বিদেশ

বিদেশ

ইসরায়েলে ফিরল ১২ জন, ফিলিস্তিনে ৩০

যুদ্ধবিরতির পঞ্চম দিনে আরও ১২ জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) রাতে রেডক্রসের মাধ্যমে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের কাছে তাদের হস্তান্তর করা হয়।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফের বরাতে এ তথ্য জানা গেছে। এক বিবৃতিতে আইডিএফ জানায়, রেডক্রসের প্রতিনিধিরা ১২ জিম্মিকে মিসরে স্থানান্তর করেছে। মুক্তিপ্রাপ্তদের গাড়িবহর মিসর হয়ে কেরাম শালোমে মিটিং পয়েন্টে যাবে। সেখানে নিরাপত্তা প্রতিনিধিরা তাদের পরিচয় যাচাই করবে।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ও একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়, ১২ জিম্মি ইসরায়েলে ফিরে গেছেন। বিবৃতিতে মুক্তিপ্রাপ্তদের নাম উল্লেখ করা হয়। তাদের মধ্যে ১০ জন ইসরায়েলি ও দুজন থাই। মুক্তি পাওয়া ইসরায়েলি জিম্মিদের মধ্যে ৯ জন নারী ও একটি শিশু রয়েছে।

এদিকে, যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী মঙ্গলবার রাতে ইসরায়েলের কারাগার থেকে ৩০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হয়। তাদের মধ্যে ১৫ জন নারী ও ১৫ শিশু। 

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধবিরতিতে পঞ্চম দফায় মোট ৮১ জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস। অন্যদিকে, আজ রাতে মুক্তি পাওয়া ৩০ জনসহ পাঁচ দিনে ১৮০ ফিলিস্তিনির মুক্তি মিলেছে ইসরায়েলি কারাগার থেকে

বিষয়:
পরবর্তী খবর

ভারতে বাবরি মসজিদের পরিবর্তে নতুন জমিতে মসজিদ নির্মাণ কতদূর?

অযোধ্যা থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে ধন্নীপুর গ্রাম। গত কয়েক বছর ধরে এই গ্রাম নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, কারণ সরকার এখানে মুসলমানদের জন্য একটা মসজিদ গড়ার জন্য জমি দিয়েছে।

আজকের দিনেই ১৯৯২ সালে অযোধ্যার বাবরি মসজিদ ভেঙ্গে ফেলা হয়েছিল। সেই জমিতে রামমন্দির নির্মাণ আর তার বদলে অন্য একটি জমি মসজিদ নির্মাণের জন্য দেওয়ার আদেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট।

অযোধ্যার বিতর্কিত ২.৭৭ একর জমি রামমন্দিরের জন্য ছেড়ে দেওয়ার পরিবর্তে ধন্নীপুর গ্রামে মুসলমানদের জন্য পাঁচ একর জমি দেওয়া হয়।

সুপ্রিম কোর্টের ২০১৯ সালের সেই রায়ের পরেই খুব দ্রুত গতিতে যখন রামমন্দির গড়ে উঠেছে, তার উদ্বোধন ও নিয়মিত পুজোও চলছে, অন্যদিকে ধন্নীপুরে মুসলমানদের মসজিদ নির্মাণ এখনও শুরুই হয়নি।
কোথায় ধন্নীপুর?

উত্তরপ্রদেশের গোরখপুর-অযোধ্যা-লক্ষ্ণৌ মহাসড়কে রৌনাহি থানার পাশ থেকেই শুরু হয় ধন্নীপুর গ্রাম। যে জমিটা মসজিদ নির্মাণের জন্য দেওয়া হয়েছে, সেটা মহাসড়ক থেকে ২০০ মিটার দূরে।

সেখানে পৌঁছিয়ে দেখা গেল যে জমিতে টেন্ট ভাড়া দেন যারা, সেরকম কয়েকজন অনুষ্ঠান-বাড়ির শামিয়ানা শুকোতে দিয়েছেন। কৃষকরা তাদের গবাদি পশু চড়াচ্ছেন আর মাঠের মাঝখানে একটা দরগাহ নজরে এল।

জমি হাতে পাওয়ার প্রায় চার বছর পরেও কোথাও কোনও নির্মাণ কাজ চোখে পড়ল না। শুধু কয়েকটি জায়গায় সাইনবোর্ড লাগানো রয়েছে।

অন্যদিকে অযোধ্যার রাম মন্দিরে ‘প্রাণ প্রতিষ্ঠার’ পরে যে নির্মাণ কাজ বাকি ছিল, তাও দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। রাম মন্দির নির্মাণে প্রায় ১৮শো কোটি ভারতীয় টাকা খরচ হচ্ছে। মন্দিরে পৌঁছনর জন্য রাম-পথ গড়া হয়ে গেছে, সরকারের তরফে অযোধ্যাকে সাজিয়ে তোলার কাজও চলছে – তার জন্য পৃথক অর্থ বরাদ্দ হয়েছে।

অত্যাধুনিক নতুন বিমানবন্দর, বাস স্টেশন, রেল স্টেশন গড়া হয়েছে। অযোধ্যার উন্নয়নের জন্য এবছর কেন্দ্রীয় বাজেটে ১০০ কোটি ভারতীয় টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে আর আলাদাভাবে বিমানবন্দরের জন্য ১৫০ কোটি ভারতীয় টাকা দেওয়া হয়েছে।

দুই ধর্মের দুই উপাসনা-স্থলের ফারাকটা খুব চোখে পড়ছে।

মসজিদ নির্মাণের জন্য যে ট্রাস্ট গঠিত হয়েছে, তার সচিব আতাহার হুসেন বলছিলেন,”দুটোর মধ্যে তুলনা চলে না। রাম মন্দিরের জন্য নির্মাণ কাজ – পাথর খোদাই ইত্যাদি তো দীর্ঘদিন ধরেই চলছিল। এছাড়াও রাম মন্দির গড়ে তুলতে সরকার বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছিল।”

এত দূরে কে নামাজ পড়তে আসবে!
ধন্নীপুর গ্রামের মানুষজন মসজিদের ব্যাপারে মুখ খুলতে চাইলেন না।

তবে একজন, মুহাম্মদ ইসলাম বলছিলেন,” মসজিদের জন্য অনেকবার দিনক্ষণ ঠিক হয়েছে। কিন্তু কাজ তো কিছু্ শুরু হয় নি।

“আগে কমিটির সদস্যরা আসতেন ১৫ই আগস্ট আর ২৬শে জানুয়ারি জাতীয় পতাকা তুলতে তবে এ বছর তারা কেউ আসেননি। আমরা গ্রামের লোকেরাই পতাকা তুলেছি,” জানালেন মি. ইসলাম।

তিনি এও বলছিলেন যে যদি এখানে হাসপাতাল গড়া হত তাহলে এলাকার মানুষের লাভ হত। প্রায় চার থেকে ছয় ঘণ্টা যাত্রা করে লক্ষ্ণৌ যেতে হত না।

অল ইন্ডিয়া মিল্লি কাউন্সিলের মহাসচিব খালেক আহমদ খান বলছিলেন, “জমিটা দেওয়া হয়েছিল সুন্নি সেন্ট্রাল ওয়াক্ফ বোর্ডকে। তাদের দায়িত্ব ছিল নির্মাণ কাজ শুরু করা। যদি বাবরি মসজিদ মামলার মুসলমান পক্ষকে অথবা স্থানীয় মানুষকে দেওয়া হত তাহলে এতদিনে মসজিদ তৈরি হয়ে যেত।

“মসজিদ গড়ার কথা ছিল যারা বাবরি মসজিদে নামাজ পড়তেন, তাদের জন্য। এতদূরে কে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তে আসবে!” বলছিলেন মি. খান।

বাবরি মসজিদ মামলার অন্যতম পক্ষ ইকবাল আনসারি এবছরের গোড়ার দিকে মসজিদের কাজ শুরু না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। বিবিসিকে তিনি বলেছিলেন, “ওয়াক্ফ বোর্ড জমিটা নিয়ে নিল। তবে কাজ শুরু করার কোনও পদক্ষেপই নেয় নি তারা। যতদিন মসজিদ অযোধ্যায় ছিল ততদিন আমরা দেখাশোনা করতাম।”

কী কী থাকবে ধন্নীপুরে?
সুন্নি সেন্ট্রাল ওয়াক্ফ বোর্ড সরকারের কাছ থেকে ধন্নীপুরের জমিটা হাতে পাওয়ার পরে তারা ইন্দো-ইসলামিক কালচারাল ফাউন্ডেশন নামে একটি ট্রাস্ট গঠন করে।

ওই ট্রাস্ট বলছে ধন্নীপুরে মসজিদ ছাড়াও অত্যাধুনিক ক্যান্সার হাসপাতাল এবং ১৮৫৭ সালের প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধের স্মৃতিতে একটি মিউজিয়াম বানানো হবে।

ওই সংগ্রহশালার নাম দেওয়া হবে ফৈজাবাদের বাসিন্দা এবং ১৮৫৭-র লড়াইয়ের শহীদ আহমেদ উল্লা শাহের নামে।

মসজিদের নকশা দুবার বানানো হয়েছে। প্রথমবার দিল্লির অধ্যাপক এসএম আখতার বানিয়েছিলেন, কিন্তু পরবর্তীকালে অন্য কাউকে দিয়ে নকশা বানানো হয়েছে।

অধ্যাপক আখতার বিবিসিকে বলেছেন যে কেন তার বানানো নকশা খারিজ করা হয়েছে সেটা কমিটির লোকেরাই বলতে পারবে।

ফাউন্ডেশনের সভাপতি জাফর ফারুকি বিবিসিকে বলেছেন মসজিদ নির্মাণের জন্য ১০০ কোটি ভারতীয় টাকা দরকার। এছাড়া অন্যান্য পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়িত করতে প্রায় ৪০০ কোটি ভারতীয় টাকার দরকার হতে পারে।

অর্থের অভাবে নির্মাণ শুরু হয় নি
ইন্দো-ইসলামিক কালচারাল ফাউন্ডেশনের সভাপতি জঈফর ফারুকি বলছিলেন, অর্থের অভাবে এখনও নির্মাণ কাজ শুরু করা যায়নি। অর্থ জোগাড় করার জন্য একটা কমিটিও হয়েছিল কিন্তু এ বছর সেপ্টেম্বর মাসে সেটা ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে।

ওই কমিটি সঠিকভাবে কাজ করছিল না বলে জানিয়েছে ফাউন্ডেশন। তবে ওই কমিটিরই এক সদস্য হাজি আরাফাত শেখের ওপরে এখন অর্থ যোগাড়ের দায়িত্ব পড়েছে।

মি. শেখ মুম্বাইতে থাকেন। তার সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে কোনও কথা বলতে রাজি হন নি। সুন্নি সেন্ট্রাল ওয়াক্ফ বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন তিনি।

অর্থ যোগাড়ের চেষ্টা যেভাবে চলছে
যে হাসপাতালটি গড়া হবে, সেটা পরিচালনার জন্য দাতব্য হাসপাতাল চালায় এমন কয়েকটি গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছে ট্রাস্ট। কয়েকটি সংস্থা এগিয়েও এসেছে।

মি. ফারুকির কথায়, “বিদেশ থেকে অনেকে অর্থ দান করতে ইচ্ছুক। সেই দান নেওয়ার জন্য যে বিদেশি দানগ্রহণ আইনের অধীনে রেজিস্ট্রেশন করার আবেদন করা হয়েছে। ওই রেজিস্ট্রেশন হয়ে গেলে অর্থের অভাব হবে না।”

তিনি এও জানিয়েছেন যে চাঁদা সংগ্রহের জন্য প্রতিটি রাজ্যে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা হচ্ছে আর ক্রাউড-ফান্ডিংয়ের ব্যাপারেও ভাবনা চিন্তা চলছে।

বিজেপির উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি কুয়াঁর বাসিত আলি বলছেন যে ইতোমধ্যেই কমিটির হাতে এক কোটি টাকা আছে।

অযোধ্যায় টাইমস অফ ইন্ডিয়ার সাংবাদিক আর্শাদ আফজল খান বলছিলেন, “ট্রাস্টের উচিত ছিল কাজ শুরু করে দেওয়া। তারপরে তারা মানুষের কাছে চাঁদা দেওয়ার জন্য আবেদন করতে পারত।”

তবে মানুষের উৎসাহে যে কিছুটা ভাটা পড়েছে, সেটাও স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

বিষয়:
পরবর্তী খবর

ট্রাম্পের হবু মন্ত্রী ও কর্মকর্তাদের বোমা হামলার হুমকি

যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হবু প্রশাসনের মন্ত্রী ও কর্মকর্তাদের একাধিক বোমা হামলার হুমকি দেওয়া হয়েছে। এই হুমকির ঘটনা মঙ্গলবার রাত ও বুধবার সকালে ঘটে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই। পাশাপাশি ভুয়া ফোনকলের মাধ্যমে তাদের হয়রানি করার চেষ্টার কথাও উঠে এসেছে। এফবিআই এ ঘটনাগুলোকে অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে তদন্ত করছে।

নিউইয়র্ক রাজ্যের রিপাবলিকান ও জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত হিসাবে মনোনীত এলিস স্টেফানিক জানিয়েছেন, তিনিও বোমা হামলার হুমকি পেয়েছেন। তিনি বলেন, বিষয়টি তাকে জানানো হয় যখন তিনি পরিবারের সঙ্গে থ্যাংকসগিভিং উদযাপনে ওয়াশিংটন থেকে নিউইয়র্কে যাচ্ছিলেন।

ট্রাম্পের ট্রানজিশন দলের মুখপাত্র ক্যারোলিন লেভিত বলেছেন, হবু প্রশাসনের মন্ত্রী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি সহিংস ও অ-আমেরিকান হুমকির ঘটনা ঘটছে। তিনি জানিয়েছেন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা মনোনীতদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে।

কৃষিমন্ত্রী পদে মনোনীত ব্রুক রোলিন্স, আবাসনমন্ত্রী পদে মনোনীত স্কট টার্নার ও শ্রমমন্ত্রী পদে মনোনীত লোরি শাভেজ-ডিরেমারও একই ধরনের হুমকির শিকার হয়েছেন। এছাড়া, ফ্লোরিডার রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান ম্যাট গেটজ বোমা হামলার হুমকি পাওয়ার পর সম্প্রতি ট্রাম্প প্রশাসনের অ্যাটর্নি জেনারেলের পদ থেকে নিজের মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন।

হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে যে, এসব হুমকির ঘটনাগুলো বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে জানানো হয়েছে। এফবিআই জানিয়েছে, তারা স্থানীয় পুলিশদের সঙ্গে সমন্বয় রেখে এই বিষয়গুলো খতিয়ে দেখছে।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত