আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পেতে যাচ্ছে ‘পেয়ারার সুবাস’। মুক্তি উপলক্ষ্যে রোববার সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। যেখানে উপস্থিত ছিলেন নায়িকা সুষমা সরকার। লম্বা সময় ধরে মুক্তি আটকে থাকার বিষয়টিকে কনসিভ (অন্তঃসত্ত্বা) করার মতো বলে মনে করেন সুষমা সরকার। মজা করে তিনি বলেন, কনসিভ এবার ডেলিভারি হতে যাচ্ছে! এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন পরিচালক নূরুল আলম আতিক, অভিনেতা আহমেদ রুবেলসহ অনেকে।
নূরুল আতিক বলেন, আমরা তেমন গন্ধের ছবি দেখি না। পেয়ারার সুবাস-এ গন্ধ হলো ট্রিগার পয়েন্ট। এটা শরীরের গন্ধ। সুগন্ধি হতে পারে আবার দুর্গন্ধ হতে পারে। সুগন্ধের সঙ্গে প্রকৃতির একটি অদ্ভুত কারবার আছে। বিপরীত লিঙ্গের যাদের প্রাণ আছে তারা ঘ্রাণ থেকে জোড়া বাঁধে। ‘পেয়ারার সুবাস’ ঘ্রাণ থেকে বিস্তৃতি লাভ করে। এ কারণে পেয়ারার নামের একটি মেয়ে ও গন্ধের তাড়নার জীবনে সম্পর্কগুলো অবস্থান দেখানো হচ্ছে এতে।
‘আট বছর আগে এ ছবির যে প্রয়োজন অনুভব করেছিলাম সেটা এখনও আছে। তবে হ্যাঁ, যদি আট বছর আগে মুক্তি দিতে পারতাম, তাহলে দর্শকদের অ্যাপ্রোচটা হয়তো অন্যরকম হতো। ছবিটি যদি দর্শকদের মাঝে সুবাস ছড়াতে ব্যর্থ হয় তবে নির্মাতা হিসেবে ব্যর্থতার দায়ভার আমার হবে।’
এতে ‘পেয়ারা’ নামে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন জয়া আহসান। আরও আছেন তারিক আনাম খান। এটি প্রযোজনা করছেন আলফা আই’র শাহরিয়ার শাকিল।
তিনি বলেন, ছবিটির বিষয়বস্তু প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য। তাই আমরা বারণ করছি, বাচ্চাদের সিনেমা হলে না আসার। এখানে মনস্তাত্ত্বিক বিষয় উঠে আসবে। আমার ধারণা, প্রাপ্ত বয়স্ক এবং সাধারণ দর্শকরা ‘পেয়ারার সুবাস’ দেখলে খুবই পছন্দ করবেন।
দীর্ঘ তিন বছরের অপেক্ষার পর অবশেষে মুক্তি পাচ্ছে বাংলাদেশ-ইরান যৌথ প্রযোজনার চলচ্চিত্র ‘ফেরেশতে’। ইরানি নির্মাতা মুর্তজা অতাশ জমজম পরিচালিত ছবিটি ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে দেশের সব সিনেপ্লেক্সে প্রদর্শিত হবে।
প্রান্তিক মানুষের জীবনের গল্প নিয়ে নির্মিত ছবিতে অভিনয় করেছেন জয়া আহসান। বর্তমানে কলকাতায় অবস্থান করা এই অভিনেত্রী ব্যক্তিগত কাজ শেষে এই সপ্তাহেই ঢাকায় ফিরবেন। এরপর ছবির প্রচারণায় অংশ নেবেন তিনি।
জয়া বলেন, ‘আমাদের দেশের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের ভেতরের সংগ্রামী ও সাহসী চরিত্রের একজনকে ফুটিয়ে তোলা বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল। তবে পুরো টিমের সহযোগিতায় কাজটি ভালোভাবে শেষ করতে পেরেছি।’
‘ফেরেশতে’ ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক পরিসরে প্রশংসিত হয়েছে। ছবিটি ফজর চলচ্চিত্র উৎসবে মানবিক বার্তার জন্য জাতীয় পুরস্কার জিতেছে। এছাড়া ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব ২০২৪-এর উদ্বোধনী ছবি হিসেবে প্রদর্শিত হয়েছিল এবং গোয়া আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবেও প্রশংসা কুড়িয়েছে।
