মারজিয়া সুলতানা একজন সংগ্রামী স্বপ্নবান উদ্যোক্তা। সহস্র প্রতিকূলতার ডিঙিয়ে অদম্য চেষ্টায় নিজের স্বপ্নকে ‘Marjia’s Dream’ এবং ‘নির্ভেজাল’ নামে সফলতায় রূপান্তরিত করেছেন। রোজকার খবরের বিশেষ প্রতিনিধি ফারজানা জিতু কথা বলেছেন মারজিয়ার সাথে। উদ্যোক্তাদের জীবন ও ভাবনা নিয়ে রোজকার খবরের নিয়মিত আয়োজনের অংশ হিসেবে আজ প্রকাশিত হল এই বিশেষ প্রতিবেদন।
মারজিয়া সুলতানা জন্মগ্রহণ করেছিলেন মাদারীপুর জেলার কালকিনি থানার এক ছোট্ট গ্রামে। মোটামুটি সুন্দর শৈশব পেয়েছেন বটে। সাত ভাই-বোনের মধ্যে মারজিয়া সবার ছোট। বাবা-মায়েরও খুব আদরের ছিলেন। বেশ সুখেই কাটছিল ছোটবেলাটা। কিন্তু সেই সুখ খুব বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। হঠাৎ এক কালবৈশাখী ঝড়ের মতো দুর্ঘটনায় সব লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। মাত্র পাঁচ বছর বয়সে বাবাকে হারিয়ে যেনো নিঃস্ব হয়ে পড়েন ২০০০ সালে। তার এক বছর পরেই তার মা-ও প্যারালাইজড হয়ে বিছানায় পড়ে যান।
চারবোন তিন ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট মারজিয়া। কিন্তু তার বাবা মারা যাওয়ার আগেই বড় তিন বোনের বিয়ে হয়ে যাওয়াতে সংসারের সমস্ত দায়িত্ব পড়লো আমার কাঁধে। সংসারের কাজ, অসুস্থ মায়ের সেবা করা, নিজের পড়াশোনা সব মিলিয়ে হাঁপিয়ে উঠছিলেন তিনি।
২০০৬ তার গন্তব্য হয় ঢাকায় বড়ো বোনের বাসায়। সেই থেকে এখানেই বড়ো হওয়া। জীবনের প্রয়োজনে ক্লাস নাইন থেকেই চাকরি করা শুরু করতে হয়। চাকরির পাশাপাশি অবশ্য নিজের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে থাকেন। অনেক কষ্ট করে এইচএসসি সম্পন্ন করলেও আর এগুতে পারেননি। মারজিয়ার বাবার স্বপ্ন ছিল তার মেয়ে বড় হয়ে ডাক্তার হবে। কিন্তু যার স্বপ্ন, তিনিই বিদায় নেয়ায় তার স্বপ্নও মাটির নিচে অন্ধকার কবরে চাপা পড়ে যায় একরকম।
মারজিয়ার পেশা জীবনের শুরু হয় একটা বেসরকারি কোম্পানির প্রমোশনের কাজ দিয়ে। তারপর আরও বিভিন্ন জায়গায় কাজ করলেও সেসবে তৃপ্তি পাচ্ছিলেন না তিনি। তার সবসময় মনে হতে থাকে, ‘নিজে যদি কিছু করতে পারতাম’। নিজে কিছু করার বাসনা তাকে সবসময় তাড়া করতে থাকে। চাকরি করছিলেন, পাশাপাশি তার মাথায় ঘুরতে থাকে, কিভাবে নিজে কিছু একটা শুরু করবেন, কোথা থেকে শুরু করবেন সেই পরিকল্পনা। এরকম চিন্তা এবং পরিকল্পনা থেকে ২০২০ সালে একরকম শূন্য হাতেই শুরু করে দেন নতুন পথচলা।
শুরুটা সহজ ছিল না। বলতে গেলে একদম শুন্য থেকে শুরু করেন। করোনা মহামারি শুরু হলে ২০২০ সালে মারজিয়ার স্বামীর চাকরি চলে যায়। স্বাভাবিকভাবেই হতাশ হয়ে পড়েন তিনি। একা আয়ে সংসার চালানো দায়। ঠিক সেই পরিস্থিতেই Marjia’s Dream-এর পথচলা শুরু হয়।
শুরুতে ইনভেস্ট করার মতো অর্থ না থাকায় পিছিয়ে পড়ছিলেন। তবে তিনি চাকরি করতেন একটা বুটিক হাউসে। সেই সুবাদে আমি অনেক সাপ্লায়ারকে চিনতেন। তাদের কাছ থেকে ছবি কালেক্ট করে ফেসবুক পেইজে আপলোড করতে শুরু করেন। অর্ডার হলে তাদের কাছ থেকে সংগ্রহ করে কাস্টমারকে পৌঁছে দিতেন। তখন Marjia’s Dream-এর পণ্য ছিল থ্রিপিস, হিজাব এবং জুয়েলারি।
কিন্তু তিনি তখন যেহেতু একটা বুটিক হাউসে চাকরি করতেন, তাই কাপড় নিয়ে কাজ করাটা একটু কঠিন হয়ে গিয়েছিল। তার মনে একটা ভয় কাজ করতো যে, হাউসের মালিক জানতে পারলে চাকরিটা হয়তো চলে যাবে। তাই আস্তে আস্তে কাপড় নিয়ে কাজ কমিয়ে দেন মারজিয়া।
তব্যে ভাগ্যের পরিহাসে ২০২১ সালে সত্যি সত্যি চাকরি হারান মারজিয়া। শারীরিকভাবেও খুব অসুস্থ হয়ে পড়েন। তার শরীরে অনেকগুলো টিউমার ধরা পরে। অসুস্থতার কারণেও কাপড়ের ব্যবসাতে কিছুটা পিছিয়ে যান। তবে হেরে যাবার মানসিকতা তার নেই। রবং পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয় নিয়ে নতুন করে ভাবতে থাকেন কী করবেন।
মারজিয়ার নিজের ব্যবহারের নিত্য প্রয়োজনীয় অনেককিছু, যেমন- মশলা, সরিষার তেল, ঘি, মধু এগুলো তার শশুরবাড়ি থেকে আসতো। এগুলো বেশিরভাগই সম্পূর্ণ হোমমেইড উপায়ে তৈরি করা হতো। তখন তিনি চিন্তা করলেন, নিজে যেহেতু খাঁটি জিনিসগুলো ব্যবহার করতে পারছি, সেহেতু অন্যদেরকেও সেই খাঁটি জিনিসগুলো দিতে পারেন। যেই ভাবা সেই কাজ। শুরু হয়ে গেল তার নতুন পেইজ ‘নির্ভেজাল’।
নির্ভেজালের পণ্য বিষয়ে মারজিয়া বলেন, ‘আমার খাঁটি পণ্য আমি নিজে তৈরি করি, নিজে ব্যবহার করি এবং অন্যদেরকেও দিয়ে থাকি।’
এখনও মার্জিয়ার উদ্যোগ মূলত তিনি একাই চালান। তবে তার স্বামী কিছু বিষয়ে তাকে সাহায্য করেন। যদিও তিনি শুরুতে চাইতেন না মারজিয়া চাকরি না করে উদ্যোক্তা হোক। মধ্যবিত্ত মানসিকতার ভয় থেকেই তার মনে হতো, হয়তো তার স্ত্রী সফল হতে পারবেন না এবং বিনিয়োগের টাকাগুলোর অপচয় হবে।
আজকের সফল উদ্যোক্তা মারজিয়ার সফলতার পথ সহজ ছিল না মোটেও। বরং ঘরে-বাইরে অসংখ্য প্রতিবন্ধকতাকে নিজের প্রবল ইচ্ছাশক্তি দিয়ে মোকাবেলা করেই তাকে সামনে এগুতে হয়েছে। সময়ের সাথে সফলতা আসাতে প্রতিবন্ধকতা এখন অনেকটাই কমে এসেছে। এখন শুধুমাত্র ফেইসবুক পেইজ ব্যবহার করে মারজিয়া ৩০টিরও বেশি অরগ্যানিক পণ্য নিয়ে কাজ করছেন। সেইসাথে দেশীয় কাপড়, হিজাব, জুয়েলারি নিয়েও সমান তালে কাজ করে যাচ্ছেন।
গফরগাঁওয়ের এক অধ্যাপকের স্বপ্ন ছিল প্রশাসক হওয়া। কিন্তু জীবন তাকে ভিন্ন পথে নিয়ে গেছে— তিনি এখন একজন সফল উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ী। অর্থনীতির শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করলেও ব্যবসার প্রতি তার আগ্রহ ছিল বহু আগে থেকেই। সেই আগ্রহ থেকেই তিনি শুরু করেছিলেন পথচলা। আজ তিনি প্রতিষ্ঠিত এক ব্যবসায়ী। N S P House নামে গড়ে তুলেছেন নিজের বহুমুখী ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
রোজকার খবরের বিশেষ প্রতিনিধি ফারজানা জিতুর কাছে নিজের উদ্যোক্তা জীবন ও ভাবনা জানিয়েছেন জুলেখা খাতুন সোমা। উদ্যোক্তাদের জীবন ও ভাবনা নিয়ে শিল্পপুরাণ ও আরশিনগরের সৌজন্যে রোজকার খবরের নিয়মিত আয়োজনের অংশ হিসেবে আজ প্রকাশিত হল এই বিশেষ প্রতিবেদন।
সহকারী অধ্যাপক হিসেবে অর্থনীতি পড়ানোর পাশাপাশি তিনি আইসিটি বিষয়েও শিক্ষকতা করতেন। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে কম্পিউটার শেখার প্রয়োজনীয়তা তিনি অনেক আগেই বুঝতে পারেন। তাই এইচএসসি পাস করার পরই কম্পিউটার প্রশিক্ষণ নেন এবং মাস্টার্স সম্পন্ন করার পর ২০০৬ সালে নিজেই একটি কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন। যদিও এটি শিক্ষামূলক প্রতিষ্ঠান ছিল, তবু এখান থেকেই তার ব্যবসায়িক চিন্তাভাবনার শুরু।
এরপর ধীরে ধীরে তিনি ইট-বালুসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করতে থাকেন। ব্যবসার ঝুঁকি নেওয়ার মানসিকতা গড়ে তোলার পাশাপাশি তিনি নিজের পরিচিতি বাড়ানোর জন্য অফলাইন নেটওয়ার্ক তৈরি করতে থাকেন, যাতে একসময় বড় উদ্যোক্তা হতে পারেন।
২০১৪ সালে তিনি ফেসবুকে যুক্ত হন এবং ধীরে ধীরে নিজের পরিচিতি বাড়ানোর কাজ শুরু করেন। বিভিন্ন গ্রুপে লেখালেখির মাধ্যমে ব্যক্তিগত ব্র্যান্ডিং তৈরি করেন, যা পরবর্তী সময়ে তার ব্যবসার প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
২০১৮ সালে নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে তিনি একটি শপ খোলেন এবং অপ্রত্যাশিতভাবে তার চেয়েও বেশি সফলতা পেতে থাকেন। ঠিক এই সময়েই তিনি পরিচিত হন ‘নিজের বলার মতো একটা গল্প’ ফাউন্ডেশনের সঙ্গে, যা তার উদ্যোক্তা জীবনকে আরও গতিশীল করে তোলে।
তবে পথচলা সহজ ছিল না। প্রথমদিকে পরিবার থেকেও কোনো সমর্থন পাননি, বরং একাই পথ চলতে হয়েছে। পরে তার বড় সন্তান পাশে দাঁড়ায় এবং ধীরে ধীরে পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও সমর্থন দিতে বাধ্য হন।
