নন্দিত লেখক কাজী আনোয়ার হোসেনের তিন শতাধিক গল্পে নায়ক মাসুদ রানা। ছাপার অক্ষরে দেশের সফলতম গোয়েন্দা চরিত্র এটি। গল্পের এই কালজয়ী চরিত্র সিনেমার পর্দায়ও এসেছে।
গেলো বছর মুক্তি পাওয়া আলোচিত সিনেমা ‘এমআর-৯: ডু অর ডাই’ ছিল মাসুদ রানা সিরিজেরই প্রথম বই ‘ধ্বংস পাহাড়’ অবলম্বনে নির্মিত।
যদিও ছবিটি কাঙ্ক্ষিত সাড়া পায়নি। তবে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়া হাল ছাড়ছে না। ফের মাসুদ রানার গল্প নিয়ে আসছে রূপালি পর্দায়। সোমবার (২২ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় খবরটি নিশ্চিত করেছেন জাজ-এর কর্ণধার আব্দুল আজিজ।
তিনি জানান, এবার মাসুদ রানা সিরিজের ‘অপারেশন চিতা’ গল্পটি নিয়ে ছবি বানাবেন তারা। আগামী ২৮ জানুয়ারি ছবিটি নিয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা অর্থাৎ মহরত সারবেন। আজিজ বলেন, ‘ছবির নাম রাখা হয়েছে ‘চিতা’। নির্মাতা ও নায়ক-নায়িকার নাম আপাতত গোপন থাক। মহরতে জানানো হবে। তবে এটুকু বলতে পারি, কাস্টিংয়ে অনেক বড় চমক থাকবে।’
আজিজ জানালেন, বাংলাদেশের পাশাপাশি থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া ও ভিয়েতনামে হবে ‘চিতা’র চিত্রায়ন। আগামী মার্চেই শুরু হবে শুটিং। নির্মাণ শেষে বিশ্বব্যাপী ৩০টির বেশি দেশে ছবিটি বাংলা ও ইংরেজি দুই ভাষায় মুক্তি দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, ‘অপারেশন চিতা’ বইটি প্রকাশ হয়েছিল ১৯৯১ সালে। মাসুদ রানা সিরিজের অন্যসব বইয়ের মতো এটিও প্রকাশ করেছিল সেবা প্রকাশনী।
প্রসঙ্গত, ‘মাসুদ রানা’ সিরিজ নিয়ে প্রথম সিনেমা নির্মিত হয় ১৯৭৪ সালে। যেখানে নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন সোহেল রানা। এরপর গত চার দশকে আর পর্দায় পাওয়া যায়নি চরিত্রটিকে। শেষমেশ জাজ মাল্টিমিডিয়া উদ্যোগ নেয়, মাসুদ রানা সিরিজের কয়েকটি গল্প সিনেমায় তুলে আনবে। যার একটি ‘এমআর-৯’; মুক্তি পায় গত বছরের ২৫ আগস্ট। আসিফ আকবরের পরিচালনায় ছবিটিতে মাসুদ রানার ভূমিকায় অভিনয় করেছেন এবিএম সুমন। এছাড়াও ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্রাঙ্ক গ্রিলো, কেলি গ্রেসন, ভারতের সাক্ষী প্রধান, বাংলাদেশের জেসিয়া ইসলাম প্রমুখ।
বাংলাদেশের খ্যাতিমান অভিনেতা প্রবীর মিত্র আর নেই। রোববার (৫ জানুয়ারি) রাত ১০টা ১০ মিনিটে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন তার ছোট ছেলে সিফাত ইসলাম।
শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগরও প্রবীর মিত্রের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘প্রবীর মিত্র আর আমাদের মাঝে নেই। অঞ্জনার পর তার মৃত্যু আমাদের আরও বিমর্ষ করে দিল।’
দাফন ও জানাজা
প্রবীর মিত্রের দাফন ও জানাজার বিষয়ে অভিনেতা মিশা সওদাগর জানান, রাতে তার মরদেহ ধানমন্ডির বাসায় রাখা হবে। পরদিন বাদ জোহর মরদেহ এফডিসিতে আনা হবে। সেখানে প্রথম জানাজা শেষে মরদেহ নেওয়া হবে চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে। সেখানে দ্বিতীয় জানাজা শেষে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হবে। পরে প্রবীর মিত্রের পুত্রবধূ সোনিয়া ইসলামও একই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জীবনের শেষ দিনগুলো
৮১ বছর বয়সী প্রবীর মিত্র দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। অক্সিজেন স্বল্পতাসহ বিভিন্ন সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে গত ২২ ডিসেম্বর তাকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে ১৩ দিন ধরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছিলেন তিনি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়।
প্রবীর মিত্রের জীবন ও ক্যারিয়ার
১৯৪৩ সালের ১৮ আগস্ট কুমিল্লার চান্দিনায় জন্মগ্রহণ করেন প্রবীর মিত্র। তার পুরো নাম প্রবীর কুমার মিত্র। পুরান ঢাকায় বড় হওয়া প্রবীর মিত্র স্কুলজীবন থেকেই নাট্যচর্চার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। স্কুলে পড়াকালীন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ডাকঘর’ নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে তার নাট্যযাত্রা শুরু হয়।
১৯৬৯ সালে প্রয়াত এইচ আকবর পরিচালিত ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে তার। যদিও এই চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায় ১৯৭১ সালের ১ জানুয়ারি। ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে তিনি নায়ক হিসেবে কয়েকটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন। পরে চরিত্রাভিনেতা হিসেবে কাজ করেও তিনি দর্শকদের মাঝে দারুণ জনপ্রিয়তা অর্জন করেন।
উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র
প্রবীর মিত্রের অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলো হলো ‘তিতাস একটি নদীর নাম’, ‘জীবন তৃষ্ণা’, ‘সেয়ানা’, ‘জালিয়াত’, ‘ফরিয়াদ’, ‘রক্ত শপথ’, ‘চরিত্রহীন’, ‘জয় পরাজয়’, ‘অঙ্গার’, ‘মিন্টু আমার নাম’, ‘ফকির মজনু শাহ’, ‘মধুমিতা’, ‘অশান্ত ঢেউ’, ‘অলংকার’, ‘অনুরাগ’, এবং ‘প্রতিজ্ঞা’।
বাংলাদেশের চলচ্চিত্র জগতে প্রবীর মিত্রের অবদান অমর হয়ে থাকবে। তার মৃত্যুতে শোকাহত পুরো বিনোদন জগৎ ও দর্শকসমাজ।
২০২১ সালে করোনার সময়ে মুক্তি পায় ‘পুষ্পা: দ্য রাইজ’। করোনা শুরুর ঠিক পরপর যখন বক্স অফিসের বেহাল দশা, সেই সময়ে যেন হাল ফেরান আল্লু অর্জুন অভিনীত এই ছবি। সব মিলিয়ে আয়টা ৩’শ কোটি রুপির উপরে। তিন বছর পর ডিসেম্বর মাসের ৫ তারিখে প্রেক্ষাগৃহে এল ছবির দ্বিতীয় পর্ব ‘পুষ্পা: দ্য রুল’। মুক্তির দিন নজির গড়ল এই ছবি। হিন্দি ভাষার সব ছবিকে পেছনে ফেলে প্রথম ভারতীয় ছবি, যা প্রথম দিনেই আয় করল ১৭৫ কোটি রুপি।
তিন দিন পার হলো। আল্লু অর্জুন, রাশমিকা মান্দানা ও ফাহাদ ফাসিল অভিনীত পুষ্পা ২ বক্স অফিসে দুর্দান্ত ফল করছে। বিশ্বব্যাপী ৫০০ কোটি রুপি সংগ্রহ করে ফেলেছে সিনেমাটি।
তৃতীয় দিনে পুষ্পা ২-র বক্স অফিস কালেকশন
হিন্দুস্তান টাইমস অনুসারে, পুষ্পা ২: দ্য রুল ৪ ডিসেম্বর ভারতে প্রিমিয়ারের দিন ১০.৬৫ কোটি রুপি আয় করেছিল। ছবিটি প্রথম দিন বৃহস্পতিবার সংগ্রহ করে ১৬৪.৫ কোটি রুপি এবং প্রথম শুক্রবার ছবির আয় ছিল ৯৩.৮ কোটি রুপি। সংগ্রহ ৪২.৮৯% হ্রাস পেলেও, শুক্রবার ছবিটি ভালো ব্যবসা করতে সক্ষম হয়েছিল।
শনিবার, ছবিটি ভারতে আয় করেছে প্রায় ১১৫.৫৮ কোটি রুপি। আর এই তিন দিনের সংগ্রহকে জুড়লে পুষ্পা ২-এর সংগ্রহ গিয়ে দাঁড়িয়েছে ভারতের বাজারে ৩৮৩ কোটি রুপিতে।
রেকর্ড ভাঙল পুষ্পা ২: দ্য রুল
মুক্তির প্রথম দিনেই ভারতীয় বক্স অফিসে আগের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে পুষ্পা ২: দ্য রুল। এটি এসএস রাজামৌলির আরআরআরকে টপকে শীর্ষস্থান দখল করেছে এবং যে কোনও ভারতীয় চলচ্চিত্রের জন্য সবচেয়ে বড় উদ্বোধনের খেতাব পেয়েছে সুকুমারের পুষ্পা-২। রাম চরণ, জুনিয়র এনটিআর অভিনীত আরআরআর-এর প্রথম দিনে আয় ছিল ১৩৩ কোটি রুপি। সেখান থেকে অনেকেটাই এগিয়ে পুষ্পা ২। এ দিকে হিন্দি ভাষার ছবি হিসাবে এত দিন সর্বাধিক আয়ের মুকুট দখলে রেখেছিল শাহরুখ খানের ‘জওয়ান’। হিন্দি ভাষায় প্রথম দিনের নিরিখে এই ছবির আয় ছিল ৬৫.৫ কোটি। সে দিক থেকে কিছুটা এগিয়ে পুষ্পা ২।