রাজধানীর উত্তরাতে উদ্বোধন হলো ফাউন্ডার্স কমিউনিটি ক্লাবের অফিস। আজ (বুধবার, ৩১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় উত্তরার ৯ নং এভিনিউ এর ১৫/ডি সেক্টরের ডেরা সেন্টারে ক্লাবের অফিস উদ্বোধন করা হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে ক্লাব প্রেসিডেন্ট এবং যান্ত্রিক-এর কো ফাউন্ডার ও চিফ অপারেটিং অফিসার বিপ্লব চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, আমাদের যাত্রা শুরুর পর সরকারি নিবন্ধন পাওয়া ছিলো আমাদের স্বপ্নের প্রথম যাত্রা। আর আজকের এই অফিস উদ্বোধন আমাদের স্বপ্নের ২য় যাত্রা।
তিনি আরও বলেন, আমরা নিকট আগামীতে একটা নিজস্ব জায়গা নিবো, নিজস্ব ভবনে আমাদের নিজস্ব অফিস হবে। সেখানে ক্লাব মেম্বারদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম বিষয়ক আলোচনার পাশাপাশি নেটওর্য়াকিং, বিনোদন ও খেলাধুলার আধুনিক সকল সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা থাকবে।
উপস্থিত সকল ফাউন্ডার্সদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ক্লাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং আমার পে লি.-এর ম্যানাজিং ডিরেক্টর ইশতেয়াক সারোয়ার। তিনি বলেন, এই ক্লাবের উদ্যোগে ফাউন্ডার্সদের লিগ্যাল এইড, ফান্ড রেইজিং, নেটওয়াকিংসহ টোটাল একটা ইকো সিস্টেম ডেভলপ করা হবে। সেই সাথে এখানে সকলের পরিবারিক মিলন মেলার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠবে।
দেশীয় শীর্ষস্থানীয় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান চালডালের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা জিয়া আশরাফ বলেন, এই ক্লাবে বিজনেস প্রাকটিসের পাশাপাশি সোশ্যাল প্রাকটিসের মাধ্যমে সদস্যদের বিজনেস গ্রোথ নিশ্চিত করা হবে।
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্যে সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটি ও যাচাই ডট কম-এর প্রতিষ্ঠাতা ইঞ্জি. আবদুল আজিজ ঘোষণা দেন, ক্লাবের স্থায়ী অফিসের বিষয়ে তিনি তাঁর সাধ্যমত সার্বিক সহযোগিতা করবেন।
অন্যান্য উপস্থিতির মধ্য থেকে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ব্যাবোলিন গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা মোঃ লিয়াকত হোসাইন, সেবা এক্সওয়াইজেড-এর সহপ্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ ইলমুল হক সজীব, জেসিআই ঢাকা ইমিনেন্টের প্রেসিডেন্ট মোঃ ইমরান কাদীর এবং নিজল ক্রিয়েটিভ-এর চিফ ফটোগ্রাফার ও সিইও আবু সুফিয়ান নিলাভ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ঢাকা ১৮ আসনের সংসদ সদস্য জনাব খসরু চৌধুরীর পক্ষে শুভেচ্ছা বিনিময় ও বক্তব্য রাখেন তাঁর ছোট ভাই ডাঃ সানজিত।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ক্লাব সেক্রেটারি এবং লিভিংটেক্স-এর সিইও জাকের জাহান শুভ্র।
উল্লেখ্য, প্রযুক্তি জগতের স্টার্টআপ উদ্যোক্তাদের সামাজিক, শারীরিক, মানসিক এবং মানসিক স্বাস্থ্য এবং সুস্থতার লক্ষ্যে ২০২৩ সালের ২রা মার্চ ফাউন্ডার্স কমিউনিটি ক্লাব লিমিটেড গঠিত হয়।
