রাজনীতি

রাজনীতি

দেশের সবচেয়ে বড় ভারতীয় প্রডাক্ট আওয়ামী লীগ : নুর

আওয়ামী লীগকে দেশের সবচেয়ে বড় ভারতীয় প্রডাক্ট বলে মন্তব্য করে তাদেরকে বর্জনের আহ্বান জানিয়েছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর।

আজ শুক্রবার বিকালে গণতন্ত্র-ভোটাধিকার, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ভিন দেশী আধিপত্য ও আগ্রাসন বিরোধী সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে গণঅধিকার পরিষদ। জাতীয় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। প্রেসক্লাবের সামনে থেকে মিছিল শুরু করে পল্টন মোড়, দৈনিক বাংলা মোড়, ফকিরাপুল, বিএনপির দলীয় কার্যালয়, নাইটিংগেল মোড় ঘুরে বিজয়নগর পানিরট্যাংকির মোড়ে এসে শেষ হয়।

সমাবেশে নুরুল হক নুর বলেন, বাংলাদেশ এখন বহুমুখী সংকটে পতিত। একদিকে দীর্ঘদিনের ভারতীয় আগ্রাসন। এদেশে কারা সরকারে থাকবে, বিরোধী দল কারা হবে। কে এমপি, মন্ত্রী হবে, কে প্রশাসনের শীর্ষ পদে নিয়োগ পাবে তা ঠিক করে দেয় ভারত। আজ সর্বত্র ভারতীয় আধিপত্য। ভারতীয় আগ্রাসন থেকে দেশকে রক্ষায় ভারতীয় পণ্য বর্জনের যে আন্দোলন চলছে, তা শহর থেকে গ্রাম,পাড়া-মহল্লা সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে হবে। পাশাপাশি এদেশের সবচেয়ে বড় ভারতীয় প্রডাক্ট আওয়ামী লীগকে বর্জন করতে হবে। বাংলাদেশে থাকা ভারতীয় এজেন্টদের চিহ্নিত করতে হবে। এ দেশে ১০ লাখের বেশি অবৈধ ভারতীয় লোক রয়েছে, তাদেরকে চিহ্নিত করতে হবে। ভারতের পাশাপাশি এখন সমস্যা তৈরি করছে চীন। রাখাইনে চীন, ভারত বিনিয়োগ করেছে। তারা জান্তা সরকারকে সহযোগিতা করছে, বিদ্রোহীদের সাথেও যোগাযোগ রাখছে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবসনে বাংলাদেশকে কোন সহযোগিতা করছে না। সরকারের নৈতিক ভিত্তি না থাকায় অন্য দেশগুলো পাত্তা দিচ্ছে না বরং তাদের স্বার্থে ব্যবহার করছে। ভারত তাদের স্বার্থে বিনা ভোটের জনবিচ্ছিন্ন এই সরকারকে সমর্থন দিচ্ছে। বাংলাদেশকে নিরাপত্তা ঝুঁকিতে ফেলে নামেমাত্র ফিতে ট্রানজিটে ভারত তার পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোয় পণ্য পরিবহন করছে। কোন দেশপ্রেমিক মানুষ এভাবে দেশকে ঝুঁকিতে ফেলে অন্য দেশকে সুবিধা দিবে না। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকতে ভারতকে সব দিচ্ছে। জাফরুল্লাহ চৌধুরী অনেক আগেই বলেছিলো বাংলাদেশের উচিত বাংলাদেশে থাকা রোহিঙ্গাদের অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের দেশে পাঠানো। এখন মনে হচ্ছে সেটাই সঠিক।

নুর বলেন, ১৫ বছর টানা ক্ষমতায় থাকার পর এখন প্রধানমন্ত্রীও বলছেন, চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে। চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা কারা করছে? সরকারি দলের নেতা-কর্মী ও স্থানীয় প্রশাসন। মাদক যুব সমাজকে গ্রাস করছে। ১৫২৫ বছরের ৪১% তরুণ পড়াশোনা বা চাকরিতে নেই,।অর্থনৈতিক সংকট থেকে দেশকে উত্তরণ, ইউরোপ-আমেরিকার পোশাকের ক্রেতা কমছে, নতুন বাজার খোঁজা, নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি, এগুলো নিয়ে সংসদে আলোচনা হয় না। সংসদ এখন ভোটডাকাতদের ক্লাবে পরিণত হয়েছে। জনগণকে নিয়ে তাদের ভাবনা নেই। তারা সবাই টাকা-পয়সা কামানোর ধান্দায়।

