বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর উইলো সিলেটের উইকেটে টেস্টের প্রথম দিনে যে সাবলীলতা দেখাচ্ছিল তা থেমেছে একটি পাগলামিতে। ৩৫ বলে ৩৭ রান করে পার্টটাইম বোলার ফিলিপসের ফুলটস বলে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরে দলকে বিপদে ফেলে সাজঘরে ফেরা অধিনায়ক এখন কাঠগড়ায়।
দিনের খেলা শেষে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকরা অনেকেই হয়তো অধিনায়ককেই সংবাদ সম্মেলনে প্রত্যাশা করেছিলেন। কিন্তু এলেন দলের টপ স্কোরার ওপেনার জয়। শতক মিস করার আক্ষেপ থাকলেও দিনশেষে ৩শ পেরুনোতে তৃপ্তি খুঁজছেন তিনি। তবে ব্যাটারদের বড় ইনিংস খেলার ব্যর্থতায় দায় দিলেন। এলো শান্ত প্রসঙ্গ।
শান্তর এমন আউটে জয় বললেন, পার্টটাইম বোলারকে চার্জ করে খেলা ছিল পরিকল্পনার অংশ। আর এক একজনের এক এক রকম গেম প্ল্যান। সোজাসাপটা এমন উত্তরে অবশ্য দায় এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। বলেছেন, ‘ইনিংসগুলো হতে পারত আরও পরিপক্ব। আর প্রতিদিন এমন সুযোগ তো আর আসে না।’
সেট হয়ে বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানরা উইকেট বিলিয়ে দিয়ে এসেছেন। ৩৫০ থেকে ৩৮০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশের এখন পর্যন্ত সংগ্রহ করা ৯ উইকেটে ৩১০ রানকে পর্যাপ্তই বলছেন জয়। এই ওপেনার বলছেন, বাকি কাজটা স্পিনারদের।
ফিলিপসকে কোনো স্পেস দিতে চায়নি বাংলাদেশ। তাকে চার্জ করে খেলাই ছিল দলের পরিকল্পনা। সেখানেই বাজে শট খেলে আউট হয়ে এসেছেন ব্যাটসম্যানরা, জানালেন জয়। জানালেন, উইকেট ব্যাটিং সহায়ক হলেও টার্ন আর মুভ আছে। যা কি না বাংলাদেশের স্পিনারদের জন্য হবে সহায়ক। কিউইদের সেখানেই আটকে ফেলতে চায় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় দিনে উইকেটের আচরণ কেমন হবে, সেটি একটি বড় ফ্যাক্টর। টেস্টটা নিজেদের করতে হলে দ্বিতীয় দিনটা গুরুত্বপূর্ণ। আর দলের স্পিনারদের ওপরই মূল দায়িত্ব বলে মনে করছেন তিনি।
একসময়ের কিপার-ব্যাটসম্যান গ্লেন ফিলিপস এখন অলরাউন্ডার হয়ে ওঠার চেষ্টায় আছেন। সীমিত ওভারে প্রায় নিয়মিতই বোলিং করছেন। টেস্টেও উইকেট পাওয়া নিয়ে সম্ভাব্য অনেক ছবি কল্পনার চোখে তিনি এঁকেছেন। তবে শেষ পর্যন্ত কাক্সিক্ষত প্রথম শিকার যেভাবে ধরা দিল, তার ভাবনার সীমানায় ছিল না এমন কিছু।
‘অনেক দিন ধরেই প্রথম টেস্ট উইকেট নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখে আসছি আমি। তবে এভাবে সেই উইকেট পাব, অবশ্যই তা ভাবিনি! অনেক সময় দেখা যায়, লেগ স্পিনাররা দুর্দান্ত সব ডেলিভারি করতে করতে হুট করে ফুল টস করে বসে। ব্যাটসম্যানদের চোখ জ্বলজ্বল করে ওঠে, জোরে মারতে গিয়ে ক্যাচ উঠে যায়। আমারও সবসময় মনে হয়েছে, এরকম কিছু হলে খারাপ নয়। তবে প্রথম টেস্ট উইকেট অবশ্যই এভাবে চাইনি!’