ক্লাব কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের জন্য ক্লাবের মাধ্যমে স্টার্টআপ এবং আইটি সেক্টরের স্মার্ট এন্টারপ্রাইজগুলিতে সম্মিলিতভাবে অবদান রাখতে চান তারা। পাশাপাশি তরুণ-তরুণীদের কারিগরি প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে দেশ ও জাতিকে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য প্রস্তুত করতে এবং উদ্যোক্তাদের মধ্যে আন্তঃসংযোগ ও সম্পর্কের বিকাশ এবং একে অপরের ব্যবসা বৃদ্ধিতে সহায়তা করায় ভূমিকা রাখা এই ক্লাবের লক্ষ্য।
হোমমেইড আচার ব্র্যান্ড ‘পুত্রবধূ’র প্রতিষ্ঠাতা শারমিন সুলতানা একজন সাহসী ও আত্মপ্রত্যয়ী নারী। তার এই উদ্যোগের পেছনে রয়েছে অনুপ্রেরণাদায়ী এক গল্প।
রোজকার খবরের বিশেষ প্রতিনিধি ফারজানা জিতুর কাছে নিজের উদ্যোক্তা জীবনের গল্প বলেছেন শারমিন। জানিয়েছেন ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও নানা ভাবনা। উদ্যোক্তাদের জীবন ও ভাবনা নিয়ে শিল্পপুরাণ ও আরশিনগরের সৌজন্যে রোজকার খবরের নিয়মিত আয়োজনের অংশ হিসেবে আজ প্রকাশিত হল এই বিশেষ প্রতিবেদন।
শারমিনের উদ্যোগের নাম ‘পুত্রবধূ’ দেওয়ার পেছনে একটি বিশেষ কারণ রয়েছে। বিয়ের পর তিনি যখন তার উদ্যোক্তা জীবন শুরু করেন, তখন তিনি ছিলেন তার শ্বশুরবাড়ির একমাত্র পুত্রবধূ। এই বিষয়টি মাথায় রেখেই তিনি তার ব্র্যান্ডের নাম দেন ‘পুত্রবধূ’। গত সাড়ে তিন বছর ধরে অনলাইনে সুনামের সঙ্গে হোমমেইড আচার বিক্রি করছে ‘পুত্রবধূ’।
শারমিন বেড়ে উঠেছেন গ্রামের মুক্ত পরিবেশে। কিন্তু ২০২০ সালে করোনাকালে বিয়ে হয়ে ঢাকায় এসে তাকে একটি নতুন জীবনের মুখোমুখি হতে হয়। শহুরে জীবনের সাথে মানিয়ে নিতে এবং সেই সময়কার মৃত্যু ও অনিশ্চয়তার সংবাদ দেখে তিনি ক্রমশ হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। কাজের অভাব এবং অবসর সময় ফেসবুকে কাটিয়ে তার মন আরও ভারাক্রান্ত হয়ে উঠছিল।
তখনই তার স্বামী তাকে অনলাইন বিজনেস শুরুর প্রস্তাব দেন। শারমিন গ্রামে থাকতে আচার বানাতে ভালোবাসতেন। সেই ভালোবাসা থেকেই তিনি তার উদ্যোক্তা জীবনের যাত্রা শুরু করেন।
উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার পেছনে শারমিনের স্বামী এবং শ্বশুরের পূর্ণ সমর্থন ছিল। তবে শাশুড়ি এবং বাবার বাড়ির লোকজন তাকে নিয়ে সন্দিহান ছিলেন। শাশুড়ি বলতেন, “তুমি আমার একমাত্র বউমা। তুমি আচার সেল করবা, সমাজের লোকজন তো হাসবে।” অন্যদিকে, তার বাবা চেয়েছিলেন তিনি পড়াশোনা শেষ করে সরকারি চাকরি করুন।
তবে শারমিন ও তার স্বামী পরিবারের সবাইকে অনলাইন ব্যবসার গ্রহণযোগ্যতা বোঝাতে সক্ষম হন। আজ সেই শাশুড়ি এবং বাবার বাড়ির লোকজনও তার কাজে গর্ববোধ করেন এবং তাকে সমর্থন করেন।
শারমিনের জন্য পরিবারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে ব্যবসা শুরু করা সহজ ছিল না। কিন্তু তার স্বামীর অকুণ্ঠ সমর্থন ও পরামর্শ তাকে এই পথচলায় আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে। পেজ খোলা থেকে শুরু করে কাস্টমারদের সাথে যোগাযোগ, প্যাকেজিং– এসব বিষয়ে তার স্বামী তাকে হাতে-কলমে শিখিয়েছেন।
শারমিন মনে করেন, চাকরির আশায় বসে না থেকে স্টুডেন্ট লাইফ থেকেই ছোট পরিসরে কাজ শুরু করা উচিত। তিনি নতুন উদ্যোক্তাদের প্রতি বলেন, ব্যবসা শুরু করতে বড় মূলধনের প্রয়োজন নেই। রিসেলার হিসাবে শূন্য পুঁজি দিয়ে শুরু করেও সফল হওয়া সম্ভব। পরবর্তীতে সেই লাভ থেকে নিজস্ব উদ্যোগ শুরু করা যেতে পারে।
শারমিনের স্বপ্ন, তার ‘পুত্রবধূ’ ব্র্যান্ডটি শুধু দেশের ৬৪ জেলাতেই নয়, আন্তর্জাতিক পর্যায়েও সুনাম অর্জন করুক। তিনি চান দেশের নারীরা আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠুক। প্রয়োজনে তিনি তাদের আচার বানানোর কৌশল শিখিয়ে সাহায্য করতে প্রস্তুত।
শারমিন সুলতানার গল্প একটি প্রমাণ যে, কঠোর পরিশ্রম, আত্মবিশ্বাস এবং পরিবারের সমর্থন থাকলে যে কেউ সফল হতে পারে। তার মতো নারীরা বাংলাদেশে উদ্যোক্তা আন্দোলনের পথিকৃৎ। শারমিন বিশ্বাস করেন, নারীরা এগিয়ে গেলে সমাজ আরও এগিয়ে যাবে।
জেসিআই ঢাকা পাইওনিয়ারে নতুন বছরের লোকাল প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন মো. তাসদীখ হাবীব।
সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) রাজধানীর এসকর্ট প্লেসে অনুষ্ঠিত জেসিআই ঢাকা পাইওনিয়ারের চতুর্থ জেনারেল মেম্বারশিপ মিটিং (জিএমএম) এবং জেনারেল অ্যাসেম্বলিতে তার নাম ঘোষণা করা হয়। মিটিংয়ে ইলেকশন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ২০২৩ সালের প্রেসিডেন্ট আল শাহারিয়ার।
অনুষ্ঠানে জেসিআই ঢাকা পাইওনিয়ারের ফাউন্ডিং প্রেসিডেন্ট ইলিয়াস মোল্লা, ২০২৩ সালের প্রেসিডেন্ট আল শাহারিয়ার, ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট ফিলকুল আহমেদ, ২০২৪ সালের মেন্টর এবং ন্যাশনাল ভাইস প্রেসিডেন্ট ফজলে মুনিব এবং ন্যাশনাল এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট আরেফিন রাফি আহমেদ সহ বিভিন্ন চ্যাপ্টারের এলপিরা উপস্থিত ছিলেন।
নির্বাচিত অন্যান্য সদস্যরা হলেন- এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. তৌহিদুল ইসলাম, ভাইস প্রেসিডেন্ট নূরুন নবী হাসান, ভাইস প্রেসিডেন্ট সৈয়দ উসওয়াত ইমাম, সেক্রেটারি জেনারেল মো. শরিফুল ইসলাম, জেনারেল লিগাল কাউন্সিল মোহতারিমা রহমান, ট্রেজারার পারভেজ, ডিজিটাল কমিটি চেয়ার আপেল মাহমুদ রিয়াদ, পিআর ও মিডিয়া কমিটি চেয়ার জোবায়ের ইসলাম, ডিরেক্টর দাবিরুল ইসলাম দীপু, ডিরেক্টর আরিফুর রহমান ভূঁইয়া। অনুষ্ঠানে ২০২৫ সালের নতুন বোর্ডের সদস্যরা শপথ গ্রহণ করেন।
নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মো. তাসদীখ হাবীব বলেন, “আমি পাইওনিয়ারকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে চাই। নতুন সদস্য সংগ্রহ এবং সক্রিয় সদস্যের অংশগ্রহণ বাড়ানোই হবে আমাদের অগ্রাধিকার।”
বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ফিলকুল আহমেদ নতুন নেতৃত্বকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, “আমার মেয়াদকালে পাইওনিয়ারের সঙ্গে কাজ করা একটি অসাধারণ অভিজ্ঞতা ছিল। আমরা এই বছর অনেক কিছু অর্জন করেছি, যা নতুন নেতৃত্বের জন্য একটি শক্তিশালী ভিত্তি তৈরি করবে। আমি বিশ্বাস করি, তারা আমাদের অর্জনকে আরও বড় সাফল্যে রূপান্তর করবে।”