অমর একুশে বইমেলা ২০২৪-এ আসছে ফারহানা ইয়াসমিনের রোমান্টিক উপন্যাস ‘আমি ডুবতে রাজি আছি’। বইটি প্রকাশ করছে উপকথা প্রকাশন। বইটির মলাট মূল্য ধরা হয়েছে ৬৬৫ টাকা।
‘আমি ডুবতে রাজি আছি’ সংগ্রহ করতে চাইলে পাঠকরা প্রি অর্ডার করতে পারবেন রকমারি, প্রজ্ঞা, ক্ষনিকা, বইপরীসহ অনলাইন বুকশপগুলোতে।
কাহিনী সংক্ষেপ : একজনার বাহুডোরে বন্দি হয়ে আরেকজনার কথা ভাবা কি পাপ? যদি পাপ হয়ে থাকে তাহলে এই পাপটা শামা করছে প্রতিনিয়ত। সামীরের বাহু লগ্না হয়ে সবসময় রায়হানকে নিয়ে ভেবে চলেছে। মাঝে মাঝে তীব্র পাপবোধে দংশিত হতে থাকে শামা। স্বামী কিংবা প্রেমিক, যেই হোক না কেন যদি নামের আগে প্রাক্তন শব্দটি জুড়ে যায় তাহলে তাদের নিয়ে ভাবাটা পাপ বইকি!
অবৈধভাবে শরীরে শরীর ছুঁয়ে দিলে পাপ হয় জানে। তাই বলে কি মনে মনে ভাবলেও পাপ হবে? হলেই বা কী করবে? শরীরকে না হয় বেঁধে রেখে পাপমুক্ত থাকা যায়। কিন্তু মন? মনকে কিভাবে বাঁধবে?
ঝিনাইদহের শৈলকূপায় কবি বঙ্গ রাখাল প্রতিষ্ঠিত গোলাম রসুল স্মৃতি পাঠাগারে ‘কে বলে দাঁড়িয়ে আছি তোমার অপেক্ষায়’ কাব্যগ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন উপলক্ষে সাহিত্য সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
উপজেলার গোলক নগরে গোলাম রসুল স্মৃতি পাঠাগারে আয়োজিত সভায় কবি বঙ্গ রাখালের সভাপতিত্বে বরেণ্য লোককবি মোঃ হাসানুজ্জমান, কবি রণভী শের, লেখক সুজন বিপ্লব, কুষ্টিয়া সরকারী মহিলা কলেজের দর্শন বিভাগের প্রভাষক মোঃ আশরাফ আলী, রবীন্দ্র মৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়া বাংলা বিভাগের প্রভাষক আব্দুল গফফার, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা ইমাম মেহেদী ও লোককবি আব্দুল মজিদ পঞ্চ আমন্ত্রিত অতিথি হিসাবে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ ফিরোজ আহমেদ, ইউপি সদস্য আলম রায়হান খান, কবি আমিনুর রহমান, কবি কবির হোসেন, কবি অনীক সিদ্দিকী প্রমুখ কবিতা পাঠ ও সাহিত্য আলোচনা করেন।
কবি বঙ্গ রাখালের সদ্য প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে আলোচকবৃন্দ বলেন, প্রত্যন্ত গ্রামীণ জনপদে এই অবরুদ্ধ সময়ে কবি বঙ্গ রাখালের পাঠাগার আন্দোলন ও সাহিত্যচর্চা সমাজ পরিবর্তনের আলোকবর্তিকা হয়ে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়বে। কূপমণ্ডূকতা, কুসংস্কার ও সামন্ত গোষ্ঠীতন্ত্রের বিপরীতে মৌলবাদবিরোধী, অসম্প্রায়িক, গণতান্ত্রিক, বিজ্ঞানমুখী ও প্রগতিশীল সমাজ বিনির্মাণের অনবদ্য ভাষ্য ‘কে বলে দাঁড়িয়ে আছি তোমার অপেক্ষায়’ পাঠককুলে সমাদৃত হবে বলে আলোচকগণ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এবারে বইমেলায় প্রকাশ পেয়েছে কবি বঙ্গ রাখাল-এর দুইটি নতুন কবিতার বই— ‘কে বলে দাঁড়িয়ে আছি তোমার অপেক্ষায়’ এবং ‘জন্মান্ধ ঘোড়া’।
‘কে বলে দাঁড়িয়ে আছি তোমার অপেক্ষায়’ কবিতার বইটি প্রকাশ করেছে প্রকাশনা সংস্থা চন্দ্রবিন্দু প্রকাশন। প্রচ্ছদ করেছেন প্রচ্ছদশিল্পী মঈন ফারুক। অমর একুশে বইমেলায় বইটি পাওয়া যাচ্ছে চন্দ্রবিন্দু প্রকাশনীর ২৩৯ নম্বর স্টলে। বইটির মলাট মূল্য রাখা হয়েছে ২৫০ টাকা।
‘জন্মান্ধ ঘোড়া’ কবিতার বইটি প্রকাশ করেছে অনুপ্রাণন প্রকাশন। প্রচ্ছদ করেছেন প্রচ্ছদশিল্পী তৌহিন হাসান। বইমেলায় বইটি পাওয়া যাচ্ছে অনুপ্রাণন প্রকাশনীর ৮৫-৮৬ নম্বর স্টলে। ‘জন্মান্ধ ঘোড়া’র মলাট মূল্য ২০০ টাকা।
কবি বঙ্গ রাখাল-এর কবিতা সম্পর্কে কবি ও গবেষক সুমন শামস বলেন- কলহমোহনীয় কোনো উর্বশীর মতো ঠোঁটকাটা সুন্দর তাঁর কবিতা। জোয়ানী রোদে পেশি ফুলিয়ে অক্ষর জ্বেলে তারা বাঁচে। স্বঘোষিত মহারাজার মতো তাঁর কবিতার মাস্তান হয়ে ওঠেন তিনি নিজেই। যখন বলেন, ‘আমি আসলে ঝিনাইদহের ছেলে। বিশাল পৃথিবীর এককোণে ঝুলে থাকে ঝিনাইদহ–মুখের ওপর বলতে পারি না। মেজাজটা আজ খারাপ তাই কাউকে কুত্তা-মাগীর ছা বলতেও ছাড়ি না।’
অক্ষরের শরীরহীন মুণ্ডু হাতে নিয়ে তিনি লেখেন শ্বাপদ ঠেঙানো কবিতা। রাজনীতি আর স্তনফোলা ক্ষমতার মাঝখানে শতাব্দীর ধারালো চাকু বসিয়ে দেন তিনি। নির্মোহ নির্দয় এক্ষেত্রে তাঁর কবিতার স্বরাট। প্রেম বিলাসেও খুব সন্তর্পণে তিনি ক্ষমতা ও রাজনীতিকে প্রাসঙ্গিক করে তোলেন।
পাঠে একটা সুখদায়ক আরামের অনুভূতি থাকে তাঁর কবিতায়। খুব অবলীলায় প্রান্তিক ভাষাকে তিনি জুড়ে দেন কবিতার সাহেবিআনার সাথে। তাতে কবিতার ভাষা মধ্যবিত্ত অহমিকায় নিটোল দাঁড়িয়ে থাকে। সহজের ভেতরে একটা কী যেন অনির্বচনীয়তা ঠুকে দিতে পারেন তিনি। তখন তাঁর কবিতাকে মনে হয় প্রিয়তমার অপার্থিব মুখ। কোনো মোনালিসা নয়; রাজিয়া, রোজিনা অথবা আফরোজা; কিংবা বিনিদিতা তারা।
কবি বঙ্গ রাখালের উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে— সংস্কৃতির দিকে ফেরা (প্রবন্ধ, ২০১৫), লোক মানুষের গান ও আত্ম অন্বেষণ (গবেষণা, ২০১৬), মানবতাবাদী লালন জীবন অন্বেষণ (প্রবন্ধ, ২০১৭), হাওয়াই ডাঙ্গার ট্রেন (কবিতা, ২০১৮), মনীষা বীক্ষণ ও অন্যান্য (প্রবন্ধ, ২০১৮), অগ্রন্থিত রফিক আজাদ (সম্পাদনা, ২০১৯), পাগলা কানাই ও তাঁর তত্ত্ব দর্শন (সম্পাদনা, ২০১৯), লণ্ঠনের গ্রাম (কবিতা-২০১৯), যৈবতী কন্যা ইশকুলে (কবিতা, ২০২০), কবিতার করতলে (প্রবন্ধ, ২০২০), অন্ধ যাজক (কবিতা-২০২১), ছোটবোয়ালিয়া-জয়ন্তীনগর-বসন্তপুর গণহত্যা (অভিসন্দর্ভ-২০২১), জন্মান্ধ ঘোড়া-২০২৩।
তিনি পেয়েছেন— আবুল মনসুর আহমদ পুরস্কার (প্রবন্ধ-২০২০), ডেইলি স্টার, ঢাকা। জলধি সাহিত্য সম্মাননা (কবিতা-২০২১), ঢাকা। সাহিত্য সম্মাননা-২০২২ (মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা) শেরপুর সংস্কৃতি পরিষদ, শেরপুর, বগুড়া।
নিহারণ, শঙ্খধ্বনি, শব্দকুঠি, দোতারাসহ সম্পাদনা করেছেন বেশকিছু ছোট কাগজ।