যুৎ বিভাগকে চারটি প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
প্রথম প্রস্তাব কার্যকর করলে ভর্তুকি শূন্যে নামাতে ফেব্রুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতি মাসে পাঁচ শতাংশ হারে বাল্ক মূল্যহার বাড়াতে হবে। এতে ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে বিদ্যুৎ খাতে কোনো ভর্তুকি দিতে হবে না। এক্ষেত্রে খুচরা পর্যায়ে বিদ্যমান ঘাটতি পূরণসহ মূল্যহার ফেব্রুয়ারিতে ১১ শতাংশ বাড়াতে হবে। এরপর মার্চ থেকে নভেম্বর পর্যন্ত চার শতাংশ হারে এবং ডিসেম্বরে ১০ শতাংশ বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করতে হবে।
দ্বিতীয় প্রস্তাব কার্যকর করলে ভর্তুকি শূন্যে নামাতে ফেব্রুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত প্রতি মাসে ১০ শতাংশ হারে বাল্ক মূল্যহার বাড়াতে হবে। এতে আগস্ট থেকে আর ভর্তুকি লাগবে না। সেক্ষেত্রে খুচরা পর্যায়ে বিদ্যমান ঘাটতি পূরণসহ ফেব্রুয়ারিতে ১৫ শতাংশ দাম বাড়াতে হবে। এরপর মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত ৯ শতাংশ হারে এবং জুলাইয়ে ১১ শতাংশ বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করতে হবে।
তৃতীয় প্রস্তাব কার্যকর করলে ভর্তুকি শূন্যে নামাতে ফেব্রুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত তিন মাস পরপর বাল্ক মূল্যহার ১৬ শতাংশ হারে বাড়াতে হবে। অর্থাৎ ফেব্রুয়ারির পর মে, আগস্ট ও নভেম্বরে বিদ্যুতের বাল্ক মূল্যহার বাড়াতে হবে। এতে নভেম্বর থেকে আর ভর্তুকি লাগবে না বিদ্যুতে। এতে খুচরা পর্যায়ে বিদ্যমান ঘাটতি পূরণসহ ফেব্রুয়ারিতে ২১ শতাংশ এবং মে, আগস্ট ও নভেম্বরে ১৪ শতাংশ হারে বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি করতে হবে।
চতুর্থ প্রস্তাব কার্যকর করলে ফেব্রুয়ারিতে ৪০ ও জুলাইতে ৩০ শতাংশ বাড়াতে হবে বাল্ক মূল্যহার। এতে জুলাই থেকে ভর্তুকি শূন্যে নামবে। এক্ষেত্রে খুচরা পর্যায়ে বিদ্যমান ঘাটতি পূরণসহ ফেব্রুয়ারিতে ৪২ শতাংশ ও জুলাইতে ২৫ শতাংশ বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করতে হবে।
বিদ্যুৎ বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে রোজকার খবরকে বলেন, পিডিবির চার বিকল্প যাচাই-বাছাই করে দেখা হচ্ছে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য ও কম ঝুঁকিপূর্ণ হলো প্রথম প্রস্তাবটি। কারণ প্রতি মাসে পাঁচ শতাংশ হারে বাল্ক মূল্যহার বাড়লে গ্রাহক পর্যায়ে চাপ কম পড়বে। তবে এটি বাস্তবায়ন জটিল। কারণ প্রতি মাসে মূল্যহার বৃদ্ধি করলে গ্রাহকদের মধ্যে নেতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি হবে।
তাদের মতে, সবচেয়ে কার্যকর প্রস্তাব হচ্ছে চতুর্থটি। কারণ এতে মাত্র দু’বার মূল্য বৃদ্ধির চাপ পড়বে। তবে ফেব্রুয়ারিতে একবারে ৪২ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধির ঝুঁকিও রয়েছে। গ্রাহকদের পাশাপাশি সার্বিক অর্থনীতিতেও এ মূল্যবৃদ্ধির নেতিবাচক চাপ পড়বে। তাই কোন প্রক্রিয়ায় বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি করা হবে, তা সব দিক বিবেচনা করে দ্রুতই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে পিডিবি সূত্রে জানানো হয়েছে।
তবে আগামী মাস থেকেই যে গ্রাহকদের বিদ্যুৎ বিলে বাড়তি টাকা গুনতে হচ্ছে, তা এক প্রকার নিশ্চিত।
তথ্যসূত্র : পিডিবি ডেক্স
সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টির আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেছা স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে আবহাওয়া পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।
এ অবস্থায় পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এ সময়ে সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। শেষ রাত থেকে ভোর পর্যন্ত সারাদেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।
রাজধানীর ধানমণ্ডির বিজিবি সীমান্ত সম্ভার শপিং কমপ্লেক্সের একটি স্বর্ণের দোকানে সংঘটিত চাঞ্চল্যকর চুরির ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন মো. রুবেল (২৮), সফিক ওরফে সোহেল (৩৫) এবং সাদ্দাম হোসেন (৩১)। এ সময় তাদের কাছ থেকে চুরি যাওয়া ৫০ ভরি আট আনা স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়, যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা।
ডিবি সূত্রে জানা যায়, ধানমণ্ডি মডেল থানাধীন ‘ক্রাউন ডায়মন্ড এন্ড জুয়েলার্স’ শোরুমে গত ৩ জানুয়ারি বেলা ১টার দিকে চুরির ঘটনা ঘটে। চোরচক্র অভিনব পদ্ধতিতে শো-রুমের তালা ও সাটার কেটে মাত্র আট মিনিটের মধ্যে ১৫৯ ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে পালিয়ে যায়। দোকানের মালিক কাজী আকাশ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন, যেখানে চুরি যাওয়া স্বর্ণালংকারের আনুমানিক মূল্য প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা উল্লেখ করা হয়।
মামলার প্রেক্ষিতে ডিবি পুলিশ তদন্ত শুরু করে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ৯ জানুয়ারি থেকে ডিবি পুলিশ ধারাবাহিক অভিযান চালায়। কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে প্রথমে মো. রুবেলকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কুমিল্লার দেবীদ্বার থেকে সফিক ওরফে সোহেল এবং মুরাদনগর থেকে সাদ্দাম হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে ২৮ ভরি ১৪ আনা আসল স্বর্ণ এবং ২১ ভরি ১০ আনা গলিত স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়। ডিবি সূত্রে আরও জানা যায়, চুরির ঘটনায় জড়িত চক্রের অন্যান্য সদস্যদের শনাক্ত করা হয়েছে এবং তাদের গ্রেফতার ও অবশিষ্ট স্বর্ণ উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ডিএমপি’র উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান পিপিএম জানান, এই চক্র অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে পরিকল্পনা করে চুরি সংঘটিত করে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে জনগণের আস্থা অক্ষুণ্ণ রাখতে সক্ষম হয়েছে।