দলের সাধারণ সম্পাদক মোঃ রাশেদ খাঁন বলেন, ‘আজকাল সরকার জনগণকে কথায় কথায় হাইকোর্ট দেখায়। কিন্তু হাইকোর্ট দেখিয়ে ক্ষমতা টিকিয়ে রাখা যাবে না। সবকিছুর শেষ আছে, ফেরাউন-হিটলারেরও পতন হয়েছে। সুতরাং আপনাদেরও বিদায় নিতে হবে। বিদেশি প্রভুরা আপনাদের রক্ষা করতে পারবে না। আওয়ামী লীগের ভারতীয় তাবেদারগিরির কারণে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব আজ হুমকির মুখে। সুতরাং দেশের সকল দেশপ্রেমিক জনগণের উচিত ভারতীয় তাবেদার মুক্ত বাংলাদেশ গড়া। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্যাম্পেইন চলছে, ভারতীয় পণ্য বর্জন করুন। যাদের মধ্যে দেশপ্রেম আছে, তারা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে শামিল হতে অবশ্যই ভারতীয় পণ্য বর্জন করবে। আমরা পাকিস্তানকে শত্রু মনে করি, আর ভারতকে বন্ধু মনে করি। কিন্তু আসল শত্রুকে আজকে চিহ্নিত করার সময় এসেছে। ভারত চায় না বাংলাদেশ এগিয়ে যাক, যেকারণে বাংলাদেশকে ব্যর্থ ও পঙ্গু রাষ্ট্র বানানোর সমস্ত নীলনকশা আওয়ামী লীগের মাধ্যমে করছে। কিন্তু দেশপ্রেমিক জনগণ তা বুঝতে পেরেছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনের পরে যখন থেকে আমাদের রাজনৈতিক সংগ্রাম শুরু হয়েছে, আমরা ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার আছি। ভারতের জনগণের NRC ও CAA বিরোধী আন্দোলনের সময় আমরা সংহতি জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আন্দোলন শুরু করলে এদেশীয় ভারতীয় এজেন্টরা আমাদের হত্যা চেষ্টা করে। আজকে অলিতে-গলিতে ভারতীয় এজেন্ট। লাখ লাখ ভারতীয়রা টুরিস্ট ভিসায় এসে অবৈধভাবে চাকরি করে কোটি কোটি ডলার নিয়ে যাচ্ছে। একারণে গতকাল প্রেসক্লাবে একটি সচেতন মহল, যেখানে সেনাবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা ও আইনজীবীরা রয়েছেন; তারা ভারত খেদাও, বাংলাদেশ বাঁচাও আন্দোলন শুরু করেছে। ভারতকে বলবো, আওয়ামী লীগের সাথে একপাক্ষিক সম্পর্ক না করে এই দেশের জনগণের সাথে সম্পর্ক করুন। অন্যথায় ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জনগণের আন্দোলন থামাতে পারবেন না।

গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রবিউল হাসানের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ, শহিদুল ইসলাম ফাহিম, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক তোফাজ্জাল হোসেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি নাজিম উদ্দিন, উত্তরের সভাপতি মিজানুর রহমান, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ মামুন, সাধারণ সম্পাদক নাদিম হাসান, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আব্দুুর রহমান, ছাত্র অধিকার পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তারিকুল ইসলাম প্রমুখ।

বিষয়:
পরবর্তী খবর

চাঁপাইনবাবগঞ্জে আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন

চাঁপাইনবাবগঞ্জে দিনভর নানান কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয়েছে। রবিবার সকালে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য শুরু হয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান। পরে নেতাকর্মীরা শহরের বঙ্গবন্ধু মঞ্চে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান।

বিকালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সরকারি কলেজে শহীদ মিনার চত্বরে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য মুঃ জিয়াউর রহমানের সভাপতিত্বে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন– জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল ওদুদ, চাঁপাইনবাবগঞ্জের নারী সংসদ সদস্য জারা জাবীন মাহবুবসহ অনান্যরা।

পরে নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণে শহরে বিশাল শোভাযাত্রা বের হয়ে বিভিন্ন সড়ক ঘুরে আবারও অনুষ্ঠান স্থলে এসে শেষ হয়। শেষে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেক কাটেন জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনের এ আয়োজনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা ছাড়াও জেলার অনান্য উপজেলা থেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এসে যোগ দেয়। এতে শহর জুড়েই যেন ছিলো উৎসব।

পরবর্তী খবর

জিয়ার জন্ম না হলে বাংলাদেশের জন্ম হত না : রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী মন্তব্য করেছেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়ার জন্ম না হলে বাংলাদেশের জন্ম হত না, বাংলাদেশ স্বাধীন হত না

জিয়াউর রহমানের ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিক উপলক্ষে ৩মে সোমবার বিকাল ৪টায় বিডি হলে যশোর জেলা বিএনপির উদ্যোগে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপিকা নার্গিস বেগমের সভাপতিত্বে ও সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। এসময় তিনি বলেন, দেশের এই ক্রান্তিকালে আজ বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী পালন করতে হচ্ছে, এই জিয়ার জন্ম না হলে বাংলাদেশের জন্ম হত না, বাংলাদেশ স্বাধীন হত না। অথচ সেই স্বাধীনদেশে আমরা স্বাধীনভাবে চলতে পারি না, স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারি না। এই দেশে আমরা স্বাভাবিক মৃত্যুর আশা করতে পারি না। তাই সময় এসেছে আরও একবার যুদ্ধ করে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পতন ত্বরান্বিত করতে হবে এবং আগামীর রাষ্ট্র নায়ক, আমাদের অহংকার দেশনায়ক তারেক রহমান হাসিনা পতনের যে কর্মসূচি দেবেন তা আমরা রাজপথে পালন করব ও সফল করব।

এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ‍্য ইসলাম অমিত, এসময় অন‍্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন ডা. রফিকুল ইসলাম, বাবু জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, বাবু অমলেন্দু দাস অপু, জাহানারা সিদ্দিকী, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাড. সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু ও মফিকুল হাসান তৃপ্তি সাবেক সাংসদ, মিজানুর রহমান খান, আবুল হোসেন আজাদ, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য সাবিরা নাজমুল।

আরও উপস্থিত ছিলেন শার্শা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক খাইরুজ্জান মধু, ঝিকরগাছা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোর্তজা এলাহী টিপু, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল হাসান জহির, কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ সভাপতি নুরুজ্জামান লিটন, জেলা যুবদলের সভাপতি এম তমাল আহমেদ, সম্পাদক আনসারুল হক রানা, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার রবিউল ইসলাম, সম্পাদক মোস্তফা আমির ফয়সাল, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি রাজিদুর রহমান সাগর, সম্পাদক কামরুজ্জামান বাপ্পীসহ বিএনপির অংগ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত