সয়াবিন তেলের (বোতলজাত ও খোলা) নতুন দাম শুক্রবার (১ মার্চ) থেকে কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও প্রথম দুই দিনে তার বাস্তবায়ন দেখা যায়নি। বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী শনিবার জানিয়েছিলেন, রোববার (৩ মার্চ) থেকে কার্যকর হবে নতুন দাম।
কিন্তু রোববার সকালেও রাজধানীর বিভিন্ন দোকান ঘুরে এবং সুপারশপগুলোর অনলাইনে প্রকাশিত মূল্যতালিকা থেকে দেখা গেছে, অধিকাংশই আগের দামে সয়াবিন তেল বিক্রি করছেন। কোথাও কোথাও সয়াবিনের দাম কিছুটা কম রাখা হচ্ছে। বাজারে নতুন মোড়কের বোতলজাত সয়াবিন আসেনি, এমন অজুহাত দেখিয়ে অনেক বিক্রেতাই সাধারণ ক্রেতাদের কাছ থেকে আগের দামই নিচ্ছেন।
তবে কোম্পানিগুলো দাবি করেছে, নতুন দরের সয়াবিন তারা বাজারে ছেড়েছে। সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামেই এখনও কিনতে হচ্ছে খোলা সয়াবিন তেল।
সরকার সম্প্রতি বোতলজাত ও খোলা সয়াবিন তেলের দাম লিটারপ্রতি ১০ টাকা কমিয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করে দেয়। সে অনুযায়ী এখন প্রতি লিটার নতুন বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬৩ টাকা টাকায় ও খোলা সয়াবিন তেল ১৪৯ টাকায় বিক্রি হওয়ার কথা।
ঢাকার মালিবাগ, মগবাজার ও কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ক্রেতাদের বাধ্য হয়ে ১৭৩ টাকা লিটার দামেই বোতলজাত সয়াবিন কিনতে হচ্ছে। ৫ লিটারের বোতলজাত সয়াবিনের দামও ৮০০ টাকায় নামেনি। সে জন্য ৮৪৫ টাকায় তা কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। বিচ্ছিন্নভাবে কিছু বিক্রেতাকে অবশ্য গায়ের দামের চেয়ে কিছুটা কম রাখতে দেখা যায়। খোলা সয়াবিন তেল এখন ১৪৯ টাকা লিটার দরে বিক্রি হওয়ার কথা। কিন্তু বাজারে খোলা সয়াবিনের দাম ১৫০ টাকার ওপরে।
বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ‘নতুন দরের সয়াবিন এখনো বাজারে আসেনি। তাই নতুন দাম কার্যকর হচ্ছে না। ডিলাররা এখনো পুরোনো দামের সয়াবিনই দিচ্ছে। দাম সামান্য করে কমাচ্ছে। তাতে আমরা আগের থেকে কিছুটা কম দামে ক্রেতাদের সয়াবিন দিতে পারছি।’
এদিকে, টিসিবির বাজারদরের প্রতিবেদনও বলছে, ভোক্তা পর্যায়ে এখনো সয়াবিন তেলের দাম কমেনি। ঢাকার বাজারে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন ১৬৫ থেকে ১৭২ টাকায় এবং ৫ লিটারের বোতল ৮৩০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। টিসিবির হিসাবে, লিটারপ্রতি খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৫২ থেকে ১৫৫ টাকায়।
বাংলাদেশ পাইকারি ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোলাম মাওলা সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, খোলা তেলের যে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে, বাজার এখন তার নিচে আছে। বাজারে সরবরাহেরও সংকট নেই। পর্যায়ক্রমে সারা দেশে খোলা তেলের সরকারি দাম কার্যকর হবে।
খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, কোম্পানিগুলো সয়াবিন তেলের বোতলের গায়ে বাড়তি দামের মোড়ক লাগিয়ে সব সময় প্রস্তুত থাকে। কিন্তু কমানোর সময় ধীরগতিতে কমায়। এবার নতুন দাম কার্যকরের ঘোষণা বেশ আগেভাগে দেওয়া হলেও মিল থেকে ডিলার হয়ে এখনো নতুন দামের পণ্য আসেনি। সে জন্য ভোক্তা পর্যায়ে এখনো ভোজ্যতেলের দাম কমানোর সুবিধা পুরোটা মিলছে না।
কোম্পানিগুলো আগে থেকে প্রস্তুতি নেওয়ায় বাজারে ইতিমধ্যে সয়াবিনের দাম কমতে শুরু করেছে বলে দাবি করেছেন শীর্ষস্থানীয় ভোজ্যতেল বিপণনকারী কোম্পানি টি কে গ্রুপের পরিচালক শফিউল আতহার। তিনি বলেন, শুক্র-শনিবার ব্যাংক বন্ধ থাকার কারণে নতুন দামের পণ্য সরবরাহ কিছুটা ব্যাহত হয়েছে। দুই-এক দিনের মধ্যে বাজারে নতুন দামের সয়াবিন পৌঁছে যাবে।
প্রসঙ্গত, রোজার মাসে সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দিতে সরকার ভোজ্যতেল আমদানিতে শুল্ক-কর কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়। বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের (বিটিটিসি) একটি বিশ্লেষণ বলছে, শুল্ক-কর কমানোর কারণে অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের আমদানি ব্যয় লিটারে ৫ টাকার মতো কমার কথা। পাম তেলে প্রভাব পড়বে প্রায় সাড়ে ৪ টাকা। তবে সরকার শুধু সয়াবিন তেলের দাম লিটার ১০ টাকা কমানোর সিদ্ধান্ত দিয়েছে। এ দফায় বাজারে পাম তেলের দাম কমেনি।
সাধারণ মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ও মূল্য নিয়ন্ত্রণে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চালের উপর থেকে সব আমদানি ও নিয়ন্ত্রক শুল্ক প্রত্যাহার করেছে। এ লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার রাজস্ব কর্তৃপক্ষ একটি সংবিধিবদ্ধ নিয়ন্ত্রণ আদেশ (এসআরও) জারি করেছে।
এর আগে খাদ্য অধিদপ্তর দেশের সামগ্রিক চালের মজুদ নিয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন জমা দেয়। বাংলাদেশ বাণিজ্য ও ট্যারিফ কমিশন (বিটিটিসি) চালের দাম পরিস্থিতি নিয়ে খাদ্য ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং এনবিআরকে আরেকটি প্রতিবেদন পাঠিয়েছে।
দু’টি প্রতিবেদনেই চালের ওপর সব ধরনের আমদানি শুল্ক প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হয়েছে।
স্থানীয় চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে সহায়তার জন্য গত ২০ অক্টোবর এনবিআর আমদানি শুল্ক ৬২ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ করে।
আমদানি ও নিয়ন্ত্রক শুল্কের উপর এই মওকুফ চালের দাম স্থিতিশীল করতে এবং সাধারণ গ্রাহকদের কাছে এটি আরও সহজলভ্য করতে সহায়তা করবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
আমের রাজধানী খ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জে এসে আম বাগান ঘুরে গেলেন, ঢাকাস্থ বিভিন্ন দেশের রাষ্টদূতরা। রাষ্টদূতদের এ দেশের আম ও আম সংস্কৃতি সম্পর্কে ধারণা দিতেই এই ম্যাংগো ট্যুরের আয়োজন করে কৃষি মন্ত্রণালয়। এর মাধ্যমে দেশের আম রপ্তানী আরো গতি পাবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের।
কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুস শহীদের নেতৃত্বে অষ্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, স্পেন, সিঙ্গাপুরসহ বেশ কয়েকটি দেশের দেশের রাষ্ট্রদূতরা বৃহস্পতিবার দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার কান্দবোনা গ্রামে একটি আম বাগান পরিদর্শন করেন।
এসময় তাদের সাথে ছিলেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু এমপি, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মোঃ আব্দুল ওয়াদুদ এমপি, কৃষিসচিব ওয়াহিদা আক্তার, পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ মোঃ বখতিয়ারসহ কৃষি, বাণিজ্য ও পররাষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তরা।
এই ম্যাংগো ট্যুরের মাধ্যমে চাঁপাইনবাবগঞ্জে ম্যাংগো ট্যুরিজম ও দেশের আম রপ্তানীতে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি হবে বলে মনে করছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম উদ্যোক্তরা।