এভাবে উইকেট নিয়ে মজা পেলেও শান্তর প্রতি সহানুভূতি অবশ্য আছে ফিলিপসের। ‘ফুল টসে আমিও আউট হয়েছি। সব ব্যাটসম্যানই ফুল টসে আউট হয় কখনো না কখনো। আজ আমার স্রেফ ভাগ্য ভালো ছিল।’
সেই ভাগ্যটা হয়তো তৈরি করেছেন তিনি নিজেই। পরিশ্রম দিয়েই নিজেকে ভেঙে গড়ে চলেছেন। যেভাবে এগোচ্ছেন, সামনে হয়তো তাকে অলরাউন্ডার বললে আর ভ্রু কুঁচকে যাবে না কারও!
বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট দল ভারতকে ৫৯ রানে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বার এশিয়া কাপ জিতেছে। প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে হারার পর টানা জিতে চলেছিল ভারত। তবে বড় প্রতিপক্ষ হিসেবে হাজির হলেও বাংলাদেশ তার শক্তিশালী ব্যাটিং ও বোলিংয়ের মাধ্যমে ভারতের দাপটকে ভেঙে দিয়েছে। ফাইনালে বাংলাদেশ ১৯৮ রান তুলে ভারতকে ১৩৯ রানে গুটিয়ে দেয়।
বাংলাদেশের ইনিংসে শিহাব জেমস (৪০) ও রিজান হোসেন (৪৭)-এর গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস ছিল। উইকেটকিপার ফরিদ হাসানও ৩৯ রান করে দলের স্কোর বাড়াতে সহায়তা করেন। বাংলাদেশ দলের পেসাররা, বিশেষ করে ইকবাল হোসেন ইমন (১৩ উইকেট) ও আল ফাহাদ (১২ উইকেট), পুরো টুর্নামেন্টে দাপট দেখিয়েছেন। ফাইনালে ইমন তিনটি উইকেট নিয়ে ভারতের ব্যাটিংয়ের ভিত গুঁড়িয়ে দেন।
ভারতের পক্ষে কোনো ব্যাটসম্যান ৩০ রান পেরোতে পারেননি। ১৩৯ রানেই ভারত শেষ হয়ে যায়।
এশিয়া কাপের ইতিহাসে এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় শিরোপা। গত বছর বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো শিরোপা জিতেছিল।
জাঁকজকমকপূর্ণ আয়োজনের মধ্য দিয়ে ইয়ং টাইগার্স অনূর্দ্ধ-১৮ জাতীয় ক্রিকেট টুর্নামেন্ট-২৪-২৫ (বিভাগীয় পর্যায়) উদ্বোধন করা হয়। রোববার শহীদ মোহাম্মদ আলী স্টেডিয়ামে বেলুন উড়িয়ে টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা।
জেলা ক্রীড়া সংস্থার আয়োজনে ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের ব্যবস্থাপনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বেলায়েত হোসেন, জেলা ক্রিকেট কোচ রোকনুজ্জামান রাহাত প্রমুখ।
উদ্বোধনী খেলায় পঞ্চগড় জেলা টিম জয়লাভ করে। ৫০ ওভারের খেলায় টসে জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় পঞ্চগড় টিম। ব্যাটিংয়ে লালমনিরহাট টিম ২০ ওভার ৩ বল খেলে ১০ উইকেটে ৫২ রান করে। জবাবে পঞ্চগড় জেলা টিম ১৭ ওভার ২ বল খেলেই ৩ উইকেটেই জয় নিশ্চিত করে ৭ উইকেটে জয়লাভ করে।
উল্লেখ্য, টুর্নামেন্টটি বিভাগীয় ২টি ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর মধ্যে ঠাকুরগাঁও ভেন্যুতে মোট ৪টি টিম অংশগ্রহণ করছে। টিমগুলো হলো পঞ্চগড়, লালমনিরহাট, দিনাজপুর ও নীলফামারী টিম। অপরদিকে লালমনিরহাট ভেন্যুতে ঠাকুরগাঁও, রংপুর, গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রাম টিম অংশগ্রহণ করছে।