ছবির প্রধান অভিনেতা ও প্রযোজক সুমন ফারুক বলেন, ‘এই চলচ্চিত্রে সমাজের প্রান্তিক মানুষের গল্প উঠে এসেছে, যা সহজে উচ্চবিত্তরা উপলব্ধি করতে পারে না। আশা করছি, দেশীয় দর্শকও ছবিটিকে আন্তরিকভাবে গ্রহণ করবেন।’
চলচ্চিত্রটিতে জয়া আহসান ও সুমন ফারুক ছাড়াও অভিনয় করেছেন শহীদুজ্জামান সেলিম, শাহেদ আলী, রিকিতা নন্দিনী শিমু, শাহীন মৃধা ও শিশুশিল্পী সাথী। চিত্রনাট্য লিখেছেন মুমিত আল-রশিদ, আর ফারসি ও বাংলা অনুবাদ করেছেন ফয়সাল ইফরান।

বাংলাদেশি দর্শকদের জন্য এ ছবিটি একদিকে হবে সামাজিক বার্তাবহ, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক মানের একটি ভিন্নধর্মী অভিজ্ঞতা।
অভিনয়ে নিয়মিত না হলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব উপস্থিতি বজায় রেখেছেন লাক্সকন্যা শবনম ফারিয়া। শুধু শোবিজ ইস্যুই নয়, সামাজিক, রাজনৈতিক ও সমসাময়িক নানা বিষয় নিয়েও খোলামেলা মতামত দিয়ে আসছেন এই অভিনেত্রী। নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে জানিয়ে তিনি বললেন, রাজনীতি নয়, বরং সোশ্যাল অ্যাকটিভিজমকেই ভবিষ্যতে বেছে নিতে চান তিনি।
শবনম ফারিয়ার ভাষায়, ‘ভবিষ্যতে নিজেকে একজন সোশ্যাল অ্যাকটিভিস্ট হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। আমি একজন শিল্পী, সমাজের ইতিবাচক পরিবর্তনের অংশ হতে চাই। রাজনীতি আমার মঞ্চ নয়। ভালোকে ভালো, খারাপকে খারাপ, চোরকে চোর আর চাঁদাবাজকে চাঁদাবাজ বলাই আমার নীতি।’
ব্যক্তিগত জীবনে কঠিন সময় পার করা প্রসঙ্গেও খোলামেলা ছিলেন তিনি। বললেন, ‘অপ্রয়োজনীয় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আসার ইচ্ছে আমার কখনোই ছিল না। তা না হলে অভিনয়ের পাশাপাশি চাকরি না করে টিকটকে নাচতাম, জিম করতাম, কিংবা মিরর সেলফি দিতাম। এই দেশে অ্যাটেনশনের জন্য খুব বেশি কষ্ট করতে হয় না, আমিও জানি, আপনারাও জানেন।’
রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি দূর করতেও দৃঢ় ভাষায় বক্তব্য রাখেন ফারিয়া। তার স্পষ্ট ঘোষণা— ‘বর্তমানে বাংলাদেশে যেসব রাজনৈতিক দল আছে বা সম্প্রতি নিষিদ্ধ হয়েছে, তাদের কারোর সঙ্গেই আমার কোনো সমর্থন নেই। আমার ফেসবুক পেজ পাবলিক। সেখানে যেমন কালা মাগুর কমেন্ট করতে পারে, তেমনি নীল তিমি, কাউয়া কিংবা টিয়াও পারে। এতে আমার রাজনৈতিক আদর্শ প্রতিফলিত হয় না। আমি কোনো রাজনৈতিক চরিত্র নই।’
অভিনয়ে অনিয়মিত হলেও নিজের অবস্থান, চিন্তাভাবনা আর খোলামেলা বক্তব্যের জন্যই শবনম ফারিয়া আলোচনায় থাকেন প্রায়ই। রাজনীতির বাইরে থেকেও তিনি বিশ্বাস করেন, সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা সম্ভব। আর সেই পরিবর্তনের লড়াইয়েই সক্রিয় থাকতে চান তিনি।