রাজনীতি, সর্বশেষ

রাজনীতি, সর্বশেষ

কলাবাগান মাঠে চলছে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী জনসভা 

আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সিলেট, রংপুর, বরিশাল, গোপালগঞ্জের পর এবার রাজধানীর ধানমন্ডির কলাবাগান মাঠে তিনবারের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নির্বাচনী জনসভা চলছে।

সোমবার দুপুর থেকেই ধানম‌ন্ডির কলাবাগান মাঠে নির্বাচনী জনসভায় রঙিন টি-শার্ট আর ক্যাপ পরে ঢাকার বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ড থেকে দলে দলে মিছিল নিয়ে নৌকার জনসভায় যোগ দিচ্ছেন নেতাকর্মীরা। মহানগর আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা আছেন মিছিলে।

ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত এ নির্বাচনী জনসভায় বিকেলে প্রধান অতিথির ভাষণ দেবেন দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ঢাকার বিভিন্ন আসনের দলীয় প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকরা ঢাকঢোল বাজিয়ে নৌকার পক্ষে স্লোগান দিতে দিতে জনসভায় আসছেন। তাদের হাতে দেখা যাচ্ছে প্রার্থীর ছবি সংবলিত ফেস্টুন।

নির্বাচনী জনসভা প‌রিচালনা করছেন দ‌ক্ষিণ আওয়ামী লী‌গের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন ক‌বির।

জনসভাকে কেন্দ্র করে কলাবাগান মাঠসহ আশপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ব্যাপক উপস্থিতি দেখা গেছে।

জনসভাস্থলে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে ভ্রাম্যমাণ টয়লেট ও পানির গাড়ি রাখা হয়েছে।

নির্বাচনী জনসভায় আওয়ামী লী‌গের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দসহ বি‌ভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপ‌স্থিত রয়েছেন।

বিষয়:
পরবর্তী খবর

শেখ হাসিনার বিদেশে বক্তব্য : রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া ও পরিণতি

আবারও রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার ইঙ্গিত

বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর ভারতে আশ্রয় নেওয়ার প্রায় চার মাস পর, বিদেশে বিভিন্ন স্থানে জনসম্মুখে বক্তব্য দিচ্ছেন। গত সপ্তাহে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে আওয়ামী লীগ আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন এবং আগামী ৮ ডিসেম্বর লন্ডনে একটি অনুষ্ঠানে টেলিফোনে বক্তব্য দেবেন। এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহ্‌মুদ চৌধুরী। এর আগে ইউরোপের দুটি দেশে একইভাবে বক্তব্য দিয়েছিলেন তিনি।
শেখ হাসিনার এসব বক্তব্যকে রাজনীতিতে টিকে থাকার চেষ্টা হিসেবে দেখছে বিএনপি।

ফোনালাপ ফাঁসের পর জন জনসম্মুখে বক্তব্যের গুরুত্ব
গত ৫ আগস্ট ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার কিছু ফোনালাপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফাঁস হয়েছিল। যদিও সেগুলোর সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি, তবে ফোনালাপে তার দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে রাজনৈতিক নির্দেশনা দেওয়া শোনা গেছে। এসব ফাঁস হওয়া কল রেকর্ডগুলোকে বাদ দিলে, ৫ আগস্টের পর এবারই আগাম জানান দিয়ে শেখ হাসিনা জনসম্মুখে বক্তব্য দিচ্ছেন। স্বাভাবিকভাবেই তার এই বক্তব্যের মাধ্যমে কি তিনি আবার রাজনীতিতে সক্রিয় হচ্ছেন?

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক এবং শেখ হাসিনার বক্তব্য
বর্তমানে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে চলমান টানাপোড়েনের মাঝে শেখ হাসিনার সরাসরি বক্তব্য দেওয়ার বিষয়টি বেশ কিছু প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, এটি তার বা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বিরতি ভেঙে ফের রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার লক্ষণ। তবে খালিদ মাহ্‌মুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ বরাবরই রাজনীতিতে সক্রিয়। নতুন করে ফিরে আসার কিছু নেই।’

নিউইয়র্কে দেওয়া বক্তব্যে শেখ হাসিনা দাবি করেছেন, ‘বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়ন চলছে এবং তার ও তার বোন শেখ রেহানাকে খুন করার চক্রান্ত হয়েছিল।’ তিনি আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনা যা বলছেন, তা দেশের স্বার্থে বলছেন। দেশকে দুর্বৃত্তদের হাত থেকে রক্ষা করা আওয়ামী লীগের নৈতিক দায়িত্ব।’

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের নিষেধাজ্ঞা
এদিকে শেখ হাসিনার ‘বিদ্বেষমূলক বক্তব্য’ প্রচারে বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এর আগে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্যও নিষিদ্ধ ছিল, যদিও চলতি বছরের আগস্টে হাইকোর্ট সেই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে। খালিদ মাহ্‌মুদ চৌধুরী এই নিষেধাজ্ঞাকে ‘বাক স্বাধীনতা হরণ’ বলে সমালোচনা করেছেন।

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
রাজনীতি বিশ্লেষক, লেখক, গবেষক মহিউদ্দিন আহমদ মনে করেন, শেখ হাসিনার এসব বক্তব্য ‘ফাঁকা আওয়াজ’ এবং এর মাধ্যমে রাজনৈতিক জল্পনা-কল্পনা বাড়ানো হচ্ছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘শেখ হাসিনার এসব বক্তব্য বাংলাদেশের রাজনীতির জন্য বিদ্বেষমূলক এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বিরুদ্ধে।’

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি মন্তব্য করেছেন, ‘শেখ হাসিনা এবং তার দল রাজনৈতিক নৈতিকতা হারিয়েছে, আর তাদের এসব বক্তব্য বিভ্রান্তিকর।’

ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক ও রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ
শেখ হাসিনার বক্তব্য নিয়ে ভারতীয় হাইকমিশনারের কাছে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। তিনি শেখ হাসিনাকে ভারতে বসে রাজনৈতিক বক্তব্য না দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমদ মনে করেন, শেখ হাসিনার এসব বক্তব্য ভারতের রচনা করা চিত্রনাট্যের অংশ হতে পারে।

তিনি আরও বলেন, ‘এক্সিস্টিং পলটিক্যাল পার্টির জন্য এটি চ্যালেঞ্জ হবে তখন, যখন তারা কাউন্টার করতে না পারে। এটি নির্ভর করে রাজনৈতিক দলগুলোর সক্ষমতার ওপরে। তারা যদি সক্ষম হতে পারে, তাহলে তারা কাউন্টার প্রোপাগান্ডা দিয়ে ওটা সামাল দিবে। তাদের যদি সেই সক্ষমতা না থাকে, তাহলে তারা কিসের রাজনীতি করে? আমার কথা হল, আওয়ামী লীগ বিরোধী যে রাজনৈতিক দলগুলো আছে, তাদেরও নাকি বিদেশে শাখা আছে। এখন তারা কী কাউন্টার প্রোপ্যাগান্ডা করছে, তা আমরা দেখতে চাই। সব তো এক তরফা হওয়ার কথা না।’

শেখ হাসিনার বিদেশে দেওয়া বক্তব্য বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। তার রাজনৈতিক অবস্থান, দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক পরিস্থিতিতে তার ভূমিকা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে। ভবিষ্যতে কী ঘটবে, তা রাজনৈতিক দলগুলোর সক্ষমতার উপর নির্ভর করবে।

সূত্র : বিবিসি

পরবর্তী খবর

সাইফুল হত্যার প্রতিবাদ ও চিন্ময়ের মুক্তি দাবি করে শেখ হাসিনার বিবৃতি

চট্টগ্রামে সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন নামঞ্জুর কেন্দ্র করে সংঘর্ষে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম নিহতের ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

একই বিবৃতিতে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে অবিলম্বে মুক্তি দেয়ার দাবিও জানিয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার বিকেলে আওয়ামী লীগের অফিশিয়াল ফেসবুক পেইজে বিবৃতিটি প্রকাশ করা হয়।

এতে শেখ হাসিনা বলেন, চট্টগ্রামে একজন আইনজীবীকে হত্যা করা হয়েছে, এই হত্যার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যারা জড়িত তাদেরকে খুঁজে বের করে দ্রুত শাস্তি দিতে হবে। এই ঘটনার মধ্য দিয়ে চরমভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। একজন আইনজীবী তার পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়েছিল, আর তাকে এভাবে যারা পিটিয়ে হত্যা করেছে তারা সন্ত্রাসী। তারা যেই হোক না কেন শাস্তি তাদের পেতেই হবে।

তিনি বলেন, অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা দখলকারী ইউনূস সরকার যদি এই সন্ত্রাসীদের শাস্তি দিতে ব্যর্থ হয়, তাহলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে তাকেও শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। দেশবাসীর প্রতি আমি আহ্বান জানাচ্ছি, এই ধরনের সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়ান। সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি।

বিবৃতিতে শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমান ক্ষমতা দখলকারীরা সর্বক্ষেত্রেই ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে চলেছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ, মানুষের জীবনের নিরাপত্তা দিতেও ব্যর্থ। সাধারণ মানুষের উপরে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এইসব নির্যাতনের তীব্র নিন্দা জানাই।

আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বী সম্প্রদায়ের একজন শীর্ষ নেতাকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে, অবিলম্বে তাকে মুক্তি দিতে হবে। চট্টগ্রামে মন্দির পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ইতোপূর্বে মসজিদ, মাজার, গির্জা, মঠ এবং আহমাদিয়া সম্প্রদায়ের ঘরবাড়ি আক্রমণ করে ভাঙচুর ও লুটপাট করে আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। সকল সম্প্রদায়ের মানুষের ধর্মীয় স্বাধীনতা ও জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের অগণিত নেতাকর্মী, ছাত্র-জনতা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের হত্যা করার পরে চলছে হামলা-মামলা ও গ্রেফতারের মাধ্যমে হয়রানি। আমি এসব নৈরাজ‍্যবাদী ক্রিয়াকলাপের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত