কথাশিল্পী, গীতিকার ও সাংবাদিক রনি রেজার লেখা গণমাধ্যম বিষয়ক বই ‘গণমাধ্যমের মোহ ও দায়বদ্ধতা’ আসছে এবারের বইমেলায়। ঘাসফুল প্রকাশনী থেকে প্রকাশ হবে এটি। গণমাধ্যমের নানা দিক নিয়ে রচিত ২১টি প্রবন্ধ ঠাঁই পেয়েছে বইটিতে। প্রচ্ছদ করেছেন শামীম আরেফিন।
এ বিষয়ে রনি রেজা বলেন, ‘সাংবাদিকতা পেশা নিয়ে বেশ ধ্রুমজাল রয়েছে। কারো কাছে এটি প্রচুর টাকা উপার্জনের মাধ্যম, কারো দৃষ্টিতে সাংবাদিকতা কোনো পেশাই নয়, কেবলমাত্র ক্ষমতা প্রদর্শনের মাধ্যম, আবার কেউ কেউ তো মনে করেন- সাংবাদিকতা মানেই অন্যকে জিম্মি করে টাকা উপার্জন করা, এদের নির্দিষ্ট কোনো বেতন-ভাতা নেই। এইসব ধ্রুমজাল সাংবাদিকতা পেশাটিকে বিতর্কিত করে। অনেকে না বুঝেই বা নিজের মতো বুঝেই এ পেশার প্রতি আকৃষ্ট হন। আমার চাওয়া যিনি এ পেশায় আসবেন, জেনে-বুঝেই আসুক যে, এ পেশায় কতটুকু মধু আছে আর কতটুকু বিষ আছে। কোনো মোহ বা বিভ্রান্ত থেকে নয়।’
বইটি সাংবাদিকদের পেশাদারিত্বের ক্ষেত্রে খুবই কাজে আসবে বলে মনে করেন ঘাসফুলের প্রকাশক মাহাদী আনাম। তিনি বলেন, ‘যারা সাংবাদিকতায় আসতে চান, তাদের প্রত্যকের পড়া উচিত বইটি। আশা করছি বইটিতে ব্যাপক সাড়া মিলবে।’
রনি রেজার প্রকাশিত বইগুলো হলো : ‘এলিয়েনের সঙ্গে আড্ডা’ (গল্পগ্রন্থ), ‘পাখিবন্ধু’ (শিশুতোষ গল্প), ‘মস্তিষ্কের তৃতীয় মুদ্রণ’ (গল্পগ্রন্থ) ও ‘খালুইভর্তি হাহাকার (গল্পগ্রন্থ)’। ‘সাংবাদিকতার মোহ ও দায়বদ্ধতা’ তার পঞ্চম বই হলেও প্রবন্ধের বই হিসেবে এটিই প্রথম। রনি রেজা দীর্ঘদিন ধরেই দৈনিক সমকাল, মানবকণ্ঠ, ভোরের কাগজ, যায়যায়দিন, দৈনিক সংবাদ ও ইত্তেফাকসহ বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় নিয়মিত কলাম লিখছেন। গণমাধ্যমের নানা দিক নিয়ে রচিত কলামগুলোও বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশ হয়েছে। কাজ করেছেন, দৈনিক ভোরের পাতা, আরটিভি, যমুনানিউজসহ বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে। বর্তমানে অনলাইন গণমাধ্যম ডেইলি বাংলাদেশ-এ কর্মরত।
গীতিকার হিসেবেও বেশ সুনাম রয়েছে রনি রেজার। তার লেখা গানে কণ্ঠ দিয়েছেন- কিংবদন্তী অভিনেতা ও কণ্ঠশিল্পী ফজলুর রহমান বাবু, কামরুজ্জামান রাব্বী, খায়রুল ওয়াসী, দীপ্র বড়ুয়া ও দুর্জয় বড়ুয়াসহ অনেকেই।
তিনি সাহিত্যের ছোটকাগজ ‘কিচ্ছা’ সম্পাদনা করেন। অর্জন করেছেন ‘বেহুলা বাংলা বেস্ট সেলার বই সম্মাননা’, ‘ঢাকা সাব-এডিটর কাউন্সিল লেখক সম্মাননা’ এবং ‘সাহিত্য দিগন্ত লেখক সম্মাননা’।
‘এক টাকার খবর’র সম্পাদক মুন্নী সাহাকে আটক করেছে পুলিশ। রাজধানীর কারওয়ান বাজার এলাকা থেকে মুন্নী সাহাকে আটক করে তেজগাঁও থানায় দিয়েছে জনতা। শনিবার রাত ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে থানা থেকে তাকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ে নেওয়া হয়।
মুন্নী সাহাকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোবারক হোসেন। তিনি বলেন, ‘জনতা ওই নারী সাংবাদিককে আটক করে আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছে।’ পরে তেজগাঁও থানা থেকে মুন্নী সাহাকে রাজধানীর মিন্টু রোডে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ে নেওয়া হয়।
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) রেজাউল করীম মল্লিক গণমাধ্যমকে বলেন, মুন্নী সাহার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। তাকে আটক রাখা হচ্ছে।
জানা গেছে, রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ‘এক টাকার খবরে’র অফিস থেকে বের হয়ে সবজি কিনতে যান মুন্নী সাহা। সেখানে গিয়ে তিনি জনতার তোপের মুখে পড়েন। বেশকিছুক্ষণ তাকে ঘিরে রাখা হয়। পরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তেজগাঁও থানা পুলিশ তাকে হেফাজতে নেয়।
তেজগাঁও থানার ওসি মোবারক হোসেন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, কারওয়ান বাজারস্থ আইসিটি বিভাগের ভিশন-২০২১ টাওয়ারের (সাবেক জনতা টাওয়ার) সামনে সবজি কিনছিলেন মুন্নী সাহা। এসময় তাকে চিনতে পেরে একদল লোক বিক্ষুব্ধ হয়ে তার ওপর চড়াও হন। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যায় তেজগাঁও থানা পুলিশ। পরে তাকে উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়।
জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে গুলিতে শিক্ষার্থী নাঈম হাওলাদার (১৭) নিহতের মামলায় আসামি মুন্নী সাহা।
সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট সাংবাদিকদের সুরক্ষায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের সদিচ্ছার বড় প্রমাণ বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। তিনি আজ রোববার দুপুরে মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি বোর্ডের ৩০তম সভায় এ কথা জানান। সভায় ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে সভাপতিত্ব করেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণমাধ্যমের বিস্তৃতি ও স্বাধীনতার পাশাপাশি সাংবাদিকদের কল্যাণ ও সুরক্ষায় বিশ্বাস করেন। গত পনেরো বছরে গণমাধ্যমের যেমন বিস্তৃতি ঘটেছে, তেমনি সাংবাদিকদের কল্যাণেও নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট আইন প্রণয়নের মাধ্যমে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করেছেন। এই ট্রাস্ট গঠন প্রমাণ করে তাঁর নেতৃত্বাধীন সরকার সাংবাদিকবান্ধব। প্রতিমন্ত্রী বলেন, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে নিয়মিতভাবে অসচ্ছল, দুর্ঘটনায় আহত সাংবাদিকদের এবং মৃত সাংবাদিকদের পরিবারের অনুকূলে কল্যাণ অনুদান প্রদান করা হচ্ছে। চলতি অর্থবছরের তৃতীয় ও শেষ পর্যায়ে ২ কোটি ৮ লক্ষ টাকা অনুদান প্রদান করা হয়েছে। এ ট্রাস্ট থেকে সাংবাদিকদের মেধাবী সন্তানদের শিক্ষার জন্য বৃত্তি প্রদান কার্যক্রমও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এসব কার্যক্রম সাংবাদিকদের সুরক্ষা ও কল্যাণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর সরকারের অঙ্গীকারের বহিঃপ্রকাশ।
ট্রাস্ট থেকে কল্যাণ অনুদান প্রদানে সাংবাদিকদের বাছাইয়ের ক্ষেত্রে আরো স্বচ্ছতা ও পেশাদারিত্ব নিশ্চিত করার কথাও পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।
সভায় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ও বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি বোর্ডের ভাইস-চেয়ারম্যান মো. হুমাযুন কবীর খোন্দকার, বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য সচিব সুভাষ চন্দ্র (বাদল), প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ-এর মহাপরিচালক ও ট্রাস্টি বোর্ড সদস্য জাফর ওয়াজেদ, তথ্য অধিদফতরের প্রধান তথ্য অফিসার ও ট্রাস্টি বোর্ড সদস্য মোঃ শাহেনুর মিয়া, অর্থ মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব ও ট্রাস্টি বোর্ড সদস্য মোহাম্মদ সাদেকুর রহমান, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ও ট্রাস্টি বোর্ড সদস্য ওমর ফারুক, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব ও ট্রাস্টি বোর্ড সদস্য দীপ আজাদ, দৈনিক সংবাদ-এর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক ও ট্রাস্টি বোর্ড সদস্য কাশেম হুমায়ুন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ও ট্রাস্টি বোর্ড সদস্য সোহেল হায়দার চৌধুরী এবং বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান ও ট্রাস্টি বোর্ড সদস্য কলিম সরওয়ার উপস্থিত ছিলেন।