উদ্যোক্তা জীবনের শুরুতেই তিনি এক বড় সংকটের মুখোমুখি হন। একটি চক্র তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে অনলাইন নেটওয়ার্ক থেকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করে। এই ঘটনায় তিনি ভীষণ কষ্ট পেলেও হাল ছাড়েননি। বরং প্রতিজ্ঞা করেন, তিনি কেবল একটি ছোট গণ্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবেন না, বরং গোটা বাংলাদেশ ও বিশ্বজুড়ে নিজের অবস্থান তৈরি করবেন।
এই কঠিন সময়ই তাকে আরও দৃঢ় ও আত্মবিশ্বাসী করে তোলে। তিনি নতুন উদ্যমে এগিয়ে যান এবং আজ তিনি একজন সফল ব্যবসায়ী। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যারা একসময় তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছিল, তারাই একসময় ক্ষমা চেয়ে নেয়। কিন্তু তিনি নীরব থেকে নিজের লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যান।
এ শুধু একজন নারী উদ্যোক্তার সফলতার কাহিনি নয়, বরং এটি এক অদম্য মানসিকতার গল্প। প্রতিকূলতাকে জয় করে কীভাবে এগিয়ে যেতে হয়, তা তিনি নিজেকে দিয়েই প্রমাণ করেছেন। তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হয়েছিল, তাকে থামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল, কিন্তু সেই প্রতিবন্ধকতাগুলোই তাকে আরও শক্তিশালী করেছে। তিনি উপলব্ধি করেছেন, অনেক সময় নীরবতাই সবচেয়ে বড় প্রতিক্রিয়া।
তার ভাষায়, ‘নারীরা যদি নীরব হয়ে যায়, পৃথিবীতে বড় পরিবর্তন ঘটে—আমি তারই প্রমাণ।’ তার এই নিরবতার মধ্যেই লুকিয়ে ছিল লড়াই করে বিজয়ী হওয়ার বার্তা। যারা তাকে থামাতে চেয়েছিলেন, তারা পরবর্তীতে বুঝতে পেরেছেন, তারা আসলে তাকে আরও শক্তিশালী করে তুলেছেন। আজ তিনি একজন সফল উদ্যোক্তা, যার প্রতিটি অর্জন তার কঠোর পরিশ্রম, আত্মবিশ্বাস ও দৃঢ় সংকল্পের ফসল।
হোমমেইড আচার ব্র্যান্ড ‘পুত্রবধূ’র প্রতিষ্ঠাতা শারমিন সুলতানা একজন সাহসী ও আত্মপ্রত্যয়ী নারী। তার এই উদ্যোগের পেছনে রয়েছে অনুপ্রেরণাদায়ী এক গল্প।
রোজকার খবরের বিশেষ প্রতিনিধি ফারজানা জিতুর কাছে নিজের উদ্যোক্তা জীবনের গল্প বলেছেন শারমিন। জানিয়েছেন ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও নানা ভাবনা। উদ্যোক্তাদের জীবন ও ভাবনা নিয়ে শিল্পপুরাণ ও আরশিনগরের সৌজন্যে রোজকার খবরের নিয়মিত আয়োজনের অংশ হিসেবে আজ প্রকাশিত হল এই বিশেষ প্রতিবেদন।
শারমিনের উদ্যোগের নাম ‘পুত্রবধূ’ দেওয়ার পেছনে একটি বিশেষ কারণ রয়েছে। বিয়ের পর তিনি যখন তার উদ্যোক্তা জীবন শুরু করেন, তখন তিনি ছিলেন তার শ্বশুরবাড়ির একমাত্র পুত্রবধূ। এই বিষয়টি মাথায় রেখেই তিনি তার ব্র্যান্ডের নাম দেন ‘পুত্রবধূ’। গত সাড়ে তিন বছর ধরে অনলাইনে সুনামের সঙ্গে হোমমেইড আচার বিক্রি করছে ‘পুত্রবধূ’।
শারমিন বেড়ে উঠেছেন গ্রামের মুক্ত পরিবেশে। কিন্তু ২০২০ সালে করোনাকালে বিয়ে হয়ে ঢাকায় এসে তাকে একটি নতুন জীবনের মুখোমুখি হতে হয়। শহুরে জীবনের সাথে মানিয়ে নিতে এবং সেই সময়কার মৃত্যু ও অনিশ্চয়তার সংবাদ দেখে তিনি ক্রমশ হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। কাজের অভাব এবং অবসর সময় ফেসবুকে কাটিয়ে তার মন আরও ভারাক্রান্ত হয়ে উঠছিল।
তখনই তার স্বামী তাকে অনলাইন বিজনেস শুরুর প্রস্তাব দেন। শারমিন গ্রামে থাকতে আচার বানাতে ভালোবাসতেন। সেই ভালোবাসা থেকেই তিনি তার উদ্যোক্তা জীবনের যাত্রা শুরু করেন।
উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার পেছনে শারমিনের স্বামী এবং শ্বশুরের পূর্ণ সমর্থন ছিল। তবে শাশুড়ি এবং বাবার বাড়ির লোকজন তাকে নিয়ে সন্দিহান ছিলেন। শাশুড়ি বলতেন, “তুমি আমার একমাত্র বউমা। তুমি আচার সেল করবা, সমাজের লোকজন তো হাসবে।” অন্যদিকে, তার বাবা চেয়েছিলেন তিনি পড়াশোনা শেষ করে সরকারি চাকরি করুন।
তবে শারমিন ও তার স্বামী পরিবারের সবাইকে অনলাইন ব্যবসার গ্রহণযোগ্যতা বোঝাতে সক্ষম হন। আজ সেই শাশুড়ি এবং বাবার বাড়ির লোকজনও তার কাজে গর্ববোধ করেন এবং তাকে সমর্থন করেন।
শারমিনের জন্য পরিবারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে ব্যবসা শুরু করা সহজ ছিল না। কিন্তু তার স্বামীর অকুণ্ঠ সমর্থন ও পরামর্শ তাকে এই পথচলায় আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে। পেজ খোলা থেকে শুরু করে কাস্টমারদের সাথে যোগাযোগ, প্যাকেজিং– এসব বিষয়ে তার স্বামী তাকে হাতে-কলমে শিখিয়েছেন।
শারমিন মনে করেন, চাকরির আশায় বসে না থেকে স্টুডেন্ট লাইফ থেকেই ছোট পরিসরে কাজ শুরু করা উচিত। তিনি নতুন উদ্যোক্তাদের প্রতি বলেন, ব্যবসা শুরু করতে বড় মূলধনের প্রয়োজন নেই। রিসেলার হিসাবে শূন্য পুঁজি দিয়ে শুরু করেও সফল হওয়া সম্ভব। পরবর্তীতে সেই লাভ থেকে নিজস্ব উদ্যোগ শুরু করা যেতে পারে।
শারমিনের স্বপ্ন, তার ‘পুত্রবধূ’ ব্র্যান্ডটি শুধু দেশের ৬৪ জেলাতেই নয়, আন্তর্জাতিক পর্যায়েও সুনাম অর্জন করুক। তিনি চান দেশের নারীরা আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠুক। প্রয়োজনে তিনি তাদের আচার বানানোর কৌশল শিখিয়ে সাহায্য করতে প্রস্তুত।
শারমিন সুলতানার গল্প একটি প্রমাণ যে, কঠোর পরিশ্রম, আত্মবিশ্বাস এবং পরিবারের সমর্থন থাকলে যে কেউ সফল হতে পারে। তার মতো নারীরা বাংলাদেশে উদ্যোক্তা আন্দোলনের পথিকৃৎ। শারমিন বিশ্বাস করেন, নারীরা এগিয়ে গেলে সমাজ আরও এগিয়ে যাবে।